কন্টেস্ট-আমার এলাকার একটি বিখ্যাত ফল।
আজ বুধবার
১৬ আগষ্ট ২০২৩
আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় স্টিম বাসি সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। স্টিম ফর ট্রেডিশনে আপনাদেরকে স্বাগতম। আপনাদের জন্য রইলো অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভালোবাসা এবং শুভকামনা। আজকে আমি আমার এলাকার একটি বিখ্যাত ফল নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি, যে ফল সমগ্র বাংলাদেশের কাছে আমার এলাকাকে প্রসিদ্ধ করে তুলেছে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।তো দেরি কেনো চলেন শুরু করা যাক।
আমার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল। আমার টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার বিখ্যাত একটি ফল হচ্ছে আনারস। যে ফল সমগ্র দেশে এবং বিদেশে আমাদের জেলাকে বিখ্যাত করে তুলেছে। মধুপুরকে আনারসের রাজধানী বলা হয়। মধুপুরের আনারস খুবই সুস্বাদু। আমার আপুর বাসা মধুপুর, কয়েকদিন আগে আমি মধুপুর গিয়েছিলাম, সেখানে আমি আনারসের সমারোহ দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। মধুপুরের আনারস এতটাই সুস্বাদু যে, কেউ একবার খেলে এই আনারসের কথা সারাজীবন মনে রাখবে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আনারসের পাইকারি বাজার মধুপুরে বসে। মধুপুর উপজেলার প্রায় সমস্ত জমিতেই আনারসের চাষ হয়। আনারস চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি হচ্ছে মধুপুরের মাটি। আনারস চাষ করে মধুপুরের আনারস চাষীরা আজ স্বাবলম্বী।
আমার আপুর বাসা মধুপুর হওয়ার সুবাদে, আমি আপুর বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিয়ে বের হলাম, আনারস এর পাইকারি বাজার দেখতে। আমি মাঝে মাঝেই মধুপুর যাই, বিশেষ করে আনারসের সিজিনে বেশি যাওয়া হয়। কারণ আমার আপুদের আনারস এর বাগান রয়েছে, সেখান থেকে একদম কেমিক্যাল মুক্ত আনারস খাওয়া যায়। তাই আমি আনারস এর সঠিক স্বাদ নিতে এই কেমিক্যাল মুক্ত আনারস খেয়ে আসি প্রতিবছর।
মধুপুরের সবচেয়ে বড় পাইকারি আনারসের বাজারের নাম হচ্ছে জলছত্র। ষোলাকুড়ি, পঁচিশ মাইল, আউশনাড়া এবং অরণখোলা থেকে আনারস আসে এই জলছত্র বাজারে।
পাইকারি বিক্রির জন্য, সেই ভোর রাত্রী থেকে এখানে বাজার শুরু হয়। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে ট্রাক এসে জমা হয়, এই পাইকারি বাজার এর আনারস নিতে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই বাজার থেকে আনারস নিয়ে ট্রাকে সাজিয়ে পৌঁছে দেয় সমগ্র বাংলাদেশে।
টাঙ্গাইলের ইতিহাস থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার নামকরণটি হয়, এই অঞ্চলটি ঘন জঙ্গল ছিলো, এবং সেই জঙ্গলে মৌমাছির প্রচুর চাক ছিলো। মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করতো। সব সময় এই অঞ্চলে মধু পাওয়া যেতো বিধায় পরবর্তীতে এই অঞ্চলকে মধুপুর নামকরণ করা হয়। বর্তমানে মধু পাওয়া না গেলেও আনারসের মধ্যে মধুর স্বাদ পাওয়া যায়। মধুপুরে আনারস মধুর মত মিষ্টি। তাই মধু এবং আনারসের সমন্বয়ে এই অঞ্চলের নাম মধুপুর।
আনারসের পাশাপাশি মধুপুরে রয়েছে বিশাল রাবার বাগান। যার আয়তন হবে প্রায় আট হাজার একর।
জলছত্র আনারস এর হাট হয় সাপ্তাহে ২ দিন, শুক্রবার ও মঙ্গলবার। এই হাটে চাষীদের কে দেখা যায় সাইকেলর মধ্যে বাঁশের ডালার সাহায্যে আনারস জলছত্র বাজারে নিয়ে আসতে। আবার কেউ ঘোড়ার গাড়ির সাহায্যে অথবা ভ্যান এর সাহায্যে আনারস বাজারে নিয়ে আসে।
- পুষ্টির অভাব দূর করে।
- হাড়ের সুস্থতায়।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- দাঁতের মাড়ির সুরক্ষায়।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে।
- ক্রিমিনাশক হিসেবে।
- ক্যান্সারের প্রতিরোধী হিসেবে।
