আমাদের ছোটখাট সংসার 😅
"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং এর জন্য ঢাকায় এসেছি কয়েকদিন হয়।তো আমাদের কলেজ থেকে অনেকগুলো ছাত্র এসেছি তারমধ্যে আমরা আটজন ও এসেছি।আমরা আটজন বলতে আমরা যারা সবচেয়ে বেশি কাছের বন্ধু ওই আটজন।আমরা যখন সপ্তম সেমিস্টারে ছিলাম তখন থেকেই আমাদের কথা হচ্ছিল আমরা ট্রেইনিং এ যেখানেই যাই না কেনো একসাথে যাবো আর একসাথে উঠবো।আর মেসে না উঠে বাসায় উঠবো আর খাওয়া দাওয়া করবো বাইরের হোটেলে রিজার্ভ করে।তো ঢাকায় আসার পর আমাদের যা অবস্থা হয়েছে সেটা আর বলার মত না।রীতিমত সংসার সাজিয়ে বসেছি আমরা।
![]() | ![]() |
---|
ট্রেইনিং এ আসার আগে আমরা জানতাম ঢাকা নারয়ণগঞ্জ এ আমাদের ইন্ডাস্ট্রি।কিন্তু পরে জানতে পারি সেখান থেকেও বেশ কিছুটা দূরে আমাদের গন্তব্য।যাইহোক আমরা ভেবে নিয়েছি যেহেতু ইন্ডাস্ট্রি তাই হয়তো আশেপাশে লোকালয় বা শহর থাকবে।কিন্তু এখানে আসার পরে দেখি সম্পূর্ন ভিন্ন চিত্র,পুরো একটা অজপাড়া গ্রাম,পাশে হাইওয়ে আর তার সাথে আমাদের সেই ইন্ডাস্ট্রি।তো প্রথমদিন এসেই বাসা আর খুঁজে পাই না,তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে পেলাম একটা বাসা।আর বাসার মালিক ও সুযোগ পেয়ে দাম চেয়ে বসলো আকাশ চুম্বি,কিন্তু উপায় অন্তর না পেয়ে ওটাই ঠিকঠাক করে নিলাম।তারপর শুরু হয় আমাদের যত কাণ্ড।রুম পরিস্কার করে বাজারে খাইতে গিয়ে দেখি নাই কোনো ভাতের হোটেল যা আছে সবগুলোতে টুকটাক চা আর ভাজাপোড়া বিক্রি করে।এই অবস্থা দেখে আমাদের পুরো প্ল্যান 360° এর মত উল্টে গেলো।আমরা যা ভেবে রেখেছিলাম,আর এখানে এসে কি হচ্ছে !একে তো আমরা কেউ রান্না পারি না তারউপর আশেপাশে কোনো ভাতের হোটেল নাই।যাইহোক তারপরেই সিদ্ধান্ত নিলাম যে,এখন তো আর কোনো উপায় নাই তাই রান্না করেই সবাইকে খাইতে হবে।তারপর পরেরদিনই সবাই মিলে গেলাম বাজারে সব প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে।সব কিনে নিয়ে এসে একটা রুটিন ও বানিয়ে ফেললাম কে কখন রান্না করবে।কিন্তু বিপত্তির তো আর শেষ নাই, কারন কেউ রান্না করতে জানে না আর কেউ কাজও করতে চায় না।আর এই নিয়ে প্রত্যেকদিন লাগে আমাদের ঝগড়া।শেষমেষ একদিন রাগ হয়ে সবাই রান্না করাই বাদ দিয়ে দেই।তারপর যে জার মত খাচ্ছিল।এমন করে চলতে চলতে আর বাইরের খাবার খেতে খেতে অবস্থা নাজেহাল।আমাদের এমন শোচনীয় অবস্থা দেখে বাসার মালিক বেচারা একটা বুয়া খুঁজে এনে দেয়।যাইহোক বুয়ার সাথে কথা বার্তা বলে সব ঠিকঠাক করে নেই তারপর সবার মনে স্বস্তি।এরপর বুয়া আমাদের বাজারের একগাদা লিস্ট করে দিলো আর সেই বাজার করার উদ্দেশ্যে আজকে সবাই মিলে গেছিলাম।
