মানব রোগ ও ইমিউনিটি সিস্টেম

in আমার বাংলা ব্লগ16 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

DALL·E 2024-11-07 00.32.34 - An eye-catching and detailed illustration of the human immune system responding to disease. The image shows white blood cells, such as T-cells and mac.webp

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে আমাদের মানব শরীরের আরেকটি বিস্মকর বিষয় নিয়ে কথা বলবো। আসলে আমাদের মানব শরীরের প্রতিটা বিষয় অনেক জটিল এবং রহস্যময় দ্বারা সৃষ্টি। এই যেমন আমাদের শরীরে দেখুন নানা সময়ে বিভিন্ন ধরণের রোগবালাই, যেমন-বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং আরো অন্যান্য যেসব প্যাথোজেন আছে, এই সবকিছুর দ্বারা কিন্তু আক্রান্ত হই। কিন্তু এই ধরণের জীবাণু বা ভাইরাস এবং ব্যাক্টেরিয়ার মতো রোগ থেকে রক্ষা পাই কিন্তু একটাই কারণে, আর সেটা হলো ইমিউনিটি সিস্টেম। এটা আমাদের জীবনের রক্ষার্থে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের শরীরে এই ইমিউনিটির মতো একটি সুসংগঠিত সিস্টেম আছে বলেই কিন্তু আমরা অনেক সময় বড়ো বড়ো রোগের হাত থেকে রক্ষা পাই। এটা আমাদের শরীরের একটি শক্তিশালী সিস্টেম, যা বিভিন্ন জীবাণুর সাথে লড়াই করে থাকে।

এই ইমিউনিটি সিস্টেমটার প্রধান কাজটাই হলো বাইরের যত রোগ জীবাণু, ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি এইসবের থেকে রক্ষা করা। এই যে আমরা প্রতিনিয়ত বাইরে যাতায়াত করি, এতে আমাদের শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে না! অবশ্যই করে, কিন্তু এই সিস্টেমটাই আমাদের শরীরে প্রবেশকৃত জীবাণুগুলো থেকে প্রতিনিয়ত রক্ষা করে থাকে। আসলে এই ইমিউনিটি সিস্টেমটা কি বা এটা কিভাবে গঠিত হয়! আসলে এই সিস্টেমটাও বিভিন্ন ধরণের কোষ, প্রোটিন এবং অঙ্গ এইসব কিছুর সমন্বয়ে এই ইমিউনিটি সিস্টেম এর ব্যাপারটা গঠিত হয়, আর এইগুলো আসলে একটা বিশাল বড়ো নেটওয়ার্ক বলা যায় আমাদের শরীরের। তবে ইমিউনিটি সিস্টেমটা যে শুধু মাত্র আমাদের শরীরের ভিতরেই গঠিত হয় আর সেখানেই বিভিন্ন জীবাণু, ব্যাক্টেরিয়া এইসব প্রতিহত করে, তা কিন্তু না, আসলে এই সিস্টেমটার কিন্তু আবার কিছু স্তর আছে।

প্রথমত আমাদের শরীরের বাইরের যে চামড়া আছে, এটা কিন্তু প্রথম প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন জীবাণুর ক্ষেত্রে। তারপর আবার দেখুন আমাদের শরীরের যেকোনো অংশ অনেক সময় আঘাত লেগে যায় যেকোনো কারণে হোক বা যেভাবে হোক। এই আঘাত প্রাপ্ত স্থানগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, প্রদাহ সৃষ্টি হয়, আর এইটা কিন্তু আবার অনেক সময় জীবাণু ধংসের কাজে ভূমিকা। রাখে তাছাড়া আপনারা জানেন যে, আমাদের শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা এবং শ্বেত রক্তকণিকার মতো কিছু কণিকা আছে যা অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর এইগুলো কিন্তু আমাদের শরীরে প্রবেশকৃত বিভিন্ন জীবাণুগুলোকে গ্রাস করার মতো কাজ করে থাকে। এছাড়া আরো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো, আমাদের শরীরে কিছু কোষ আছে, যেগুলো টি সেল আর বি সেলের মতো একটা বিশেষ ধরণের কোষ। এই সেল দুটি তখনই একসাথে সক্রিয় ভাবে লড়াই করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন যখন শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে।

আবার আমাদের শরীরে এন্টিবডি বলে একটা বিষয় আছে, এটা সাধারণত আমাদের কোষের মধ্যে যে বি সেল আছে ওটার থেকেই উৎপন্ন হয় এবং এই সিস্টেমটা একটি নির্দিষ্ট জীবাণুকে টার্গেট করে ধংস করার চেষ্টা করে থাকে। আর আমাদের শরীরের মধ্যে এই সিস্টেমগুলো একবার তৈরি হয়ে গেলে বা উৎপন্ন হয়ে গেলে পরে যদি এক জাতীয় রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে দ্রুত প্রতিরোধে সহায়তা করে, বরং রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত সেরে যায় এক্ষেত্রে। কিছু সাধারণ রোগ যেমন-আমাদের প্রত্যেকের শরীরে সর্দি-কাশির মতো সাধারণ রোগগুলো প্রায় লেগেই থাকে আর এইগুলোও ব্যাক্টেরিয়া আর ভাইরাস এর থেকেই হয়ে থাকে, ফলে এই রোগগুলোর ক্ষেত্রে দ্রুত কার্যকারিতা দেখায় ইমিউনিটি সিস্টেমগুলো। তবে এই ভাইরাস ছাড়াও আরো কিছু কিছু ভয়ঙ্কর ভাইরাস আছে, যেমন কয়েক বছর আগে ঘটে যাওয়া করোনা ভাইরাসের কথাই বলি।

এই ভাইরাস এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, পুরো বিশ্বকে গ্রাস করে নিচ্ছিলো। আসলে এই ধরণের ভাইরাসের ক্ষেত্রে শরীরে অত্যন্ত শক্তিশালী ইমিউনিটি প্রয়োজন হয়। এর জন্য এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে আমাদের শরীরে শুরুতেই ইনেট নামের ইমিউনিটি শুরু হয় এবং পরে এটি থেকে এন্টিবডি উৎপন্ন হওয়ার মাধ্যমেই এডাপ্টিভ ইমিউনিটি শক্তিশালী হয়ে এই ধরণের ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আসলে যার শরীরে ইমিউনিটি যত বেশি শক্তিশালী, তার শরীরে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম, বলতে গেলে একেবারেই থাকে না। কিন্তু শরীরে ইমিউনিটি পাওয়ার কম হলে সহজেই ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার মতো রোগজীবাণু আক্রমন করে বসে।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 15 days ago 

ইমিউনিটি সিস্টেম ঠিক থাকলেই সবকিছু ঠিক।আপনি মানব রোগ সম্পর্কে খুবই সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন ,অনেক কিছু জানতে পারলাম।ভালো লাগলো পড়ে,ইমিউনিটি সিস্টেম ঠিক রাখার চেষ্টা করতে হবে।ধন্যবাদ দাদা।

 15 days ago 

আসলে যার শরীরে ইমিউনিটি যত বেশি শক্তিশালী, তার শরীরে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম, বলতে গেলে একেবারেই থাকে না।

একেবারে যথার্থ বলেছেন দাদা। তাই আমাদের সবার উচিত শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করা। সেজন্য আমাদেরকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তাছাড়া হেলদি খাবার খেতে হবে এবং ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।