সংঘাত

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার,,

ছোটবেলা থেকেই আমি বেশ শান্তি প্রিয় একজন মানুষ। ঝুট ঝামেলা একদম ভালো লাগেনা। যেখানে গন্ডগোলের গন্ধ পাই সেখান থেকেই দূরে সরে যাই বলা চলে। দুই দিনের জন্য বেঁচে আছি । এর ভেতরে যদি আবার এত মারামারি, হানাহানি, কাটাকাটি অশান্তি নিয়ে থাকতে হয় তাহলে জীবনে আনন্দ বা সুখ টাই বা পেলাম কি! মানুষের এত কেনই বা দম্ভ! কিসের এত অহংকার! এক নিমিষেই যেগুলো ধুলোয় মিশে যায় মৃত্যুর সাথে, সেটা নিয়ে গর্ব করার কি আছে!

war-469503_1280.jpg

Source

বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ সংঘাত সব সময় লেগেই আছে। আধুনিক বিশ্বের সভ্য মানুষেরা এতটা বর্বর কি করে হতে পারে এটাই আমার মাথায় আসেনা। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে এমনিতেই অস্থিতিশীল করে দিয়েছে। এই যুদ্ধের তান্ডবে এক বছরে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে অনেক কিছুই। যুদ্ধ থামার তো কোন নাম গন্ধ নেই। বরং আরো কত বছর বা কত যুগ যে চলবে সেটাও বলা মুশকিল।

এর মাঝে নতুন করে আবার ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়ে গেছে। যদিও এটা নতুন কিছু না। তবে অন্য যে কোন বারের তুলনায় এবার বেশ বড়সড় ভাবে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে বলা চলে। হাজার হাজার নিরীহ মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে নির্বিচারে। মৃত্যু এখানে নিত্য চেনা একটা মুখ। দুই দেশের মানুষই প্রতিদিন প্রাণ ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। এভাবে আর কত! একবিংশ শতাব্দীতে এসে আমরা কি এমন একটা পৃথিবী চেয়েছি কখনো?

war-venue-494345_1280.webp

Source

তবে একটা ব্যাপার আমাকে বেশ অবাক করে দেয়। হামাসের পক্ষ থেকে যখন ইসরাইলে প্রথম সন্ত্রাসী হামলা চালানো হলো এবং সেখানে কয়েকশো মানুষ মারা গেল ইসরাইলের, ঠিক সেই সময়টাতে আমাদের চেনা পরিচিত অসংখ্য মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে বিজয় উল্লাস প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দেওয়া শুরু করল। আমার কথা হল আমরা যে ধর্মেরই হই না কেন, আমাদের সব থেকে বড় পরিচয় হলো আমরা মানুষ। তাই এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে তাজা প্রাণগুলোকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে বিজয় উল্লাস করা আদেও কি কোন বিবেক সম্পন্ন মানুষের কাজ হতে পারে!! সেটা হোক ইসরাইলি কিংবা ফিলিস্তিনী।

আমাদের নীতিজ্ঞান বিবেকবোধ দিন দিন যেন ধ্বংসের পথেই চলে যাচ্ছে। তা না হলে কারো মৃত্যুতে কখনোই কেউ উল্লাস করতে পারত না। তবে অবাক করা ব্যাপার হলো, যারা বা যে নেতারা যুদ্ধের দিকে নিজেদের দেশের মানুষকে ঠেলে দেয় তাদের কিছুই হয় না। তারা সব সময় অক্ষত থাকে। মাঝখান থেকে কিছু কিছু নিরীহ মানুষ তাদের স্বজন হারায়। যার ক্ষতিপূরণ এক জীবনে আর কখনোই সম্ভব নয়।এবার একটু শান্ত হোক আমার পৃথিবীটা। আর চাই না এই সংঘাত। প্রতিটা মানুষ যেন একটু শান্তিতে নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচতে পারে। এটা কোন অনুরোধ নয়, এটা সবার অধিকার।

