দুর্ঘটনা এড়াতে গ্যাস লাইট নয় দিয়াশলাই ব্যবহার করুন।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি।
Image source https://pixabay.com/
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। কিছুদিন অসুস্থ থাকার কারণে আপনাদের সাথে কোন প্রকার ব্লগ লেখা হয়নি। আর আপনাদের সাথে ব্লগ শেয়ার না করলে আমার ভাল লাগে না। তাই সকল ব্যস্ততা ফেলে রেখে, আজকে আমি আপনাদের মাঝে আবারও একটি নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আজকে আমি একটি সতর্কতামূলক পোস্ট শেয়ার করব। আমার আজকের ব্লগের বিষয় হলো দুর্ঘটনা এড়াতে গ্যাস লাইট নয় দিয়াশলাই ব্যবহার করুন।
বন্ধুরা এখন তো রমজান মাস চলছে, এই মাসে আমাদের মুসলিম ভাই বোনেরা রাতে সেহরি খেয়ে রোজা রাখেন। আর সেই রাতের খাবার রান্না করার জন্য আমরা বোনেরা বা মায়েরা রাতে রান্না করি। রান্না করার সময় আমরা অনেক সময় গ্যাস লাইট দিয়ে আগুন জ্বালায়। আর গ্যাস লাইট গুলো একটু গরম তাপের মধ্যে থাকলে ব্লাস্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া গ্যাস লাইট গুলো রৌদ্রে থাকলে রুদ্রের তাপে যেকোন সময় ব্লাস্ট হয়ে যায়।
তাই আমাদের উচিত গ্যাস লাইট ব্যবহারের সময় সচেতন থাকা। আর নয়তো গ্যাস লাইট এর পরিবর্তে দেয়াশলায় ব্যবহার করা। দিয়াশলায় ব্যবহার করলে অনেক সুবিধা থাকে। এগুলো দামে যেমন সস্তা তেমনি ঝুঁকিমুক্ত। আমরা অনেক সময় গ্যাস লাইট লাকড়ি চোলাই বা গ্যাসের চুলায় রান্না করার সময় চুলার পাশে রাখলে সেগুলো গরম হয়ে যেকোনো সময় ব্লাস্ট হয়ে যায়। তেমনি আমিও একদিন এমন বিপদের মধ্যে পড়েছি। আমার সাথে তিন তিন বার গ্যাস লাইট ব্লাস্ট হওয়ার দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রথম দুই বারে আমার কিছু হয়নি। তৃতীয় বারে গ্যাস লাইট ব্লাস্ট হয়ে আমার হাতের কবজি থেকে কোনই পর্যন্ত পুড়ে গেছে। যার কারণে আমি কিছুদিন যাবৎ আপনাদের মাঝে কোন ব্লগ শেয়ার করতে পাড়িনি।
কিছুদিন আগে রাত এগারোটায় সেহেরী রান্না বসানোর পর আমি গ্যাস লাইট টা চুলার সাইডে রেখে দিয়েছিলাম। আমার গ্যাস লাইট এর কথাটা মনে ছিল না। আমার রান্না প্রায় ১২ ত্রিশ মিনিটে শেষ হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় আমার শাশুড়ি আমার কাছ থেকে গরম পানি চাইলো। চোলাই একটি তরকারি বসানো ছিল। গ্যাস লাইটটা হাতে নিয়ে আগুন জ্বালাতে যাওয়ার সময় আমার হাতে গ্যাস লাইট ব্লাস্ট হয়ে যায়। যার ফলে আমার সারা শরীরে আগুনের একটি তাপ লেগে যায়। তাছাড়া আমি হিজাব পরে রয়েছিলাম। গ্যাস লাইট টা আমার হাত থেকে ব্লাস্ট হয় হিজাবের ভিতরে চলে যায়। যার কারনে আমার পুরাটা হাত পুড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আমি দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যাই। নয়তো ঐদিন আমার সারা শরীর পুড়ে যেতো।
গ্যাস লাইট ব্লাস্ট হওয়ার পর আমার হাতের যতটুকু অংশ পুড়েছে। আমি ভাবতেও পারেনি একটি গ্যাস লাইট ব্লাস্ট হয়ে আমার হাতের এতটা অংশ পড়ে যাবে। আমি দুই রাত পুড়ার যন্ত্রণার কারণে ঘুমাতে পারিনি। এত জ্বালাপোড়া করেছে যে, ব্লগে লিখে বুঝাতে পারবো না। শুধু পানি দিলে ভালো লাগতো তাছাড়া একটু কাপড়ের মড় বা একটু তাপ লাগলে হাত প্রচুর জ্বলতো। আমার হাতে পুড়ার দাগ পড়ে গিয়েছে। এখন আমার হাতের দিকে তাকালে আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে। হাতটা পুরাই কালো হয়ে গিয়েছে। আমার নিজের অসাবধানতার কারণে আজকে আমার এই সুন্দর হাতটি ভালো দাগে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এখন এই পুরা চামড়াটা শুধু চুলকায়। জানিনা এই কালো দাগগুলো থাকবে কিনা। তবে আশা করি চামড়া উঠে ঠিক হয়ে যাবে।