ওর আগে এমন করে বাজার করার অভিজ্ঞতা আমার নেই।এমনি টুকটাক বাজার করেছি কিন্তু এমন বিয়ের বাড়ির বাজারের মত কখনো অভিজ্ঞতা হয় নাই।তারউপর এমনিতেই চলছে সবকিছুর উর্দ্ধগতি দাম।তারপর দামাদামি করে প্রায় মোটামুটি সব কিনা শেষ,কিন্তু বাজারের ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমার সহ বাকিদের অবস্থাও লাজুক।কিন্তু কি আর করার বেচে থাকার জন্যে হলেও খাইতে তো হবেই।আর আজকে বাজারে যা লোকসমাগম ছিল ভিতরে ঢুকাই মুস্কিল।তারপর কষ্ট করে হলেও ভিড়ের মধ্যে ঢুকে বড়ো সাইজ দেখে একটা পাঙ্গাস নিলাম,মুরগির মাংস বেশি করে নিলাম।বলা যায় কাচা শাকসবজি বাদে সবকিছুই বেশি করে নিয়েছি যেনো আগামী 15 দিন আর বাজার করতে না হয়।এদিকে বাজার করতে করতে করতে কখন যে 3 ঘণ্টা পার হয়ে গেছে টেরই পাই নাই।এরপর এক গাদা খরচ এর ব্যাগ নিয়ে সবাই মিলে একটা অটো চড়া দামে ঠিক করে বাসায় ফিরলাম।তারপর রাতের রান্নার জন্য কিছু জিনিস রেখে বাকি সব ফ্রিজে স্টক করে রেখে দিলাম।আর রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে এই আপনাদের সাথে ব্যাচেলর জীবনের গল্পগুলও শেয়ার করতে বসলাম।
ব্যাচেলর এই জীবনটা বেশ রোমাঞ্চকর।এখানে হাসি কান্না,রাগ অভিমান আর ভালোবাসা সবকিছুই আছে।তবে খাওয়া দাওয়ার যদি পেরা না থাকতো তাইলে মনে হয় বেশ ভালো লাগতো।যাইহোক আজকের মত এই পোস্ট এখানেই শেষ করছি দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

আপনাদের সেই আটজন বন্ধুর সংসারটি অনেক মজায় ভরপুর রয়েছে। কারণ এই রকম কোন প্রোগ্রাম থাকলে সেখানে অনেক মজা হয়। বিশেষ করে আমি তিন দিনের ট্রেনিং এ গিয়েছিলাম ঢাকায় মিরপুরে, সেখানে এই রকম খুব মজা হয়েছিল আমার। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
হ্যা ভাই,আমাদের এখানে প্রচুর মজা।মনে হচ্ছে সেই ব্যাচেলর পয়েন্ট এর নাটক এর মত আছি আমরা😆।যাইহোক আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন ঐরকমই মনে হওয়ার কথা বন্ধু-বান্ধবের সাথে ধন্যবাদ
যাক বাঁচা গেল অবশেষে সংসার একটা পেয়ে গেলেন তাহলে! এভাবে পরিকল্পনা আর বাস্তবতা কখনো এক হয়ে ওঠেনা।পরিকল্পনা হয়ে থাকে এক রকম,সেটা বাস্তবে রূপ নেই অন্য রকম।তবে আমার মতে আপনারা সব বন্ধুরা মিলে যখন রান্না করে খাবেন তা ভাল হবে।কারণ বাইরের খাবার এতদিন খাওয়া তো শরীরের জন্য ভাল হবে না। বাইরের খাবার দু’কদিন খাওয়া যায়।এতদিন খাওয়া যায় না।খুব সুন্দর একটি কাজ করেছেন সবাই মিলে বাসা নিয়ে সুন্দর একটি সংসার সাজিয়ে নিলেন।
