পুরী ভ্রমণ - পর্ব ০৫

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

কোনারক সূর্য মন্দির মিউজিয়ামে খুবই ভালো একটা সময় কাটিয়েছিলাম আমরা । সাধারণত সব পর্যটক আগে সূর্য মন্দির দেখে তারপরে মিউজিয়াম ভিজিট করে থাকেন, কিন্তু, আমি একটু উল্টো কাজ করলাম । আগে মিউজিয়াম দেখে পরে মন্দির দর্শন করেছি । কারণ, আগে যদি মন্দির সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায় তবে মন্দিরে ভ্রমণের সময়ে এর স্থাপত্য এবং কারুকার্য ও মন্দিরের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায় ।

কোনারক সূর্য মন্দিরের নির্মাণের প্রধান উপকরণ ছিল উড়িষ্যার বেলেপাথর এবং কঠিন ব্যাসল্ট পাথর । প্রকান্ড প্রকান্ড পাথর কেটে সেগুলোকে নানান আকারের মূর্তি ও কারুকার্য খচিত ব্লকে রূপান্তরিত করা হতো । পরে একটার পর একটা সজ্জিত করে একটা বৃহৎ কাঠামোয় রূপান্তরিত করা হয় । এই কাজে শ্রম প্রচুর এবং তদপেক্ষা দক্ষতা প্রয়োজন । ভাবতেই অবাক লাগে, শুধুমাত্র ছেনি-হাতুড়ি দিয়ে বিশালকায় এসব প্রস্তরখন্ড খোদাই করার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল তখনকার দিনে । আধুনিক কোনো প্রযুক্তি জ্ঞান ছিল না, ছিল না কোনো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি । তারপরেও অসম্ভব সূক্ষ্ণ সব কারুকার্যখচিত বিশালাকায় এই প্রস্তরনির্মিত সূর্য মন্দির স্থাপন করা হয়েছিল ।

মন্দিরের এখনকার যে অংশটুকু বর্তমান সেটি কিন্তু মূল মন্দির নয়। এটি ছিল তখনকার মূল সূর্য মন্দির সংলগ্ন নাট মন্দির । মূল মন্দিরের গড়ন ছিল গৌড়ীয় ধাঁচের যেটি বারবার শত্রুর আক্রমণে আর লুণ্ঠনে সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় । মাটির গভীর থেকে খননকার্য করে ইংরেজরা এই মন্দিরটিকে আবার পুনরুদ্ধার করে । যেহেতু কোনারক মন্দিরের সূর্যদেবের মূর্তি পুরীর সূর্য মন্দিরে প্রতিস্থাপন করা হয় তাই এই মন্দিরে পূজা-অর্চনা কয়েক শতাব্দী ধরে বন্ধ আছে ।

মন্দিরটি এখন সম্পূর্ণরূপে ইন্ডিয়ান আর্কিওলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের অধীনে । তাঁরাই মন্দিরের রক্ষণবেক্ষন করে থাকেন । এই মিউজিয়ামটিও তাঁদেরই । মিউজিয়ামের মধ্যস্থিত অসংখ্য মূর্তির অধিকাংশই ধ্বংসপ্রাপ্ত সূর্যমন্দির থেকে প্রাপ্ত, বাকিগুলো হলো রেপ্লিকা ।


নৃত্যরত অপ্সরাদের মূর্তি । অপূর্ব শিল্প নৈপুণ্যের অনন্য উদাহরণ এই মূর্তিগুলি ।
তারিখ : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


বামনের দেহের উপরে নৃত্যরত হস্তিনী ও যক্ষের যুগল মূর্তি ।
তারিখ : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


সিংহের পিঠের উপর রাজা যুদ্ধাস্ত্র হাতে, আর সিংহের পায়ের কাছে শায়িত হস্তী ।
তারিখ : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


শিবের বরাভয় মূর্তি ।
তারিখ : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


বিষ্ণুর মৎস্য অবতার ।
তারিখ : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


নৃত্যরতা অপ্সরা ও দেবীমূর্তি ।
তারিখ : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩
সময় : দুপুর ১২ টা ২৫ মিনিট
স্থান : পুরী, উড়িষ্যা, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

»»——⍟——««

Sort:  
 last year 

আবারো দু'দিন নানান ঝামেলায় NFT আর্ট করার সুযোগ পাইনি। তাই আজকে আবারো একটি এনএফটি আর্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়ে গেলুম। এই NFT আর্টটিও "Winter Spirit" সিরিজের অন্তর্গত আর একটি আর্ট। আমার গত আর্টটি ছিল ইউনিকর্ন নিয়ে। আর আজকের আর্টটি হলো "সান্তা ক্লজ" নিয়ে । ২৫ শে ডিসেম্বর, ক্রিসমাস । আর সারা বিশ্বব্যাপী ক্রিসমাসের এই আনন্দঘন পরিবেশে "সান্তা ক্লজ" দারুন আকর্ষণীয় একটি বিষয়বস্তু । এটাই এই আর্টের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ।

তো চলুন দেখে নেওয়া যাক আমার আজকের এনএফটি আর্ট -


গ্যালারি : Fairy


Screenshot 2024-01-10 012541.png

Winter Spirit

The craftsmen of that time were too talented to be able to create a statue of a dancing woman perfectly.

Looking at some statues, such as the woman with a snake's tail, craftsmen created these statues with the intention of interpreting something or they actually came into existence.

In many cultures, especially in medieval times, it is said that dragons came to exist almost all over the world, India is a country that has many stories about dragons from what I could read. How did dragons become extinct in India?

When I watch documentaries on national geography it makes me want to have a time machine and travel in the past to see how in ancient times they created crafts, see the supposed giants who lived in ancient times, see how they built the pyramids among others. things.

Without a doubt, the ancient era brings with it more questions than answers and thanks to some people or organizations, attempts have been made to keep the relics of the past intact, such as the temple you visited.

This is another very interesting post from you @rme Dada, the konack temple museum is a great sight to behold.

From your post, I really love the things found in the museum, one of these days, if I am opportuned, I will come see these beautiful things myself.

I am really glad you enjoyed the Adventure, thank you for sharing with us 😊❤️

 last year 

বিভিন্ন রকমের পাথর কেটে কেটে এত সুন্দর সব মূর্তি তৈরি করা হয়েছে দেখে সত্যিই ভালো লাগলো দাদা। আসলে এত সুন্দর মূর্তি দেখতেও বেশ সুন্দর লাগছে। দর্শনীয় কোন স্থানে ভ্রমণে গেলে পুরনো সব মূর্তিগুলো দেখতে পাওয়া যায়। দারুন একটি পোস্ট সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

অনুভূতিটি খুবই আশ্চর্যজনক এই ভেবে যে, কীভাবে সেই মানুষ, নির্মাণ শ্রমিকরা এই ধরনের নকশা এবং ধারণা নিয়ে এসেছেন যখন প্রযুক্তি আজকের তুলনায় অনেক বেশি পিছিয়ে ছিল। এই ভাস্কর্যগুলি সেই যুগের পদচিহ্ন।

 last year 

এত আগের প্রযুক্তি দিয়ে এত নিখুঁত কাজ এবং মূর্তি তৈরি করার ব্যাপারটি সত্যিই খুব অবাক করার মত। এখনকার এত উন্নত প্রযুক্তিতেও এগুলো বানাতে অনেক বেগ পেতে হবে এবং এত নিখুঁত হবে বলে আমার মনে হয় না।

 last year 

দাদা মূর্তি গুলো দেখে প্রশংসা করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কতো নিখুঁতভাবে প্রতিটি মূর্তি তৈরি করেছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই কতোটা দক্ষতার সাথে মূর্তি গুলো তৈরি করেছে। বর্তমানে প্রযুক্তি কতোটা উন্নত হয়েছে,তবুও এই ধরনের দক্ষতা বর্তমানে দেখা যায় না। ফটোগ্রাফিগুলোও চমৎকার ভাবে ক্যাপচার করেছেন দাদা। সবমিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

বেলে মাটি শুনেছি কিন্তু বেলে পাথর কখনো শুনিনি।আচ্ছা দাদা এমন কি হতে পারে না যে হয়তো সে যুগে এমন কোনো পুরোনো সুপ্ত পদ্ধতি ছিলো,যা হয়তো এ যুগের কেও ই জানতে পারেনি।আমার এটা মনে হওয়ার কারণ শুধু ছেনি,হাতুড়ি এসব দিয়ে এতো নিঁখুত কাজ অভাবনীয়।

 last year 

আপনি ভিন্ন ধরনের একটি কাজ করলেন আগে মিউজিয়াম দেখলেন এরপরে মন্দির পরিদর্শন করলেন। আপনি যে মিউজিয়াম থেকে ভাস্কর্য গুলোর ফটোগ্রাফি করলেন। আমাদের সাথে শেয়ার করলেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে এ ভাস্কর্য গুলো তৈরি করতে যথেষ্ট পরিমাণ সময় এর দরকার হয়েছে। তাছাড়া ও প্রচুর পরিমাণ পরিশ্রম হয়েছে। এক সাথে মন্দিরের ভাস্কর্য গুলো এখানে এনে সংগ্রহ করা হয়েছে। আপনার পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরে ভালো লাগলো।

 last year 

দাদা, তখনকার দিনে শুধুমাত্র ছেনি হাতুড়ি ব্যবহার করে বিশালকায় এসব প্রস্থর খন্ড খোদাই করে কি নিখুত কারুকাজ দিয়ে মূর্তিগুলো তৈরি করেছে। সত্যিই দাদা, বিশেষ দক্ষতা ছাড়া এমন অসাধারণ মূর্তি তৈরি করা একদমই অসম্ভব। আর এইসব মূর্তি দেখে সত্যিই অনেক অনেক ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।