লাউয়ের বিচির বড়া।
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি,সুস্থ আছি।
লাউ গাছের আগা, ডগা, ফল সবই অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ। গ্রাম কিংবা শহরের সকল মানুষের কাছে পরিচিত ও ব্যাপক জনপ্রিয় ও সুস্বাদু সবজি লাউ। এটা সর্বত্র সারা বছরই পাওয়া যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন এ সবজি তাই আমাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়।সুস্থ শরীর এবং মনের জন্য সবজি হিসেবে লাউ খুবই উপকারি। এর বহু স্বাস্থ্যোপকারিতা আছে।
আলম ভাই আমাদের বিল্ডিং এ নিয়মিত দুধ দিয়ে যায়। ওনার বাড়ি গ্রামে তাই মাঝে মধ্যে কিছু না কিছু সবজি বিক্রি করতে নিয়ে আসে।সবাইকে দেওয়ার আগে আমাকে জিজ্ঞেস করে যে আমি কিনবো কি-না! আমি বেশিরভাগ সময়ই ওনার কাছে সবজি নিয়ে থাকি।সেদিন একটা লাউ নিয়ে আলম ভাই আমার বাসায় হাজির।লাউ টা দেখে আমার খুব একটা পছন্দ হলো না তাই আলম ভাইকে বললাম যে আজ আমি লাউ কিনবো না আপনি অন্য কাউকে দিন। কিন্তু আলম ভাই তো নাছোড়বান্দা লাউ আমাকেই দেবে তাই কি আর করা বাধ্য হয়েই ৫০ টাকা দিয়ে লাউ টা কিনতে হলো।উনি খুবই গ্যারান্টির সহিত লাউ দিলো যে যদি বিচি হয় তাহলে টাকা ফেরত।পরেরদিন সকালে লাউ কাটতে গিয়ে দেখি পুরো লাউ বিচি দিয়ে ভরা দেখেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো কি আর করা টাকা দিয়ে কিনেছি যখন খেতে তো হবেই। উপরের অংশ কেটে ফেলে দিলে তিনভাগের বেশি ফেলে দিতে হচ্ছে।টাকা দিয়ে কেনা জিনিস ফেলতে খুবই খারাপ লাগছিলো তাই ভাবলাম বিচি গুলো দিয়ে কিছু একটা তৈরি করতে হবে যাতে করে ফেলে দেওয়া না লাগে।অনেকক্ষণ ভেবে চিন্তে বিচি গুলো বেটে নিয়ে বড়া করার চিন্তা মাথায় আসলো।যেমন চিন্তা কেমন কাজ। বিচি বেটে নিয়ে কিছু উপাদান মিশিয়ে মুচমুচে সুস্বাদু বড়া তৈরি করে ফেললাম।
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
লাউয়ের বিচি | পরিমাণ মতো |
পেঁয়াজ কুঁচি | হাফ কাপ |
কাঁচামরিচ কুঁচি | ৩-৪ টা |
আদাবাটা | ১ চা চামচ |
রসুনবাটা | ১ চা চামচ |
জিরাগুঁড়া | ১ চা চামচ |
মরিচের গুঁড়া | ১ চা চামচ |
হলুদের গুঁড়া | পরিমাণ মতো |
লবণ | স্বাদমতো |
বেসন | ২ টেবিল চামচ |
চালের গুঁড়া | ২ টেবিল চামচ |
সয়াবিন তেল | পরিমাণ মতো |
ধাপ-১
লাউয়ের বিচি গুলো ধুয়ে নিয়ে কুঁচি কুঁচি করে কেটে নিয়েছি।তারপর শিলপাটায় বেটে নিয়েছি।
ধাপ-২
এবার একটি ছাকনি নিয়ে তারমধ্যে লাউয়ের বিচি বাটাগুলো ড়দিয়ে ভালো করে ছেঁকে অতিরিক্ত জল গুলো ছেঁকে নিয়েছি।
ধাপ-৩
এবার লাউয়ের বিচি বাটাগুলো একটা বাটিতে নিয়ে পেঁয়াজ কুঁচি মরিচ কুঁচি আদাবাটা রসুনবাটা গুড়া মশলা লবণ হলুদগুঁড়া দিয়ে সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মেখে নিয়েছি।
ধাপ-৪
সবগুলো উপকরণ মাখানোর মধ্যে বেসন চালের গুড়া দিয়ে ভালো করে মেখে নিয়েছি।তারপর গোল গোল করে সবগুলো বড়া বানিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৫
চুলায় একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি তারপর পরিমাণমতো সয়াবিন তেল দিয়েছি।তেল গরম হলে এক এক করে বড়াগুলো তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছি।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বড়াগুলো উল্টিয়ে দিয়েছি।
ধাপ-৬
একপাশে ভাজা হলে বড়া গুলো আবার উল্টিয়ে দিয়েছি।দু'পাশে ভালো করে বড়াগুলো ভেজে নিয়েছি।বড়া গুলো ভালোভাবে ভাজা হলে একটা পাত্রে তুলে নিয়েছি।
পরিবেশন।
একটা পাত্রে বড়া গুলো নিয়ে চারপাশে পেঁয়াজ ও লেবু স্লাইস করে কেটে সাজিয়ে নিয়েছি।এখন গরম গরম ভাতের সাথে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত লাউয়ের বিচির বড়া গুলো।
