ফিচার | রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাল-হকিকত | উখিয়া, কক্সবাজার (২য় পর্ব) | ১০% @btm-school

20220626_120857.jpg

গত পর্বের পর:
বর্তমানে বিভিন্ন লোকাল এনজিও, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবন-যাপনের জন্য নানাবিধ সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে। এনজিও এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলো বিদেশী ফান্ড এনে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে প্রচুর কাজ করছে। তাদের মধ্যে কোন সংস্থা রোহিঙ্গাদের আবাসন তথা তাদের বসবাসের ঘর বানানো নিয়ে কাজ করছে, কোন সংস্থা ফুড আইটেম তথা যাবতীয় খাদ্যদ্রব্য (চাল, ডাল, আটা, তেল ইত্যাদি) নিয়ে কাজ করছে, কোন সংস্থা নন-ফুড আইটেম নিয়ে কাজ করছে, কোন সংস্থা শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে, কোন সংস্থা স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে, কোন সংস্থা তাদেরকে রান্নার চুলা ও গ্যাস সরবরাহ করছে, কোন সংস্থা তাদেরকে কাপড়-চোপড় সরবরাহ করছে, কোন সংস্থা ক্যাম্পগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের কাজ করছে, কোন সংস্থা বিশুদ্ধ সুপেয় পানির ফিল্টার স্থাপন করে দিচ্ছে, কোন সংস্থা তাদেরকে স্যানিটারি ও হাইজিন আইটেম সরবরাহ করছে।

এভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটা জিনিসপত্র কোননা কোন সংস্থা সরবরাহ করছে। উন্নয়ন সংস্থাগুলো আশ্রয় শিবিরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য নানাবিধ কাজের ব্যবস্থাও করে দিচ্ছে। আর এই পুরো কার্যক্রমের সমন্বয় করছে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় প্রশাসন তথা ওখানকার ডিসি, এসপি, ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান ইত্যাদি। প্রত্যেকটা শরণার্থী শিবিরে তাঁরকাটায় পাঁচিল ঘেরা একটা করে অফিস রয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তা ও বিভিন্ন এনজিও ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের বসার জায়গা রয়েছে। সেখান থেকেই তারা তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।

20220626_123809.jpg

রোহিঙ্গা সমস্যা বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা অথবা একটা বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রতিনিয়ত খুন, ধর্ষন, অস্ত্রবাজি, মাদক পাচারসহ অন্যান্য অনেক অপরাধমূলক কার্যক্রম ঘটছে। রোহিঙ্গারা মায়ানমার থেকে টেকনাফ হয়ে অস্ত্র ও ইয়াবা-আইসসহ ভয়ংকর মাদক চোরাচালানে জড়িত। সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের শীর্ষনেতা মুহিবুল্লাহসহ গত ৫ বছরে প্রায় শতাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে রোহিঙ্গারা। এছাড়া শিবিরগুলোর অভ্যন্তরে গড়ে উঠেছে একাধিক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। সেখানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দিন দিন বাড়ছে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা। সাধারণত রোহিঙ্গাদেরকে ক্যাম্প এরিয়া থেকে বাইরে বের হওয়ার সুযোগ নেই, কিন্তু তারা সুযোগ পেলেই বাইরে চলে আসতে চায়। কেউ কেউ জীবনের রিস্ক নিয়ে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া, ভারত, ইতালী ইত্যাদি দেশে পাড়ি জমায়।

তাছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সহযোগীতায় তারা বাংলাদেশের ন্যাশনাল আইডি কার্ড, এমনকি পাসপোর্ট পর্যন্ত করে ফেলতে সক্ষম হয় এবং বিভিন্ন অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করে। বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি এই ৩ পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আগে থেকেই বসবাস, কথিত আছে তাদের সাথে একত্র হয়ে রোহিঙ্গারা অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলছে এবং ঐসব এলাকায় নানা ধরণের অপরাধমূলক কার্যক্রম ঘটাচ্ছে।

20220626_120539.jpg

আজকের পর্বের এখানেই সমাপ্তি। পরবর্তী এবং শেষ পর্বে আমরা রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবো। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ।

Sort:  
 3 years ago 

অনেক ভালো লাগলো রোহিঙ্গা সম্মন্ধে জানতে পেরে। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া এমন একটি পোস্ট করার জন্য। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

ধন্যবাদ দাদা, আমি নিজেও সরাসরি সেখানে গিয়ে অনেক কিছুই জেনেছি, সেসব অভিজ্ঞতাই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

পুরোটা পড়লাম
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় ভাইয়া!

ধন্যবাদ। আর অবশ্যই পরবর্তী পর্বে আরও চমকপ্রদ তথ্য পাবেন রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে।

 3 years ago 

খুবই সুন্দর হচ্ছে আপনার ধারাবাহিকটি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

ধন্যবাদ ভাই।
অপেক্ষায় থাকার জন্যও ধন্যবাদ।