যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধে অস্ত্র এবার সয়াবিন!
বাণিজ্য যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এক হাত নিতে সয়াবিনকে অস্ত্র বানিয়েছে চীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ কৃষি পণ্য রপ্তানি করে তার ৬০ ভাগই বেশি সয়াবিন তেল। এতে সরাসরি মার্কিন কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদিও চীনে খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা বেড়ে যাবে তবে এই যুদ্ধে কম মূল্যের সয়াবিন বা পশুখাদ্য তৈরির উপকরণ সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বে সয়াবিনের সবচেয়ে বড় বক্তা দেশ চীন। বিশ্বজুড়ে যত সয়াবিন ব্যবহার হয় তার ৩০ ভাগই হয় এশিয়ার এই দেশটিতে। আর বিশাল চাহিদার এই বড় অংশটি যোগান দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চীনের বাজারে দুই হাজার কোটি ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করে দেশটি যার ৬০ ভাগই সয়াবিন। বাণিজ্য যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কে কুপোকাত করতে সেই সয়াবিন কেই হাতিয়ার বানিয়েছে চীন।
ওয়াং মেং, হেড অফ সেলস, কুফু লিয়াংশু ইন্ডাস্ট্রি, চীন বলেন আমাদের খাবারের জন্য পর্যাপ্ত চাইনিজ তেল নেই। এজন্য আমরা সয়াবিন আমদানি করি এবং সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৮০ ভাগের বেশি আমদানি করা হয়। তাই বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে আমার মনে হয় এবং বিশ্লেষকরা মনে করেন সামান্য হলেও এর প্রভাব পড়বে বাজারে। হিসেব বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১২০০ কোটি ডলারের সয়াবিন রপ্তানি করেছে চীনের বাজারে। যার বড় অংশটি ব্যবহার করা হয়েছে দেশটির পশুখাদ্য তৈরিতে। বিশ্লেষকরা বলেছেন এর জন্য আলাদা করে সয়াবিন উৎপাদন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা চাইলেই অন্য বাজারে বিক্রি করা কঠিন। টেনিসের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে চীনে সয়াবিনের মার্কিন রপ্তানি নেমে আসতে পারে ৪৫০ কোটি ডলারে।
লি কেকিয়াং, প্রদানমন্ত্রী, চীন বলেন আমাদের কথা হল বাণিজ্য যুদ্ধ কখনোই একটি সমাধান নয়। সে কখনোই বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করবে না কিন্তু কোনো পক্ষ যদি শুল্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয় তাহলে চীনের উন্নয়ন ধরে রাখার খাতিরে পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। চীনের এই সিদ্ধান্তে বড় ধরনের পরিবর্তন শুরু হয়েছে সয়াবিনের বিশ্ববাজারে। চীনা আমদানিকারকরা মার্কিন বাজার এর বিকল্প ব্রাজিল থেকে আমদানি প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। এতে ব্রাজিলের বাজারে সয়াবিনের দাম বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। যার ফলে চীনের খাবারের দাম বাড়ার প্রভাব পড়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা। মার্কিন কৃষি বিভাগ বলছেন আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩ লাখ ৬৬ হাজার টন সয়াবিন আমদানি কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন চীন। যা পরবর্তী বছরে আরো ৬৬ হাজার টন কমবে। তবে মার্কিন বাজারে সয়াবিনের দর কমায় বাংলাদেশ থেকে আমদানি বাড়ার আভাস দিয়েছে। চীন রপ্তানির জন্য থাকা ৬০ হাজার টন বাংলাদেশে এবং আরো ৬০ হাজার টন পাকিস্থানে রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে।