অনেক দিন পর র্যাকেট কোর্টে
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের সহ ব্লগারবৃন্দ।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি।
আমি ছোট বেলা থেকেই প্রচুর খেলাধুলা করতাম।প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে ধোলাই খেতে খেতে গোসল করে ঘরে ওঠা লাগত।কারন সারা গা ধুলা মেখে থাকত।
আমরা ছোট থেকেই এমন অনেক খেলা খেলেছি যার নাম এখনকার অনেক বাচ্চারাই জানেন না। আচ্ছা কয়জন আছেন আপনারা যারা দাড়িয়াবান্ধা,গোল্লাছুট আর বৌছি এই তিনটা খেলা খেলেছেন? অবশ্যই মন্তব্য করবেন।
যাই হোক আমি টাকা পয়সার দিক থেকে যেমন গরীব,লেখা পড়ার দিক থেকে তার থেকেও গরীব আর খেলাধুলায় পড়ালেখার থেকে একটু ভাল ছিলাম।যাই হোক এরপর তো আস্তে আস্তে পড়ার চাপে ওদিক থেকে সরে আসতে হয়। কিন্তু এই একটা খেলা ছাড়তে পারি নি।
আমার জন্ম গ্রামে গ্রামে তখন এই খেলা দেখি নি। যখন শহরে আসলাম তখন প্রতিবার শীতের সময়েই দেখতাম বড় ভাইয়ারা কোর্ট কাটত,তারপর রাতে লাইট লাগিয়ে অর্ধেক রাত পর্যন্ত খেলত।আমরা ছোটরা মাঠের পাশে বসে খেলা দেখার অনুমতি পেতাম।আর কর্ক গুলো একটু নষ্ট হলে সেগুলো ভাগ করে দেওয়া হত আমাদের মাঝে।সেগুলো পেলেই আমরা খুশি হয়ে যেতাম।
মনে মনে ভাবতাম আমরাও একদিন বড় হয়ে এভাবে কোর্ট কেটে খেলব। কিন্তু কথায় আছেনা, "কপালে নেই ঘি,ঠকঠকালে হবে কি?"।তেমনি এটাও কপালে ছিল না।বড় হতে থাকলাম আর পাড়া ফাকা হতে থাকল।সমবয়সীরা পড়াশুনার জন্য বাইরে গেল।পাড়ায় বলতে গেলে আমি একা।এজন্য আমাকে খেলার জন্য যেতে হত অন্য পাড়ায়।
তবে অন্যপাড়ায় গিয়ে তীর্থের কাকের মত বসে থাকা লাগত।তারা কখন খেলতে বলবে তখন খেলা লাগে।অনেকেই আবার অবজ্ঞার চোখে তাকায়। তবে এরপর বন্ধু নাহিদ বলল চল আমার পাড়ায় গিয়ে কোর্ট কাটি।যে কথা সেই কাজ,ছোট ভাইদের সাথে কথা বলে সবাই মিলে চাদা তুলে কোর্ট কেটে ফেললাম।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে খেলা শুরু হত রাত ১২টা পর্যন্ত খেলা চলত।আমি প্রায় ১কিমি হেটে গিয়ে খেলে আসতাম।অন্য পাড়ায় গিয়ে খেলতে আগে নিজেকে বাস্তুহারা মনে হত কিন্তু এই পাড়ার সবাই এত ভাল ছিল যে কখনোই মনে হয় নি আমি বাইরের মানুষ।ছোট ভাইয়েরা অনেক আপন করে নিয়েছিল।প্রচুর মজা হত, এমনি খেলা পানসে লাগলে ২টাকা ৫টাকার বাজি ধরা হত।তবে এই বাজির টাকা কিন্তু কেউ নিত না।এই টাকা দিয়ে "কর্ক" কেনা হত।তবে এ সেই ২০২০ এর ঘটনা।
এরপর নাহিদ ভার্সিটি তে ভর্তি হয়ে ঢাকা চলে যায়।তার পাড়া আর যাওয়া হয়না। ফলে গত বছর খেলা হয়নি।এবার নাহিদ ভার্সিটি থেকে ছুটিতে এসেছে।এসেই বলল ভাই অনেক দিন র্যাকেট খেলা হয়না,চল খেলি। আমি বললাম কই খেলবি? বলল চল আমার পাড়ায় ছোটরা কোর্ট কেটেছে।
অনেক দিন পর খেলার কথা শুনে, খেলার ইচ্ছা জাগল।গেলাম খেলতে। র্যাকেট যখন হাতে নিলাম সেই অনুভূতি বর্ণনা করার মত নয়। কবির ভাষায় বলতে গেলে,অনেকদিন পর প্রিয়ার হাত, হাতে নিলে যে অনুভূতি হয় ঠিক সেই অনুভূতি।