আনারস হচ্ছে পুষ্টির বেশ বিরাট একটি উৎস । আনারসে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করে। আনারস শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। হাড় গঠনে, চোখের সমস্যায়, এবং দাঁত মাড়ির সুস্থতায়, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে এবং কি কৃমির যন্ত্রণা থেকে রক্ষায় আনারসের ভূমিকা অপরিসীম। তাই সুস্থ থাকতে হলে প্রত্যেকটা মানুষকে আনারস খাওয়া উচিত।
আনারস খাওয়ার যেমন উপকার রয়েছে ঠিক তেমনি অপকারিতা রয়েছে। আনারসের মধ্যে প্রাকৃতিক শর্করা বা চিনি রয়েছে যেটা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর। খালি পেটে আনারস খেলে পেট ব্যথা হতে পারে। যাদের এলার্জি সমস্যা তাদের ক্ষেত্রে চুলকানি হতে পারে।
ফল স্বাস্থ্যের জন্য সব সময় উপকারী। কথায় আছে খালি পেটে জল আর ভরা পেটে ফল। তাই খালি পেটে এক গ্লাস পানি খাওয়ার পর, আনারস ফল বা আনারসের জুস খাওয়া ভালো। প্রত্যেকটা মানুষের সকালে মোটাবালিজম বেশি হয়। এই সময় মানুষের শরীরের পাচনতন্ত্র দ্রুত শর্করা ভেঙ্গে দেয় এবং শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দূরত্ব শোষণ করতে সাহায্য করে। তাই সকাল বেলা পানি খাওয়ার পর আনারস খাওয়া উত্তম। এবং ব্যায়াম করার আগে এবং ব্যায়াম করার পরে আনারসের জুস খাওয়া উত্তম।
ঢাকা থেকে আনারস এর রাজধানী মধুপুর যেতে হলে আপনাকে অব্যশই বাসে যেতে হবে। বাসে যেতে হলে ময়মনসিংহগামী প্রান্তিক বাস পাওয়া যায়, এবং কি ধনবাড়িগামী বিনিময় বাস বাওয়া যায়, এবং কি গোপালপুর এর দ্রুতগামী বাস পাওয়া যায়। এই বাসে চড়ে আপনি অনায়াসে মধুপুর আনারস চত্বর চলে যেতে পারবেন। তবে গোপালপুরের দ্রুতগামীতে চড়তে হলে আপনাকে ঘাটাইল নামতে হবে।
সেখান থেকে সি এন জি পাওয়া যায় মধুপুর যাওয়ার জন্য। এবং সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা টু মধুপুর রুটে চলাচলকারী মধুবন বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। আপনি সেই বাসে করেও চলে যেতে পারেন আনারসের শহর মধুপুরে। আর আপনার বাসা যদি উত্তরাঞ্চলে হয়, তাহলে মধুপুর যেতে হলে আপনাকে ট্রেনে করে যেতে হবে। ট্রেনে করে যেতে হলে আপনাকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে সিএনজি করে গোপালপুর, এবং গোপালপুর থেকে মধুপুরের সিএনজি পাওয়া যায়। সেই সিএনজি করেই চলে যেতে পারবেন মধুপুরে।
মধুপুর গেলেই দেখতে পারবেন, মধুপুর শহরেই বেশ সুন্দর একটি আনারসের ভাস্কর্য। যেটা আনারস চত্বর নামে পরিচিত। ভাস্কর্য দেখেই আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। মধুপুর আনারস চত্বর থেকে জলছত্রের অটো বা রিক্সা পাওয়া যায়। যদি সময় থাকে ঘুরে আসবেন মধুপুরের আনারস বাগান, আনারসের এর হাট জলছত্রে। আশা করি অনেক ভালো লাগবে।
মধুপুরের আনারস বাগানে গেলে, যেদিকেই চোখ যায়, শুধু আনারস আর আনারস। চোখের প্রশান্তি চলে আসে। জুলাই আগস্ট এই দুই মাস আনারস বিক্রির মাস, এখন চলছে আনারসের রমরমা ব্যবসা। চাষীরা ব্যস্ত আনারস বিক্রি করতে।
রাস্তার পাশে স্তুপ আকারে রাখা হয়েছে আনারস। পাইকাররা আসে আনারস দেখতে,দেখে কিনে নিয়ে যায়। আনারসকে ঘিরে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে মধুপুরবাসী। আনারস কে ঘিরে বিশাল কর্মজজ্ঞ চলছে এই মধুপুরে। না আসলে নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। সবাইকে আমাদের টাঙ্গাইলের মধুপুর আসার আমন্ত্রণ রইলো। আজ এ পর্যন্তই। কেমন লাগলো আমাদের জেলার মধুপুরের আনারস নিয়ে আমার এই সামান্য লেখাটা, সেটা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
এই প্রতিয়োগিতায় আমি আমার ৩ জন বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি @sanaula, @iyanpol12 &@zpzn
