রেসিপিঃ-খেজুর গুড় দিয়ে কাঁচা বরই এর মিষ্টি আচার।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

সবাই কেমন আছেন,


আশা করি বন্ধুরা আপনারা সবাই ভাল আছেন? আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। সব সময় ভালো থাকার চেষ্টা করি ভালো রাখার চেষ্টা করি সবাইকে। বন্ধুরা বেশি ভালো না অসুস্থ। দোয়া করবেন সবাই আমার জন্য। আর চারদিকে তো আছে শুধু অসুস্থতার খবর। ঘরে বাইরে সব জায়গায় অসুস্থতা আর অসুস্থতা যেন আর শুনতে ইচ্ছে করছে না। কি আর করার অসুস্থতা যেমন আল্লাহর নিয়ামত সুস্থতা ও আল্লাহর নিয়ামত। এখন সিজন পরিবর্তন হওয়ার কারণে সবাই অসুস্থ হচ্চেহ। এভাবে যাচ্ছে জীবন আমাদের সবার কোন রকমের। আজকে বন্ধুরা আবার হাজির হয়ে গেছি নতুন একটি রেসিপি নিয়ে। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আপনাদের সাথে ভিন্ন ধরনের রেসিপি গুলো শেয়ার করে নিতে। যেহেতু সপ্তাহে একটি মাত্র রেসিপি পোস্ট শেয়ার করি। তাই চেষ্টা করি নিজের পছন্দের খাবারের রেসিপিগুলো তৈরি করে আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিতে।

f6.jpg

নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন আমি আজকে কি রেসিপি শেয়ার করেছি। বন্ধুরা আজকে আমি যে রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি তা হচ্ছে কাঁচা বরইয়ের আচার রেসিপি। এখানে টক মিষ্টি ঝাল তিনটি স্বাদ পাওয়া যাবে। যেহেতু টক খাবার সেখানে যদি হালকা মিষ্টি এবং একটু ঝাল করা হয় তাহলে খেতে দারুন হয়। বিশেষ করে এই আচার একটু মিষ্টি করে করেছি বাচ্চারা যাতে খেতে পারে। এমনিতে তো প্লেটে নিয়ে বিকেলবেলা কিংবা দুপুরের খেতে দারুন হয়। কাঁচা বরইয়ের আচার আমাক খেতে খুব ভালো লাগে। যেকোনো ধরনের বরই আচার খুবই মজার হয়। বেশ কয়েকদিন আগে কিছু কাঁচা বরই গ্রাম থেকে পাঠিয়েছিল।এমনিতে লবণ দিয়ে কয়েকটা খেয়েছিলাম। ভাবলাম নষ্ট হয়ে যাবে সেগুলো দিয়ে মিষ্টি আচার তৈরি করে নিই। যেহেতু বাচ্চারা বরই একদম খেতে চাই না। তো আমি চিন্তা করেছি বরই এভাবে গুড় দিয়ে মিষ্টি করে আচার বানাইলে বাচ্চারা খাবে।

f7.jpg

যে চিন্তাভাবনা ঠিক তেমনি হয়ে গেছে কাঁচা বরই মিষ্টি আচার। এই আচার করার পরে বাচ্চারা বেশ পছন্দ করেছে। তারা খেয়ে অনেক বেশি খুশি হয়েছে। যেহেতু বাচ্চাদের জন্য করা হয়েছে তাই আমারও ভালো লাগলো। কারণ কোন কিছু তৈরি করার পরে যখন যাদের জন্য তৈরি করি তাদের থেকে ভালো পিডব্যাক পাওয়া যায় তাহলে খুবই ভালো লাগে। সেই কাঁচা বরই আচার রেসিপিটি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিব কিভাবে তৈরি করেছি—

f8.jpg


রেসিপির প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহঃ


উপকরণপরিমাণ


  • কাঁচা বরই- ১ কেজি।

  • খেজুর গুড়- পছন্দমত।

  • রসুন- একটু বেশি দিতে হবে।

  • কাঁচা মরিচ- ৪/৫ টি।

  • পাঁচপোড়ন ।

  • ভিনেগার- ২/৩ চামচ।

  • এলাচ- দারুচিনি।

  • লবণ- স্বাদমত।

  • সরিষার তেল।


কাঁচা বরই এর মিষ্টি আচার তৈরীর ধাপ সমূহঃ


রান্নার ধাপ-১

বন্ধুরা আপনারা প্রথমেই দেখতে পাচ্ছেন রেসিপির প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ আমি সুন্দর করে সাজিয়ে নিলাম এবং আপনাদের সাথে উপস্থাপন করেছি।