২ঘন্টায় ৩টা ম্যাচ খেলেছি,এর মাঝে ছোটরা খেলেছে।এই ৩টা ম্যাচ খেলার সময় বারবার মনে হচ্ছিল আবার যেন সেই ছোট বেলা তেই ফিরে গেছি।অনেক ভাল কিছু মুহুর্ত কাটিয়েছি।ভাবলাম ভাল মুহুর্ত গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।তাই শেয়ার করে ফেললাম।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
শীত মানেই ব্যাড মিন্টন খেলা। আমরাও খেলতাম। তবে ভাই - বোনরা মিলে। আপনি যে তিনটা খেলার কথা বললেন তা আমি শহরে বসেও খেলেছি। অনেক ভাল লাগতো বৌছি,দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট। ইস, সেই দিনগুলো মনে পরে গেল।আপনি যেমন অনুভূতিতে হারিয়ে গেলেন,আমিও পোস্ট পড়ে হারিয়ে গেলাম সেই দিনে। অনেক সুন্দর মুহুর্ত অতিবাহিত করেছেন জেনে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
যাক মজাদার খেলাগুলো খেলেছে এমন কাউকে পাওয়া গেল।আহা কি দিন ছিল আগে। ভাবতেই আবেগ প্রবণ হয়ে যাই।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আমি খেলেছি দাড়িয়াবান্ধা,গোল্লাছুট আর বৌছি এই তিনটা খেলা। বেশ মজার খেলা। আহা, র্যাকেট সাথে প্রিয়ার হাতে তুলনা🤣,তা কয়বার প্রিয়ার হাত ধরেছেন সত্যি করে বলেন।যাই হোক ব্যান্ডমিন্টন আমিও ছোটবেলায় খেলেছি।একটা কর্ক পেলে যে কি খুশি লাগতো।রাতে বাহিরে খেলা দেখলে, আমারও মাঝে মাঝে মনে হত আমি ও যদি খেলতে পারতাম।ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।ধন্যবাদ
প্রিয়াই নাই আর তো প্রিয়ার হাত।একবারো ধরা হয়নি আপু। আপনার মন্তব্য মন ছুয়ে গেল।ধন্যবাদ আপু এমন সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ব্যাডমিন্টন খেলা একটা সময় প্রচুর খেলেছি। বিশেষ করে শীতকালে প্রচুর খেলতাম। এখন সময়ের অভাবে অনেক কিছু ছেড়ে দিতে হয়েছে। আপনার খেলার অনুভূতিগুলো পড়ে স্মৃতির পাতায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম। ছোট বেলায় খেলাধুলার জন্য আমিও অনেক মার খেয়েছি তবে খেলা ছাড়িনি। ধন্যবাদ ভাই দারুন একটি পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
শীতকাল আমাদের মাঝে বিরাজ করতেছে। শীতকালে রাতের বেলা র্যাকেট না খেললে ভালো লাগেনা। খেলা অনুভূতি খুব সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আমি খেলেছি এই সব গুলো খেলা।🤚
আমি মনে হয় ব্যাডমিন্টন খেলা বন্ধ করেছি 2019 সালে। তার আগে নিয়মিত খেলা হতো আমাদের স্কুলের মাঠে। তবে এখন আর সময় হয় না জন্য খেলতে পারি না। আপনারা যেমন চাঁদা ধরে খেলতেন, আমরাও তেমন চাঁদা ধরতাম। তবে আমরা একটু বেশি চাঁদা ধরতাম আর কি।
আপনার কিছু কিছু পোস্ট এর ভিতর বেশ ন্যাচারাল ব্যাপার থাকে। যেগুলো পড়লে আসলে বেশ ভালো লাগে। আর এই ধরনের পোস্টগুলো পড়লে তো আমার অতীতের সুন্দর মুহূর্ত গুলোর কথা মনে পড়ে যায়।
এখনকার প্রজন্ম তো এসব খেলা অনেকেই চেনে না দাদা।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে অনেক উৎসাহিত করলেন।