|| জগদ্ধাত্রী পুজা পরিক্রমা'২২ | পর্ব-০১ ||
নমস্কার সকলকে, আশা করি আপনারা সকলে ভাল আছেন।
আজকে আমি আমার শহরের জগদ্ধাত্রী পূজা পরিক্রমা নিয়ে একটি পোস্ট করছি। আমি এর আগে একটি পোস্ট করেছিলাম জগধাত্রী পুজোর প্রবর্তন নিয়ে। সেই পোস্টটি যারা পড়েছেন,তারা হয়তো অল্প কিছু ধারনা পেয়েছেন যে আমার শহরে জগদ্ধাত্রী পুজো কেমন হয়। যারা পড়েন নি, তারা এখান থেকে আরও একবার সেই পোস্টটি পড়ে আসতে পারেন।
প্রসঙ্গত আমাদের এখানে জগদ্ধাত্রী পুজোটা সব রকম ভাবেই হয়। তবে অধিকাংশ পুজো কোন থিমের উপর ভিত্তি করে হয়। তবে কোন কোন পুজোর কর্মকর্তারা প্যান্ডেল, লাইট বা লাইট এন্ড সাউন্ড শো এইসবের ওপরেও জোর দেয়। ছোট বড় অনেক রকমের পূজা হয়। কোন কোন পূজোর বাজেট থাকে ২ লাখ অথবা কোন কোন পূজোর বাজেট থাকে ১০ লাখ, কিছু পূজা আবার ১৫-২০ লাখ বাজেটেও হয়। আমাদের এখানে প্রত্যেকটি বারবার একটি মজার বিষয় হলো, প্রত্যেকটি বারোয়ারির প্রতিমারই কোনো না কোনো নাম রয়েছে যেমন-সোনা-মা, রানী-মা, সেরা-মা,আদি-মা,প্রাচীন-মা প্রভৃতি।
এই বছর পুজোতে অন্যবারের তুলনায় একটু বেশিই ঘোরাঘুরি হয়েছে আমার।পুজোর আগের দিন আমি আমার কিছু ভাই বোন ও দাদার সাথে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলাম। আমরা ঠিক করেছিলাম হেঁটে হেঁটে পুরো শহর ঘুরে ঠাকুর দেখব। কারণ পুজোর দিন এবং পুজোর আগের দিন আমাদের এখানে জ্যাম-জটের জন্য নো এন্ট্রি করে দেয়।তো আমরা পুজোর আগের দিন বিকেল বেলা ঠাকুর দেখতে বেরোই। এখন আমি পরপর প্রত্যেকটি প্যান্ডেলের ফটো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
সর্বপ্রথম আমি যে পূজা মন্ডপের ছবিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, তার নাম হলো পাঁচমাথা মোড় বারোয়ারি। এই পুজোটি আমার বাড়ির কাছেই হয়। এই বারোয়াটি মূলত থিমের উপরে পুজো করেছে। এদের থিমের বিষয়বস্তু হলো "গ্রাম বাংলার পরিবেশ"।সাধারণত গ্রাম্য অঞ্চলের একটা স্বাভাবিক পরিবেশ যেরকম হয় ঠিক সেরকম ভাবে প্যান্ডেল করে এরা সেই দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছে। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে তাদের এই প্রচেষ্টা। এই পুজো কমিটির বাজেট হইতে খুব বেশি নয়, কিন্তু স্বল্প বাজেটেই তারা খুব সুন্দরভাবে দশটার্থীদের কাছে তাদের পুজো মণ্ডপ আকর্ষণীয় করে তুলেছিল।
দিন- ০১/১১/২০২২
সময়- ০৪:৩২ pm
স্থান- কৃষ্ণনগর
ক্যামেরা ডিভাইস - POCO M3
এরপর সেখান থেকে আমরা আরও একটি পূজা মন্ডপের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এরপর আমরা গেলাম "চকেরপাড়া বারোয়ারী"। এই পুজো কমিটির এবারের থিম ছিল "আলোয় ভুবন ভরা"। কেন এরকম নামকরণ সেটা আপনারা পরবর্তী ফটোগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন। এই বারোয়ারি প্যান্ডেল থেকে লাইটিং এবং ভাবনাচিন্তা সত্যিই এক কথায় অসাধারণ ছিল। প্যান্ডেলটা পুরোটাই তৈরি হয়েছিল পাটের মাধ্যমে। আপনারা ছবিগুলি ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন সবটাই আসলে পাটের তৈরি। এবং তার মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে আলো প্রদর্শনীও করেছে। মন্ডপের মধ্যে ভেতরে দুই পাশে দুটো খুব পরিচিত দৃশ্য তারা ফুটিয়ে তুলেছে তাও পাটের মাধ্যমেই। সেই পরিচিত দৃশ্য দুটি প্রথমটি হল "অপু ও দুর্গার" এই বিখ্যাত ট্রেন দেখার দৃশ্য, এবং অপরটি হল কলকাতার হাওড়া ব্রিজ। দুটোই এক কথায় অসাধারণ হয়েছিল।