f.jpg


রান্নার ধাপ-২

যেহেতু প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ আগে প্রস্তুত করে নিয়েছি এবং আপনাদেরকে উপস্থাপন করে নিলাম এখন সরাসরি রান্নার ধাপে চলে যাব। যেহেতু আগে প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে দেখালাম এখন রান্নার পাত্রে সরিষার তেল দিয়ে গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করবো। তেল গরম হয়ে আসলে সেখানে রসুন বাটা এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে দিলাম।

f1.jpg


রান্নার ধাপ-৩

প্রথমে নেড়েচেড়ে রসুন আর কাঁচা মরিচ তেলের মধ্যে ভেজে নিতে হবে। এরপরে দিয়ে দিব প্রয়োজনমত লবণ এবং পাঁচফোড়ন।

f2.jpg


রান্নার ধাপ-৪

নেড়েচেড়ে ভেজা নেওয়ার পরে যখন প্রায় ভাজা ভাজা হয়ে আসে তখন খেজুরের গুড় গুলো দিয়ে দিলাম। আবারো সবগুলোকে ভালোভাবে মিক্স করে নিতে হবে। কিছুক্ষণ সময় দিয়ে ভেজে নিতে হবে।

f3.jpg


রান্নার ধাপ-৫

গুড় কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে নেওয়ার পরে পরিষ্কার করে ধুয়ে রাখা কাঁচা বরই দিয়ে দিলাম। সবগুলোর সাথে ভালোভাবে মিক্স করে নেওয়ার পরে ডেকে দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর শুকনো উপকরণগুলো দিয়ে দিলাম যেহেতু আগে দিলে পুড়ে যাবে সেজন্য।

f4.jpg

রান্নার ধাপ-৬

এই পর্যায়ে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন বরই গুলো সম্পূর্ণভাবে সিদ্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে গুড় দিয়ে তৈরি করার কারণে খেতে খুবই ভালো লাগছিল। এখন যেহেতু প্রায় হয়ে এসেছে তখন আমি চুলা বন্ধ করে দিয়ে ঠান্ডা করতে দিলাম।

f5.jpg


রেসিপির পরিবেশনা

আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের শেয়ার করা কাঁচা বরই এর আচার রেসিপি দেখে ভালো লাগবে। এই রেসিপি দেখতে যেমন সুন্দর হয়েছিল খেতেও অনেক স্বাদের ছিল। যেহেতু গুড় দিয়ে করেছি তাই বাচ্চারা বেশ পছন্দ করেছে। বাচ্চাদের কথা কি বলবো আমার আরও অনেক ভালো লাগছিল খেতে। এই রেসিপি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের রেসিপি আপনাদের দেখে ভালো লাগবে। আপনাদের কেমন লাগলো মতামতের মাধ্যমে শেয়ার করলে ভালো লাগবে। সময় দিয়ে দেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

f6.jpg

f7.jpg

f8.jpg


ক্যামেরার বর্ণানাঃ
ডিভাইসের নামMI-Redmi
মডেলRedmi-Note-14 pro
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিরেসিপি

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আজ এখানে আমার লেখা সমাপ্তি করছি। আবার উপস্থিত হব নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই সুস্থ থাকবেন আর ভাল থাকবেন।


💘ধন্যবাদ সবাইকে💘

@samhunnahar

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqKGFwaM8Kqv9tMReTkL2w3ow2M2CubmYy2Aod1kEXoUDtqH3fo7m2hBK4uDhMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAm1.png

Banner_PUSS1.png

Sort:  
 last month 

বড়ইয়ের আচার মানেই লোভনীয় রেসিপি খেজুরের গুড় দিয়ে বড়ইয়ের আচার তৈরি করেছেন অনেক লোভনীয় লাগছে আপু। ভিন্ন ধরনের ইউনিক আইডিয়া নিয়ে বরইয়ের আচার রেসিপি তৈরি করে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last month 

সবাই কম বেশি বড়ই আচার খেতে খুব পছন্দ করে। কিন্তু খেজুর গুড় দেওয়ার কারণে ভিন্ন ধরনের স্বাদ পাওয়া গেছে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