আর বলিয়েন না আপু কি যে এক পেরা😁।বিশেষ করে বাজারের দিনগুলা বেশি ভয়ংকর।আর বাইরের খাবার শরীরের সাথে সুট হচ্ছে না এই জন্যেই রান্না করে খাওয়ার সিদ্ধান্ত।
আপনি তো ছোটখাটো একটা সংসার শুরু করে দিয়েছেন বন্ধুদের সাথে। বাইরে খাওয়ার থেকে আপনারা সবাই মিলে রান্না করে খেলে আরো বেশি ভালো হবে। খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এটা ভেবেই নিজেরাই রান্না শুরুর উদ্যোগ নিয়েছিলাম।কিন্তু পরে দেখা যায় এই রান্না নিয়েই বেশি ঝামেলা লাগে আমাদের মাঝে।এই জন্য বাধ্য হয়ে বুয়া খুঁজতে হয়েছে আমাদের।
রান্না না পারুক কিংবা কাজ নিয়ে ঝামেলা হোক,বন্ধু দের সাথে থাকার মজাই আলাদা।কথায় আছে না বিপদে পড়লে বাঘেও ঘাস খাই তেমন এখন আস্তে আস্তে সব কাজ করতে পারবেন🤣🤣।লোকেশন দেখে মনে হচ্ছে, আমাদের এইখানের কাছাকাছি। যাই হোক বেশ ভালোই বাজার করেছেন।পোস্ট পড়ে ভালোই লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে
এটা একদম পারফেক্ট বলেছেন আপু।আর আসলেই এখন রীতিমত ঘাস এই খেতে হচ্ছে,কারণ রান্নার যা অবস্থা ঘাসের থেকে কোনো অংশে কম না😆।
সব বন্ধুরা মিলে একসাথে থাকার মজাটাই অন্যরকম। আজ রান্না করতে পারেন না তো কি হয়েছে বাজার করে নিয়ে যান দেখবেন কাল আস্তে আস্তে ঠিকই শিখে ফেলেছেন।।
আর বিভিন্ন ধরনের রেসিপি প্রস্তুত করার জন্য আমার বাংলা ব্লক তো রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের রেসিপি পোস্ট পড়েন এবং ভালো ভালো রেসিপি প্রস্তুত করে ফেলেন।।
এখন আর শিখতে হবে না ভাই এখন বুয়া রেখেছি ওই সব করে হিহি😁।
তবে যেটা পারি না সেটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাই ও না।এই জন্য সব ঝামেলা থেকে মুক্তি নিতে একজনের উপর দায়িত্ব চাপায় দিছি।
এই ধরনের প্রোগ্রামগুলোতে বেশ আনন্দ পাওয়া যায় কিন্তু বাজার করার অভিজ্ঞতা বেশ কষ্টদায়ক। ব্যাচেলার জীবন যারা অতিবাহিত করেছে তারাই বলতে পারে এর আনন্দটা কতখানি, তবে রান্নাবাড়া বা খাওয়ার কষ্ট আছে বলেই ব্যাচেলার লাইফটা সবাই মনে রাখে। যেখানে অল্প দামে ভালো কিছু খাওয়ার চেষ্টা করা হয় ঠিকই সেই সাথে নিজের স্বাধীনতা পরিপূর্ণভাবে বজায় থাকে। আপনার গল্পটা পড়ে দারুণ লাগলো যা আমার কর্মজীবনে প্রবেশ এর আগের মুহূর্ত গুলো মনে পড়ে গেল। অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ব্যাচেলর জীবনে এই এক কষ্ট খাওয়া দাওয়ার তা ছাড়া সবকিছুই ঠিক।আর এই জন্যেই বোধয় জীবন একটা বউ এর ভীষণ প্রয়োজন।😌
