আমরা মূলত অমানুষ ই!

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।

আজকে আবারো চলে আসলাম নতুন আরও একটি লেখা নিয়ে। আশা করি আজকের লেখাটিও আপনাদের সকলেরই ভালো লাগবে।

যতো দিন যাচ্ছে ততো যেনো আমরা অমানুষে রূপ নিচ্ছি। আমরা একটা সময় ছিলো যখন সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে চেয়েছিলাম কিংবা হয়তো মানুষ ছিলাম। কারণ জন্মগতভাবে আমরা কেউ কখনোই খারাপ ছিলাম না। কেমন ছোটবেলায় যদি রাস্তাঘাটে কোনো ছোট কুকুর বিড়াল কেও আমরা আঘাত পেতে দেখতাম। তখন আমাদের খুব কষ্ট হতো ওই কুকুর বিড়াল গুলোর জন্যেও। আমাদের নিষ্পাপ মন কেঁদে উঠতো, কেনো বলুন তো? তার নিশ্চয়ই কোনো কারণ রয়েছে। আর তার কারণ হলো, আমরা তখন সত্যিকার অর্থে মানুষ ছিলাম। আর সত্যিকার অর্থে মানুষ ছিলাম বলেই আমরা অন্যের ব্যথায় ব্যথিত হতে পারতাম, অন্যের কষ্টে কষ্ট পেতাম।

কিন্তু যতো দিন যাচ্ছে আমাদের মধ্য থেকে অন্যের কষ্টে কষ্ট পাবার ব্যাপারটি চলে যাচ্ছে। পৃথিবীর। পৃথিবীর এক প্রান্তে কোনো কোনো মানুষকে একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিলেও আমাদের মন এখন পৈশাচিক আনন্দ পায়। আমাদের এখন টেবিল সাজিয়ে খাবার খেতে একটুও সমস্যা হয় না, যেখানে পৃথিবীর অন্যপাশের কোনো কোনো মানুষের হয়তো সারাদিন এ একবেলা পানিও জোটে না। হয়তো খাবার অনেক দূরের কথা এক ফোঁটা পানি দিয়ে যে নিজের তৃষ্ণা মেটাবে সেটাই পায় না। খাবার পানি এসব হয়তো আরও দূরের কথা। সে যে এর পরও মুহূর্তে এরপরের সেকেন্ডে বেঁচে থাকবে কিনা সেটার কোনো নিশ্চয়তা তারা পায় না?

তারা কিন্তু আমাদের মতোন এর রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। কিন্তু তারা ভালো নেই, তাদেরকে পৃথিবীর মানুষ ভালো থাকতে দিচ্ছে না। তাদের প্রতি যে কিসের এতো ভয়, কিসের এতো অবিচার আমার জানা নেই। কারণ আমার এই ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে এতোটুকুই আসে যে, একজন মানুষ হিসেবে কোনো অধিকার আমার নেই অন্য মানুষ এর জীবন নিয়ে নেওয়া। তাও আবার অকারণে। যখন ছোট ছোট বাচ্চারা তীব্র চিৎকার করে। যখন রক্তে রক্তাক্ত হয়ে স্বজন হারা হয়ে পরে থাকে। তখন আমাদের বিবেক আমাদেরকে জাগ্রত করে না। এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে বলে আমার অন্তত মনে হয় না।

আর এ কারণেই আমরা অমানুষ হয়ে যাচ্ছি। কারণ অন্য কারো তীব্র কষ্ট চিৎকারে আমাদের এখন আর মন কেঁদে ওঠে না। আগে যেখানে একটা কুকুর বিড়াল কেউ রাস্তায় একটু সুন্দরভাবে বসে থাকতে দেখলেও আমাদের যেখানে মায়া জন্মে উঠতো। সেই জায়গায় এখন মানুষ ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেলেও মানুষ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও আমাদের আর খারাপ লাগে না। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, আমরা আমাদের নিজেদের মতন করেই হৈ-হুল্লোড় করতে থাকি, আনন্দে মেতে থাকি। আসলে আমরা সত্যিই অমানুষ। আর এ কারণেই আমি নিজেকে আর মানুষ হিসেবে দাবি করতে পারি না।

কারণ নিজেকে মানুষ হিসেবে দাবী করতে হলে ওই মানুষগুলোর জন্য কাঁদতে হবে, ওই মানুষগুলোর জন্য হৃদয় এ কষ্ট আনতে হবে। যে মানুষগুলো ভালো নেই, যে মানুষগুলোকে সবাই পিষে মারছে। আসলে এই ব্যাপারগুলোতে কিন্তু কখনো আমি ধর্ম দেখি না। কারণ এই অধর্মের মধ্যে ধর্ম কি করে আসবে সেটা আমার অন্তত মাথায় আসবে না। আমি এখানে শুধু দেখি অমানুষ এর মজার খেলা। অমানুষরা এই ধরনের খেলা খেলতেই পছন্দ করে এবং তারা আসলে ওই ভালো মানুষ গুলোকে এই অসহায় মানুষগুলোকেই হাতের খেলনা বানিয়ে এই ধরনের পৈশাচিক আনন্দ নিতে পছন্দ করে। আর তার মধ্যে আমরা যে নেই, সেটা কিন্তু অত্যন্ত ভুল। ওই খারাপ মানুষ গুলো কিন্তু আমরাই!

আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।