Sort:  
 2 years ago 

War is war. যুদ্ধ মানেই ধ্বংস, যুদ্ধ মানেই মৃত্যুর মিছিল, যুদ্ধ মানেই মানবতার বিসর্জন । আমি কোনদিনই যুদ্ধ সমর্থন করি না । যুদ্ধে বেসামরিক নিরীহ মানুষের মৃত্যুতে উল্লাস করা মানবতার মৃত্যুরই নামান্তর । যুদ্ধে ইজরাইলের একজন নিরাপরাধ শিশুর মৃত্যুতে উল্লাস বা একজন নিরীহ ফিলিস্তানী নারীর মৃত্যুতে উল্লাস - দু'টোই নীচ মানসিকতার পরিচায়ক । ভারতের কিছু আর বাংলাদেশের কিছু ধর্মান্ধ উগ্র ব্যক্তিবিশেষের মানুষের মৃত্যুতে আনন্দ প্রকাশ চূড়ান্ত ঘৃণ্য এবং গর্হিত কাজ বলেই মনে করি আমি । আমি না ইজরাইলের পক্ষে, না ফিলিস্তানীদের পক্ষে । আমি শুধুই মানবতার পক্ষে ।

যুদ্ধের নাম মানুষ হত্যা বন্ধ হোক, পৃথিবী আবার শান্ত হোক। ..

 2 years ago 

১০০০% সঠিক।
যুদ্ধ মানেই যুদ্ধ আর নৃশংসতা। অগণিত নিরীহ মানুষের প্রাণ যায়। প্রত্যেকটা মুহূর্ত মৃত্যুর ভয়ে থাকা মানুষগুলোই জানে যুদ্ধ কতটা ভয়াবহ।

শান্তি ফিরে আসুক আবার পৃথিবীতে 🙏

 2 years ago 

একদম আমার মনের কথা গুলোই বলেছেন দাদা। যে কোন মৃত্যুকে নিয়ে যারা উল্লাস করে তাদের আর যাই থাকুক না কেন মনুষ্যত্ব বোধ টা নেই। এরা উগ্র আর ধর্মান্ধ ছাড়া কিছুই নয়। অনেক ধন্যবাদ দাদা আমার পুরো লেখাটা পড়ে চমৎকার একটা মন্তব্য করার জন্য। 🙏🙏🙏। ভালো থাকবেন সবসময়। আর হ্যাঁ আমার পৃথিবীটা এবার একটু শান্ত হোক... মানুষ হত্যা বন্ধ হোক।

 2 years ago 

মানুষের মৃত্যুতে খুশি হওয়াটা সত্যিই অবাক করা ব্যাপার । এটা আমাকেও ব্যাথিত করে।

হামাসের পক্ষ থেকে যখন ইসরাইলে প্রথম সন্ত্রাসী হামলা চালানো হলো

এটার সাথে আমি একমত হতে পারলাম না। ইউক্রেন পাল্টা হামলা করলে হয় স্বাধীনতা কামী , আর হামাস করলে হয় সন্ত্রাসী। মিডিয়া কোন জিনিস কে কিভাবে তুলে ধরে সেটা আপনি আমি সবাই জানি ভাই। বহু বছর ধরে নির্বিচারে ফিলিস্তীনি নারী , শিশুদের নির্মম ভাবে হত্যা করে আসছে ইসরাইল ,কিন্তু সেটার কভারেজ কোনো পশ্চিমা মিডিয়াতে দেখতে পারবেননা। আর আমেরিকা , সে তো মানবতার অবতার। কেও ই চাইবেনা তার দেশ অন্য কেও দখল করে নিক।

 2 years ago 

আপনার পোস্টের একটা ব্যাপারের সাথে আমি একমত,তা হলো মৃত্যু কখনোই সুখ বয়ে আনতে পারেনা।কিন্তু এটা যেমন সত্য,তেমন এটাও সত্য যে আমরা ততোটুকুই জানি যতটুকু আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখি,আসল কিছু ইতিহাস মিডিয়া থেকে অনেক অনেক অনেক দূরে।তাই যেখানে আমরা নেই তা নিয়ে মন্তব্য করে অস্থিরতা তৈরি না করি।ব্যাক্তি স্বাধীনতা অবশ্যই গ্রহণযোগ্যতা পায় কমিউনিটিতে,কিন্তু যেখানে অনেক অনেক বছরের ইতিহাস জড়িয়ে আছে,যেখানে আসল তথ্যের কোনো সন্ধান অব্দি মানুষ পর্যন্ত পৌঁছানো হয় না,তা নিয়ে মন্তব্য করলে তা ভুল ই হবে।আর সে সাথে যে পোস্টের জন্যে মানুষের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হবে তা নিয়ে কেও পোস্ট না করাটাই কমিউনিটির প্রচ্ছন্ন রুলস এর মধ্যে পরে ।

