পুরোনো গ্রন্থাগার
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করে নেবো। এই গল্পটির নাম হলো "পুরোনো গ্রন্থাগার"। এই পুরোনো গ্রন্থাগার এর মধ্যে অনেক রহস্যময় ব্যাপার লুকিয়ে আছে আবার। শহরে সাগর নামের একটি ছেলে থাকতো আর সাগর খুবই বই প্রেমী মানুষ ছিল, বই পড়তে খুবই ভালোবাসতো। সে একদিন শহরের বুকে একটি পুরোনো গ্রন্থাগার এর সন্ধান পায় আর যেহেতু সে বই পড়তে খুবই ভালোবাসে, তাই তার সেই গ্রন্থাগারে গিয়ে বই পড়ার খুবই আগ্রহ জাগে। এদিকে রাত প্রায় তখন ১২ টার মতো হবে আর বাইরে আবহাওয়াও ভালো না, বৃষ্টি পড়ছে। সব মিলিয়ে পরিবেশটা একদম অন্যরকম। এখন যাইহোক, সাগর তো যাবেই সেই গ্রন্থাগারে ওই সময়ে। তাই সে প্রস্তুত হলো তার সাইকেল নিয়ে পুরোনো গ্রন্থাগারের উদ্দেশ্যে।
এই পুরোনো রহস্যময় গ্রন্থাগার সম্পর্কে আবার অনেকেই অনেক রকম কথা বলে, যেমন-এই গ্রন্থাগার বহুদিন ধরে বন্ধ থাকায় এখানে নাকি বইয়ের আত্মা ঘুরে বেড়ায় অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া বইয়ের। আবার নাকি সেই গ্রন্থাগারের ভিতর থেকে একটা অন্যরকম অদ্ভুত আকারে ফিসফিসানি আওয়াজ বাইরে আসতে লাগে। কিন্তু সাগর ছেলেটা আবার খুবই আত্মবিশ্বাসী, সে এইসব কুসংস্কারি কথা একদমই পছন্দ করে না, আর সে এইসব একদমই মানে না। তাই সে সবকিছুকে উপেক্ষা করে গ্রন্থাগারের ভিতরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গ্রন্থাগারটি পুরোনো কাঠ দিয়ে মজবুত ভাবে বন্ধ করে দেওয়া ছিল, সাগর সেটাকে ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। এরপর সেখানে তো আশেপাশে অসংখ্য বইয়ের আলমারি, তাক করা। সারি সারি বইয়ের গাদা।
সাগর ভিতরে সবকিছু দেখতে লাগলে হঠাৎ করে হাওয়ায় একটি বই ওখানে টেবিলের নিচে পড়ে যায়। সাগর তৎক্ষণাৎ সেখানে গিয়ে বইটি তুলে আবার টেবিলের উপরে রাখে। কিন্তু বইটি অনেক পুরোনো বলতে গেলে, কারণ সেই বইয়ের মলাটের অবস্থা এইরকম যে, যেন হাত দিলেই সব গুঁড়ো হয়ে ছাইয়ের মতো পড়ে যাবে। বইটির খুবই জরাজীর্ণ অবস্থা বলতে গেলে। কিন্তু সাগরের মনে তো কৌতূহলে ভরপুর যে, সে এই বইটি খুলবেই। খোলার সাথে সাথে সামনের পাতায় বড়ো করে লেখা দেখতে পেলো যে, এই বইটি যে খুলবে সে সময়ের অতল গহ্বরে নিমিষে তলিয়ে যাবে। কিন্তু সাগর তো আবার এইসব কুসংস্কারি কথা পছন্দই করে না। সে বরং এইসব কথা লেখা দেখে হেসে উড়িয়ে দেয় একপ্রকার।
সে বইয়ের পাতায় লেখাটাকে বিশ্বাস না করে বইয়ের পাতা উল্টায় এবং তার পরিনাম স্বরূপ চারিদিকে অন্ধকারের মতো ছেয়ে যায়। এছাড়া তার চারিপাশে যেন ঘূর্ণায়মান হাওয়ার ঝড় উঠতে শুরু করে দেয়। এই ঘূর্ণায়মান হাওয়ার মাঝে সে কিছুই বুঝতে পারেনি, শুধু তার যেন মনে হচ্ছিলো কে তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কোথাও। সাগর চোখ খুলতেই দেখে সে আর ওই পুরোনো গ্রন্থাগারের মধ্যে নেই, চারিপাশে যেন কিছু অদ্ভুত ড্রেসে লোকজন দাঁড়িয়ে আছে, শূন্যে হাওয়ার মাধ্যমে অদ্ভুত অদ্ভুত দেখতে যানবাহন ভেসে বেড়াচ্ছে। তার কাছে এইসব দেখে মনে হতে লাগে, এই জায়গা কোথায়, যেন হাজার হাজার বছর পিছনে চলে এসেছি! ওখানে সেই অদ্ভুত পোশাকে থাকা লোকজনের মধ্যে একজন বৃদ্ধ লোক এসে তার পরিচয় জানতে চায়।
