রথের দিনের মুহুর্ত
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি রথযাত্রা উৎসবের দিনের কিছু মুহূর্ত।।
ছোটবেলা থেকে রথ আসলেই একটা কথা মাথাতে বারবার ভাসতে থাকে, সেটা হল -
"আমরা রথ দেখতে যাব, আমরা পয়সা কোথায় পাবো।"
ছোটবেলাকার বইয়ের পাতায় এই দুটো লাইন আমার মনকে যেভাবে আঁকড়ে ধরেছিল ,সেই আঁকড়ে ধরে থাকা ছোটবেলা এখনো চোখে ভাসে রথের দিন আসলেই। এই ছড়া কেটে কেটে দাদু ঠাকুরমার কাছে পয়সা চাইতাম রথের দিনে।
আর রথের মেলার জিলিপি ,পাপড় ভাজা খাওয়ার জন্য, মাটির ভার কেনার জন্য দাদু ঠাকুমা আমাকে টাকা দিত ।সেই টাকা পকেটেই থাকতো । খরচ হতো না।দাদুর সাথে হাত ধরে আমাদের বাড়ির পাশেই রথ দেখতে যেতাম।। সেখান থেকে যখন মাটির ভাঁড় কিনে আনতাম, তখন প্রথমে দাদু ঠাকুরমার দেওয়া রথ দেখতে যাওয়ার টাকাটা ওই মাটির ভাঁড় এই ফেলতাম।
আমাদের এলাকায় যেখানে রথ হয়, সেটা আমাদের শোরুমের একদম সামনে আর আমার বাড়ি থেকে হাঁটা পথে মোটামুটি তিন মিনিট কি তারও কম। তাই রথের মেলা বাড়ির কাছাকাছি থাকায় সোজা রথ আর উল্টো রথে না চাইতেও এমনকি বাড়িতে থাকলেও জিলিপি ,বাদাম ভাজা ,পাপড় ভাজা আরও বিভিন্ন ধরনের খাবার বাড়িতেই পৌঁছে যায়।
আমাদের বাড়ির এখানে, যেখানে রথ হয় ,সকালবেলায় মোটামুটি বারোটার পর ওরা অর্থাৎ ক্লাবের যারা মেম্বাররা রয়েছে ,তারা রথটা নিয়ে ঘুরে আসে। ওই সময় মা বারবার বলে একটু রথের দড়ি টেনে আসতে। প্রত্যেক বছর তোর সম্ভব হয়না। কাজের ব্যস্ততার কারণে এই কাজটা করা হয়ে ওঠেনা। তবে রথ দেখতে গেলে অবশ্যই রথের দড়ি টানি। কিন্তু মা বারবার বলে, সকালবেলায় যখন নাকি রথ নিয়ে সকলে বের হয় তখন নাকি দড়ি টানতে হয়।
যাইহোক এইবারে রথের দিন ছিল গত পরশু অর্থাৎ শুক্রবার। শুক্রবার দিন সকাল বেলার দিকে স্নান খাওয়া দাওয়া করে প্রায় বারোটার পর আমি আর ঈশান মিলে আমাদের শোরুম এ গিয়ে বসে ছিলাম ।যেহেতু রথটা যখন যাবে আমাদের শোরুমের সামনে দিয়ে যাবে ,তাই ওখান থেকে ভালোভাবেই দেখা যাবে।
একটু পরেই আওয়াজ শোনা গেল মাইকের আর সবাই বাচ্চারা এবং কিছু জন মিলে রথটাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকলো। আমি আর ঈশান গিয়ে দৌড়ে রথ আর দড়ি টেনে , প্রণাম করে চলে আসলাম। রথটাকে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিল। রথ যেতে যেতে গাছের সাথে আটকে যাচ্ছে , আর বার বার সেই গাছের ডাল গুলো ছেলেরা উপরে উঠে সরিয়ে দিচ্ছে।এই ভাবে করতে করতেই রথ চলতে থাকলো।
আমাদের কৃষ্ণনগরে অনেক জায়গায় বেশ বড় বড় রথ হয় ।আসলে বাড়ির কাছেই ছোটখাটো মধ্যে এরকম রথের পুজো হয় বলে আমি আর অন্য জায়গায় যাই না ।তবে উল্টো রথের সময় বাকি দুটো জায়গায় যদি যেতে পারি ,অবশ্যই আপনাদের সাথে সেই জায়গাগুলোর এবং রথের ছবি শেয়ার করবো।
ছোটবেলা থেকে রথ দেখতে যাওয়া নিয়ে প্রচুর স্মৃতি রয়েছে। তবে আমাদের পাড়ার রথ যখন ঘোরাতে নিয়ে যাওয়া হয় তখন কোনদিনই আমি দেখতে পাইনি। প্রত্যেক বছর আমার বড় মামা ওই রথের সাথে রথ টানতে যাই। তোমার পোষ্টের মাধ্যমে আমাদের পাড়ার রসটা ঘোরাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেই দৃশ্য দেখতে পেলাম। রথ মানেই জিলিপি আর পাপড় ভাজা খাওয়া। তোমার পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো।