রোমাঞ্চকর প্রথম টেস্টে দুই টিমেরই দারুন প্রদর্শনী!

আজকে আপনাদের সাথে খেলাধুলা বিষয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করে নেবো। গত কয়েকদিন ধরে ইন্ডিয়া আর ইংল্যান্ড এর মধ্যে টেস্ট ম্যাচ খেলা চলছিল আর খেলাটা বেশ জমজমাটও হচ্ছিলো দুই টিমের মধ্যে। আর এই ইংল্যান্ড এর পিচে একপ্রকার ব্যাটিং পিচ ছিল। যদিও এটা ইংল্যান্ড এর পিচ, ফলে তাদের বেশি অভিজ্ঞতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ইন্ডিয়াও এই ইংল্যান্ড এর পিচে অনেকবার খেলেছে, ফলে তাদেরও অভিজ্ঞতা অনেক আছে। কিন্তু বিষয় হলো, এইবার ভারতের যে টেস্ট টিম, তা প্রায় সবাই ইয়ং এবং নতুন প্লেয়ার নিয়ে গঠিত। ফলে তাদের অভিজ্ঞতা হিসাবে একটু কমই আছে। এর মধ্যে আবার প্রায় ৪-৫ জন আগে টেস্ট তেমন খেলিইনি।

এক জাডেজা ছাড়া বাকি সবারই অনুভব কম। তবে গিল হিসাবে যথেষ্ট ভালো খেলেছে এখানে, সেটা ক্যাপ্টেন্সি হোক বা ব্যাটিং এর দিক থেকে হোক। প্রথম সিরিজে এ ইংল্যান্ড টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিং করতে পাঠায়, আর এখানে পরে ব্যাটিং করার একটাই কারণ, পিচে টার্ন নেবেই পরে। ইন্ডিয়া এক দিক থেকে বলতে গেলে প্রথম সিরিজে সবাই অসাধারণ ব্যাটিং করেছিল। যাইস্বল এর অসাধারণ সেঞ্চুরি ছিল এখানে। যদিও তার ব্যাটিং দেখে সে একপ্রকার ওয়ানডে সিরিজের মতোই ব্যাটিং করছে, যাইস্বল মোটামুটি যে ক্যাটাগরির প্লেয়ার, তাতে যদি ধৌর্য ধরে খেলতো, তাহলে অনেক রান করতে পারতো এই পিচে। কিন্তু আসলে এখনকার সব ইয়ং প্লেয়ারদের ধৌর্য কম একটু, কারণ বেশি একটা ডিফেন্স খেলতেই পারে না।

এরপর ঋষভও একজন, এ তো একদমই ডিফেন্স কি জিনিস বোঝেই না যেন ব্যাটিং করতে নামলে। ওয়ানডে সিরিজের মতো খেলতে থাকে। তবে যাই খেলুক না কেন, খেলে দিয়েছে যথেষ্ট। ওদিকে যাইস্বল সেঞ্চুরি করে দিয়েছে। তারপর গিল অনেক ধৌর্যের সাথে এই প্রথম সিরিজে রান করেছে, তবে তার ব্যাটিং দেখে মোটামুটি দেড়শোরও বেশি রান করবে ভেবেছিলাম। কিন্তু ১৪৭ রানেই ক্যাচ উঠে যায়। তবে এখানে তার সাথে ঋষভ দারুন ভূমিকা রেখেছিলো একটা দারুন পার্টনারশীপ ছিল এই পজিশনে। সবমিলিয়ে এই তিনজন এর সেঞ্চুরিতে ইন্ডিয়া ৪৭১ রানের ট্রেইল দেয়। যদিও এই রানটা সাড়ে ৫০০ ক্রস করতে পারতো, কিন্তু আসলে পরে এতো ঘন উইকেট পড়বে, এটা ভাবা যায়নি।

জাডেজা আর করুন নাইর ছিল, ফলে এখানে তাদের একটা ভালো পার্টনারশীপ করা উচিত ছিল, অন্তত ৭০-৮০ রানের। কিন্তু সেখানে ফলাফল শূন্য তাদের। ইংল্যান্ড এখানে এই রানের ট্রেইল খেলতে গিয়ে ভালোই দ্রুত রান তৈরি করে ফেলেছিলো। এখানে তাদের মতো সেঞ্চুরি কয়েকজন না করতে পারলেও, সবাই মোটামুটি করে যে রান করেছিল, তাতে ৪৬৫ রানে পৌঁছে গিয়েছিলো। এখানে একটা ধাক্কা ছিল, কারণ ইন্ডিয়া অন্তত যদি এখানে আরো আগে অর্থাৎ ১০০ রান পেছনে রেখে আটকে দিতে পারতো, তাহলে দ্বিতীয় সিরিজে এসে রানের টার্গেটটা আরো বেশি দিতে পারতো। কারণ এই পিচে আসলে রান আটকে রাখা সম্ভব না একপ্রকার, তাও যদি ভালো বল করা হয় আর সাথে ফিল্ডিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানেই মার খেয়ে গেছে ইন্ডিয়া।

কারণ ইন্ডিয়া দ্বিতীয় সিরিজে মোটামুটি ভালোই করেছিল, সেখানে অবশ্যই ঋষভ আর রাহুল এর পার্টনারশীপ অনেক ইম্পরট্যান্ট ছিল। তবে বাকিরা লাস্টের দিকে যে কি ব্যাটিং করলো, বুঝলাম না, সব রান না করেই পড়ে গেলো। আর যে রানের টার্গেট দিয়েছিলো, তাও একেবারে খারাপ ছিল না। কিন্তু আসলে যে ফালতু ফিল্ডিং করেছে, তা বলার মতো না, যাইস্বল সহ অনেকেই যথেষ্ট ক্যাচ মিস করেছে। তাছাড়া সব দিকেই ফিল্ডিং বড্ডো বাজে ছিল। বলও এভারেজ করেছে কয়েকজন বাদে। ভুল ডিসিশন আর বাজে ফিল্ডিং এর কারণেই এই ম্যাচটা হাতের বাইরে চলে গিয়েছে একদম। নাহলে এই ক্যাচ আর ফিল্ডিং যদি ঠিকভাবে করতো, তাহলে ম্যাচের একটা অন্য রূপ দেখা যেত। লাস্টে একটা রোমাঞ্চকর মুহূর্ত তৈরি হতে পারতো। তবে নতুন প্লেয়ার হিসাবে ইংল্যান্ড এর মাটিতে ভালো ব্যাটিং করেছে তারা।