এরপর সাগর তাকে বলে যে, আমি আসলে জানিনা আমি এখানে এলাম কিভাবে। শুনতেই লোকটি বুঝতে পারে যে, তুমি নিশ্চই ওই বইটা খুলেছো তাই না! তুমি যেন না, এই বইটি মূলত ছিল একটি সময়ের দরজা, যা তোমাকে অনেক বছর পিছনে নিয়ে চলে এসেছে। এখন তুমি এই সময়ের দরজা থেকে পুনরায় আবার তোমার সময়ে ফিরে যেতে চাইলে সময়ের উত্তর খুঁজে পেতে হবে। সাগরের মনে তো হাজারটা প্রশ্ন ঘুরতে থাকে, যে আসলে এই গ্রন্থাগারটি কি বই পড়া বা বই রাখার জায়গা ছিল, না ইটা একটা সময়ের চক্র বা দরজা ছিল, যেটার মাধ্যমে এক সময় থেকে আরেক সময়ে যাওয়া যায়? এখন বৃদ্ধ লোকটি সাগরকে বলে, তুমি যদি সত্যিই তোমার সময়ে ফিরে যেতে চাও, তাহলে তোমাকে অবশ্যই সেই বইয়ের শেষ পৃষ্ঠাটি খুঁজে পেতেই হবে।
এরপর সাগর সেই হিসেবে অনেক খোঁজাখুঁজি শুরু করে দিলো এবং অবশেষে তার সেই বইটি খুঁজে পায় আর শেষ পৃষ্ঠাটি পেতেই আবারো আগের মতো একইরকম অন্ধকার আর সেই সব তার সাথে ঘটে। আগেরবারের মতো চোখ খুলতেই দেখে যে, সে তার সময়ে ফিরে এসেছে। সাগর তো নিজেকে তখনও বিশ্বাস করতে পারছিলো না যে, এটা সত্যি কোনো ঘটনা ছিল না স্বপ্ন ছিল একটা! তবে সে একটাকে প্রথমে কল্পনা ভাবলেও সে তার পকেটে হাত দিয়ে যখন দেখে অনেক বছরের পুরোনো একটি কয়েন তার পকেটে আছে, তখন সে এই ঘটনাকে মানতে বাধ্য হলো যে, এইরকম ঘটনা এই সময়ে দাঁড়িয়েও ঘটে তাহলে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |




Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ,গল্পটি তো বেশ সুন্দর।বইয়ের জগতে পিছনের সময়গুলো দেখে আসা হলো আবার শেষ পাতা পড়ে বর্তমানে ফিরে আসা সম্ভব।ভালো লাগলো পড়ে, ধন্যবাদ দাদা।
গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা।সকাল সকাল উঠে গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। এ ধরনের রহস্য গল্প পড়তে আমার সব সময় ভালো লাগে। গল্প পড়ে এমন ফিল হচ্ছিল আমিও যেনো সাগরের মতো সময়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম।কেমন যেনো লাগছিলো তখন।যাই হোক ফিরে আসতে পেরেছে জেনে ভালো লাগলো।সুন্দর ভাবে গুছিয়ে গল্পটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাগ্যিস সাগর সেই বইয়ের শেষ পৃষ্ঠাটি খুঁজে পেয়েছিল। নয়তোবা সে তো বর্তমান সময়ে ফিরে আসতেই পারতো না। যাইহোক গল্পটা পড়ে কিন্তু সত্যিই বেশ মজা পেয়েছি দাদা। এমন রহস্যময় গল্প আরও চাই। এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
বাহ৷ গল্পটি বেশ আকর্ষণীয় লাগলো। কিন্তু শেষটা যেন হঠাৎ করে হয়ে গেল। মনে হচ্ছিল অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড এর মত ঘটনাগুলির বেশ আরো অনেক বর্ণনা হলে ভালো হতো। আসলে স্বপ্নের জগতে বিচরণ করতে আমরা ভালোবাসি। আর টাইম ট্রাভেল তো কল্পবিজ্ঞানের অন্যতম একটি বিষয়। তাই এই বিষয়ে গল্পটি পেয়ে বেশ ভালো লাগলো। পারলে এমন গল্প আরো লিখে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন।