ডাই প্রজেক্ট- ক্লে দিয়ে ওয়ালমেট তৈরি।।
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করতেছি-
হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের জন্য নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে ক্লে দিয়ে ওয়ালমেট তৈরী করে শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি সবার কাছে ভালো লাগবে।
ক্লে দিয়ে আমরা বিভিন্ন কিছু তৈরি করে থাকি। ক্লে এমন একটা জিনিস যা দিয়ে আমরা অনায়েসে যে কোন জিনিস তৈরি করতে পারি। অলংকার বা যেকোন সুপিছ অথবা ওয়ালমেট। আমি ক্লে দিয়ে বিভিন্ন কিছু তৈরি করতে পছন্দ করি। তাছাড়া ক্লে দিয়ে নুতুন কিছু তৈরি করলে দেখতে খুবই ভালো লাগে। ক্লে দিয়ে ওয়ালমেট তৈরি করতে কিন্ত অনেক সময় লাগে। তবু সময় নিয়ে কিছু তৈরি করলে তা কিন্তু একদম ভালো হয়। তাই নিজের মনমত করে ডিজাইন দিয়ে একটি ওয়ালমেট তৈরি করলাম। ওয়ালমেটটি দেয়ালে টাঙিয়ে রাখার পর আসলে আকর্ষণীয় লাগছে।বতাহলে চলুন আমার আজকের এই ওয়ালমেটটি বানানোর প্রক্রিয়াগুলো শেয়ার করি।
- ক্লে
- কার্ড বোর্ড
- আঠা
- কেচি
- সাদা কাগজ
ওয়ালমেট তৈরী করার প্রক্রিয়া-
প্রথম ধাপ-
প্রথমে একটি কেকের প্লেটের কার্ডবোর্ড নিয়ে নিলাম। সে কার্ডবোর্ডের উপরের অংশটা সাদা কালার করার জন্য তাতে সাদা একটা কাগজ আঠা দিয়ে সংযুক্ত করে নিলাম। যাতে করে কার্ডবোর্ডের প্লেটটির পুরোটা অংশ সাদা দেখায়। এই অংশে কার্ডবোর্ডের জন্য সাদা কাগজটা এর মাপ থেকে একটু বড় করে কেটে নিলাম। তারপর চারদিকে ও মাঝখানে আঠা দিয়ে কাগজটা সংযুক্ত করে নিলাম। তারপর খুবই সুন্দর ভাবে সাদা কাগজটি কার্ডবোর্ডের প্লেটের সাথে সংযুক্ত হয়ে গেল।
দ্বিতীয় ধাপ-
এ পর্যায়ে কাঁঠালি কালার এর একটি ক্লে নিয়ে নিলাম। তারপর এটাকে হাত দিয়ে লম্বা লম্বা করে দড়ি পাকিয়ে নিলাম।
তৃতীয় ধাপ-
এ পর্যায়ে কাঁঠালি কালারের দড়ি পাকানো ক্লে গুলোকে সাদা কার্ড বোর্ডের উপর নিজের মনের মত করে ডালপালা দিয়ে ডিজাইন দিয়ে দিলাম। ডালপালাগুলো যাতে সত্যিকারের ডালের মতো লাগে। তাই তাতে একটি ছুরি দিয়ে হালকা হালকা করে চেপে চেপে দাগ দিয়ে দিলাম।
চতুর্থ ধাপ-
এ পর্যায়ে গোলাপি কালারের ক্লে নিয়ে প্রথমে গোল গোল করে পাঁচটি টুকরো নিয়ে নিব। তারপর ছোট ছোট করে চুই পিঠার মত একপাশে চিকন অপর পাশে মোটা সেভ দিয়ে দেবো।
তারপর এ পর্যায়ে পাপড়ির মোটা অংশটি আঙ্গুলের সাহায্যে চাপ দিয়ে দিয়ে চেপটা করে নিব। তারপরে দেখা যাবে যে পাপড়িরর সেভ হয়ে গিয়েছে।
