জল রঙে আঁকা

in Incredible India2 days ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আবারো আপনাদের কাছে শেয়ার করতে চলেছি আমারই আঁকা একটি ছবি।

ছবি আঁকতে আমার বেশ ভালই লাগে তা আপনারা হয়তো আমার অনেক পোষ্টের মাধ্যমে দেখেছেন। কিছুদিন আগেও একটা ছবি আঁকা আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করেছিলাম এবং তাতে সকলের ভালোবাসা পেয়ে আমি অত্যন্ত উৎসাহিত।

1000166851.jpg

তবে সব থেকে বেশি আমার জল রং করতে ভালো লাগে। আমি খুব শখ করে নিজের জন্য জলরঙ কিনে নিয়ে এসেছিলাম প্রায় পাঁচ ছয় বছর আগে। বাবার কাছে কোনদিনও ছবি আঁকা শিখিনি। এছাড়াও কোথাও আমার কোনদিনও ছবি আঁকা শেখা হয়নি। তবে ছোট থেকে একা একাই নানান ধরনের ছবি আঁকতে পারি। এজন্য বাড়ির সবাই এবং বাইরের লোকজনও বলে,বাবা শিল্পী ,তাই শিল্প রক্তে আছে। তাইতো মেয়েও পারে। আমি ব্যাপারটা বিশ্বাস না করলেও বর্তমানে সত্যিই আমি এই ব্যাপারটা বিশ্বাস করি। না শেখার সত্ত্বেও মাঝে মধ্যে কত কিছু এঁকে ফেলি ,আমার বাবাও চমকে যায়।

কিন্তু আমি বড্ড আবেগী। খুব মুড এর ওপর সবকিছু কাজ করে থাকি। তাই যখন মুড হয় তখনই আমার ছবি আঁকার ইচ্ছা হয়। মুড না থাকলে কোন কিছু ইচ্ছা করে না।।

বেশ কিছুদিন আগে হঠাৎই ছবি আঁকতে ইচ্ছা করছিল। আর জল রং করেই ছবি আঁকতে ইচ্ছা হল। তাই বসে পড়লাম জল রং নিয়ে। মন ভালো না থাকায় বারবার একাকিত্বের কোন একটা ছবি মাথার মধ্যে আসছিল। তার ওপর অনেক কিছু ভাবার পরে হঠাৎ এই ছবিটা মাথায় আসলো।

একটি মেয়ে একটি সোফাতে বসে আছে এরকম একটা ছবি আঁকবো ঠিক করলাম। শাড়ি যেহেতু আমার বেশ পছন্দের। তাই মেয়েটিকে শাড়ি তে করলাম। যেটুকু ভেবেছি সেটুকুরই অবয়ব দেওয়ার চেষ্টা করলাম আর ছবি তৈরি হয়ে গেল। কিভাবে পুরো ছবিটা আঁকলাম ধাপে ধাপে ,আজকে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করে নেব।

প্রথম ধাপ

প্রথমেই আমি রং তুলি আর যে ড্রইং সিটের ওপর ছবিটা আঁকব সেটা নিয়ে নিয়েছি। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন জল রং নিয়েছি। সাথে প্যালেট নিয়েছি।

IMG-20241120-WA0016.jpg

দ্বিতীয় ধাপ

প্রথমেই আমি ছবি আঁকা শুরু করছি। ধীরে ধীরে মেয়েটার মুখটা এঁকে নিচ্ছি।

IMG-20241120-WA0020.jpg

তৃতীয় ধাপ

মেয়েটা একটা সোফাই বসে আছে, বই হাতে সেটা এঁকে নিলাম। এর সাথে মেয়েটার চোখ মুখ এঁকে নিলাম।

IMG-20241120-WA0017.jpg

IMG-20241120-WA0015.jpg

চতুর্থ ধাপ

তারপর আমি রং করা শুরু করছি। প্রথমে আমি স্কিন কালার করে নিচ্ছি। জলরঙে সবসময় জল বেশি ব্যবহার করতে হয়। এ কারণে ছোটবেলা থেকে বাবার কাছে বেশ বকুনি খেয়ে খেয়ে এখন আমার জল ব্যবহার করা ঠিকঠাক হয়।

IMG-20241120-WA0004.jpg

পঞ্চম ধাপ

স্কিনের আলোছায়ার ব্যাপারটা বোঝাতে ডিপ বাদামি রং মাঝেমধ্যে আমি স্কিনে এপ্লাই করছি।

IMG-20241120-WA0005.jpg

ষষ্ঠ ধাপ

এবার মেয়েটার নীল রঙের শাড়িটা এঁকে নিচ্ছি। অর্থাৎ রং করে নিচ্ছি। আপনারা বুঝতে পারছেন কোথাও রং আমি বেশি ব্যবহার করছি কোথাও কম। কোথাও শাড়ির আঁচলের ডার্কনেস বোঝা যাচ্ছে, আবার কোথাও আঁচলটা একেবারেই হালকা।

