"অলসতায় ভরা সন্ধ্যা বেলার গল্প"

in Incredible India3 days ago
IMG_20250630_231218.jpg

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি খুব ভালো কেটেছে। আমার দিনটাও মোটামুটি ভালো কেটেছে। যদিও ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে মনটা গত কয়েকদিন ধরে খারাপ হয়ে আছে। কিন্তু মন খারাপের সাথে লড়াই করাটা এখন কেমন যেন অভ্যাস হয়ে গেছে।

IMG_20250630_230413.jpg

তবে আজ সন্ধ্যা বেলা থেকে কিছুতেই যেন সময় অতিবাহিত হচ্ছিলো না। সত্যি কথা বলতে পোস্টটা চাইলে তখনই লিখতে পারতাম, কিন্তু কেন জানিনা মনটা খুবই খারাপ লাগছিল বলে চুপচাপ ঘরের লাইট বন্ধ করে, অনেকক্ষণ শুয়ে ছিলাম। আর নিজের পছন্দের গান শুনছিলাম হেডফোনে। এমন সন্ধ্যা কাটানো হয় না অনেক দিন হয়ে গেছে, কারণ গত প্রায় দু বছরের অধিক সময় ধরে এই সন্ধ্যাবেলাটাই কমিউনিটির বুমিং এর কাজে ব্যস্ত থাকতাম।

কত যে প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়েও আমি এই দায়িত্বটি পালন করেছিলাম, সেটাই আজ সন্ধ্যা বেলায় শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম। যখন আমার জামাইবাবু ব্রেন সার্জারি হয়েছিলো তখনো আইসিইউ রুমের বাইরে বসে, বুমিং এর জন্য পোস্ট সিলেক্ট করেছি। শশুর মশাইয়ের জন্য যখন হসপিটালে অপেক্ষা করতাম, তখন পোস্ট সিলেক্ট করেছি। নিজের অনেক মানসিক দুর্বলতার মুহুর্ত যখন অতিবাহিত হয়েছে, তখনও এই একটা দায়িত্ব পালন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।

IMG_20250630_230255.jpg

কখনো কখনো যে বিরক্ত হতাম না একথা বললেন মিথ্যে বলা হবে। কখনো কখনো ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েও এই দায়িত্বটি পালন করতে হয়েছে। তবে একটা সময় কেমন জানি এটা আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিলো। যেখানেই থাকি না কেন বাড়িতে ফিরে সময় মতো বুমিং এর জন্য পোষ্ট সিলেক্ট করে অ্যাডমিন ম্যামকে পাঠাতে হবে, এটা মাথায় থাকতো। এমনকি গতকাল পর্যন্তও ছিলো।

তাই আজ হঠাৎ করেই সন্ধ্যা দেওয়ার পরে যখন ডায়েরির পাতা খুলে বসার কথা মনে হলো, তখন ভাবলাম যে নিয়মের পরিবর্তন হয়েছে। যে বিষয়ে গতকালই ডিসকর্ডে সকলের সাথে কথা বলেছি। আর নিমেষের মধ্যেই ব্যক্তিগত কারণের সাথে কর্মজীবনের এই পরিবর্তনের কথা ভেবে মন খারাপের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে গেলো।

সেই সময় আর পোস্ট লিখতে ইচ্ছে করছিলো না বলে ব্যাগ থেকে হেডফোন বের করে ইউটিউবে পছন্দের গান চালিয়ে চুপচাপ শুয়ে রইলাম। আর পুরনো দিনের কথাগুলো ভাবলাম। সত্যিই আমরা চাইলে পারি না এমন হয়তো কোনো কাজ নেই। না হলে ওই কঠিন সময়গুলোতে বোধহয় এই দায়িত্বটি পালন করা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না।