গরম ভাতের সাথে কিংবা চায়ের সাথে বিকেলে মুখরোচক খাবার হিসেবেও খাওয়া যাবে মজাদার লাউয়ের বিচির বড়া গুলো।এই ছিলো আমার আজকের আয়োজন।আশাকরি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
ধন্যবাদ।
ইউনিক একটি রিসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। লাউয়ের বিচি দিয়ে এভাবে বড়া তৈরি করা যায় তা আমার জানা ছিল না। রেসিপিটি দেখে খুবই লোভনীয় লাগছে। খেতেও নিশ্চয়ই খুব মজা ছিল। তৈরি করার ধাপ গুলো খুব ভালো করে দেখে নিলাম। এভাবে একদিন তৈরি করার চেষ্টা করব। মজাদার ও ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অবশ্যই আপু তৈরি করে খেয়ে দেখবেন আশাকরি আপনারও অনেক অনেক ভালো লাগবে।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
যেকোনো বড়া খেতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে।আর আপনি দেখছি আজ আমাদের মাঝে ইউনিক একটি রেসিপি তৈরি করেছেন সেটি হচ্ছে লাউ এর বড় ভাজা কখনো খাওয়া হয়নি। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে ধন্যবাদ।
জ্বি ভাইয়া খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো লাউয়ের বিচির বড়া গুলো।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাহ আপনি দেখছি খুব সুন্দর করে লাউয়ের বিচির বড়া বানিয়েছেন। আপনি ধারাবাহিক ভাবে খুব সুন্দর করে লাউয়ের বিচির বড়া তৈরি করেছেন।দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে, কেননা আজকেই প্রথম এই লাউয়ের বিচির বড়া বানা দেখলাম। এতো সুন্দর লাউয়ের বিচির বড়া বানিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
লাউয়ের বিচির বড়া আপনার কাছে খুবই ভালো লেগেছে জেনে আমারও খুব ভালো লাগলো।আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম যে গ্রাম থেকে যেহেতু লাউ এনেছে খুবই ভালো হবে। পরিচিত লোকজনের কাছ থেকে কোন কিছু কেনার এই এক সমস্যা পছন্দ না হলে জোর করে দিয়ে যায়। আপনার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। যাই হোক আপনি তারপরও লাউটি ফেলে না দিয়ে বিচিগুলোকে কাজে লাগিয়ে খুবই সুস্বাদু বরা তৈরি করেছেন। দেখেই মনে হচ্ছে যে খেতে সুস্বাদু হয়েছিল।
গ্রাম থেকে আনা জিনিস গুলো সবসময়ই টাটকা হয়ে থাকে আপু তাই ওনাদের কাছ থেকে মাঝে মাঝে সবজি কিনি।কিন্তু লাউ একদম ভালো ছিলো না তারপরও কিনতে হয়েছিলো মৌখিকতার খাতিরে।বিচির অংশ ফেলে দিলে প্রায় তিনভাগের বেশি ফেলতে হচ্ছিলো এটা খুবই খারাপ লাগছিলো তাই বিচি গুলো দিয়ে বড়া বানিয়ে খেয়েছি। সত্যিই অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো আপু।অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আলম ভাইকে ধন্যবাদ দিন আপু।আলম ভাই পুরো বিচি লাউ দিল বলেই নতুন একটা রেসিপি পেলাম আমরা।নয়ত লাউ আপনি নিরামিষ নয়ত চিংড়ি দিয়ে রান্না করে ফেলতেন।নতুন রেসিপি আর দেখা হতো না আমাদের। খুব মজার বড়া করে শেয়ার করলেন। আমরাও শিখে নিলাম।লাউয়ের সব অংশই খাওয়ার যোগ্য।ধন্যবাদ আপু নতুন একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
তা ঠিক বলেছেন আপু😁 নিচের অংশ দিয়ে নিরামিষ ঘন্ট রান্না করেছি আর বিচির অংশ দিয়ে বড়া সেজন্য কোনোকিছুই ফেলতে হয়নি আপু।আসলেই লাউয়ের সবকিছুই খাওয়া যায় এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়।ধন্যবাদ আপু।
