Better Life with Steem|| The Diary Game||10 - 08-2025||
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
সৃষ্টিকর্তা যখন কোন সমস্যা দেয় তখন মনে হয় সবদিক থেকে সমস্যায় পরতে হয়। সেই সমস্যার শেষে ভালো কিছু ফলাফল দিয়ে থাকেন ।আজ বাপীর ( আমার বাবা) চোখের অপারেশন হবে, তাই নিয়ে অনেক টেনশনে ছিলাম।
সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় বাবার শরীর সব দিক থেকে ভালো ছিল। তার সুগার ছিল fbs -6.6 এবং RBS 7.7 । অপারেশনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই মনের ভিতরে অনেক ভয় কাজ করছিল। গতকাল সারা রাত বাপী ঘুমহীন কাটিয়ে ছিল। কিছুক্ষন পর পর এসে বলেন, আমার ডায়াবেটিস ঠিক আছে কিনা, আমার প্রেসার ঠিক আছে কিনা।
রাত ২:৩০ মিনিটে উঠে বাপীর বিপি এবং রক্ত পরীক্ষা করেছি। বাপী যে এভাবে ভেঙে পড়বেন বুঝতে পারিনি ।দুই মাস পূর্বে মায়ের চোখে লেন্স বসানো হয়েছিল তা আপনারা সকলেই জানে। মা অনেক ভিতু মানুষ । তিনিও এতটা ভয় পাইনি। আজ বাপীর দুই মেয়ে জামাই অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিল।
বাসায় মা এবং মেয়েকে রেখে আমি ও আর্মি বাবু বাপীকে নিয়ে সকাল ৮টায় বেড়িয়ে পরি। আমরা যখন বাসা থেকে নামি তখন কোন বৃষ্টি ছিল না। যখনই রাস্তায় আসলাম তখন অঝোরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। রাস্তায় কাজ চলছে তাই এখন আর ফ্ল্যাটের সামনে কোন রিক্সা কিংবা সিএনজি আসছে না ।কিছুটা হেঁটে গিয়ে তারপরে গাড়িতে উঠতে হয় ।বৃষ্টি পড়ছিল আমরা ছাতা নিয়েছিলাম কিন্তু এত জোরে জোরে বৃষ্টি পড়ছিল ছাতায় মানছিল না।
![]() | ![]() |
---|
এই বৃষ্টির মাঝে কোন সিএনজি পাওয়া যাচ্ছে না ।আমরা অনেক কষ্ট করে একটি সিএনজি পেলাম । ড্রাইভার মামা যথেষ্ট ভালো ছিলেন । তিনি একদম হাসপাতালের গেটের ভিতরে নিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে পৌঁছানোর পরে আমাদের কাছে থাকা ডকুমেন্ট গুলো দায়িত্বরত সেবিকার কাছে জমা দিলাম। গতকাল অপারেশনের কিছু টাকা জমা দিয়ে নিশ্চিত করে যাই । একজন সেবিকা এসে কিছু ওষুধ দিয়েছিলেন, সেগুলো বাপীকে খেতে বলা হয়।
বাপি অনেকটা ভীত ছিল, বাপীর খাবার পরে RBS পরীক্ষা করা হয়নী তাই বলেছিলেন ওষুধ গুলো পরে খেতে বলেছেন। দু'ঘণ্টা পর তিনি RBS টেস্ট করলেন এবং RBS 7.7 এসেছে। এরপরে বাপিকে ওষুধ খাওয়ানো হলো ।বাপীর BP মাপা হল। সব কিছু নরমাল আসে আমাদের ক্যাশ কাউন্টারে বাকী টাকা জমা দিতে বলা হলো । আমাকে কাউন্টার টাকা জমা করে এলাম ।
(16 BD=1 Steem) (57,800 BD= 3,612.5Steem) ৫৭,৮০০ টাকা জমা দিয়েছি। জমা রশিদ দায়িত্বরত সেবিকার কাছে জমা দিলাম ,তিনি বাপীর ফাইল তৈরি করে দিলেন। কিছুক্ষন পর পর বাপীর চোখে ড্রপ দিয়ে যান।
বাম চোখ অপারেশন করা হবে তাই বাম চোখের উপর এটি স্টিকার লাগিয়ে দিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরে বৃষ্টি থেমে গেল ।বাপিকে ওটিতে নেওয়া হবে ,আমরা অপেক্ষা করছিলাম। এই হসপিটালের সুন্দর একটি নিয়ম আছে , অপারেশন চলাকালীন সময় বাহির থেকে মনিটরে দেখার ব্যবস্তা আছে। তবে কোন রোগীর অপারেশন চলছে তা বোঝা যায় না ।
