অচেনা ডাক ( অন্তিম পর্ব )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে "অচেনা ডাক" গল্পটির অন্তিম পর্ব শেয়ার করে নেবো। তো এই গল্পে অতনু মন্দিরের ভিতরে একটি বই থেকে তার প্রথম যাত্রার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলো। আর অতনু এই গন্তব্যগুলোর উদ্দেশ্যে জানতো যে,তার প্রতিটি পদক্ষেপ সমস্যায় জর্জরিত। কিন্তু তার মধ্যে দিয়েই তাকে সফল হতে হবে। বইয়ের দেখানো চিহ্নিত অনুযায়ী অতনুর প্রথম গন্তব্য ছিল জঙ্গলের অন্ধকারে। অতনু সেই জঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং সে ধীরে ধীরে জঙ্গলের গভীরের দিকে প্রবেশ করে। এরপর জঙ্গল তো থমথমে পরিবেশ এবং চারিদিক থেকে যেন অদ্ভুত অদ্ভুত আওয়াজ আসছে। অতনু তাও আরো ভিতরের দিকে প্রবেশ করলো সেই ম্যাপ অনুযায়ী এবং যে গন্তব্যটা লেখা ছিল, সেখানে প্রবেশ করলো।
এরপর অতনু দেখতে পায় ওখানে একটি প্রাচীন পাথরের মূর্তি আছে এবং সেই মূর্তিটি আবার এমনভাবে দাঁড়ানো আছে, যেন সত্যি সত্যি তার সামনে জলজ্যান্ত দাঁড়িয়ে আছে। অতনু দেখেই ভয়ভীতি হয়ে যায়। এরপর অতনু দেখতে পায় এই মূর্তিটির পায়ের নিচের দিকে একটি বাক্স পড়ে আছে। এই বাক্সটাকে কেন্দ্র করে অতনুর জন্য আরো একটা বিপদ অপেক্ষা করছিলো। অতনুর মনে সেই বাক্সটা খোলার কৌতূহল সৃষ্টি হয়। অতনু বাক্সটা খুলতে গেলেই তাকে যেন এক অচেনা আওয়াজ থামিয়ে দেয়। কণ্ঠস্বরটা খুবই ভারী আর গম্ভীর ছিল। অতনু পিছনে তাকিয়ে দেখে, তার দিকে একটা বিরাট বড়ো ছায়ামূর্তি এগিয়ে আসছে আর সেই ছায়াটা যেন অতনুর চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠতে লাগে।
এরপর সেই মূর্তিটি অতনুকে বললো, তুমি এই বাক্সের মুখ খোলার অর্থ জানো! এতে এমন এক শক্তি লুকিয়ে আছে যে, যদি ভুল মানুষের হাতে গিয়ে পড়ে, তাহলে ভালোর জায়গায় ধংস ডেকে আনবে। এরপর মূর্তিটি বললো, তুমি যদি আমাকে হারাতে পারো তাহলে এই শক্তিটি তুমি পাবে। অতনু তার সাথে লড়াই শুরু করে দেয়, কিন্তু তার মনের ভিতর ভয় কাজ করছিলো। আর মূর্তিটিও বুঝতে পেরে তার এই ভয়কেই অস্ত্র বানিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে লাগে। তারপরেও অতনু নিজের সাহস আর বিশ্বাসের পরিকাঠামোয় মূর্তিটিকে হারাতে সক্ষম হয়। এরপর অতনু বাক্স খুলতেই একটি প্রাচীন তাবিজ পায়, যা তার পরবর্তী গন্তব্যে যেতে সাহায্য করে।
এরপরে তার সামনে যে গন্তব্য উল্লেখিত হয়, সেটি হলো মরুভূমির তুষার কেল্লা। অতনুর এখান থেকে মরুভূমির দিকে যাত্রা শুরু হয়ে গেলো। অতনু মরুভূমির একটা প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে পৌঁছালো, যেখানে মাটি বরফে আচ্ছন্ন। সেখানে চারিদিকে পরিবেশটা কেমন যেন অদ্ভুত লাগে অতনুর কাছে। কিন্তু এই অদ্ভুত পরিবেশের মাঝেই সে তার গন্তব্য খুঁজে পায় অর্থাৎ ওখানে একটি প্রাচীন কেল্লা দেখতে পায়। এই প্রাচীন কেল্লার ভিতরে সে বেশ কিছু আয়না দেখতে পায় অর্থাৎ আয়নার দরোজা মতো কিছুটা। ওখানে অতনুর সামনে প্রতিফলন দেখাতে থাকে এবং সেই প্রতিফলনগুলো হঠাৎ তার সামনে জীবন্ত রূপ নেয় আর তাকেই আক্রমণ করা শুরু করে দেয়।
এখানে অতনুর একটা অভিজ্ঞতা হলো যে, এতক্ষনে সে একটা বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পারে যে, তার কোনো শত্রু বাইরের কেউ না, তার নিজের ভিতরেই যে ভয় আর দুর্বলতা কাজ করছে, সেটাই তার মূল শত্রু। এরপর অতনু নিজেকে শক্ত করে সেই প্রতিফলনগুলোকে হারালো। এরপর সেই আয়নাগুলো নিজে থেকে ভেঙে গুঁড়ো হয়ে গেলো আর সেখান থেকে একটি পাথর বের হলো, যেটি সেই প্রাচীন তাবিজ এর সাথে যুক্ত হয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে গেলো। এইবার অতনুর সামনে একটি শেষ গন্তব্য ছিল অর্থাৎ অন্ধকার শক্তির মূল উৎস বা কেন্দ্র। ঠিকানা ছিল অন্ধকারের দুর্গ। আর এই অন্ধকারের দুর্গটা ছিল বিশাল বড়ো, যা একটি পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে ছিল।
