রোদে দেওয়ার ঝামেলা ছাড়াই সুস্বাদু ”চালতার আচার” রেসিপি
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আশা করি সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। শীতের এই মিষ্টি দিন সবাই সুন্দরভাবে উপভোগ করছেন। আমাদের অঞ্চলে যতটা ঠান্ডা পড়েছে তা আমরা মানিয়ে নিতে পারছি কিন্তু এমন অনেক অঞ্চল আছে যেখানে প্রচন্ড পরিমাণে ঠান্ডা পড়ছে। সেখানে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রী সেলসিয়াস এর নিচে নেমে যাচ্ছে ।
শীতে গ্রামবাংলায় পিঠে-পুলি, রসের পায়েস খাওয়ার ধুম পড়ে যাচ্ছে। আপনারা সকলেই জানেন যে, আমি শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। শীতের এই দিনে গ্রামের বাড়িতে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় ।গ্রাম বাংলার প্রকৃতি খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করা যায়। তবে এখানে প্রচন্ড ঠান্ডা ।তারপরও সকলের সাথে আনন্দের সময়টুকু ভাগাভাগি করে নেওয়া অন্যরকম প্রশান্তি এনে দেয়।
আমরা প্রতি বছর একবার হলেও বাড়িতে আসার চেষ্টা করি। আর্মি বাবু ছুটি পাক আর না পাক মা-মেয়ে চেষ্টা করি একবার হলেও বাড়িতে আসার ।আসার সময় অনেক কিছু দিতে চেয়েছিল কিন্তু আমার সেরকম কিছু ভালো লাগেনা ।তবে চালতাটা আমি খুবই পছন্দ করি আর চালতা গুলো অনেক মিষ্টি ছিল। আমি গ্রামের বাড়িতে থাকাকালীন চালতার আচার বানিয়ে ছিলাম ।ওদের জন্য রেখে এসেছি আর অল্প কিছু আমি নিয়ে এসেছি।কিছু চালতা আমি কেটে নিয়ে এসেছি, আচার তৈরি করব বলে।
এই আচারগুলো আমাদের স্কুলের সামনে মামারা বিক্রি করতেন ।স্কুল ছুটি হওয়ার সাথে সাথে ৫ টাকা কিংবা ১০ টাকার আচার কিনে খেতে খেতে বাড়িতে আসতাম। আমি বরাবরই টপ খেতে অনেক পছন্দ করি ।এই আচার তৈরি করতে রোদে দেওয়ার কোন বাড়তি ঝামেলা নেই । আমি গতকাল রাতে এই আচারটি তৈরি করেছিলাম তাই আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করছি। খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন লোভনীয় আচার।
আচার তৈরি করার প্রয়োজনীয় উপকরণ:
![]() |
---|
Made by Canva |
উপকরন | পরিমান |
---|---|
চালতা | তিনটা |
লবণ | স্বাদমতো |
শুকনো মরিচ | পাঁচ থেকে ছয়টি |
সরিষা | এক চামচ |
মরিচের গুঁড়া | ২ চামচ |
চিনি / খেজুরের গুড় | স্বাদ মতন |
পাঁচফোড়ন | এক চামচ |
ধনিয়া | এক চামচ |
তেল | ১ টেবিল চামচ |
রসুন | বড় বড় চারটি কোষ |
রন্ধন প্রণালী
ধাপ ১ |
---|
![]() |
---|
চালতা কেটে নিয়ে এসেছিলাম। সেগুলো ছোট ছোট লম্বা করে কেটে নিলাম এবং উপর থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়েছি। অনেকে খোসা সহ আচার তৈরি করে থাকেন। রোদে দেওয়ার ঝামেলা ভেবে যারা আচার দিতে ঝামেলা বোধ করেন তাদের জন্য আজকের রেসিপি।আশা করি, অনেক উপকার হবে। চালতা গুলো বেশি করে ধুয়ে নিতে হবে।
ধাপ ২ |
---|
![]() | ![]() |
---|
জল ঝরিয়ে নিলাম। একটি পাত্রে জল ফুটতে দিলাম । জল ফুটে আসলে তাতে চালতা গুলো দিয়ে দিব ।চালতা গুলো ৮০% সিদ্ধ করে নিব। সেদ্ধ হলে জল ঝরানোর জন্য কিছু সময় রেখে দিব। এরই মাঝে আমি শুকনো মসলাগুলো তৈরি করে নিব।
ধাপ ৩ |
---|
কিছু পাঁচফোড়ন নিলাম, আস্ত ধনিয়া , শুকনো মরিচ হালকা করে ভেজে নিলাম । এগুলো আধভাঙ্গা করে নেব। একদম মিহি করে গুড়া করব না।আপনি সাদা সরিষা অথবা কালো সরিষা যে কোন সরিষা নিতে পারেন। কালো সরিষা ছিল তাই আমি কালো সরিষা নিলাম ।ভিনেগার দিয়ে সরিষা বেটে নিলাম ।এখানে কোন জল ব্যবহার করব না ।
