বোয়াল মাছের ভুনা রেসিপি😋।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু, মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি-
)
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে প্রতিদিনের মতো আবারো রেসিপি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আমার আজকের ব্লগটি হচ্ছে বোয়াল মাছের রেসিপি পোস্ট। তাই আর দেরি নয় এখনি চলুন আপনাদের মাঝে শেয়ার করে ফেলি। মজাদার বোয়াল মাছের ভুনা রেসিপি।
আমার একটি পছন্দের মাছ হচ্ছে এই বোয়াল মাছ । আমি অন্য কোন মাছ না খেলেও বোয়াল মাছ খেতে পছন্দ করি। কেননা বোয়াল মাছের কোন কাঁটা বাচতে হয়না। অর্থাৎ বোয়াল মাছের কোন কাটা থাকে না। তাছাড়া বোয়াল মাছের স্বাদ একেবারে মুরগির মাংসের মত। আর সেই বোয়াল মাছ যদি হয় নিজের চোখে দেখা নদী থেকে জাল দিয়ে ধরা। তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। আপনারা সবাই জানেন যে, আমি তিতাস নদীর এলাকার মেয়ে। এই নদীতে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। ছোটবেলায় এই নদী থেকে বান্ধবীদের সাথে অনেক মাছ ধরেছি। সেই স্মৃতি ভুলা যায় না তবে মাঝে মাঝে অনেক মিস করি। যাইহোক, আমি বাড়ি থেকে আসার সময় আমার বাবা চারটি বোয়াল মাছ কিনে এনেছেন। সেইগুলো আমাদের তিতাস নদী থেকে জেলেরা ধরেছিল। আমাদের এলাকায় জেলেরা মাছ ধরলে বড় বড় বোয়াল মাছ, কালিবাউশ মাছ, আইর মাছ এগুলো আমার আব্বুর জন্য বাড়িতে নিয়ে আসে।
কেননা আমার আব্বু তাদেরকে বলে রেখেছে এই মাছ ধরা পড়লে যেন আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। তাই জেলেরা মাছ ধরে বাজারে না উঠিয়ে আমাদের বাসায় নিয়ে আসে। আমি ঢাকা আসার সময় আমার মা আমাকে বোয়াল মাছ দিয়ে দেই। শুধু বোয়াল মাছ নয় অনেক প্রকারের মাছ আমার সাথে দিয়ে দিয়েছে। যাতে বাচ্চা নিয়ে কষ্ট না করতে হয়। যাই হোক সেই বোয়াল মাছের রেসিপি আপনাদের মাঝে এখন শেয়ার করব। চলুন তাহলে আর দেরি নয়। এখনই আপনাদের মাঝে প্রত্যেকটি ধাপ শেয়ার করি।
বোয়াল মাছ | আট পিছ |
---|---|
কাঁচা মরিচ | ছয় পিস |
পেঁয়াজ | দুই পিস |
টমেটো | তিনটি |
রসুন বাটা | হাফ চামচ |
আদা বাটা | হাফ চামচ |
হলুদের গুঁড়ো | এক চামচ |
জিরার গুড়া | এক চামচ |
মরিচের গুঁড়া | দের চামচ |
ধনিয়ার গুড়া | এক চামচ |
সরিষার তৈল | পরিমান মত |
ধনিয়া পাতা কুচি | পরিমাণ মতো |
লবণ | পরিমাণ মতো |
রন্ধন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ-
প্রথমে একটি পেনের মধ্যে সরিষার তেল দিয়ে দিলাম। অন্য দিকে মাছের মধ্যে লবন ও হলুদ মাখিয়ে নিলাম। তারপর তেল গরম হয়ে আসলে তাতে মাছগুলো দিয়ে দিলাম। মাছগুলো দেওয়ার পর তেলের ফেনা ভেসে খুব ঘ্রাণ আসছিলো।
দ্বিতীয় ধাপ-
এপর্যায়ে মাছগুলো ভাজা হয়ে গেলে উঠিয়ে নিলাম। তারপর মাছ ভাজার তেলে পেঁয়াজ কুচি গুলো দিয়ে দিলাম। তারপর ভালো করে হালকা ভাবে ভেজে নিলাম। তারপর দিয়ে দিলাম আদা ও রসুন বাটা। তারপর ভালোভাবে নারাচারা করে ভেজে নিলাম।
তৃতীয় ধাপ-