এ ধরনের ছোট সংসার বেশ আনন্দ এবং শেখার নতুন ক্ষেত্র তৈরি করে। আপনি যদি বলেন আরো খারাপ অবস্থায় রয়েছেন, যেখানে থাকা এবং খাওয়ার দুরবস্থা রয়েছে তবুও আমি খুশি হতাম। কেন জানেন? কারনটা হলো আপনার কাছে বেশ কিছু ভালো বন্ধু রয়েছে আর সবাই মিলে একসাথে থাকলে এবং পরিকল্পনা করে চলতে পারলে মরুভূমির বুকেও টিকে থাকা সম্ভব। আর এখন যত কঠিন পরিস্থিতিতে পরবেন জীবনে ততবেশি শিখতে পারবেন। কারন আপনার বন্ধুদের একাত্বতা এবং সবার চিন্তা করার ক্ষমতা নতুন কিছু শেখাবে। দোয়া রইল 🥀
একদম যা বলছেন ভাই,মনে লাগার মত একটি মন্তব্য।আসলে বন্ধুরা পাশে থাকলে বন্ধুর পথটা পাড়ি দেওয়াও কোনো ব্যাপার না।আসলে বন্ধুরা কাছে থাকলে পথ চলায় আলাদা একটা সাহস পাওয়া যায়
আমি ভাবলাম বিয়ে নাকি করে ফেলছেন 😁😁। যে বাজার করছেন এক মাস তো অনায়াসে চলে যাবে! আপনাদের মতো আমাদেরও একই অবস্থা! বাসার মালিক বাসা ভাড়া অনেক বেশি নেয়! এই খাওয়ার ঝামেলাটা না থাকলে ব্যাচেলর লাইফটা অনেক ভালো হতো 🙂
বেকার মানুষকে বিয়ে কে করবে ভাই😆।খালি বাজার দেখলেন ভাই লোক সংখ্যা আর দেখলেন না।তবে একমাস না গেলেও 15 দিন অনায়াসে যাবেই।
আসলে আমরা আগে থেকে করি একটা প্ল্যান করে দেখা যায় হয় আরেকটা। এই জন্য আপনাদের প্ল্যান মাপিক কিছুই হলো না। তার উপরে যেখানে গেলেন সেখানে কোন ভাতের হোটেল নেই। অবশ্য প্রতিদিন হোটেলে খাওয়াটাও স্বাস্থ্যকর নয়। বাড়িওয়ালা আপনাদের জন্য বেশ ভালো একটি ব্যবস্থা করেছে একটা বুয়ার যোগাড় করে। অবশ্য অনেক ব্যাচেলর নিজে নিজে রান্না করতে জানে আপনারা তো জানেন না । তার উপরে আবার বলছেন ঠিকমতো বাজারও করতে পারেন না। কিন্তু দেখছি সব কিছুই কিনে নিলেন। অবশেষে ১৫ দিন নিশ্চিন্ত থাকা যাবে। তার সাথে একটু শাকসবজি কিনলেও পারতেন।
হ্যা আপু,বাস্তব জীবনে কিন্তু এমনটাই ঘটে। যত প্ল্যান এই করি না কেনো করার সময় উল্টা হয়ে যায়।তবে এখন অবশ্য সবকিছু ঠিকঠাক হচ্ছে,এখন দেখা যাক কতদিন চলে এরকম।
বন্ধু হয় এক দুই জন কিন্তু আপনারা আটজন বন্ধু এত মিল আপনাদের মধ্যে , যেটা আসলে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং ব্যতিক্রম লেগেছে।
আমাদের ব্যাপারটা আসলে একটু ভিন্ন।আমাদের আরো এমন বন্ধু আছে যাদের ছেড়ে আসতে হয়েছে।তবে ইচ্ছে করেই নয়,কারণ বশত ছেড়ে আসতে হয়েছে।