খেজুরের রস 🥛
হ্যালো বন্ধুরা...কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালো আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম ৷ আজকে আমি আপনাদের মাঝে খেজুরের রস খাওয়ার কিছু অনুভূতি এবং ফটোগ্রাফি শেয়ার করবো ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷
আগে ভোর বেলা কিছু মানুষ সাইকেলে করে খেজুরের রস বিক্রি করতো ৷ প্রতিদিন না হলেও প্রতি সপ্তাহে দু/চারবার খেজুরের রস কিনে খেতাম ৷ পাঁচ কিংবা দশ টাকার বিনিময়ে এক গ্লাস খেজুরের রস ৷ বাবা মায়ের কাছে টাকা নিয়ে খাওয়া হতো সকাল বেলা ৷ এক গ্লাস খেজুরের রস খেতে পারলে আর কিছুই লাগতো না সেদিন ৷ শুধু খেজুরের রস খাওয়ার জন্যই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডার মাঝেও রাস্তায় দারিয়ে থাকতাম খেজুরের রস বিক্রেতার জন্য ৷ এলেই কিনে নিতাম বেশ খানিকটা , আর সবাই মিলে খেজুরের রস খেতাম ৷ দারুণ স্বাদ ছিলো সেই রসের মাঝে ৷ এখন আর আগের মতো খেজুরের রস খাওয়া হয় না ৷ আমাদের এলাকায় তেমন একটা খেজুরের গাছ নেই ৷ আগের মতো মানুষ খেজুরের রস বিক্রি করেও বেড়ায় না ৷ তাই আগের মতো খাওয়াও হয় নাহ ৷ এখন খেজুরের রস খেতে চাইলে আগে খেজুরের রসের সন্ধান করতে হয় , তারপর গিয়ে খেতে হয় ৷ জীবন আর বাস্তবতার কাছে সুযোগও নেই প্রতি সপ্তাহে খেজুরের রস খেতে যাওয়ার ৷ যাই হোক ,গতকাল রাত একটায় খেজুরের রস খেতে গেছিলাম ঠাকুরগাঁও নারগুন খেজুর বাগানে ৷
রাত দশটায় বন্ধুরা ফোন দিয়ে খেজুরের রস খেতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় ৷ আমিও তাদের এক কথায় রাজি হয়ে বললাম হ্যাঁ ঠিক আছে চল যাই ৷ আমি নিজেই কয়েকদিন ধরে ভাবছি খেজুরের রস খেতে যাওয়ার কথা ৷ এ বছরে এখনো খেজুরের রস খাওয়া হয়নি ৷ খুব মিচ করছি খেজুরের রস ৷ হঠাৎ তাদের খেজুরের রস খেতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জেনে আমার ভীষণ ভালো লাগে ৷ তাই খুব বেশি দেরি না করে সময় মতো রেড়ি হয়ে তাদের আসার অপেক্ষা ছিলাম ৷ রাত তখন একটা তারা আমার বাড়ি সামনে আসে ৷ আমি এবং আমার পাঁচ বন্ধু বের হোই ঠাকুরগাঁও নারগুন খেজুর বাগানের উদ্দেশ্যে ৷
আমাদের আশেপাশে এই একটাই খেজুর বাগান ৷ যেটা ঠাকুরগাঁও জেলার মাঝে অবস্থিত ঠাকুরগাঁও নারগুন খেজুর বাগান নামে পরিচিত ৷ আমাদের এখান থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে এই খেজুর বাগানটা অবস্থিত ৷ আমরা কয়েকজন শীতের এই রাতে বের হয়েছি খেজুরের রস খেতে সেই বাগানের উদ্দেশ্যে ৷ শীতের মাঝরাতে কুয়াশা আর ঠান্ডার মাঝে পথ চলা খানিকটা কষ্টের তবে অনুভূতিটা বেশ চমৎকার ৷ গতকাল মাঝরাতে অবশ্য তেমন কুশায়া ছিলো না , তবে ঠান্ডা আর ঠান্ডা বাতাস বেশ ভালোই ছিলো ৷ ধীরে ধীরে আমরা ঠাকুরগাঁও নারগুন খেজুর বাগান আসি আর কুয়াশাও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ৷ রাত ৩ টা ৩০ মিনিটে আমরা একদম বাগানে , কুয়াশায় চারপাশ ভরা , মানুষজনও অনেক ৷
এত রাতে এসেও এতো মানুষ বাগানে দেখতে পাবো ভাবনি ৷ অনেক মানুষ অনেক জায়গায় থেকে এসেছে ৷ শুধু খেজুরের রস খেতে আর জায়গাটার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ৷ তারা আরো আগে এসেছে আরো দূর থেকে ৷ সারা রাত দিন নাকি এখানে মানুষ থাকে ৷ যাই হোক , তাদের কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলাম ৷ তার থেকেও বড় কথা তখনকার অবস্থা আমার ঠান্ডায় নাজেহাল ছিলো ৷ প্রচন্ড ঠান্ডা আর কুয়াশায় আমি শেষ ৷ বাগানে অনেকেই খড়খড়ি কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়েছে , আমরাও আলাদা করে একটা জালাই ৷ সেখানে আগুন তাপিয়ে নিজেকে ফিরে পাই ৷