এই দুর্গটা আবার অশুভ শক্তিতে ঘেরা, যা অয়নকে বারবার উত্তেজিত করছিলো আর তাকে দুর্গের ভিতরে যাওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ করছিলো। অতনু দুর্গের ভিতরে যায় ঠিকই, কিন্তু তার সামনে প্রথমের সেই ছায়ামূর্তিটি আবারো হাজির হয়। এই ছায়া মূর্তিটি অতনুকে দেখে বললো, তুমি কি সত্যিই আমাকে হারাতে পারবে! অতনু সাহস আর দৃঢ়তার সাথে বললো - তুমি আমার ভিতরের একমাত্র ভয়, আর এই ভয় থাকবেই, কিন্তু আমি এই ভয়কে জয় করে নিতে পারবো। এরপর আবারো সেই ছায়ামূর্তির সাথে লড়াই শুরু হলো। এই শেষ পর্যায়ে এসে ছিল অতনুর কঠিন পরীক্ষা, কিন্তু অতনু তার প্রাচীন তাবিজ আর পাথরের সেই শক্তিকে একত্রিত করে মূর্তিকে হারিয়ে দিলো।
মূর্তিটিকে হারানোর সাথে সাথে দুর্গটির প্রতিটা কোনো ধসে যেতে শুরু করলো। এরই মাঝে অতনু আলোর উৎস দেখতে পেলো, অতনু সামনের দিকে এগিয়ে যায় আর তাকে সেই পুরানো কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে বলে- "তুমি তোমার দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছো, আর এই শক্তির রক্ষক এখন থেকে তুমি। তবে এই শক্তি তুমি একমাত্র তখনই ব্যবহার করতে পারবে, যখনই পৃথিবী সত্যিকারের কোনো বড়ো বিপদের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে"। এইভাবেই অতনুর জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের শুরু হয়, আর সে আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। তবে সে এখন আর একজন সাধারণ মানুষের মতো নয়, সে এখন একজন রক্ষক, যে পৃথিবীর এল এবং অন্ধকারের ভারসাম্য বজায় রাখবে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দাদা আপনি আজকে অনেক সুন্দর করে অচেনা ডাক গল্পের অন্তিম পর্ব সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন। আমার কাছে গল্পের এই পর্বটা খুব ভালো লেগেছে পড়তে।। অতনু আস্তে আস্তে নিজের লক্ষ্যের কাছে চলে এসেছে। সবকিছুকে হারিয়ে সে এই পর্যন্ত আসতে পেরেছে। ছায়া মূর্তি গুলোকেও সে হারিয়েছে। এখন সে একজন রক্ষক হিসেবে আবারো তার আগের জীবনে ফিরে এসেছে। সব মিলিয়ে অনেক ভালো লাগলো এই গল্পের অন্তিম পর্ব টা।
দাদা আপনার লেখা এই গল্পের প্রতিটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। আর আজকে এই পর্বের অন্তিম পর্ব টা পড়ে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। অতনু ধীরে ধীরে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ পেরিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়েছে সামনের দিকে। আর এখন সবার রক্ষাকর্তা হয়ে গিয়েছে। ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে এই গল্পটার অন্তিম পর্ব সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অতনু একের পর এক কঠিন পরীক্ষা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো দাদা। আসলে সবকিছু সম্ভব হয়েছে অতনু মনের মধ্যে সাহস রাখতে পেরেছিল বলে। এই গল্পের প্রতিটি পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে আমার। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।