মেঘলা বিকেলে অচেনা ডাক ( পর্ব ১ )

আজকে আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করে নেবো। এই গল্পটির নাম হলো "মেঘলা বিকেলে অচেনা ডাক"। অরিত্র নামে একজন কলকাতায় বসবাস করতো। একদিন হঠাৎ বিকেলের দিকে আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেলো। অরিত্র তখন কলকাতার একটি অফিসে অর্থাৎ যেখানে সে চাকরি করে। আবহাওয়ার ওইরকম অবস্থায় অরিত্র অফিস থেকে বাড়ি ফিরে আসে, কিন্তু কোনো একটা কারণে তার মনটা ভীষণ ভারী। ফ্রেশ হয়ে সবে বেলকনিতে একটু বসেছে, এমন সময় হঠাৎ একটা কলিং বেল বাজার শব্দ আসে। অরিত্র গিয়ে দরোজা খুলে দেখে সেখানে কেউ নেই, শুধু একটা চিঠির খাম পড়ে আছে। অর্থাৎ যে পিওন তাকে এই চিঠিটা দিয়েছে, সে দরোজার সামনে রেখে কলিং বেল চেপে চলে গিয়েছে।

অরিত্র তো একটু অবাকই হলো, কারণ এই অসময়ে কে চিঠি পাঠালো! আর তাকে তো তেমন চিঠি পাঠানোর মতো কেউ নেই আপাতত। বিস্ময়ের সাথে সে চিঠির খামটা তুলে নিয়ে ঘরে এলো। সেখানে তার বাড়ির ঠিকানাটাও দেওয়া এবং সেই চিঠির খামে লেখা ছিল যে, বিকেল ৫ টার আগে এই চিঠিটা যেন খুলো না। ঘড়ির কাটায় তখন সাড়ে ৪ টার মতো বাজে, অরিত্রর তো চিঠির খামটা খুলে দেখার জন্য মনের মধ্যে একটা উত্তেজনা মতো কাজ করছে। কিন্তু তাও সেই কথা মতো ৫ টা পর্যন্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করলো এবং এতক্ষন একটা অস্বস্তির পরে সে খামটা খুলে দেখলো একটা সাদা পৃষ্ঠা। আর তাতে একটি মাত্র লাইন লেখা ছিল।

এ যেন এক অদ্ভুত ঘটনা, যা অরিত্র কোনো কারণ খুঁজে পেলো না। কিন্তু সেই একটা লাইনের লেখার মধ্যে এক অদ্ভুত রহস্য লুকিয়ে ছিল। তাতে লেখা ছিল-"তুমি যাকে খুঁজছো, সে বেঁচে আছে। ঠিক সন্ধ্যার সময়ে সেই পুরোনো ফ্যাক্টরিতে চলে এসো"। অরিত্র যেন একদম একটা পুরো রহস্যের জালের মধ্যে জড়িয়ে পড়লো। কারণ যা এখান থেকে প্রায় ৫-৬ বছর আগে ঘটে গেছে, হঠাৎ এতো বছর পরে সেটার বিষয়ে কথা উঠছে কেনো, আর কেইবা করছে এইসব! অরিত্রর তো হাত কাঁপতে লাগে। কারণ গত ৬ বছর আগে তার ভাই নিখোঁজ হয়ে গেছিলো এবং তাকে খোঁজার জন্য যে থানায় ডায়েরি করেছিল, সেই পুলিশ অধিকারীরা তাকে জানিয়েছিল, সে মৃত। আর তাদের পরিবারও এই ঘটনা মেনে নিয়েছিল।

কিন্তু এখন আবার সেই ঘটনা কেন ফিরে আসছে, কারণ সেই কেস তো ক্লোজ হয়ে গেছে। অরিত্রর মনে কেমন যেন এই চিঠিটা নিয়ে খটকা লাগতে লাগে। কারণ এইধরণের চিঠির মাধ্যমে কোনো ফাঁদও হতে পারে। কিন্তু যেহেতু তার ভাইয়ের বিষয়, ফলে সে এই বিষয়ে আগে পিছে আর কিছু না ভেবে প্রস্তুত হয় যাওয়ার জন্য। এদিকে মুষল ধারে বৃষ্টি পড়তে থাকে বাইরে । অরিত্র ছাতাটা নিয়ে শহরের এক কোনে পরিত্যক্ত ফ্যাক্টরির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় অর্থাৎ চিঠির কথা অনুযায়ী। ওই জায়গাটায় ওই ঘটনার মুহূর্তে শেষ লোকেশন ট্র্যাক করা গেছিলো রেকর্ড অনুযায়ী। সারা রাস্তা ওই বৃষ্টি মাথায় হেঁটে চলেছে। কিন্তু অরিত্রর মন খুব উতলা অর্থাৎ তার মনে যেন হাজারটা প্রশ্ন ঘুরতে থাকে। কারণ এই চিঠি তো এক রহস্যের মতো তার কাছে এসেছে, ফলে তার মনে একটা ভয়ও কাজ করে যে এটা যদি কোনো ফাঁদ হয়! আবার এই ভেবে খুশি হচ্ছে যে, তার ভাই যদি বেঁচে থাকে!.....