বুদ্ধি করে অনেক ভালো একটি কাজ করেছেন। এতে করে আপনার বড়ইগুলোও নষ্ট হলো না আর সবাই মিলে টক-জাল মিষ্টি আচারটিও মজা করে খেতে পারল। আমার কিন্তু এ ধরনের আচারগুলো অনেক পছন্দের। আর বড়ই আচার পছন্দ করেনা এমন কেউ নেই। আজ আপনার বড়ই আচার রেসিপিটি দেখেই খেতে অনেক লোভ লাগছে।

 last month 

হ্যাঁ আপু বাচ্চারা যেহেতু খেতে চায় না তাই তাদের জন্য নতুন একটি সিস্টেম বের করলাম।

 last month 

এ সময়ে সতর্ক থাকাটাই জরুরি আপু। এটা শীতের লাস্ট স্টেজ বলা যেতে পারে। আপনি তো খেজুরের গুড় কাচাঁ বরইয়ের মজার আচার বানিয়েছেন। দুপুর বেলা আচার খেতে কিন্তু দারুণ লাগে।

 last month 

আপনি ঠিক বলছেন এই সময় সবাই অসুস্থ হবে সেটা বোঝা যাচ্ছে।

 last month 

1000005263.jpg

 last month 

আপু বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন,এভাবে আচার তৈরি না করলে হয়তো বেশিদিন রেখে খেতে পারতেন না। তাছাড়া এখন মিষ্টি দিয়ে তৈরি করাতে নিশ্চয়ই বাচ্চারা খেয়েছে আর মজাও পেয়েছে। এখন বরই এর সিজন আর আপনি শুরুতেই খুবই লোভনীয় আচার নিয়ে এসেছেন। যা দেখেই জিভে জল চলে আসলো। ধন্যবাদ আপু মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 last month 

হ্যাঁ আপু কাঁচা বরই বেশি দিন রাখা যায় না নষ্ট হয়ে যায়। তাই আচার তৈরি করে নিলাম ভিন্ন একটি পদ্ধতিতে।

 last month 

বরই আমার অনেক প্রিয়। আপনি অনেক সুন্দর করে খেজুরের গুড় দিয়ে বরুইয়ের আচার করেছেন এমন রেসিপি দেখে যেন খাওয়ার খুবই ইচ্ছে হলো। আমার কাছে এই জাতীয় টক রেসিপিগুলা অনেক অনেক ভালো লাগে। আমাদের গ্রামের বাসাতে বরই গাছ রয়েছে। প্রত্যেক বছর সেখান থেকে অনেক সংরক্ষণ করতে পারি। এবার গাছ থেকে ফটোগ্রাফি করেছিলাম। আপনাদের মাঝে শেয়ার করব একদিন। সুন্দর রেসিপি করে দেখানোর জন্য ধন্যবাদ আপু।

 last month 

নিজেদের বাড়িতে বড়ই গাছ থাকলে বেশ সুবিধা হয়। কাঁচা খাওয়া যায় আর শুকনা করে সংগ্রহ করে রাখা যায়। রেসিপিটি দেখার জন্য ধন্যবাদ।

 last month 

খেজুর গুড় দিয়ে কাঁচা বরই এর মিষ্টি আচার তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা আচার দেখে তো আমার জিভে জল চলে এলো। আপনার রেসিপিটি অনেক লোভনীয় লাগছে খেতে ও মনে হয় অনেক সুস্বাদু হয়েছিল।আপু বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন,এভাবে আচার তৈরি না করলে হয়তো বেশিদিন রেখে খেতে পারতেন না। ধন্যবাদ আপু আপনাকে

 last month 

চলে আসেন ভাইয়া এই আচার গুলো ফ্রিজে আছে সংগ্রহ করে রাখছি। আপনাকে খেতে দিব আসলে।

 last month 

আপু, বড়োই এর আচার তো সত্যিই এক ধরনের মজা। আজকে আপনার খেজুর গুড় দিয়ে কাঁচা বরই এর মিষ্টি আচার রেসিপি দেখে তো একদম জিভে জল চলে এসেছে। আপনি যে সব উপকরণ মিশিয়ে এই রেসিপি তৈরি করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এমন লোভনীয় আচারের রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ, এখন মন চাচ্ছে একটুকু খেয়ে ফেলি।

 last month 

সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু।

 last month 

আসলে খেজুরের গুড় কিন্তু এখন বেশি ভালো একটা পাওয়া যায় না। কেননা সব জায়গায় এখন ভেজালে ভরে গেছে। আর আপনার এই আচারের রেসিপি দেখে আমার জিভে বারবার জল চলে আসছিল। যদিও এই ধরনের আচার আমি কখনো খাইনি এর আগে। হয়তোবা এই আচার খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু হবে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে এই আচার তৈরীর বর্ণনা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।

 last month 

দাদা খেজুর গুড় দিয়ে যখন তৈরি করেছি বাচ্চারা বেশ পছন্দ করেছে। আমারও ভালো লেগেছে খেতে।