(এই বারোয়ারীর প্রতিমার নাম হলো আদি-মা)
দিন- ০১/১১/২০২২
সময়- ০৭:৩০pm
স্থান- কৃষ্ণনগর
ক্যামেরা ডিভাইস -POCO M3
বন্ধুরা আজকে এখানেই শেষ করছি ।আগামী পর্ব গুলিতে আরো কয়েকটি বারোয়ারীর ফটো আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
পূজা সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না বললেই চলে কিন্তু বর্তমানে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে এসে বিভিন্ন ধরনের পুজো দেখতে পাচ্ছি এবং ভারতীয় পুজো গুলো বিশ্ব বিখ্যাত হয় এবং বিভিন্ন থিমের উপর নির্ধারণ করে পুজো মণ্ডপ সাজানো হয়। এখনও সে তার ব্যতিক্রম হয়নি। অনেক চমৎকার কিছু ছবি দেখেছি এবং সেইসাথে চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন ধন্যবাদ।
হ্যাঁ দিদি,আসলে আমাদের এখানে পুজো নিয়ে মানুষের মধ্যে এক মাদকতা আছে।তাই সব পুজো গুলোই একে অপরকে ছাপিয়ে যায়।শুধু তাই নয়,আমার শহরের মাটির পুতুলেরও জগৎ জোড়া খ্যাতি আছে।তাই সব কিছু মিলিয়ে মিশিয়ে এক অন্যরকম পরিবেশ থাকে পূজোর সময় গুলিতে।আমার শহরের পুজো আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।ভালো থাকবেন।
এত সুন্দর করে ব্লগটা সাজিয়েছো ভাই চোখটা যেন ফেরাতেই পারছিনা। প্রথমবার আমি গেলে হয়তো বিশ্বাসই করতে পারব না যে এত চমৎকার করে কখনো কোন আয়োজন হতে পারে আদৌ!! খুব সুন্দর লাগলো সবগুলো ছবি। আর এই ধরনের পোস্ট দেখলে আমার ভেতরে কি কাজ করে সেটা নিশ্চয়ই তুমি ভালো করেই জানো। বেশি কিছু বলব না আর, মা যেন আমাদের সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন এবং সকলকে ভাল রাখেন এটাই প্রার্থনা।
আসলে দাদা,আমার তো আর তোমার মতো ভাষা দিয়ে পোস্ট সুন্দর করার ক্ষমতা নেই,তাই চেষ্টা করি যাতে ব্লগটা সুন্দর করে সাজিয়ে তোমাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার।
তবে খুব তাড়াতাড়ি তুমিও এই পুজো কাছ থেকে দেখতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।ভগবানের কাছে প্রার্থনা করো অন্তত একবার যেনো পুজোতে আমি তোমাকে এখানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে পারি।
জগদ্ধাত্রী পুজো খুব সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। পূজাতে নিশ্চয়ই চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিলো এত দুর্দান্ত পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আমাদের এখানে সব পুজোর সময়ই খুবই সুন্দর কাটে।বিশেষত জগদ্ধাত্রী পুজো।এটা আমার শহরের একটা আবেগ,ভালোবাসা।সবাই সবার সাথে সময় কাটিয়ে উপভোগ করে।আমার পোস্ট আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্যে।