আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 167

in #photography2 months ago
আসসালামুআলাইকুম

'রাস্তায় বেরোলে তোকে চিনতে পারবে। বিরক্ত করবে।'
'হ্যাঁ, আজকেই আমার দিকে তাকাচ্ছিল।'
'তা হলে?'
'ও নিয়ে আমি ভাবি না। পাড়ার ভেতরে তো সবাই আমাকে চেনে। আর বাইরে যেতে হলে ট্যাক্সিতে যাব। সেটা তো স্টুডিয়োতে যাওয়ার সময় যেতেই হয়।'
'তোর মাকে ছবিটা দেখিয়েছিস?'
'দেখাব।'
'দেখা।'
'মায়ের ইচ্ছা এটাই প্রথম আর শেষ যেন হয়।' তিতির বলল।
'কার কোথায় শেষ তা কেউ কি আগাম বলতে পারে।' বাবা হাসলেন।
'জলখাবার হয়ে গিয়েছে।' মায়ের গলা শোনা গেল। বাবা কাগজটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলেন। মা টেবিলে খাবার দিচ্ছিলেন, বাবা বললেন, 'দ্যাখো।'
কাগজটার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে মা বলল, 'ও, সেই সেরা সুন্দরীর ছবিঃ আমার দেখার ইচ্ছে নেই, কাল সামনাসামনি দেখেই ভক্তি চটে গেছে।'

1735708458863.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

তিতির হেসে ফেলল। বাবা বললে, 'এ ছবি দেখলে তোমার ভাল লাগতেও পারে নাও লাগতে
পারে।' কাগজটা খুলে টেবিলে রাখলেন বাবা।
মা তাকালেন, তারপর চাপা গলায় বললেন, 'সর্বনাশ!'
তিতিরের খুব রাগ হয়ে গেল, 'তার মানে?'
'এর পরে তোর আর বিয়ে হবে? জীবনটা শেষ হয়ে গেল তোর! মা যেন শিউরে উঠল, 'এত বড় ছবি, সবাই দেখবে, লুকিয়ে রাখার আর কোনও উপায় থাকল না।'
বাবা বললেন, 'আমি বুঝতে পারছি না। এই ছবির সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক কোথায়?'
'তুমি যদি চোখ কান খোলা রেখে চলতে তা হলে আমাকে এভাবে জ্বলেপুড়ে মরতে হত না।
কোনও রাজার ছেলে এসে তো তোমার মেয়েকে বিয়ে করবে না, আমাদের সমান সমান ঘরেই ওকে যেতে হবে। তা তোমার ছেলের জন্যে যদি মেয়ে খুঁজতে তা হলে কাগজে ছবি বের হয় এমন কোনও সিনেমার মেয়েকে কি ঘরে আনতে? কেউ রাজি হবে ওর সঙ্গে ছেলের বিয়ে দিতে?' মা
হাত নেড়ে কথাগুলো বলে গেল। তিতির বলল, 'আমাকে যে বিয়ে করতেই হবে তার কি মানে আছে?'
'তার মানে?' মা হাঁ হয়ে গেল।

1735708458846.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

'বিয়ে মানে তো জ্বলেপুড়ে মরা।' তিতির শান্ত গলায় বলল।
'কী বলছিস তুই?'
'আমি তো বলছি না, তোমার কথাই তোমাকে শোনাচ্ছি। একটু আগে তুমিই বাবাকে বললে জ্বলেপুড়ে মরছ। তা এত কষ্ট করার জন্যে বিয়ে না করলেই নয়? আমি সিরিয়ালে অভিনয় করছি মানে আমার চরিত্র নষ্ট হয়ে গেছে? আর এইজন্যে তুমি আমাকে বিদায় করতে ভাল ছেলে পাবে না? আচ্ছা মা, যে ছেলেকে তুমি ভাল ভাববে সে যে কতটা বদ তুমি কী করে জানবে?'
'কী করে আর। ছেলের বাপ-মাকে দেখে, পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে খবর নিয়ে।'
'বাঃ। এমন তো হতে পারে, ছেলের বাবা খুব ভাল, মা জ্বলেপুড়ে মরেন না আর ছেলে এত ভদ্র যে পাড়ার লোকজনও প্রশংসা করে। কিন্তু ছেলে যে সকাল ন'টায় বাড়ি থেকে অফিসে বেরিয়ে রাত ন'টায় ফেরা পর্যন্ত কোথায় কী করছে তা বাবা-মা অথবা পাড়ার লোক কী করে জানবে? আমাদের পাশের বাড়ির কথা তোমার মনে নেই?' তিতির ইশারা করল।
'ওরকম তো সবার বেলায় হয় না। এক থালা ভাতে একটা কাঁকর থাকতেই পারে।' মা মুখ বেঁকাল, 'সাধারণ মানুষ সিনেমার মেয়েদের ঘরের বউ করবে না।'
তিতির বলল, 'অথচ তাদের দেখার জন্যে সারা দুপুর টিভি খুলে বসে থাকবে। আর তুমি যাদের কথা বলছ তারা পনেরো বিশ বছর আগের মানুষ। এখন অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে।'
মা ছবিটাকে আর একবার দেখল। 'যাকগে, কাগজটাকে তোমার ঘরে নিয়ে যাও তোমার
দাদার চোখে যেন না পড়ে, তা হলে রাগ করবে।'
বাবা চুপচাপ তর্ক শুনছিলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, 'কে রাগ করবে? তোমার ছেলে?' '
মা বলল, 'থাক। তুমি আর এর মধ্যে কথা বলতো এসো না।

ধন্যবাদ।আল্লাহ হাফেজ।