IMG_20250630_230120.jpg

তবে আজ থেকে স্টিমিট টিমের কিছু পরিবর্তন যেন আমারও ডেইলি রুটিনে পরিবর্তন এনে দিলো। ঠিক যেমন দায়িত্বটির সাথে এডজাস্ট করতে আমার সময় লেগেছিলো, তেমনি হয়তো এই পরিবর্তন এর সাথে এডজাস্ট করতেও সময় লাগবে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অভ্যাস হয়ে যাবে।

কিছু পরিবর্তন সত্যিই ভালো, এই কথাটা আগেই জানতাম। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে যখন পরিবর্তন চোখে পড়ে, তখন এই কথাগুলোর প্রতি বিশ্বস্ততা আরও বেড়ে যায়। আজও তেমন একটা ঘটনা ঘটেছে। কর্ম জগতের মানুষের সাথে শুধুমাত্র কাজের সম্পর্ক রাখাই শ্রেয়। কারণ যদি সকলের সাথে মন দিয়ে মেশা হয়, তাহলে একটা সময়ের পর কষ্ট পাওনা হবেই।

ব্যক্তিগত জীবনে আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের কোনো না কোনো সম্পর্কের কারণে বোধহয় কষ্ট পেয়ে থাকি, তাই কর্ম জগতের মানুষগুলোর কাছ থেকে কষ্ট পেয়ে, আর সেই ভার বাড়িয়ে কি লাভ? কথাটা হয়তো আজ লিখছি, কিন্তু এই কাজটাই অনেকে করতে পারে না, তার মধ্যে আমি আর দিদি অন্যতম।

আর ঠিক এই কারণেই কর্ম জগতে পরিচয় হলেও ব্যক্তিগত জীবনে দুজন দুজনের এত কাছের হয়ে যেতে পেরেছি। মানসিকতার মিল থাকলে, সম্পর্কে রক্তের মিল থাকার প্রয়োজন হয় না। এটা আমি আমার জীবনে দিদির সাথে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর আরও বেশি করে বুঝেছি। কারনগুলো আর আলাদা করে উল্লেখ করলাম না, কারন আমার পূর্বের অনেক পোস্টে এই বিষয়ে আমি আমার অনুভূতি শেয়ার করেছি।

IMG_20250630_231024.jpg

যাইহোক আজ একটা অলসতায় ভরা সন্ধ্যা কাটালাম, কিংবা বলতে পারেন মন খারাপের সন্ধ্যা। যে দায়িত্বটা একটা সময় ভয়ের এর কারণ ছিলো, সেটাই এক সময় খারাপের কারণ হয়ে উঠবে, এটা সত্যিই আশা করিনি।

তবে কথায় আছে যা হয় ভালোর জন্যই হয়। নিশ্চয়ই এর পিছনেও ঈশ্বরের কোনো না কোনো ভালো উদ্দেশ্য আছে, যার উত্তর আছে শুধু সময়ের কাছে। তাই সেই ভালো সময়ের অপেক্ষায় আজকের লেখা শেষ করলাম। প্রত্যেকে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 9 hours ago 

খুব ভালো লিখেছিস! মন ভরে গেলো লেখাটা পড়ে।
সত্যি দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা অনেকেই দিতে পারে না, আর তাই হারিয়ে গেলে খুঁজি খুঁজি রব আমাদের আগেও অব্যাহত ছিল আর ভবিষ্যতেও থাকবে!

মুশকিল কি জানিস আমাদের মত ব্যতিক্রমী ব্যাক্তিরা চাইলেও এড়িয়ে যেতে পারে না অনেক কিছু!
যেমনটা তুই লিখেছিস বিভিন্ন চাপের মুখে দায়িত্ব পালনের কথা, একই ভাবে আমিও সেটাই চালিয়ে গেছি এবং যাচ্ছি;
কারণ শ্রী কৃষ্ণ গীতায় লিখেছেন

"ওঁ কৃষ্ণায় বাসুদেবায় হরয়ে পরমাত্মনে। প্রণত ক্লেশনাশায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।"