ধাপ ৪ |
---|
![]() | ![]() | ![]() |
---|
চুলায় কড়াই বসিয়ে দিলাম এবং তাতে এক টেবিল চামচ সরিষার তেল দিলাম। আজকের আচারটি হবে টক ঝাল মিষ্টি তাই এখানে বেশি তেল ব্যবহার করব না ।তেল গরম হলে তাতে অল্প কিছু পাঁচফোড়ন ,দুটো শুকনো মরিচ এবং রসুন কুচি দিয়ে ভেজে নিব। যখন রসুনগুলো হালকা বাদামি রঙে আসবে তখন সেই সিদ্ধ করে রাখা চালতাগুলো দিয়ে দেব এবং কিছু সময় এগুলো ভেজে নিব , এর সাথে পরিমাণ মতো লবণ ও মরিচ গুঁড়ো দিয়ে আরো কিছু সময় কষিয়ে নিব।
ধাপ ৫ |
---|
![]() | ![]() |
---|
চলতা গুলো কষানো হলে পরিমাণ মতো খেজুরের গুড় দিলাম। গুড় না পেলে চিনি ব্যবহার করা যায়। এখন খেজুরের গুড়ের অন্যরকম একটি ফ্লেভার পাওয়া যায় । আমি খেজুরের গুড় দিয়ে আচারটা তৈরি করলাম। গুড় ভালো করে মিশিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রান্না করবো। এক্ষেত্রে চুলার আচঁ যেন বেড়ে না যায়। লো মিডিয়ামে রেখে এই আচারটি তৈরি করতে হবে ।যতটা ধৈর্য নিয়ে করব ততটাই আচার সুস্বাদু হবে ।শখের জিনিস পেতে হলে তো একটু কষ্ট করতেই হবে ।
ধাপ ৬ |
---|
![]() | ![]() |
---|
সরিষা বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে ঢেকে দিব আর মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে নেড়ে দিতে হবে ।তা না হলে কড়াইতে লেগে যেতে পারে ।চালতা থেকে অনেক জল বের হবে তাতেই চালতা গুলো পুরাপুরি সিদ্ধ হয়ে যাবে। চুলার আচঁ লো রেখে রান্না করতে হবে ুযখন জল শুকিয়ে ঘন হয়ে আসবে তখন ভেজে গুঁড়ো করে রাখা মসলাগুলো দিয়ে দিব।
![]() |
---|
খেজুরের গুড়, ভাজা মসলা এই সবমিলিয়ে সুন্দর একটি গন্ধ আসছে । আচারের রঙ পরিবর্তন হয়ে গেছে ,কত সুন্দর রং চলে এসেছে তবে আমি এখানে কোন কালার ব্যবহার করিনি । তৈরি হয়ে গেল আমার মজাদার টক ঝাল মিষ্টি আচার। যাতৈরি করতে রোদে দেওয়ার কোন ঝামেলা ছিল না ।নতুন কোন রেসিপি নিয়ে আবার দেখা হচ্ছে ।
◦•●◉✿ শুভ রাত্রি✿◉●•◦

এটা অনেক বেশি লোভনীয় একটা খাবার আমিও মাঝে মাঝে এটা তৈরি করি। তবে এই বছর সময়ের অভাবে করা হয়ে ওঠেনি অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে থাকার কারণে এবার আচারের পরিমাণটা অনেক বেশি কমে গেছে আপনার চালতার আচার দেখে সত্যিই অনেক বেশি লোভ লেগে গেল অসংখ্য ধন্যবাদ লোভনীয় আচার তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবেন।
আপনার শতব্যস্ততার মাঝে পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দিন দিন আমাদের ব্যস্ততা এতটাই বেড়ে গেছে যে বাড়তি একটি কাজ করার আমরা সময় পাচ্ছিনা। শীতের দিন হয়তো ছোট বলে তাই !নাকি আমাদের কাজের চাপ বেড়ে গেছে কিছুই বুঝতে পারছি না ।
সত্য কথা বলতে আমি গতকালকে একটা চালতা আচার বানাবো বলে কেটে ধুয়ে পরিষ্কার করে রেখেছি, আর এরই মধ্যে আপনার এত সুন্দর লোভনীয় রেসিপি সত্যি আমার কাছে বেশ ভালই লাগছে।
অবশ্যই আপনার রেসিপিটা দেখে এই ভাবেই বাসাতে তৈরি করবো এবং বছরজুড়ে সংরক্ষণ করব, অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার মনে হয়, আমরা সকল মেয়েরাই টক বেশি পছন্দ করি, আর আচার হলে তো কোন কথাই নেই ।চালতার আচার তৈরি করতে একটু ঝামেলা হয়। তবে চালতার আচার খেতে বেশ লাগে এবং অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
@muktaseo মিষ্টি চালতার আচারে রসুনের ব্যবহার আগে কখনও দেখিনি!
