অনুগল্প-মনের ঘরে||

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।


বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। অনুগল্প লিখতে খুবই ভালো লাগে। আজকে আমি একটি দারুণ অনুগল্প লিখে সবার মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। তো বন্ধুরা চলুন আমার আজকের অনুগল্পটি পড়ে নেয়া যাক।

অনুগল্প:মনের ঘরে

man-6867474_1280.jpg
source


শিহাব প্রথম দেখাতেই সুমিকে ভালোবেসে ফেলেছিল। সুমি আর শিহাবের দেখা হয়েছিল একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে। শিহাবের বড় ভাই সাগরের সাথে সুমির বড় বোন সীমার বিয়ে হয়েছিল বিয়ের দিন শিহাব প্রথম সুমিকে দেখেছিল। প্রথম দেখাতেই শিহাব সুমির প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। এরপর জানতে পারে সুমি হল তার ভাবীর ছোট বোন। মেয়েটা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি মায়াবী চেহারা। সুমির মায়া ভরা চোখে শিহাব ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছিল।

হাসি আনন্দে কেটে যায় বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হবার পর শিহাব মাঝে মাঝেই তার ভাবির সাথে সুমিদের বাসায় বেড়াতে যেত। অন্যদিকে সুযোগ পেলে সুমিও নিজের বোনের বাসায় বেড়াতে আসতো। এভাবে মাঝে মাঝেই শিহাব সুমির দেখা হতো। কিন্তু কখনো কেউ কারো সাথে সেভাবে কথা বলেনি। সুমি লাজুক প্রকৃতির মেয়ে। তাই সবসময় শিহাবের থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখত। কিন্তু শিহাব সুমিকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসেছিল। তাই সুমিকে চোখের আড়াল করতে দিতে রাজি ছিল না। সব সময় সুমির পিছে পিছে ঘুরতো।

এভাবে কেটে যায় প্রায় দু বছর। সুমি তখন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। শিহাব পড়াশোনার জন্য শহরে চলে গেছে। তাই সুমির সাথে খুব একটা দেখা হয় না তার। অন্যদিকে শিহাবের ভাবি অর্থাৎ সুমির বোন অসুস্থ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে সে মা হতে চলেছে। সুমির যেহেতু পরীক্ষা শেষ হয়েছে তাই সুমি তার বোনের দেখাশোনার জন্য মাঝে মাঝে শিহাবদের বাড়িতে আসত। শিহাবও মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে বাড়িতে চলে আসতো। কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। দেখতে দেখতে সুমির বোন আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডক্টর তাদেরকে আশা দিতে পারছিল না। অবশেষে তাদের এমন একটা দিন আসে যেটার জন্য তারা প্রস্তুত ছিল না। সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় সুমির বোন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। আর জন্ম দিয়ে যায় একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান।

ফুটফুটে সেই কন্যা সন্তানের দায়িত্ব সুমি নিয়ে নেয়। সে মায়ের স্নেহে বাচ্চাটিকে লালন পালন করতে থাকে। এভাবে কেটে যায় প্রায় তিনটি মাস। বাচ্চাটি সুমিকে ছাড়া কিছুই বুঝতো না। সুমিও বাচ্চাটিকে অনেক ভালোবাসতো। এরপর দুই পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত হয় শিহাবের ভাইয়ের সাথে অর্থাৎ সেই বাচ্চার বাবার সাথে সুমির দিয়ে দেওয়া হবে। এই কথাটা সুমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। কিন্তু তার কিছুই করার ছিল না। বাচ্চাটির মুখের দিকে তাকিয়ে সুমি সবকিছুই মেনে নেয়। অবশেষে সুমির বিয়ে হয়ে যায়। শিহাব যখন জানতে পারে সবকিছু তখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সেই কষ্টটা সে আজও ভুলতে পারেনি। সুমিকে এখনো সে ভালোবাসে। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারে না। সুমির মনেও শিহাবের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা লুকিয়ে ছিল। হয়তো দুজন দুজনের মনের ঘরে আজও রয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা তাদেরকে আলাদা করে দিয়েছে।

🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹


আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

আমি মো: স্বপন। আমি একজন বাংলাদেশী। বাংলা আমার মাতৃভাষা। তাই আমি বাংলায় লেখালেখি করতে ভালোবাসি। ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং এবং ক্রাফটিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। অবসর সময়ে গান শুনতেও অনেক ভালোবাসি। এছাড়া বাগান করতে আমার অনেক ভালো লাগে। মাঝে মাঝে রান্না করতেও অনেক ভালো লাগে। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।


Sort:  
 5 months ago 

ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি অনুগল্প শেয়ার করেছেন। আপনার গল্প প্রথম দিকে পড়ে খুব ভালো লেগেছিল কিন্তু শেষের দিকে শিহাব আর সুমির জন্য খারাপ লেগেছে। তাদের ভালোবাসা হেরে গেলো, এভাবেই হয়তো তাদের দু'জনের মনে দু'জনের জন্য ভালোবাসা রয়ে যাবে সারাজীবন। সুমি আর শিহাব পরিস্থিতির শিকার হয়ে তাদের ভালোবাসার বলিদান দিয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর গল্প শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

আমার লিখা এই অনু গল্প আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম আপু। মাঝে মাঝে ভালোবাসা সফলতা পায় না।

 5 months ago 

আপনার অণুগল্পের প্লটটা খুব ভালো। তবে অণুগল্পের সংজ্ঞা হিসেবে শেষের দিকে ক্লাইম্যাক্স থাকবে সেখানে সবটা লেখক বলে দেয় না পাঠকের জন্য ভাবার জায়গা থাকে। আপনার গল্পে আপনি সবটাই বলে দিয়েছেন কিন্তু আমার কোথাও গিয়ে মনে হয় সুমির বোনের বরের সাথে তার বিবাহটা না দেখিয়ে ওইখানটাতে খানিকটা টেনে দিয়ে যদি শেষ করে দিতেন তাহলে পাঠক ভাববার অবকাশ পেতো যে শেষে কি হল বিয়ে কি আদৌ হলো নাকি হলো না?

গল্পটি পড়ে আমি সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব মতামত দিলাম আপনি কিছু মনে করবেন না।

 5 months ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।