এরপর বাকি রাতটুকু এভাবেই আড্ডা নাচানাচি করে কাটিয়ে দেই ৷ ভোর বেলা খেজুরের রস সংগ্রহ করা শেষ হলে তারা বিক্রি শুরু করে ৷ তখনও সূর্য উঠেনি , চারদিকে কালো আধার ৷ এতোক্ষনে মানুষ সংখ্যাও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ শুরুতে রস কিনতে মানুষের তাড়াহুড়া দেখে আমি অবাক ৷ এতো এতো মানুষ সবাই রস কিনতে জ্যাম লাগিয়ে দিছে ৷ তাদের দেখে মনে হচ্ছে রস আর পাবো নাহ ৷ তাদের মাঝে ডুকে আমরাও পারাপারি করে এক হাড়ি খেজুরের রস কিনি ৷ যেটার দাম তারা নিয়েছে পাঁচশ টাকা ৷ এরপর সেই রসের হাড়ি সাইড়ে এনে তরতাজা খেজুরের রসের স্বাদ নিই আমরা ৷ দারুণ স্বাদ ছিলো সেই রসের ৷ সেই স্বাদ আর সুন্দর সময়টার কথা আমি ভুলতে পারবো নাহ ৷ অসম্ভব সুন্দর ছিলো পুরো মুহূর্তটা ৷ তো যাই হোক বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই ৷ সবাই ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবে ৷ খেজুর বাগানের আরো কিছু মুহূর্ত এবং ফটোগ্রাফি আছে , যেগুলো আমি পরবর্তীতে আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো ৷ ধন্যবাদ সবাইকে ৷
🙏 ধন্যবাদ সবাইকে 🙏
আমার নাম নিরব ৷ জাতীয়তা বাংলাদেশী ৷ মাতৃভাষা বাংলা ৷ বাংলায় কথা বলতে এবং লিখতে আমি অসম্ভব ভালোবাসি ৷ পেশাগত দিক দিয়ে আমি একজন ছাত্র , পড়াশোনা করছি অনার্স প্রথম বর্ষে ৷ পাশাপাশি স্টিমিটে ব্লগিং করছি ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ৷ আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও আর্ট , ফটোগ্রাফি এবং লেখালেখি করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে ৷ সব সময় শেখার চেষ্টা করি , নতুন কিছু শিখতে এবং জানতে আমার খুবই ভালো লাগে ৷ আমি বন্ধুদের সাথে সময় কাটতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও পরিবারের সাথে থাকতে এবং সময় কাটাতে আমার প্রচুর ভালো লাগে ৷ আমি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৷ আমি আমার ধর্মকে অনেক বেশি ভালোবাসি এবং সম্মান করি ৷ আমি স্টিমিটে জয়েন করি ২০২০ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৷ ধ ন্য বা দ ...
https://x.com/Nirob7000/status/1878115824705442038?s=19
খেজুরের রস খেতে আমিও অনেক পছন্দ করি। আপনারে তো দেখছি রাতের বেলায় অনেক দূরে খেজুরের রস খেতে গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে দেখেছেন অনেক লোকের ভিড়। ভিড় দেখে তো আমিও অবাক হয়েছি এত রাতে আবার এত ভিড়। যাইহোক সবাই মিলে রস খেতে গিয়ে অনেক মজা করেছেন জেনে ভালো লাগলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
ঠাকুরগাঁও নারগুন খেজুর বাগানে খেজুরের রস পান করা দারুন একটি রোমাঞ্চকর মুহূর্ত আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। তবে আমার মতে এতো রাত্রে খেজুরের রস পান করতে না যাওয়াই ভালো। খেজুরের রস পান করার উপযুক্ত সময় হলো সকাল বেলা। যাহোক দারুন লাগলো আপনার লেখাগুলো পড়ে।
জায়গাটা একটু দূরে , দেরি করে গেলে রস পাওয়া যায় না ৷ তাই রাত্রে যেতে হয়েছে , অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ৷
এখন কিন্তু কালের বিবর্তনের সবকিছু উধাও হয়ে যাচ্ছে। যদিও যে কিছু জিনিস গ্রামে রয়েছে সেগুলো খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টের ব্যাপার । আগে যেগুলো আমরা ছোটবেলায় খুব সহজে খুঁজ পেতাম সেগুলো এখন একদম খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও পাওয়া যায় বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং অনেক পরিশ্রমও টাকার দরকার হয়। সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন খেজুর রস খাওয়ার পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
শীতের রাতের মধ্যে আপনারা খেজুরের রস খেতে গিয়েছিলেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আমাদের গ্রামে ও খেজুরের রস পাওয়া যায় তাই আমরা চাইলে যে কোন সময় খেজুরের রস খেতে পারি। শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার মধ্যে অন্যরকম একটা মজার রয়েছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