আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 162

in #photography12 days ago
আসসালামুআলাইকুম

'যতই লাগুক চলুন।' রঞ্জনা পথ পালটাল। তিতির আপত্তি করল, 'কিন্তু আমাকে কালু ভোরবেলা উঠতে হবে। দেরি হয়ে গেলে মুশকিলে পড়ব। আর প্রতি কামা তো রাত্রের রান্না করে
রঞ্জনা বলল, 'সেটা না হয় ফ্রিজে রেখে দেওয়া যাবে।'
'বাবা। বাবা দাদা না খেয়ে বসে থাকবে।' শেষবার আপত্তি জানাল তিতির।
মাথা নাড়ল, 'তোর বাবাকে বলে এসেছি, দেরি দেখলে নিজের খাবার গরম করে নেবে।
জীবনে তো কখনও করেনি, আজ না হয় করুক।'
তিতির অবাক হয়ে তাকাল। এই মুহূর্তে মাকে তার খুব অপরিচিত লাগছে।
অস্বস্তি হচ্ছিল রঞ্জনারও। সে কখনও উদ্যোগী হয়ে কোনও রেস্টুরেন্টে ঢোকেনি, এত বড় হোটেলের রেস্টুরেন্টে ঢোকার কথা ভাবতেও পারেনি কখনও। কিন্তু আজ তার ব্যাগে হাজার দুয়েক টাকা আছে। অফিসের টাকা। হঠাৎ প্রয়োজন হলে খরচ করার জন্য রাখতে দেওয়া হয়েছিল। কাল ছুটি, পরশু অফিসে গিয়ে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেটা সে পারবে। কিন্তু এরকম রেস্টুরেন্টে দু'হাজার টাকায় তিনজনের খাওয়া হবে তো?

1735708158522.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

ওরা একটি টেবিলে বসল। ওয়েটার তাদের টেবিলটায় পৌঁছে দিয়েছিল। কোট-টাই পরা একটি লোক তিনজনকে মেনুকার্ড দিয়ে গেল। তিতির চাপা গলায় জিজ্ঞাসা করল, 'তোমার কাছে টাকা আছে তো?'
রঞ্জনা ঘাড় নাড়ল, 'হ্যাঁ।'
'শোনো তুমি নতুন কাজ করছ আমিও প্রথম রোজগারে নেমেছি। তাই আজ যা খরচ হবে তা
দু'জনে সেয়ার করব। তুমি এখন দিয়ে দাও আমি পরে তোমাকে দেব।' তিতির নিচু গলায় বলল।
রঞ্জনা হাসল, 'তা কেন? আজ আমি খাওয়াচ্ছি অন্য একদিন তুমি খাইয়ো।' 'সেদিন কবে আসবে তার ঠিক নেই, আজই হোক।' তিতির বলল।
অর্ডার দেওয়ার পর রঞ্জনা দেখল ছ'শো টাকাও খরচ হবে না। খাবার এল। তিতির বলল,
'তুমি কাঁটা চামচে খেতে পারবে?'
মা বিরক্ত হল, 'কেন পারব না? তোরাই সব পারিস ভাবছিস।' তিতির হাসল, 'বাব্বা। তুমি আজকাল অল্পেই রাগ করো।'খাওয়া শেষ করে বিল মিটিয়ে টিপস দিয়ে ওরা বাইরে বেরিয়ে আসতেই ডেস্কের লোক
জিজ্ঞাসা করল, 'ম্যাডাম গাড়ির নাম্বার বলুন, ড্রাইভারকে ডেকে দিচ্ছি।' রঞ্জনা বলল, 'গাড়ি নেই, একটা ট্যাক্সি ডেকে দিতে পারেন।'

1735708158475.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

'নিশ্চয়ই।'
এখন রাত প্রায় গভীর। অন্তত এই পাড়ায়। ওরা তিজন ছুটন্ত ট্যাক্সিতে বসে ময়দানের পাশ
দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ মা বলল, 'কটা বাজে রে?'
'তিতির জবাব দিল, 'অনেক।'
মায়ের গলা নীচে নামল, 'কিছু হবে না তো?'
তিতির জানতে চাইল, 'কী ব্যাপারে?'
' এত রাত্রে তিনজন মেয়েছেলে ট্যাক্সিতে যাচ্ছি, কিছু যদি হয়!' মা বিড়বিড় করল।
তিতির চিৎকার করল, 'ওঃ মা! মেয়েছেলে শব্দটা কখনও বলবে না।'
'কেন? মেয়েছেলেকে মেয়েছেলে বলব না?'
'বলবে না। ওই শব্দটার মধ্যে তাচ্ছিল্য আছে। যেন মানুষ নয়।'
'সে কী রে! এতদিন তো জানতাম ব্যাটাছেলে আর মেয়েছেলে।'
'ভুল জানতে, ওইরকম তোমাকে জানানো হয়েছিল বলেই তো মেয়েদের ওই অবস্থা, পুরুষ এবং মহিলা, এখন থেকে এছাড়া কিছু ভাববে না।' তিতির বলল।
'মহিলা বললেই যেন ছেলেদের সমান হয়ে গেছি! শুনেছ রঞ্জনা? এখন যদি এই লোকটা আমাদের গলা কেটে ফেলে কিছু করতে পারব আমরা?' মা জিজ্ঞাসা করল।
হঠাৎ শব্দ করে হেসে ফেলল ট্যাক্সি ড্রাইভার। লোকটি পাঞ্জাবি এবং বৃদ্ধ।
তাকে দেখেই মা এতক্ষণ স্বচ্ছন্দে বাংলায় কথা বলতে উৎসাহিত ছিল। কিন্তু ওদের অবাক করে দিয়ে বৃদ্ধ ট্যাক্সি ড্রাইভার পরিষ্কার বাংলায় বলল, 'আমি একা আপনাদের তিনজনের গলা কীভাবে কাটব? তা ছাড়া গলা কেটে আমার লাভ কী হবে?'

ধন্যবাদ।আল্লাহ হাফেজ।