 2 years ago 

আপনার লেখাটা পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে আমরা ক'দিনের জন্যই বা পৃথিবীতে এসেছি তারপরেও এত যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকে ।অবশ্য যতদিন যাবে ততই যুদ্ধবিগ্রহ বাড়তে থাকবে ।নিশ্চিন্তে থাকার সময় মনে হয় শেষ হয়ে এসেছে ।তবে ইসরাইলরা গোড়া থেকেই অনেক খারাপ প্রকৃতির জাতি।যার কারণেই ওরা সারাক্ষণ যুদ্ধবিগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত থাকে । ওদের হাতে সর্বদা ফিলিস্তিনিরা নিহত হয়, ওদের মৃত্যু একটু কম হয়। এজন্যই সবাই খুশি হয় ওদের মৃত্যুতে । যাইহোক আর যুদ্ধবিগ্রহ চাইনা ,শান্তিপ্রিয় মানুষ আমরা শান্তি চাই।ধন্যবাদ।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু পুরো লেখাটা ধৈর্য্য নিয়ে পড়ে সুন্দর করে নিজের মতো করে আপনার মন্তব্য জানানোর জন্য। লেখাটার মূল বিষয় যে আপনি উপলব্ধি করেছেন এটাই অনেক বড় পাওয়া আমার জন্য। ভালো থাকবেন আপু।

 2 years ago 

ফিলিস্তান ইজরায়েলের যে ঘটনা বহুল যুদ্ধে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে আসলেই এটা বিবেকবান মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। উল্লাস করার কোন মানেই আসে না কিন্তু ফিলিস্তানিদের বর্বরভাবে নির্যাতন হওয়ার পর কখনো বিশ্বের বড় দেশগুলোর দেখিনা সমবেদনা জানানো। আমি মনে করি প্রভাবশালী দেশগুলোই যুদ্ধকে ভয়ংকর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। চাইলে তারা এই বিষয়টি সমাধান করতে পারে ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

বড় বড় ক্ষমতা ধর দেশ গুলোর নিরব ভূমিকাই এই ধ্বংস যজ্ঞের প্রধান কারণ বলে আমার মনে হয়। সব কিছুর পরেও আমরা সবাই চাই সব মানুষ যেন এবার একটু শান্তিতে নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচতে পারে। অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

@roy.sajib ভাই এই রকম পোষ্ট করে বিতর্ক না ছড়াতে অনুরোধ করছি আমি। আশা করছি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিবেন আপনি। প্রকৃত ইতিহাস আমরা সবাই জানি,সুতরাং সেটা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করছি না, সেটা আপনি নিজেও ভালোভাবে জানেন।

 2 years ago 

হাফিজ ভাই আপনার মন্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি,, আমি নিজের লেখা নিজে কয়েকবার পড়েছি, আর আমার এখনো মনে হয় না যে এই লেখায় এমন কিছু আছে যাতে করে কোন বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। তাই আপনার সাথে আমি এক মত হতে পারলাম না। হতে পারে আমার লেখার মূলভাব আমি বোঝাতে পারি নি অথবা আপনি বুঝতে পারেন নি। যতটা গভীরে গিয়ে পুরো ব্যাপারটা ভাবছেন, আসলে তেমন কিছুই না। দ্বন্দ্ব আর সংঘাতে হাজারো নিরীহ প্রাণ হারিয়ে যাচ্ছে, সেই ব্যাপারটায় খারাপ লাগা থেকেই লিখেছিলাম এটুকু। কোন বিতর্ক ছড়ানোর ইচ্ছে আমার আগেও ছিল না এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। ভালো থাকবেন।