আপনি নিশ্চই আগেও তৈরি করেছেন আচার এইভাবে? আর ভাললাগে বলেই হয়তো পুনরায় তৈরি করেছেন।
স্কুল জীবনে বিভিন্ন স্বাদের আচার উপভোগ করেনি এরকম ছাত্র ছাত্রী আছে বলে আমার মনে হয় না!
আমাদের গার্লস স্কুলে টিফিনের সময়, বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল, স্কুলের মূল গেট বন্ধ থাকতো, যিনি দারোয়ান ছিলেন তিনি ছিলেন বিহারী আর নাম ছিল বৈজু!
খুব ভালো মানুষ ছিলেন! আমরা যখন টিফিনের সময় মেইন গেটের নিচে যেটুকু ফাঁকা ছিল, তার নিচ থেকে হাত ঢুকিয়ে আচার, চুরমুর কিনতাম, আমাদের কিছুই বলতেন না।
আগের মানুষ, পরিবেশ সহ খাবারের তালিকায় এখন ঢুকে পড়েছে বিদেশী খাবার, তাই আপনার স্কুলের উল্লেখিত কথাগুলো একটু সময়ের জন্য হলেও আমাকে স্কুল জীবনে নিয়ে গিয়েছিল।
দিদি @sduttaskitchen আপনার শত ব্যস্তর মাঝে পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। মিষ্টি আচার হোক কিংবা অন্য যে কোন আচার হোক আমি সবসময় কিছু রসুন ব্যবহার চেষ্টা করি ।কারণ রসুন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
আমি আমলকির আচার তৈরি করতেও গোটা রসুন ব্যবহার করে থাকি। যেহেতু আমার বাবা-মা দুজনের হাই প্রেসার ।ওদের জন্য রসুন খুব উপকারী ।
আমাদের জীবনের সব থেকে সুন্দর সময় হলো আমাদের ছাত্র জীবন। সোনালী দিনের সেই স্মৃতিগুলো আমরা কখনই ভুলতে পারবো না ।
https://x.com/muktaseo/status/1879869643588047222
রান্নাবান্না সম্পর্কে আমার তেমন কোন আইডিয়া নেই, এমনকি এখন লেখাগুলো দেখছি এবং একটু পরেই পর্যায়ক্রমে সব ভুলে যাব। কিন্তু এইসব চমৎকার চমৎকার মজাদার খাবার আমার কাছে বেশ ভালোই লাগে। ছোটবেলা কত আচার খেতাম সেই কথাগুলো মনে পড়ে গেল, ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে আচারটা খেতে খুবই মজার হয়েছে।
আমার পোস্টটি পরিদর্শন করার জন্য এবং সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার শেয়ার করা চালতার আচার রেসিপিটি সত্যিই খুবই সহজ এবং সুস্বাদু মনে হচ্ছে। রোদে দেওয়ার ঝামেলা ছাড়াই টক ঝাল মিষ্টি আচার তৈরি করার এই পদ্ধতি বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। চালতা, মশলা, এবং খেজুরের গুড়ের মিশ্রণ খুবই স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু। গ্রামবাংলার শীতকালীন পরিবেশে এই আচার খাওয়ার আনন্দ অনেক বাড়িয়ে দেয়। একে একে সমস্ত প্রক্রিয়া খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন, যা একে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। এই রেসিপিটি ট্রাই করার জন্য অনেকেই উৎসাহিত হবেন। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আপু একদম সঠিক বলেছেন, গ্রামে অনেক কিছুই পাওয়া যায় যা আমরা শহরে বসে পাই না ।শীতের দিনে আমরা বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরি করে থাকি ।রোদে দেওয়া অনেকটাই ঝামেলা মনে হয়। সেজন্য এভাবে সহজ পদ্ধতিতে আমরা আচার দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখতে পারি । আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্ট পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।