আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 178

আসসালামুআলাইকুম

শ্বশুরমশাইয়ের গলা পাওয়া গেল, 'তোমরা কী আরম্ভ করেছ, অ্যাঁ?' বেশ গম্ভীর মুখে সামনে এসে দাঁড়ালেন।
শাশুড়ি বললেন, 'আমার দোষ হয়েছে ওকে জিজ্ঞাসা করা কোথায় গিয়েছিল? তারপর টেলিফোনের বুথে গিয়েছিল শুনে জানতে চেয়েছিলাম, কেন গিয়েছিল? তার উত্তরে বউমা বলল, দরকার ছিল মা। এটা কোন ধরনের উত্তর।'
'ওর সব দরকারের বিস্তারিত বিবরণ জানার কী প্রয়োজন তোমার?' শ্বশুরমশাই বললেন।
রঞ্জনা বলল, 'বেশ শুনুন। আপনার ছেলেকে আমি অনেকবার বলেছি বিনা কারণে আমাকে অফিসে ফোন করবে না। আমি অফিসে আছি কিনা তা যাচাই করার জন্যে ও ফোন করে তা আমি বুঝতে পারি। আজও করেছিল। কিন্তু আমি যখন জিজ্ঞাসা করলাম তখন মুখের উপর মিথ্যে কথা
বলল, করেনি।' শাশুড়ি জিজ্ঞাসা করলেন, 'সুবীর যে মিথ্যে বলেছে তার প্রমাণ কী?'
'এস টি ডি বুখের ছেলেটা বলেছে যে ও ফোন করতে গিয়েছিল।'
এই সময় ঘর থেকে বেরিয়ে এল সুবীর, 'দ্যাখ্যে, তোমার কতখানি অধঃপতন হয়েছে, এস টি
ডি বুথে যাওয়া মানেই তোমাকে ফোন করতে গিয়েছি। অদ্ভুত ব্যাপার।
'তুমি এখনও মিথ্যে বলছ?' রঞ্জনা জিজ্ঞাসা করল।

1737431331796.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

'তুমি কি পাগল হয়ে গেলে রঞ্জনা?'
এই সময় তিতির বলল, 'বউদি, কোথাও ভুল হচ্ছে না তো? আমিও তোমাকে ওখান থেকে ফোন করেছিলাম।'
কথাটা লুফে নিল সুবীর, 'তবে? উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাচ্ছ?'
শাশুড়ি বললেন, 'আমি বুঝতে পারছি না, খোকা তোমাকে ফোন করলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়?'
রঞ্জনা বলল, 'অশুদ্ধ হয় তখনই যখন নাম জিজ্ঞাসা করলে ও জবাব না দিয়ে ফোন ছেড়ে দেয়।'
শ্বশুরমশাই বললেন, 'এ কীরকম ব্যাপার? নিজের নাম বলতে অসুবিধেটা কোথায়? নইলে
বউমা কী করে জানবে তুমি ফোন করেছ।'
সুবীর জবাব না দিয়ে কাঁধ নাচাল।
রঞ্জনা বলল, 'এখন কেউ ফোন করেছিল অথচ নাম বলেনি শুনলে বুঝে যাই কে করেছিল।'
শাশুড়ি বললেন, 'এত সামান্য ব্যাপার নিয়ে কেন যে খেপে গেলে বুঝি না বাপু।'
সুবীর হাসল, 'পরিবর্তন তো হয়েইছে। নাম না বললেই ধরে নিচ্ছে আমি। সবাই তো শুনলে ফোনটা করেছিল তিতির।'
রঞ্জনা স্বামীর দিকে তাকাল। তারপর ঘুরে দাঁড়িয়ে তিতিরের হাতে রসিদ দুটো দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।

1737431331783.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

তিতির রসিদ দুটো দেখল। আজকের তারিখে একই নম্বরে ফোন করা হয়েছিল। সময় লেখা আছে। প্রথমটা সে করেছে। দ্বিতীয়টা? ফোন করে সে যখন বাড়ি ফিরছিল তখনই দাদাকে রাস্তায় দেখেছে।
'কীরে ওটা?' বাবার প্রশ্ন শুনল তিতির। কোনও বাক্যব্যয় না করে রসিদটা এগিয়ে দিল। সে দুটো দেখে বাবা ছেলের দিকে তাকালেন, 'তা হলে বউমার অভিযোগ সত্যি?' মাথা নাড়লেন তিনি,
'কেন যে মিথ্যে বলো! সত্যি কথা বলার সাহস হয় না কেন?'
তিনি চলে গেলেন তাঁর ঘরে। তিতির ফিরে গেল। মা বললেন, 'অমন হয়ই। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যা ঘটে তা বাইরের লোকজনের সামনে বলা উচিত নয়। এটা বউমা কেন বোঝে না।'
সুবীর নিজের ঘরে ফিরে এসে দেখল রঞ্জনা উপুড় হয়ে শুয়ে আছে বিছানায়। সে পাশে এসে বসল। রঞ্জনা একটুও নড়ল না। সুবীর ইতস্তত করে বলল, 'সরি।'
রঞ্জনা জবাব দিল না।
সুবীর বলল, 'আসলে তোমার এই চাকরি করাটাকে আমি মেনে নিতে পারছি না।'
রঞ্জনা উঠে বসল। স্বামীর দিকে না তাকিয়ে খাট থেকে নেমে পড়ল। সুবীর বোঝাবার চেষ্টা করল, 'দ্যাখ্যে এখন পর্যন্ত তো আমাদের টাকা-পয়সার টানাটানি হয়নি। সংসারের প্রয়োজন মেটাতে তোমাকে চাকরি করতে হচ্ছে না। কিন্তু চাকরি করতে বাইরে গেলে নানান প্রলোভনের সামনে পড়তে হবে তোমাকে।'

ধন্যবাদ।আল্লাহ হাফেজ।