মায়ের যখন অপারেশন হয়েছিল তখন মা ১ম সিরিয়ালে ছিল তাই মায়ের অপারেশনটা আমরা একদম বুঝতে পেরেছি যে ,এখন মায়ের চোখ অপারেশন করা হয়েছে। আমরা ভিডিও করেছিলাম । চোখের লেন্স বসানো, সাধারণ ছোট্ট একটি অপারেশন কিন্তু কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে কঠিন হয়। আজ সেরকম কিছু জটিল অপারেশন দেখে আমি খুবই ভয় পেয়ে যায় তাই আমি আর কোন ভিডিও করতে পারিনি।
![]() | ![]() |
---|
আমি এক মনে শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠ করছি এবং সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছি যেন,বাপীর তাড়াতাড়ি অপারেশনটা হয়ে যায়। কিছু কিছু রোগীর দেখি চোখের উপরে ব্যান্ডেজ করা আবার কিছু কিছু রোগী দেখে কোন কিছুই বোঝা যাচ্ছে না যে, তার অপারেশন হলো কিংবা হলো না। অপারেশন করা রোগীকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে আসা হলো ।যখনই দেখলাম গেটের ওই পাশে বাপী হুইল চেয়ারে বসা তখনই আমার মনের ভিতরে একটা ভয় কাজ করছে ।
আমি দৌড়ে গিয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলাম, হুইল চেয়ারে বসা রোগীর কি অপারেশন হয়েছে না হবে? তিনি বললেন যে, হ্যাঁ তার অপারেশন হয়ে গেছে । আমি অনেকটা স্বস্তি অনুভব করি কারণ বাপীর চোখে কোন ব্যান্ডেজ ছিল না। ব্রাদার বাপীকে নির্দিষ্ট আসনে রেখে আসলেন । এক ঘন্টা কথা বলতে নিষেধ করেছেন ।
![]() | ![]() |
---|
বাপির বেডের পাশে একজন জজ আঙ্কেল ছিলেন । তার চোখে ব্যান্ডিস বাধা ছিল কিন্তু তিনি বাপীর থেকে অনেক সাহসী ছিলেন। তিনি বাপীর কাছে এরে তার সাথে কথা বলা শুরু করেছেন। বাপি কিসে চাকরি করতেন , কোথায় চাকরি করতেন, বাপীর দেশের বাড়ি কোথায় ? তিনি কোথায় কোথায় চাকরি করেছেন সে কথা বলতে ছিলেন। যখনই শুনলেন, আমাদের দেশের বাড়ি বরিশাল ,তখন সে বলল ১৯৯৭ সালে ”ডিস্ট্রিক্ট জজ” হিসেবে বরিশাল জেলায় ছিলেন। এমনকি তার বয়স এবং বাপীর বয়স প্রায় কাছাকাছি।
দুই ঘন্টা পরে আমাদের সমস্ত কাগজপত্র পেয়ে যাই। আমরা একদিনের বেড ভাড়া দিলেও সেখানে থাকেনি, বাসায় চলে আসি। আমার বাসা থেকে হসপিটাল একদম কাছে । পরের দিন সকাল বেলা আবার ডাক্তারকে দেখিয়ে নিতে হবে ।এভাবে আমার ব্যস্ততার সময় গুলো কেটে যাচ্ছে।
এবার অসুস্থতা আমাকে যেন আরও বেশি পেয়ে বসেছে। ১০৪” জ্বর থাকায় আমি নিয়মিত পোস্ট করতে পারছি না। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে এই পোস্টটি আমি তিন দিন ধরে লিখতেছি, এখনো শেয়ার দিতে পারছি না।আজ যত রাত হোক না কেন এই পোস্ট করব ।শরীর আমার যত খারাপ হোক না কেন আমার কাজ আমাকে করতে হবে ।
আর বেশি কথা বাড়াচ্ছি না ।অনেক রাত হল ,আপনারা সকলে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং আমাদের জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন ।শুভরাত্রি।
Thank you,Sir,@fantvwiki