মোবাইল | TECNO CAMON 16 PRO |
---|---|
ধরণ | আমার অঞ্চলের বিখ্যাত ফল আনারস |
ক্যামেরা | ৬৪ মেগাপিক্সেল |
ফটোগ্রাফার | @aslamarfin |
অবস্থান | মধুপুর, টাংগাইল। |
টাংগাইলের মধুপুরের আনারস সাদাদেশে প্রসিদ্ধ আমি নিজে যতবার আনারস কিনতে ততবার জিজ্ঞাসা করি কোথাকার আনারস। বিশেষ করে জ্বরের রোগি দেখতে গেলে হাতে আর যাই থাকুক একজোড়া আনারস নিয়ে যাই। তবে আনারস নিয়ে বিখ্যাত একটি লাইন আনারস এবং দুধ যা একসাথে খাওয়া যায় না। আপনার ছবি গুলো দেখে এখন আনারস খাওয়ার ইচ্ছা হচ্ছে। প্রতিযোগিতার জন্য ধন্যবাদ প্রিয়✌️।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
টুইটার লিংক-
https://twitter.com/Aslamarfin64366/status/1691615843304735181?t=qxFV0YDIwJ3ixQdsvN5NVQ&s=19
By: Urdu Community cruated by @yousafharoonkhan
Stay together
Join the Urdu Community with more confidence.
Steem On
thank you so much
আমি অনেক আগে থেকেই জানতাম মধুপুর আনারসের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু আনারসে এতো গুনাগুন আছে আগে তা জানতাম না। আমি শুধু জানতাম আনারস খেলে নাকি কৃমি চলে যায়। ওজন কমাতে সাহায্য করে আগে বললে প্রতিদিন খাইতাম। অনেক সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন ভাই। প্রতিযোগিতায় আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনি আপনার এলাকার বিখ্যাত ফল নিয়ে অনেক সুন্দর করে বিস্তারিত লিখেছেন।যারা এ ফল সম্পর্কে জানেনা তাদের জানা হয়ে গেল। এ ফলটির অনেক গুনাবলি আছে।আমারও খেতে ভালোই লাগে।আপনার ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
মধুপুরের বিখ্যাত ফল আনারস সম্পর্কে খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন ভাই। আনারস সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন,এবং সাজিয়ে গুছিয়ে খুব সুন্দর ভাবে পোস্টটি উপস্থাপন করেছেন। আপনার তোলা আনারসের ছবি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি কনটেস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাই আমি অনেক আগে থেকেই জানতাম যে মধুপুর আনারসের জন্য অনেক বিখ্যাত।এবং আপনি ঠিক বলেছেন যে আনারস খেলে শরীরে ওজন কমে। তবে গ্রামে অনেকে
আনারসের একটি ক্ষতির কথা বলে তা হলো আনারস খেয়ে দুধ খেলে নাকি মানু মারা যায়। জানিনা এটা সত্যি কি মিথ্যা তবে কেউ জানলে একটু বলিয়েন। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের কাছে শেয়ার করার জন্য
আরে না এটা প্রচলিত কথা মাত্র। ধন্যবাদ
@tipu curate
Holisss...
--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.
Upvoted 👌 (Mana: 6/8) Get profit votes with @tipU :)
মধুপুর টাঙ্গাইলের আনারস অনেক স্বাদ হবে হয়তো।এক গ্লাস পানি খাওয়ার পর আনারসের ফল বা জুস খাওয়া ভালো এই কথাটি আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো ভাই এটা আমি জানতাম না। তবে নিশ্চয়ই আপনি আমাকে টাঙ্গাইলের আনারস খাওয়াবেন এটা আপনার কাছে অনুরোধ রইলো।যাইহোক খুব সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে আনারসের। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
টাঙ্গাইলের মধুপুরের বিখ্যাত এই আনারস সারা বাংলাদেশেই সুনাম অর্জন করেছে। টাঙ্গাইলের মধুপুরের নাম শুনলেই যে কেউ বলে দিতে পারবে যে এ জায়গাটি কিসের জন্য বিখ্যাত। অন্য জায়গায় যে আনারস পাওয়া যায় তার থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুরের আনারসের স্বাদ কয়েক গুণ বেশি। আপনার এলাকার বিখ্যাত ফল নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আপনার জন্য শুভকামনা রইল। এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে পোস্টে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।