"জন্মদিনের সন্ধ্যার কিছু আনন্দের মুহূর্ত - শেষ পর্ব"

in Incredible India15 hours ago
IMG_20251005_180023.jpg
"আমার জন্মদিনের সকল আনন্দ এই দুইজনের জন্যই"

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনাদের সকলের আজকের দিনটা বেশ ভালো কেটেছে। আমার দিনটাও মোটামুটি কেটে গেছে। আপনাদের সাথে আমার জন্মদিনের সুন্দর মুহূর্ত গুলো গত দুদিনের পোস্টে শেয়ার করেছি। আজ একেবারে শেষ পর্বে বাকি অংশটুকু শেয়ার করবো। চলুন তাহলে শুরু করি,-

যেমনটা আগের পোস্টে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম দক্ষিণেশ্বরের পুজো শেষ করে আমরা ব্রেকফাস্ট করার জন্য ওখানকারই একটা দোকানে গিয়েছিলাম, যেখানে সম্পূর্ণ নিরামিষ খাবার পাওয়া যায়।

IMG_20251005_100819.jpg
"গঙ্গায় স্নান করতে না‌ পারায় কান্না করছে"

গঙ্গার ধার থেকে যেহেতু তিতলি ও তাতানকে একটু জোর করেই নিয়ে আসা হয়েছিলো, সেহেতু তাতানের ভীষণ রাগ হয়েছিলো। তাই সে কিছু খাবে না বলে রাগ করে টেবিলের উপরে মুখ নিচু করে কান্না করছিলো। তখনকার একটা ছবি তুলেছি।

IMG_20251007_214622.jpg
"অনেক‌বার বলার পর তবেই রসগোল্লা খেতে রাজি হয়েছে তাতান"

এরপর অনেক কিছু বোঝানোর পর অনেকক্ষণ বাদে সে মুখ তুলে চেয়েছিলো। কিন্তু কোনো কিছু খেতে রাজি হয়নি। অনেক বলার পর শেষে রসগোল্লা খেতে রাজি হওয়ায়, ওর জন্য দুটো রসগোল্লা নেওয়া হয়েছিলো।

IMG_20251005_101520.jpg
"ছোলে ভাটুরে"
IMG_20251005_100921.jpg
"হিংয়ের কচুরি"

যাইহোক দিদি সেখানে কিছুই খায়নি। আমি, দাদা ও তিতলি তিনজনে মিলে অর্ডার করেছিলাম দুপ্লেট হিংয়ের কচুরি ও এক প্লেট ছোলে ভাটুরে। খাওয়া-দাওয়া সম্পন্ন করে আমরা সেখান থেকে আদ্যাপীঠ মন্দির দর্শন করতে গিয়েছিলাম।

IMG_20251005_105113.jpg

IMG_20251005_105902.jpg

IMG_20251005_105604.jpg

IMG_20251005_105139.jpg

"আদ্যাপীঠ দর্শনের মুহূর্ত"

পুজো যেহেতু দক্ষিণেশ্বরে দিয়েছিলাম, তাই আদ্যাপীঠে আলাদা করে পূজা দেব না ভেবেই আমরা এখান থেকে ব্রেকফাস্ট শেষ করেছিলাম। আমি এই প্রথমবার আদ্যাপীঠ মন্দিরে গিয়েছিলাম, তবে খুব বেশি সময় সেখানে অতিবাহিত করিনি। শুধু মন্দিরটা সম্পূর্ণ দর্শন করে আমরা আবার রওনা করেছিলাম দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনের উদ্দেশ্যে।

IMG_20251005_114625.jpg

IMG_20251005_114609.jpg

IMG_20251005_112905.jpg

IMG_20251005_111446.jpg

IMG_20251005_110700.jpg
"মেট্রো ‌করে‌ বাড়ি ফেরার মুহূর্ত"

যেহেতু ততক্ষণে মেট্রো চলা চালু হয়ে গিয়েছিলো, তাই আমরা মেট্রো করেই ফিরবো ঠিক হয়েছিলো। মেট্রো স্টেশনে ঢোকার মুখেই রামকৃষ্ণদেব, মা সারদা ও বিবেকানন্দের সুন্দর মূর্তি করা আছে। সেখানে দাঁড় করিয়ে তিতলি ও তাতানের একটা সুন্দর ছবি তুললাম।

এরপর মেট্রো করে বাড়ি ফিরতে আমাদের ওই মোটামুটি ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট সময় লাগলো। বাড়িতে ফিরে ফ্রেশ হয়ে আমি পোস্ট ভেরিফিকেশন করতে বসলাম এবং তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেও পারিনি। ঘুম ভাঙলো দিদির ডাকে।

IMG_20251005_142859.jpg

উঠে দেখি ততক্ষণে রান্নাবান্না সবই কমপ্লিট হয়ে গেছে। ও আমার জন্য খাবার বেড়ে আমাকে ডেকেছে। খুব যত্ন করে থালাটা সাজিয়েছে কিন্তু আমার দেখে বেশ হাসি পাচ্ছিলো। কেমন যেন বাচ্চাদের মতন সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে খেতে দিয়েছিলো।