আপু আপনার পরিচিত আলম ভাই গ্যারান্টি সহকারে লাউ দেওয়ার পরেও লাউয়ের ভিতরে বিচি পাওয়া গেছে, তাহলে বাজারে সবজি বিক্রেতারা গ্যারান্টি দিয়ে সবজি বিক্রি করলে সেই লাউ কি হবে তাই চিন্তাভাবনা করছি। যাই হোক আপু, আলম ভাইয়ের কারণে কিন্তু আপনি আজ এত মুখরচোক একটি রেসিপি শেয়ার করতে পেরেছেন। তবে আপু আমি লাউয়ের বিচির ভর্তা খেয়েছি, কখনো লাউয়ের বিচির বড়া খাইনি। তাই এই রেসিপিটি আমার কাছে খুবই ইউনিক মনে হচ্ছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, খুবই মুখরোচক একটি রেসিপি শিখিয়ে দেওয়ার জন্য।
বাজারর দোকানদার গ্যারন্টি দিয়ে জিনিস দিলে পরে যদি খারাপ হয় তখন পরেরদিন বাজারে গিয়ে দোকানদারের সাথে ঝগড়া করতে হবে তাহলে পরবর্তী সময়ে আর খারাপ জিনিস দিবে না। 😁😁আলম ভাই খুবই ভালো কাজ করেছে তাই তো মনে হচ্ছে এখন। 😀ভর্তা খেতে মজা বড়া খেতেও অনেক মজা হয়েছিলো ভাইয়া।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার তো দেখছি মাথায় অনেক বুদ্ধি, আসলে টাকা দিয়ে কিনা জিনিস ফেলতে সত্যি অনেক কষ্ট লাগে। তবে আমি বিচি ওয়ালা লাউ দিয়ে কি করব তাই ফেলে দিতে হতো।তবে আপনি বুদ্ধি খাটিয়ে সুন্দর বড়া তৈরি করেছেন।আসলে যেকোনো বড়ার মজাই আলাদা। আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। প্রতিটি ধাপ সুন্দর করে দেখিয়েছেন। এভাবে একদিন তৈরি করব অবশ্যই। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু বর্তমান বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম তাই টাকা নিয়ে কেনা কোনকিছুই ফেলে দেওয়া সম্ভব না তাই একটু বুদ্ধি খাঁটিয়ে বিচির অংশ গুলো দিয়ে সুস্বাদু বড়া তৈরি করে ফেললাম।ধন্যবাদ আপু।
লাউ গাছের আগা, ডগা, ফল সবই অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সব কিছু খাওয়া যায়। ঠিক বলেছেন আপু লাউ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সবজি। আপনার মত আমার নিজেরও খুব প্রিয় একটি সবজি হচ্ছে লাউ।লাউয়ের বিচির বড়া এই টাইটেলটি দেখে সর্বপ্রথম অবাক হলাম। খুবই আনকমন একটি রেসিপি আপনি তৈরি করেছেন। তবে একটি বিষয় ভালো লাগলো ৫০ টাকা দিয়ে কেনা সবজি অপচয় না করে নতুন ইউনিক একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপনি। আপনার এই ইউনিক রেসিপি দেখে অনেক কিছু শিখতে পারলাম। ধন্যবাদ আপু আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু ৫০ টাকা দিয়ে কেনা লাউয়ের বিচি গুলো ফেলে না দিয়ে নতুন একটি রেসিপি তৈরি করে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি, যাতে করে আপনারাও নতুন কিছু শিখতে পারেন।সুন্দর করে মন্তব্য করেছেন তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আলম ভাইয়ের থেকে লাউ কিনে আজকে খুব সুন্দর লাউয়ের বিচির বড়া বানিয়েছেন। তবে আলাম ভাই আপনাকে গ্যারান্টি দেওয়ার পরও লাউয়ের মধ্যে বিচি হয়ে গেল। আমি কখনো লাউর বিসির বড়া খাইনি। তবে আপনার রেসিপি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক মজাই হয়েছে। লাউয়ের বিচি দিয়ে এত সুন্দর বড়া বানানো যায় আমার কল্পনা ছিল না। ধন্যবাদ আপনাকে নতুন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জ্বি আপু উনি ১০০% গ্যারান্টি সহকারে লাউ বিক্রি করেছের আমার কাছে।আমিও প্রথম খেয়েছি আর খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিলো।ধন্যবাদ আপু।
লাউয়ের বিচির বড়া দেখেই তো খেতে ইচ্ছে করছে আপু। লাউয়ের বিচি দিয়ে যে বড়া বানানো যায় সেটা জানা ছিলো না। আপনার রেসিপিটা আমার কাছে খুব ইউনিক লেগেছে। বিকেলের নাস্তায় এমন গরম গরম বড়া পেলে তো আর কোন কথাই নেই। বড়া গুলো দেখতেও খুব সুন্দর লাগছে। যাইহোক এতো লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া বিকেলের নাশতায় এরকম গরম গরম বড়ে হলে আর কোনোকিছুরই প্রয়োজন হয় না।আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।