রিশাদ ও শহুরে বিড়াল - ছোট গল্প

in #story8 months ago

আমার লেখা ছোট গল্প - ০৫

রাতের শহরটায় অদ্ভুত এক নীরবতা। রাস্তার ধারে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে ছায়া এসে পড়ে, আর তাতে একটা সাদা বিড়াল চুপচাপ বসে আছে। যেন সে অপেক্ষা করছে কারও, কিন্তু কেউ আসে না। মানুষজন একে একে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় কাজের উদ্দেশ্যে, কেউ কেউ ফিরে আসে ক্লান্ত শরীর নিয়ে। কেউ থাকে হাসিমুখে, কেউবা চিন্তায় মগ্ন।

রিশাদ আজ একটু দেরিতে ফিরছে। অফিসের কাজ আর শেষ হয় না, বসের বকুনি, সহকর্মীদের বাজে কথা, সব মিলিয়ে মাথাটা যেন ফেটে যাচ্ছে তার। হাঁটতে হাঁটতে মনে হল, জীবনটা কতটা মেকানিকাল হয়ে গেছে। একই রুটিন, একই কাজ, একঘেয়ে জীবন। আগে সে কত কিছু করতে চাইত গান গাইতে, গল্প লিখতে, পাহাড়ে ঘুরতে। কিন্তু এখন? এসব যেন স্বপ্নই রয়ে গেলো।

একটা মোড়ে এসে দাঁড়ায় রিশাদ। সে চোখ তুলে তাকায় আকাশের দিকে। শহরের আলোতে আকাশের তারা ম্লান হয়ে গেছে। তবুও সে খুঁজতে থাকে সেই হারানো তারাদের। মনে হয়, সেই তারাগুলো হয়তো তার পুরনো স্বপ্নগুলোর মতোই কোথাও হারিয়ে গেছে।

হঠাৎ একটা শব্দে রিশাদ চমকে ওঠে। দেখে, সেই সাদা বিড়ালটা তার পায়ের কাছে এসে মিউ মিউ করে ডাকছে। হয়তো একটু আদর চায়, অথবা খাবার। রাহাত একটু হেসে বিড়ালটার মাথায় হাত বোলায়। তারপর পকেট থেকে একটা বিস্কুট বের করে দেয়। বিড়ালটা বিস্কুটটা খেতে শুরু করে, আর রাহাত তাকিয়ে থাকে। একটা নিঃশব্দ বন্ধন তৈরি হয় তাদের মধ্যে, যেন দুজনেই একা, দুজনেই শহুরে জীবনের এই একঘেয়েমিতে বন্দী।

রিশাদ মনে মনে ভাবে, হয়তো জীবনের এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকেই ধরে রাখতে হবে। এই নিঃশব্দ বন্ধন, এই অচেনা সঙ্গী, এসবই হয়তো তার জীবনের আসল খুশি। সেদিনের পর থেকে রিশাদ প্রতিদিন ফেরার পথে সেই বিড়ালটার জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসে। সেই বিড়ালটা এখন তার শহুরে জীবনের একমাত্র সঙ্গী, তার একঘেয়েমির মাঝে একটু প্রশান্তি।

Sort:  

গল্পটি পড়তে খুবই ভালো লেগেছে।
বিড়াল আমার খুবই পছন্দের একটি প্রাণী।
আমার নিজের বাসায় ও বিড়াল আছে।
বিড়াল পোষার অনেক উপকারিতা রয়েছে।
বিড়াল মানসিক অবসাদ এবং ডিপ্রেশন চুষে নিয়ে থাকে।
আমাদের সবার উচিত একটি করে বিড়াল পোষা।

আসলেই, ধন্যবাদ দোস্ত