Better Life with Steem|| The Diary Game|| 16- 08-2025||
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
হে কৃষ্ণ করুণা সিন্ধু, দীনবন্ধু জগৎপতে।
গোপেশ গোপীকাকান্ত রাধাকান্ত নমস্তুতে।।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই পৃথিবীতে বিভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়েছেন । তিনি সব সময় দুষ্টের দমন এবং সৃষ্টির পালন করেছেন ।এই কথাগুলো সনাতন ধর্মের অনুসারীরা সকলে বিশ্বাস করি ।আমাদের সেই ধারণা থেকে আজ ১৬ই আগস্ট ছিল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী। যেহেতু আমার বাসায় গোপাল সোনা আছে তাই আমি প্রতি বছরে চেষ্টা করি আমার সাধ্যমত এই দিনটি পালন করার ।
অনেক দিন অসুস্থ থাকার পরে কিছুটা সুস্থ হলেও এখনো দুর্বলতা ততটা কাটেনি ।অসুস্থ শরীর নিয়ে উপবাস থেকে পূজোর আয়োজন করা আমার পক্ষে হবে না।আমি কি সম্পূর্ণ উপবাস থাকতে পারবো? আমি কি সব নিয়মকানুন পালন করতে পারবো? সেই চিন্তা ছিল। মা উপবাস থাকতে চেয়েছিলেন কিন্তু মা অসুস্থ তাই তাকে নিষেধ করলাম।
![]() | ![]() |
---|
মা সবার জন্য নিরামিষ রান্না করবে ।আমি গোপাল সোনার জন্মাষ্টমীর সমস্ত কিছু আয়োজন করব ।আর্মি বাবু গতকাল রাতে ফল ও ফুল নিয়ে এসেছিলেন । আজ সকাল বেলা শুধুমাত্র দই ও মিষ্টি এগুলো আনা হলো ।আমি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সকাল থেকে লেগে পড়লাম ঠাকুর পূজোর কাজে । পুজোর জন্য আলাদা থালা বাটি থাকে, সেগুলো পরিষ্কার করতে হয় ।যেহেতু পূজোর বেশির ভাগ থালাবাসন পিতলের ছিল এবং অল্প কিছু কিছু ষ্টিলের থালাবাসন ছিল।
![]() | ![]() |
---|
সমস্ত থালাবাসন পরিষ্কার করে নিলাম । সকাল বেলা মা ঘুম থেকে উঠেই সবার জন্য রান্না করে নিল কারণ তাদের নিরামিষ রান্নার পরে আমি সেই রান্নার ঘরের সমস্ত কিছু পরিষ্কার করে পুজোর আয়োজন করব ।
এই পুজো উপলক্ষে আমার ছোট বোন পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলে আসলো। আজ সরকারি ছুটি ছিল তাই ওরা সকাল সকাল চলে আসে । মন্দির সাজানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার ঘরটাও সাজিয়ে নিলাম । নতুন একটি হোম টেক্সটাইল এর বেড কভার নিলাম ।গোপাল ঠাকুর তালের ক্ষীর, তালের পিঠা, খুব পছন্দ করে, আজকে বিভিন্ন ফলের সাথে তালের পিঠা, পুলি , নাড়ু, পাটিসাপটা পিঠা, লুচি, সুজি এগুলো করেছি।
![]() | ![]() |
---|
মায়ের রান্না হয়ে যাবার শেষে রান্নাঘর পরিষ্কার করে আমি প্রথমে পিঠাপুলি গুলো তৈরি করে নিলাম ।এগুলো তৈরি করতে করতে আমার বিকেল হয়ে গেল। এরপর আমি ফলগুলোকে কেটে নিলাম । গোপালকে অভিষেক করানোর জন্য ফলের রস করে নিলাম এবং ফুল,দুধ,মধু ,তুলসী পাতা দিয়ে অভিষেক করলাম। বোন আসার সময় তুলসী পাতা নিয়ে এসেছিল ।
আমার ফ্ল্যাটে তেমন একটা রোদ পড়ে না তাই কোন ফুল গাছ কিংবা তুলসী গাছ হচ্ছে না ।ফুল বেলপাতা কিনে নিয়ে এসেছিল। এক এক করে সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়েছি। তবে মা অনেক সাহায্য করেছেন । সত্যি মা বলে কথা, মেয়ে একা কাজ করবে তা মা কিন্তু দেখতে পারে না ,তাই অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও মা এসে মেয়ের সাথে কাজে সাহায্য করেন। সত্যি আজ মনে হচ্ছে, এখন নিজের সংসারে কত কাজ করছি ,আর যখন বাবার বাড়িতে ছিলাম তখন খাবার পরে প্লেটটাও পরিষ্কার ধুয়ে রাখেনি ।
![]() | ![]() |
---|
এখন যতটা আমি কাজ করি তার যদি চারভাগের এক ভাগ মায়ের সাথে কাজ করতাম তাহলে মা কতই খুশি হতেন। থাক, মাও চায় না তার মেয়ে তার বাড়িতে কাজ করুক। মা-বাবা চায় তার মেয়ে তার বাড়ির রাজকন্যা হয়ে থাক। আমাদের গোপাল সোনা ( বোনের ছেলে) অনেক দুষ্ট, সে কোথাও স্থির হয়ে বসে না ।আমি পুজোর আয়োজন করছি , অন্যদিকে আমার মেয়ে এবং বোন গোপাল সোনাকে সাজাচ্ছে ।
বোন ধুতি আনতে ভুলে গিয়েছে তাই আমার একটি লেহেঙ্গার ওড়না দিয়ে ওকে ধুতি বানিয়ে পড়িয়েছিল, সাথে কিছু জুয়েলারি । গোপালের মতো সাজিয়েছিল । সে এতটাই চঞ্চল ছিল যে তার ছবি তোলাটা খুবই কঠিন ছিল। একদম নন্দলালের মত এতটাই সে চঞ্চল। তার জন্য সকলে আশীর্বাদ ও দোয়া করবেন।
সবকিছু গুছিয়ে রেখে আমরা শুভ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছি। কিছুক্ষণ পর শুভ মুহূর্ত চলে আসলো এবং আমরা হলুদ বেটে নিলাম। এবার গোপাল সোনার অভিষেকের সময় চলে আসে। প্রথমে হলুদ ,মধু ,দুধ এভাবে এক এক করে সমস্ত ফলের রস দিয়ে অভিষেক করলাম। ফুল দিয়ে অভিষেধ করলাম, তুলসী পাতা দিয়ে অভিষেক করলাম ।আমি মন্ত্র তন্ত্র ততটা জানিনা ।এটুকু জানি ,ভগবানকে যদি আমি এক মনে ভক্তি ভরে স্মরন করি তবে অবশ্যই ভগবান আমার প্রার্থনা গ্রহণ করবেন ।
![]() |
---|
আমি কি করব, সমস্ত কিছুই যেন তিনি আমাকে দিয়ে করাচ্ছেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে, উপবাস থেকে এই সমস্ত কাজগুলো করেছি , কিন্তু একটুকু ক্লান্ত লাগেনি ।মনে হচ্ছে গোপাল সে নিজেই আমাকে দিয়ে সমস্ত কিছু করিয়ে নিয়েছে। এক এক করে ।অভিষেকের পর্ব শেষ হলো, এবার গোপালকে নতুন পোশাক পড়ানো হবে । আমি অসুস্থ থাকার কারণে গোপালের পোশাক আগে তৈরি করতে পারেনি ।আজ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে প্রথমে গোপালের পোশাক তৈরি করে নিয়েছি ।আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার গোপাল ঠাকুরকে নিজের হাতে সাজাতে । আমি গোপালের পোশাক তৈরি করতে ভালোবাসি।
![]() | ![]() |
---|
এখানে ইস্কন মন্দির কাছে ছিল না আর আমিও সময় পাইনি তাই এবার আর নিরামিষ কেক তৈরি করতে পারিনি। প্রেস্টি ট্রিট থেকে আর্মি বাবু বাচ্চাদের জন্য একটি চকলেট কেক নিয়ে আসলো। তবে এটি কিন্তু আমি পূজোর ওখানে ভোগের পাশে দেইনি ।এটি বাচ্চারা কেটে গোপালের জন্মদিন পালন করল। জন্মাষ্টমী আয়োজনের সমস্ত কিছু সম্পন্ন করি এবং ভগবানের কাছে সবার জন্য মঙ্গল কামনা করি। শ্রীকৃষ্ণের শতনাম পাঠ করি , গীতা পাঠ করা হলো এবং সব শেষে প্রসাদ বিতরন করলাম ।
![]() | ![]() |
---|
সবার ঘরে ঘরে প্রসাদ বিতরণ করা হলো ।এ সমস্ত কিছু করতে রাত বারোটা বেজে গেল। কখন যে সময় গুলো পার হয়ে যাচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না ।আবার সকালবেলা উঠতে হবে ।মেয়ের পরীক্ষা আছে তাই রাতে আমি ঠাকুরের থালাবাসন অল্প পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম ,তাতে মায়ের কষ্টটা কম হবে ।কারণ কালকেও আমি বাসায় রান্না করতে পারবো না, মাকে রান্না করতে হবে।
কালকে আবার জন্মাষ্টমী পারণ এর ভোগের প্রসাদ রান্না করতে হবে। সকাল বেলা যা করব সেগুলো গুছিয়ে রেখেছিলাম। সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিতে রাত একটা বেজে গেল ।বাবার চোখে ড্রপ দেওয়ার সময় হলো ।বাবার চোখের ড্রপ দিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। এভাবে কেটে গেল আমার জন্মাষ্টমীর দিনটি। আশা করি আপনাদের দিনগুলো ভালো কেটে যাচ্ছে।
💦💥2️⃣0️⃣2️⃣5️⃣ This is a manual curation from the @tipu Curation Project
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 2/8) Get profit votes with @tipU :)