এই ধাপে টমেটো ও কাচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষন ভেজে নিয়েছি। টমেটোর কাচা ভাব চলে যাওয়ার পর তাতে দিয়ে দিলাম গুড়ো মসলাগুলো। মসলাগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে অল্প পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম। মসলা গুলো এভাবে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিলাম
চতুর্থ ধাপ-
এখন ঢাকনা উঠিয়ে ভেজে রাখা মাছগুলো দিয়ে দিলাম। মাছগুলো সম্পূর্ণ উপকরণের সঙ্গে যুক্ত করে কষিয়ে নিলাম। তারপর অল্প পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম।
পঞ্চম ধাপ-
এপর্যায়ে ঢাকনা উঠিয়ে, তাতে ধনেপাতা কুচি দিয়ে আবারও ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম। এভাবেই তৈরি হয়ে গেলো আমার পছন্দের বোয়াল মাছের ভুনা রেসিপি।
পরিবেশন-
বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। কেমন হলো আমার আজকের রেসিপি। অবশ্যই কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন। সবার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল। এ প্রত্যাশা রেখে এখান থেকে বিদায় নিয়েছি। আল্লাহ হাফেজ।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | বোয়াল মাছের ভুনা রেসিপি ।। |
স্থান | নিজবাসা, নারায়নগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ১৬- ০২ -২০২৫ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
![image.png](
বোয়াল মাছ আমি জীবনে হয়তো কোনদিনই খাইনি। এক সময় ছিল তখন কোন মাছই চিন্তামনা। আর এখন যখন মাছ চিনি তখন কোনদিনই বোয়াল মাছ এনে রান্না করা হয়নি। তাই বোয়াল মাছের স্বাদ কেমন তা জানিনা। তবে আপনার রান্না এবং রান্নার রং দুটোই খুব ভালো হয়েছে। আশা করব খেতেও খুব ভালো হয়েছিল। মাছ এমন একটা জিনিস তার স্বাদ কখনো খারাপ হতেই পারে না।
আসলে আপু প্রত্যেকটি মাছের স্বাদ এক এক রকম। আমার কাছে সবচেয়ে ফেভারিট হল এই বোয়াল মাছ। বোয়াল মাছ যেভাবে রান্না করা হোক না কেন খেতে অনেক দারুন লাগে। আপনিও এই মাছ কিনে একদিন রান্না করে খেয়ে দেখবেন খুবই ভালো লাগবে।
বোয়াল মাছ খেতে আমার কাছেও ভালো লাগে। কারণ এর মধ্যেই কাটা না থাকার কারণে খুব সহজেই খেয়ে ফেলা যায়। আর এর স্বাদ অনেক বেশি। তবে কখনো নদীর এরকম টাটকা বোয়াল মাছ খাওয়ার সুযোগ হয়নি। আপনার আব্বু যেহেতু বলে রেখেছে তাই একটা সুবিধা হয়েছে। বড় মাছ আনলে তারা বাজারে না গিয়ে মাছ নিজেরা বাড়িতে নিয়ে চলে আসে। রেসিপিটা দারুন তৈরি করেছেন আপু। অনেক লোভনীয় দেখা যাচ্ছে।
আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন, এই মাছ কাটা না থাকার কারণে আমারও খুব প্রিয়। সুন্দর কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু
জি আপু, বোয়াল মাছ পাঙ্গাস মাছের মত কম কাটাযুক্ত। খেতেও ভালো লাগে।
বোয়াল মাছের ভুনা করার খুবই সুন্দর পদ্ধতির আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু । বোয়াল মাছের রেসিপি গুলো সব সময় আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। অনেকদিন পরে এই রেসিপিটা দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।