IMG-20241120-WA0008.jpg

সপ্তম ধাপ

শাড়ির সাথে একটু মানানসই রেখে আমি ব্লাউজের কালারটা ডিপ বাদামি করে নিয়েছি।

1000166825.jpg

অষ্টম ধাপ

এবারে আমি মেয়েটার চুল এবং বিনুনির রং করে নেব।

1000166827.jpg

নবম ধাপ

সবশেষে মেয়েটা যে সোফাতে বসে আছে, সেটা রং করে নিচ্ছি।

1000166819.jpg

রেডি

আমার মন যেমনটা চেয়েছিল ঠিক সেইভাবে পুরো কাজটা করতে পেরে খুব আনন্দ লাগছিল। আমার জল রং করতে এত বেশি ভালো লাগে। পুরো কাজটা করার পর মনটা খুবই ভালো হয়ে গিয়েছিল।

IMG-20241120-WA0010.jpg


আমি আশা করছি আপনাদের সকলের আমার আজকের ছবিটি খুব ভালো। প্রায় এক সপ্তাহ পর আবার একটা ছবি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করে নিতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। সকলের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম। সকলে ভালো থাকবেন।

Sort:  
Loading...
 2 days ago 

তুমি খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারো এটা তো জানি। ছবি আঁকতে ভালোবাসো এটাও আমি জানি। সবই তোমার মুডের উপর নির্ভর করে। প্রথমেই বলি ছবি আঁকা খুব সুন্দর হয়েছে। জলরঙের সাহায্যে ছবি আঁকা আরো সুন্দর হয়েছে। খুব সুন্দর একটা ছবি শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Loading...

@tipu curate


Watercolor

artonsteemit1b.jpeg.jpg
#artonsteemit
Manual Curation of TipU Curators Project
 yesterday (edited)

আঁকা আকি করা আমার দ্বারা সম্ভব নয় মাঝেমধ্যে কলম হাতে নিয়ে মনে হয় আমি এই চিত্রটা অংকন করতে পারব। কিন্তু পরবর্তীতে কলম হাতে ধরে মাথায় হাত উঠে যায় কোথা থেকে। যে শুরু করব এই চিন্তায়।

আপনার আঁকা ছবি তারপর এর প্রতিটা ধাপে ধাপে সাজিয়ে আমাদের কাছে উপস্থাপনা করেছেন যেটা খুব সুন্দর লাগছে আপনার হাতের আর্ট করা ছবিঅনেক সুন্দর হয়।

 23 hours ago 

বাঃ! দারুণ এঁকেছিস তো। আগেও দেখেছি তুই বেশ ভালো আঁছিস। না শিখেও যে এত সুন্দর আঁকা যায় সত্যিই ভাবা যায় না। কত মানুষ তো শিখেও যথার্থ আঁকতে পারে না। তোর প্রতিভার প্রশংসা করতেই হয়।

 22 hours ago 

@isha.ish যদিও একটু বিলম্ব হয়ে গেলো তোমার অসাধারণ সৃষ্টির বিষয়ে নিজের মন্তব্য করতে, তারজন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত!

একজন শিল্পীর কাজের মূল্যায়নের যোগ্যতা আমার নেই, তবে একজন দর্শক হিসেবে তোমার এই ছবি প্রশংসার দাবিদার।

আমার জানা নেই, কোন ভাবনা থেকে একজন মহিলার হাতে বই দিয়ে তাকে সোফায় বসানোর চিন্তা তোমার মাথায় এসেছে, তবে ছবিটি দেখে আমার গোয়েন্দা তিতিন মাসির চরিত্রটি চোখের সামনে ভেসে উঠল।

একজন মহিলা সত্যান্বেষী যিনি সংসার করেন যতটা মনোযোগ দিয়ে, ততটাই সত্যের পিছনে ছোটেন।
তোমার একাংশ গুন যদি নিজের মধ্যে থাকতো, অথবা যদি তোমার থেকে ধার পেতাম নির্ঘাত নিতাম।

আগে যখন এত টেকনোলজি ছিলনা, তখন বাড়ির মহিলারা দুপুরের খাবারের পর এই ধরনের বিভিন্ন ম্যাগাজিন নিয়ে সোফায় বসে পড়তেন।

মায়াপুরী ম্যাগাজিন অনেক নামকরা ম্যাগাজিনের একটি , এরপর ছিল পুজোসংখ্য পড়বার হিড়িক।

সবকিছু এখন পরিবর্তিত এবং বই পড়ার অভ্যেস ও তাই তোমার ছবিটি পুরোনো দিনের কিছু দৃশ্য ভাস্যমান হয়ে উঠল কিছু মূহুর্তের জন্য।

ভালো থাকো সবসময়।