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা নিজেদের মতো একটু গল্প গুজব করলাম। সেই ফাঁকে দিদি আবার পায়েসও রান্না করে ফেললো। বারণ করলাম বহুবার কিন্তু শুনলো না। ইতিমধ্যে তিতলি ও তাতানের বায়নায় আলাদা করে আবার আর একটা কেক আনা হয়েছে।

IMG_20251005_175605.jpg

IMG_20251005_175608.jpg

রাতে নাকি ছোট্টো একটা পেস্ট্রি কেটে ওদের মজা আসেনি, তাই একটা বড় কেক আনতেই হবে। কেকের ওপরে নাম লেখা হয়নি, কারণ কেকটা এগলেস ছিলো। যেহেতু দিদির ডিমের কিছু খায় না। তবে দোকানে নাম লেখার জন্য যে ক্রিমটা ছিলো সেটা এগলেস ছিলো না, তাই সেটা দিয়ে কেকের উপরে নাম লিখলে দিদি খাবে না। এই জন্য নাম না লিখেই নিয়ে আসা হয়েছিলো।

IMG_20251005_175755.jpg

IMG_20251005_175611.jpg

তাতে আবার তাতানের ভীষণ রাগ হয়েছে। কেকের ওপরে নাম না লেখা থাকলে নাকি বোঝাই যায়না কার জন্মদিন। বুঝন অবস্থা! এতটুকু বাচ্চা তার সমস্ত কিছু জ্ঞান আছে। বেলুন লাগানোর জন্য মাথা খারাপ করে দিয়েছিলো, কিন্তু অনেক বুঝিয়ে সেটা থামানো গেছে।

IMG_20251005_175930.jpg

IMG_20251005_175853.jpg

IMG_20251005_175803.jpg

IMG_20251005_175755.jpg

যাইহোক সন্ধ্যার পর যেহেতু আমাকে বাড়িতে ফিরতে হবে তাই সন্ধ্যা হতেই কেক কাটা কমপ্লিট করে ফেলতে হয়েছিলো। তার সাথে দিদির রান্না করা পায়েসও ছিলো। দাদা ও দিদি সকলে পায়েস খাইয়ে দিলো। বাবাকে সেই মুহূর্তে একটু কাজে বাইরে যেতে বাধ্য হয়েছিলো, তাই বাবার অনুপস্থিতিতে কেকটা কাটতে হয়েছিলো। কারণ আমার আবার ট্রেন ধরার তাড়া ছিলো।

IMG_20251005_180043.jpg

যাইহোক শেষ পর্যন্ত কেক কাটার মাধ্যমে সন্ধ্যাটা অতিবাহিত হয়েছে এবং তারপর আমি বাড়িতে ফিরে এসেছিলাম। এমন একটা জন্মদিন এর আগে কখনো পালিত হয়নি। আগের দিন রাত থেকে শুরু করে পরের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত, আমাকে নিয়ে তিতলি তাতানের মেতে থাকা, ওদের তৈরি করা কার্ড, তাতে লেখা সুন্দর কিছু কথা, যেন জন্মদিনটাকে পরিপূর্ণ করে তুলেছিলো।

ভালো লাগলো জানেন এই বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে। এমন দিন হয়তো জীবনে আর কখনো আসবেনা, তাই স্মৃতিগুলোকে যত্নে রাখার জন্যেই লেখা এবং ছবিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ভবিষ্যতে কখনো ইচ্ছে হলে এই পোস্ট খুলে দেখতে পারবো, এই আর কি!

যাইহোক এমনভাবেই প্রত্যেকের জীবন অনেক আনন্দে ও খুশিতে ভরে থাকুক, এই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শেষ করছি। প্রত্যেকে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
 14 hours ago 

শুরুতেই জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
দিনটা বোন ও ভাগ্নে ভাগ্নিকে নিয়ে যে ভালোমতোই কাটিয়েছেন সেটা বোঝাই যাচ্ছে। তবে জন্মদিনের প্রথম পর্বের লেখা আমি মিস করে গেছি তাই অনেক কিছুই আমার জানা হলো না। তবে আশা রাখি সময় করে এক ফাঁকে পড়ে নিবো।
ছবিতে বেচারা তাতানকে দেখে খারাপই লাগতেছে। বাচ্চাদের এই ছবিগুলি স্মৃতি হয়ে থাকবে। কেক কাটার সময় বাবা থাকলে যে খুব ভালো লাগতো সেটা অনুভব করতেছি নিজেকে দিয়ে। যাই হোক ,পরেরবার তিনি নিশ্চই উপস্থিত থাকবেন।
খুবই ভালো লাগলো আপনার এই বিশেষ দিন সম্পর্কে জেনে। বারবার এই দিনটা ফেরত আসুক আপনার জীবনে এবং প্রিয়জনদের নিয়ে দিনটা কাটান এই শুভকামনা রইলো।
ভালো থাকবেন সবসময়।

For curated comment


Hi there, your comment is interesting to read, keep up your engagement, you are awesome
curated by wirngo

 3 hours ago 

thank you so much


Hello there, you have posted a great quality post and we are happy to support you, stay up with good quality publications
Curated by wirngo

 3 hours ago 

Thank you for your support @wirngo. 🙏