এমন দুর্ঘটনা আমার শ্বশুর বাড়িতেও একবার হয়েছিলো। আমি কখনো লাকড়ি চুলায় রান্না করেনি। প্রথম প্রথম যখন লাকরি চুলায় রান্না করতে গিয়েছিলাম। তখন গ্যাসলাইট চুলার সাইটে রেখে দিয়েছিলাম। এভাবেই গ্যাস লাইট ব্লাস্ট হয়ে গিয়েছিল। তখন আমার কোন কিছু হয়নি। ঢাকা আসার পরে আবারো এরকম দুর্ঘটনায় পতিত হলাম। আসলে বিয়ের আগে তেমন রান্নাবান্না করেনি রান্নার বিষয়গুলো আমি তেমন জানতাম না। গ্যাসলাইট যে গ্যাসের নিচে রাখলে ব্লাস্ট হয়। সেটা আমার খেয়াল ছিল না। এই ছোট ছোট অসাবধানতা আমাদের জীবনে অনেক বড় রকমের দুর্ঘটনা নিয়ে আসে। আমি চিন্তা করছিলাম আমি তো প্রায়ই সময় আমার মেয়েকে কোলে নিয়ে রান্না করি। এখন যদি আমার ফুটফুটে মেয়েটি যদি আমার সাথে থাকতো তাহলে কি হতো। সবকিছুই উপরওয়ালার রহমত। যাইহোক এখন আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেকটা সুস্থ আছি তবে রাতের মধ্যে পুড়া দাগ রয়ে গিয়েছে। যা দেখতে একদমই দৃষ্টিকটো লাগছে।
তাই ভাবলাম আজকে আমার এই দুর্ঘটনার কথাটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করি। কেননা আপনারা অনেকে এই বিষয়টি সম্পর্কে ধারনা না ও রাখতে পারেন। আমি আশা করি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সহযোগিতা করতে পারবে। আপনাদেরকে সচেতন করতে পারবে। গ্যাস লাইট ব্যবহার করা যাবে তবে সাবধানতার সাথে ব্যবহার করবেন। নয়তো দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য গ্যাস লাইট এর পরিবর্তে দিয়াশালায় ব্যবহার করতে পারেন। আমার কাছে মনে হয় দিয়াশলাই সবচেয়ে ভালো। কেননা গ্যাস লাইট যেকোনো সময় উত্তপ্ত হয়ে ব্লাস্ট হয়ে যেতে পারে। এটা আমাদের জন্য বিপদ আনতে পারে।
আজ আর নয় বন্ধুরা এখান থেকে বিদায় নিতেছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। তাছাড়া আমার ননদেরও অপারেশন হয়েছে। তিনার জন্য ও দোয়া করবেন। সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল আল্লাহ হাফেজ।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
![image.png](
গ্যাস লাইটের চেয়ে দিয়াশলাই ব্যবহার করা অনেক নিরাপদ। এই পোস্টের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ধন্যবাদ। সবাইকে এই বার্তা শেয়ার করুন যাতে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।গ্যাস লাইট ব্যবহারে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে, বিশেষ করে শিশু বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে। দিয়াশলাই ব্যবহার করে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব। এই পোস্টটি অনেকের জন্য সহায়ক হতে পারে।
সুন্দর বিষয়ে আজকের পোস্ট লিখেছেন আপু।সত্যি গ্যাস লাইট ব্যাবহারে বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন হয়।আমার ঘরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গ্যাস লাইটে হঠাৎ আগুন লেগে গিয়েছিল এবং আমার মেয়ে সেই গ্যাস লাইট ধরে বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে আর সাথে সাথে ব্লাস্ট হয়েছে সেই দৃশ্য মনে পড়লে শরীরে কাটা দিয়ে ওঠে।মেয়ের কিছু হয়নি ভাগ্যিস আর আমরা রুমে না থাকলে তো পুরা ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়তো আর সব পুরে তছনছ হয়ে যেতো।বেশ লিখেছেন সত্যি দিয়াশলাই ব্যাবহারে ঝুকি নেই।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।