আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 157

in #photography17 days ago
আসসালামুআলাইকুম

রঞ্জনা যখন অফিসে গেল তার সাজপোশাক প্রতিদিনের মতোই, কিন্তু আজ সঙ্গে একটা বড় ব্যাগ। তাতে রাতের অনুষ্ঠানের উপযুক্ত জামাকাপড়, প্রসাধনসামগ্রী। সে অফিস থেকেই তৈরি হয়ে হোটেলে পৌঁছে যাবে। বেরোবার সময় শাশুড়িকে বলল, 'মা, আপনারা একটু আগেই চলে যাবেন, আমি থাকব, একসঙ্গে ফিরব।'
শাশুড়ি একটু প্রগলভ্য হলেন, 'দ্যাখো, একসঙ্গে ফিরলে তো ভালই, তোমাদের আজ মেয়ের বিয়ের মতো ব্যাপার, সব ঠিকঠাক চুকিয়ে ফিরতে তো হবে।'
রঞ্জনা হাসল, 'তার জন্যে অন্য লোকজন থাকবে।'
শ্বশুর তখন খাবার টেবিলে খবরের কাগজ নিয়ে বসে, মুখ না তুলে জিজ্ঞাসা করলেন, 'আচ্ছা বউমা, এই যে শুনি আগে থেকেই সব ঠিক করে রাখে কে কী হবে, তা তোমাদের সেরা সুন্দরী কে হবে তাও কি ঠিক হয়ে গিয়েছে।'
রঞ্জনা অবাক হল, 'সে কী! আমি তো এরকম কিছু শুনিনি। বিচারকরা থাকবেন, তাঁরাই তো দেখেশুনে রায় দেবেন।'
শাশুড়ি বললেন, 'ওসব বাজে কথা, যাও তো তুমি, দেরি হয়ে যাচ্ছে।'
রঞ্জনা চলে যাওয়ার পর তিতির দেখল বাড়ির আবহাওয়া আজ অন্যরকম। বাড়ি বলতে বাবা আর মা। দাদা তার ঘর থেকে বের হচ্ছে না। বাবা বেশ ভাল মুডে আছে। আর মায়ের বয়স যেন এক ঝটকায় কমে গেছে। হাঁটাচলায় অন্যদিনের শ্লথতা নেই, কথা বলার ধরনটাও বদলে গেছে।

1735707855574.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

আজ শুটিং নেই। তিতিরের আলস্য লাগছিল। এই কয়েকদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্টুডিয়োতে যাওয়া অভ্যেসে এসে গিয়েছিল, এখন কীরকম বেকার মনে হচ্ছে নিজেকে। সংলাপ মুখস্থ করা, মুখে রং মেখে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর মধ্যে যে মাদকতা আছে তা আজ ভালভাবে টের পাচ্ছিল তিতির। আগামীকাল শুটিং আছে। তার চিত্রনাট্য নিয়ে সে বসেছিল। এইসময় মা এল
ঘরে, 'হ্যাঁরে, সাদা শাড়ি পড়ে যাব?'
'ওমা, সাদা পরবে কেন?' তিতির অবাক।
'আমিও তাই ভাবছিলাম। আসলে আমার তো বয়স হয়েছে।'
'দূর। গিয়ে দেখবে তোমার চেয়ে বয়স্কা মহিলা সালোয়ার-কামিজ পরে এসেছেন। প্যান্টও
পরতে পারেন কেউ কেউ। ওখানে কেউ বয়স নিয়ে মাথা ঘামায় না।'
'তা হলে?' মায়ের মুখে কীরকম লজ্জা লজ্জা ভঙ্গি।
'চলো, তোমার আলমারি খোলো, আমি শাড়ি বেছে দিচ্ছি।'
মা বলল, 'না না, এখন নয়। দুপুরে খেয়ে দেয়ে তোর বাবা ঘুমিয়ে পড়লে তখন দেখিস।
নইলে যা মানুষ, এখনই মশকরা শুরু করে দেবে।'

1735707855543.jpg

For work I use:


মোবাইল
Redmi Note 11s
ফটোগ্রাফার
@taskiaakther
লোকেশন
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
বাহিরে

গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে ট্যাক্সি ছেড়ে দিয়ে তিতির বলল, 'এসো।'
মা জিজ্ঞাসা করল, 'কী বড় হোটেল! তুই আগে এসেছিস?'
' ওমা, আমি কখন আসব? আর এলে তুমি কি জানতে না?'
'তুই এমনভাবে এসো বললি যে মনে হল আগেও এসেছিস।'
কথাগুলো হচ্ছিল গেট পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে। গেটে প্রহরী, মূল দরজায় পোশাকপরা পাহারাদার। ওদের পাশ দিয়ে এগোতেই তিতির নির্দেশ দেখতে পেল। কোথায় কোন পথ দিয়ে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আসরে পৌছাতে হবে।
সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে ওরা বুঝতে পারল আরও অনেকেই অনুষ্ঠানটি দেখতে তাদের সঙ্গে উঠছে। ওদের পোশাক কথাবার্তা কীরকম আলাদা। মা নিচু গলায় বলল, 'এটা খুব বড়লোকদের জায়গা।'
'তা তো হবেই, এখানকার খাবারের দাম অনেক।' তিতির বলল।
ওপরে উঠে মা দাঁড়াল। নিচু গলায় বলল, 'তুই একটা খোঁজ নিবি?'
'কী?' তিতির অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল।
'এখানে যারা থাকে তাদের একদিনের জন্যে কত ঘর ভাড়া দিতে হয়?' মা কীরকম লজ্জা
লজ্জা মুখে প্রশ্নটা করল।
'কী হবে জেনে? তুমি তো কখনও এখানে এসে থাকছ না।'

ধন্যবাদ।আল্লাহ হাফেজ।