জ্বী ভাইয়া বোয়াল মাছের রেসিপি যেভাবে রান্না করা হোক না কেন। দেখতে সুন্দর লাগে। খেতেও ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Done
কি যে দেখালেন আপনি। দেখেই তো এখন আর লোভ সামলাতে পারছি না। এই ধরনের খাবারগুলো খেতে পছন্দ করে না এরকম মানুষ তো খুব কম রয়েছে বলে আমার মনে হয়। আপনি তো দেখছি অনেক বেশি করে তৈরি করেছেন। আমাকে বলতেন তাহলে আমিও যেতাম এটি খাওয়ার জন্য। আশা করছি পরবর্তীতে তৈরি করলে অবশ্যই আমাকে বলবেন 😇। রেসিপি টা সত্যি অনেক লোভনীয় ছিল।
ভাইয়া আমার তো মনে হয় খুব কম নই কেউই এসব খাবার অপছন্দ করে না। আমার মতে সবাই বোয়াল মাছ পছন্দ করে। ভাইয়া দাওয়াত রইলো যখনই আমাদের বাসায় আসবেন আপনাকেও বোয়াল মাছের ভুনা রান্না করে খাওয়াবো ইনশাআল্লাহ।
আপনি আমার অনেক পছন্দের একটি রেসিপি শেয়ার করছেন। বোয়াল মাছ আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আসলে এই ভাবে ভূনা করে খেতে খুবই ভালো লাগে।তবে আমার কাছে ঝোল করে রান্না করলে সেটা আরো বেশি মজা লাগে। যাইহোক রেসিপির ধাপ গুলো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করছেন। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
বোয়াল মাছ খাওয়া হয়েছে প্রায় অনেকদিন হয়ে গিয়েছে। অনেকদিন পর বোয়াল মাছের একটা রেসিপি দেখলাম আপনার কাছে। আপনি খুব মজাদার ভাবে বোয়াল মাছের ভুনা রেসিপি তৈরি করেছেন। এরকম লোভনীয় রেসিপি গুলো দেখলে লোভ লেগে যায়। দেখে তো মনে হচ্ছে বোয়াল মাছের ভুনা রেসিপি টা অনেক সুস্বাদু হয়েছে, আর খুব মজা করে খেয়েছেন।
তিতাস নদীর বোয়াল মাছ খেতে তো অনেক সুস্বাদু। মাঝিকে বলে রাখে এবং মাঝি মাছ তুলে আপনাদের বাড়িতে দিয়ে যায় জেনে ভালো লাগলো।আপনি নদীর টাটকা বোয়াল মাছ দিয়ে টমেটোর দিয়ে চমৎকার সুন্দর করে ভুনা রেসিপি করেছেন।দারুণ হয়েছে আপনার রেসিপিটি। কালার দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতোটা সুস্বাদু এই মাছ।আসলে বোয়াল মাছে কাটা কম থাকার কারনে নিজেদের যেমন খেতে ভালো লাগে তেমনি বাচ্চাদের খাওয়াতেও অনেক সুবিধা হয়।অনেক লোভনীয় হয়েছে আপনার রেসিপিটি। ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে লোভনীয় রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
বোয়াল মাছ খেতে আমি নিজেও খুব পছন্দ করি। আজকে আপনি বোয়াল মাছের ভুনা রেসিপি করেছেন। তবে এটি ঠিক এই মাছের কাঁটা বাঁচতে হয় না। আর এই ধরনের রেসিপির মধ্যে টমেটো এবং ধনিয়া পাতা দিলে খেতে আলাদা একটা মজা লাগে। মজার রেসিপিটি খুব সুন্দর করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
টমেটো দিয়ে বোয়াল মাছের রেসিপিটি খুবই লোভনীয় লাগছে। টমেটো দিয়ে যেকোনো মাছ ভুনা করলেই খেতে ভীষণ মজার হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু টমেটো দিয়ে বোয়াল মাছের মজাদার ভুনা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।