অভিশাপ-ছোট গল্প||পর্ব-১
অফিস শেষে চায়ের দোকানে বসে আছে রুদ্র।তার বন্ধু রবির আসার কথা।ত্রিশ মিনিট পার হয়ে গেল তারপরেও দেখা নেই রবির৷ রুদ্রের চিন্তা হতে লাগল। কি যেন জরুরী কথা বলবে বলে ডেকে এনেছে।এখন ওর দেখা নেই। ফোনে ওর কথা বলার ধরনে বুঝতে পারে আসলেই জরুরি কিছু ঘটেছে।
এই ফাকে রবি আর রুদ্রকে নিয়ে কিছু বলে নেই। রবি রুদ্র সেই ছোট বেলার বন্ধু।ক্লাস ফাইভে শুরু হয়েছিল তাদের বন্ধুত্ব।আর শুরু টা হয়েছিল অদ্ভূতভাবে।রবি অনেকটা শান্তশিষ্ট ছেলে।কারো সাতে পাচে যেত না,ফলে তার বন্ধুর বলতে কিছু ছিল না।একদিন ক্লাসের কয়েকটি দুষ্ট ছেলে তাকে খ্যাপাচ্ছিল,সে চুপচাপ বসে সহ্য করে যাচ্ছিল।তাদের দলের পান্ডা ছিল প্রশান্ত।কিন্তু তখন ক্লাসের নতুন ছেলে রুদ্র এসে প্রশান্তকে বলে রবি কে না খ্যাপাতে।
এতে প্রশান্ত অবাক হয়ে যায়।এই ক্লাসের কেউ তার উপর কথা বলার সাহস পায়না,আর আজ কোথাকার কোন নতুন ছেলে এসে তার মুখে মুখে তর্ক করছে।সে রুদ্র কে বলে, "১০০ বার খ্যাপাব। তোর যা করার করে নিস"। কিন্তু প্রশান্ত কথা শেষ করতে পারে না।তার আগেই তার পেটে এসে লাগে রুদ্রর জোড়ালো ঘুষি।এক ঘুষি খেয়েই প্রশান্ত মেঝেতে গড়াগড়ি শুরু করে।
প্রশান্তর অবস্থা দেখে তার দলের আর কেউ রুদ্রকে ঘাটাতে সাহস করে না।তারা প্রশান্তকে নিয়ে সরে যায়।সেদিন থেকেই শুরু হয় রবি আর রুদ্রের বন্ধুত্ব।দুজন একদম ছিল হরিহর আত্মা।আর রুদ্রের সঙ্গদোষে আস্তে আস্তে রবিও ডানপিটে হয়ে ওঠে।ফলে তাদের কাছে পিঠেও কেউ ঘেষার সাহস পেত না।প্রাইমারির গন্ডি সেই কবে পেরিয়েছে ওরা,রুদ্র এখন চাকুরিজীবী আর রবি তার বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করছে।কিন্তু এত ব্যস্ততার মাঝেও কিন্তু দুই বন্ধুর যোগাযোগ ঠিক আগের মতই আছে।
বর্তমানে ফিরে আসি। রবির দেরি দেখে অধৈর্য হয়ে আবার ফোন দিল রবিকে।কিন্তু কল রিসিভ হচ্ছে না।এভাবে কয়েকবার কল হবার পর রাস্তার মোড়ে রবিকে দেখতে পেল।মনে মনে ভাবল বেশ খানিকটা গালি দেবে,কিন্তু কাছে আসতেই রবি কে দেখে অবাক হয়ে গেল।
এ কি অবস্থা হয়েছে রবির? এইত ১০দিন আগেই দুজন মিলে জম্পেশ আড্ডা দিল। কি হাসি খুশি ছিল রবি।মনে হচ্ছিল তার মত সুখী মানুষ আর কেউ নেই।এই দশ দিনে কি এমন হল,যে হাসিখুশি ছেলেটা একদম যেন মরা লাশ হয়ে গেল? কোথায় মিলিয়ে গেল সেই হাসিগুলো? চেহারা একদম ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।চোখের নিচে কালি।মুখে কয়েকদিনের না কামানো দাড়ি।রবির এই অবস্থা দেখে রুদ্র পরিস্থির গুরুত্ব বুঝতে পারল।
সে রবিকে চেয়ারে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে,"কি হয়েছে ভাই?তোর এমন অবস্থা হল কি করে? তার কথা শুনে রবি খানিকক্ষণ তার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।রুদ্র আবার জিজ্ঞেস করে,"ভাই কি হয়েছে তোর?এই অবস্থা তোর কিভাবে হল?"
এই শুনে রবি ঝরঝর করে কেদে দেয়।কাদতে কাদতেই সে রবিকে বলে,"ভাই আমি মনে হয় আর বেশি দিন বাচব না।আমার কিছু হয়ে গেলে আমার পরিবার কে দেখিস।"
রুদ্র বলে,"এসব কি আবোল তাবল বকছিস? কিছু হবে না তোর।কি হয়েছে সব খুলে বল তো?"
তখন রবি বলতে শুরু করে,"ভাই এটা আমাদের পরিবারের এক পুরাতন অভিশাপ।এসবের শুরু হয়েছিল আজ থেকে ১৫০বছর আগে আমাদের গ্রামের বাড়িতে।সেখানে...............
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
ভাই আপনার গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। গল্পটি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। রুদ্র আর রবি চরিত্র সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম । ধন্যবাদ এত দুর্দান্ত গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক উৎসাহিত হলাম ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
রুদ্র আর রবির গল্প শুনছিলাম আর আমার ভীষণ ভালো একজন বন্ধুর কথা মনে পরে গেলো। রবির জীবনে হয়তো ভীষণ খারাপ কিছু হয়েছে যা ১৫০ বছর পুরনো কোন অভিশাপের বিষয় রয়েছে। দেখা যাক সামনের পর্বে কি হয়। তবে বেশ চমকপ্রদ একটি গল্প লিখেছেন আপনি।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
রুদ্র এবং রবির এমন বন্ধুত্ব দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে শুরুর দিকে। শেষে রবির কি হয়েছে এমন দশ দিনে তা জানার অনেক আগ্রহ হচ্ছে আমার। কি এমন অভিশাপ ছিল যে এখন সে ভুগছে। ১৫০ বছরের এমন কোন অভিশাপ রয়েছে। দেখা যাক পরের পর্বে কি আসবে। আমি তো আর অপেক্ষা করতে পারছি না পরের পর্ব দেখার জন্য। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব শেয়ার করবেন আমাদের মাঝে।
হ্যা ভাইয়া আশা করি খুব শীঘ্রই পরের পর্ব দিতে পারব। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
এমন এক জায়গায় শেষ করলেন কেন,বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম।বন্ধু গুলো মনে হয় এমনি হয়,এত বছরের সম্পর্ক তাও এতটুকুও ভালোবাসা কমেনি,দেরি করে আসার জন্য বোকা দিবে তো দূরের কথা উল্টো বন্ধু কে দেখে মায়ায় ডুবে গিয়েছে। ভালো লিখেছেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ
অমন জায়গায় শেষ না করলে কি পরের পর্ব পড়তে আসবেন? একটু চালাক না হলে দুনিয়ায় টেকা মুশকিল।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।আশা করি পরের পর্ব খুব শীঘ্রই দিতে পারব।
দারুন একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। গল্পের মাধ্যমে দুইটি বন্ধুর সম্পর্ক অনেক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। রবির এবং রুদ্র
এমন বন্ধুত্ব দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে। পরে রবির কি হয়েছে জানার আগ্রহ থাকলো। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।
রুদ্র এবং রবির বন্ধুত্ব অনেক গভীর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ১০ দিনে রবির সাথে কে ঘটেছিল যে সে একেবারে চুপচাপ হয়ে গিয়েছে। কারো সাথে ঠিকমত কথাও বলছে না। রুদ্রকে ১৫০ বছরের কোন অভিশাপের কথা বলেছে রবি কি ঘটেছিল আমি তো আর অপেক্ষাই করতে পারছি না এই কথাটি জানার জন্য। খুবই জানতে ইচ্ছে করছে। আশা করছি আপনি আমাদের সাথে খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব শেয়ার করবেন। এবং অভিশাপের বিস্তারিত ঘটনা বলবেন। আজকের পর্বটি পড়ে ভালো লাগলো।
আশা করি খুব শীঘ্রই পরের পর্ব শেয়ার করতে পারব।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভালো তো অবশ্যই লেগেছে তবে গল্প তো শেষ হলো না। যারা গল্প লেখে তারা প্রত্যেকেই এরকম একটা টুইস্টের জায়গায় এনে গল্পকে থামিয়ে দেয়। আপনিও সেটাই করলেন আজ... আশা করছি পরবর্তী পর্বেও অভিশাপের পুরো ডিটেলস জানা যাবে না। তারপরেও আরো একটা পর্ব পড়তে হবে। তবে খুব সুন্দর লিখেছেন এটুকু বলতে পারি।
এক পর্বে পুরো লেখা যাবে না।আবার সাসপেন্স রেখে না দিলে পাঠক পরের পর্বের আগ্রহ পাবে না।তাই এই ব্যবস্থা। তবে আগামী পর্বেই শেষ হবে মনে হয়।আপনার ভাল লাগাতেই আমার স্বার্থকতা।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্যের জন্য।