শয়তানের চালাকির কাহিনি

in #shaytan9 days ago

শয়তানের শয়তানি

1000005129.jpg

এক গরম চৈত্র মাসের দুপুর। শফিক সাহেব বাজার থেকে ফিরছিলেন, কিন্তু তীব্র রোদের কারণে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। সকালে ট্যাপে পানি না থাকার কারণে ঘরে প্রবেশের পর তার গরমে ঘেমে নেয়ে একদম অবস্থা শোচনীয় হয়ে গেল। ফ্যান চালানোর জন্য সুইচ টিপলেও দেখা গেল, বিদ্যুৎ নেই। এতে তার মেজাজ আরও খারাপ হয়ে গেল।

অবশেষে ক্লান্তি দূর করতে তিনি গোসল করার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু বাথরুমে প্রবেশ করে বুঝলেন, সেখানে পানি নেই। রাগে অবচেতনভাবে তিনি বলে উঠলেন, “এগুলো নিশ্চয়ই শয়তানের কাজ! হাতের কাছে শয়তানকে পেলে আজ মেরেই ফেলতাম।” হঠাৎ করে পেছন থেকে একটি শব্দ শুনে তিনি ঘুরে তাকালেন।

চোখের সামনে এক আজব বীভৎস প্রাণী দাঁড়িয়ে আছে। তার মাথায় দু’টি শিং, কানগুলো গাধার মতো ঝুলানো, এবং মুখমণ্ডল যেন কোনো হিংস্র পশুর। ভয় পেয়ে শফিক সাহেব তৎক্ষণাৎ চমকে উঠলেন। সেই প্রাণীটি মানুষকে বলল, “ভয় পাবেন না। আমি আপনার জন্য নির্ধারিত শয়তান। আমাকে মেরে ফেলবেন?”

শফিক সাহেব ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি এখানে কিভাবে এলে?” শয়তান উত্তর দিল, “আমি যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারি। আপনি আমাকে দেখতে পাচ্ছেন কারণ আমি চাইছি আপনি আমাকে দেখুন। কিন্তু মানুষই তো সব ভুল করে আর আমাকে দোষ দেয়।”

এ সময় শয়তান শফিক সাহেবকে কাছে বাজারে নিয়ে গেল। সেখানে গিয়ে শফিক সাহেব দেখলেন, শয়তান কিছু গুড় দেয়ালে লাগাল। অল্পক্ষণ পর গুড়ের গন্ধে কিছু পিঁপড়া এসে জমা হল। তাতে কিছু টিকটিকি আসল। হঠাৎ এক বিড়াল এসে টিকটিকিকে ধরতে চেষ্টা করতেই কুকুরটি বিড়ালের দিকে ছুটে গেল। মুহূর্তের মধ্যে বাজারে বিশাল গোলযোগ শুরু হল।

সকলের মধ্যে ঝগড়া লাগল। এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুর রহিম সাহেবের তেলের বোতল ভেঙে গেল। দোকানদার এবং শিক্ষক উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হল।

শয়তান শফিক সাহেবকে বলল, “দেখুন! এই গণ্ডগোলের জন্য কে দায়ী? কুকুর-বিড়ালের আচরণ স্বাভাবিক। মানুষ কেন ঝগড়া করছে?”

শফিক সাহেব বুঝতে পারলেন, আসলে শয়তান যে গুড় দেয়ালে লাগিয়েছিল, তা থেকেই এই সমস্ত গোলযোগ শুরু হয়েছে। তিনি উপলব্ধি করলেন, শয়তান শুধুমাত্র ঘটনার সূচনা করে এবং তারপর পেছন থেকে উসকানী দেয়।

শেষ পর্যন্ত শফিক সাহেব বুঝলেন, শয়তান আসলে নিজের দায়িত্ব এড়াতে চাইছে। সেই উপলব্ধির মাধ্যমে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, শয়তানের সকল শয়তানি থেকে বাঁচতে হবে এবং সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।

এভাবেই শয়তান মানুষের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। কিন্তু সচেতন থাকলে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলে, শয়তানের কূটকৌশল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।