আমার সারাদিনে করা কিছু কাজ।
গ্রামীণ ভাষায় একটা কথা প্রচলিত আছে, মুরগীর পা বিশ্রাম নিতে পারে, কিন্তু আমার পায়ের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই। এই কথাটা একজন নিয়োজিত গৃহিণী সংসারিক জীবনের সাথে মিলে যাবে। জানিনা কার কতটুকু মিলবে তবে আমার ১০০%। ভাইরে ভাই কাজ করতে করতে একটু বিশ্রাম নাও সুযোগ নেই।
মাঝেমধ্যে নিজেকে প্রশ্ন করতে বড্ড শখ জাগে কি হবে এত কষ্ট করে সংসার ছেলে মেয়ে সন্তান এদের পিছনে সময় দিতে দিতে একটা সংসার কে সুন্দর মতো গুছিয়ে রাখতে।এত বেশি সময় যায় যে নিজের খবর নেওয়ার নিজেরই সুযোগ থাকে না। তারপরেও যখন কাছের মানুষগুলো বলে তুমি সারাদিন কি এমন কাজ করো, আর আশেপাশের মানুষ তো আছেই,,তখন আমার মনে হয়,এদের কে দিয়ে 💃 ড্যান্স দেওয়াই।
আমার হাতে তৈরি করা দই।
গতকাল কে মেয়ে হঠাৎ বলছিল দই খাবে, তো তাই ওর কথা মত আমি গতকালকে একটা দুই পাতিয়ে রেখেছিলাম,দুধ টা কে খুব ভালোভাবে চিনি দিয়ে জাল করেছি, এরপরে দুধ টা ঠান্ডা করে তার মধ্যে টক দই দিয়ে সুন্দর ভাবে মিশিয়ে নিয়েছি।এরপরে একটা গরম জায়গায় কাপড় দিয়ে দিয়ে রেখে দিয়েছিলাম প্রায় কয়েক ঘন্টা এরপরে আজ সকাল বেলা দুইটা বের করে দেখছি এত সুন্দর সেট হয়েছে সত্যি দেখে আমার অনেক ভালো লাগছিলো।আপনারা চাইলে এরকম বাসায় তৈরি করতে পারেন নিজের হাতে তৈরি করে খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম। এরপরে খানিকটা সময় নরমাল ফ্রিজে রেখেছিলাম এবং ফ্রিজ থেকে বের করে আমরা সবাই আনন্দ করে খেয়েছিলাম।
হলুদ এবং মরিচের গুড়া।
আমি দেখেছি আমার শ্বশুর থাকতে এক বছরের যত মরিচের এবং হলুদের গুড়া প্রয়োজন ছিলো তিনি মেশিন থেকে ভাঙ্গিয়ে এনে দিতেন। এখন যেহেতু সে নাই তাই আমাকে করতে হয়েছে এই গুরা কিছুদিন আগে কিনে এনেছিলাম আজ একটু রোদ্রে দিয়ে নিলাম কারণ রোদে দিলে অনেক দিন ভালো থাকে। শুধু রোদে দিয়ে রাখলেও হয় না কাছে বসে দেখাশোনা করতে হয়। যেমনটা আমি করেছিলাম ঘরের অন্য কাজ করলেও মনটা আমার এদিকে ছিল পরে। না হয় দেখা যাবে কখন ময়লা পরে পাখি আসে এবং বাতাসা উড়েও যেতে পারে।
বিকাল বেলা বাজারে যাওয়া
যেহেতু একদম মেন রাস্তার সাথে আমাদের বাড়ি তাই তার পাশেই বাজার রয়েছে হেটে গেলে ৫ মিনিটের মত লাগতে পারে, তো বিকেল বেলা সেখানে গিয়েছিলাম এবং যাওয়ার সময় খানিক টা বৃষ্টি হচ্ছিলো রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় দেখলাম একটা লোক যাচ্ছে ছাতি মাথায় দেখে আমি একটা ছবি তুললাম। কেন জানিনা তাকে দেখতে বেশ ভালো লাগছিল আমার চোখে।
এরপর বাজারে গিয়ে বেশ কিছু জিনিসপত্র কিনে জিরা শ্যাম্পু সুজি মুড়ি এসব কেনাকাটা করার পরে বাসায় চলে আসি।বাসায় এসে অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম এবং বাসায় আসতে আসতে পেরে মাগরিবের আযান দিয়ে দিয়েছিল। সারাদিন অনেক কাজ করা থাকে যেগুলো তুলে ধরা চাইলেও যায় না। তাইতো আমি আমার অল্প কিছু কাজের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।আমি আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে আমার আজকের পোস্টটা। তো সবাই ভালো সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
সত্যি আপু আপনার লেখাটা পড়ে মনটা ভরে গেল। প্রতিটি লাইনে যেন এক জনমের গৃহিণী পরিশ্রম আর ভালোবাসা ফুটে তুলেছেন। আপনি যেভাবে সংসার সন্তান নিজের কাজ সব সামলে দিচ্ছেন তা সত্যিই অনুকরণীয়। নিজের হাতে দই বানানো বাজার করা হলুদ মরিচের রোদে দেওয়া সবকিছুতেই আপনার যত্ন আর আন্তরিকতা ফুটে উঠেছে। আর সত্যিই অনেকে বাইরে থেকে দেখে বুঝতেই পারেনা আমাদের মত গৃহিনীদের প্রতিদিনের পরিশ্রমটা কতখানি। তবুও নিজের মানুষ হোক কাছের মানুষ হোক বা বাইরে মানুষ হোক যদি বলে সারাদিন তুমি কি করেছে তখন অনেক বেশি খারাপ লাগে। যাইহোক আপনার লেখাটা তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল গৃহিণী কতটা পরিশ্রম করে তার সংসারের প্রতি তার ছেলে মেয়েদের প্রতি তার পরিবারের প্রতি।