তারপর সবগুলো পাপড়ি একসাথে সংযুক্ত করে নেব। এখানে শুধু পাঁচটি পাপড়ি সংযুক্ত করব। নইলে ফুলগুলো সুন্দর হবে না। ফুল গুলো দেখতে কি সুন্দর মাধবীলতা ফুলের মত হয়ে গিয়েছে। সেম এরকম ভাবে আমি আরো দুইটি কালারের ফুল বানিয়ে নিব।
পঞ্চম ধাপ-
এ পর্যায়ে ডালপালা গুলোর মধ্যে তৈরি করে রাখা ফুলগুলো সংযুক্ত করে নিব। যেখানে যেখানে ফুল গুলো দিলে ভালো লাগবে। সেখানে সেখানে ফুলগুলোকে বসিয়ে দিলাম।
এভাবে তিন কালারের অর্থাৎ গারো গোলাপি, হালকা গোলাপি ও গারো বেগুনি কালারের ফুল দিয়ে ডালপালাগুলোকে সাজিয়ে নিলাম।
ষষ্ঠ ধাপ-
এখন সবুজ কালারের ক্লে নিয়ে নিলাম। তারপর চুই পিঠার মতো করে দুই দিকে চিকন ও মাঝখানে মোটা রেখে ছোট চুই পিঠা বানিয়ে নিলাম। তারপর আঙ্গুল দিয়ে মাঝখানে চেপে চেপে ছোট ছোট পাতা বানিয়ে নিলাম। পাতাগুলো দেখতে আকর্ষণীয় লাগার জন্য হাতের আঙ্গুলে রেখে একটা কাঠি দিয়ে দুই দিকে দাগ দিয়ে পাতার সেভ দিয়ে দিলাম।
সপ্তম ধাপ-
এ পর্যায়ে বানিয়ে রাখা পাতাগুলো ফুল এবং ডালপালার চারিদিকে বসালাম। যেখানে বসালে ভালো লাগবে সেখানে সুন্দর করে বসিয়ে দিলাম। সবুজ কালার পাতাগুলো দেখতে এত সুন্দর হয়েছে যে পাতাগুলো দেওয়ার সাথে সাথেই ওয়ালমেটটার সৌন্দর্য আস্তে আস্তে ফুটে উঠছে।
অষ্টম ধাপ-
ওয়ালমাটা সম্পূর্ণ তৈরি করার পর দেখলাম যে ফুলগুলো তেমন মানাচ্ছে না। তাই ফুলগুলোর মাঝখানে কালো কালারের ক্লের টিপ দিয়ে দিলাম। কালো কালারের টিপ ফুলের মাঝখানে দেওয়ার পর ফুলগুলো দেখতে অনেক কিউট লাগছিল। তারপর এরকম করে ছোট ছোট গোল গোল কালো কালারের বল বানিয়ে সবগুলো ফুলের মাঝখানে দিয়ে দিলাম। তারপর হয়ে গেল আমার সুন্দর একটি ওয়ালমেট।
##
একটি ওয়ালমেট তৈরি করতে যেমন অনেক সময় লাগে। তেমনি ফটোগ্রাফি করতেও অনেক ব্যাগ পেতে হয়। তাছাড়া আমার একটি জেরি আছে। যে কিনা ফটোগ্রাফি ওয়ালমেট তৈরি করার ক্ষেত্রে অনেক বাধা সৃষ্টি করে। তাছাড়া অনেকগুলো ফটোগ্রাফি ঘোলাটে হয়। আবার অনেকগুলো ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়। অনেক কষ্ট করার পরও যদি ফটোগ্রাফি গুলো ভালো না হয়। তখন মনটা অনেকটাই খারাপ হয়ে যায়। কেননা ফটোগ্রাফির তুলনায় বাস্তবে ওয়ালম্যাট গুলো খুবই সুন্দর হয়ে থাকে।
যাইহোক বন্ধুরা। আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না। এখান থেকে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিতেছি । আর কেমন হলো আজকের আমার এই ওয়ালমেট, কমেন্টস এর মাধ্যমে জানাবেন। সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ সবাইকে।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | ডাই প্রজেক্ট- ক্লে দিয়ে ওয়ালমেট তৈরি ।। |
স্থান | নারায়নগঞ্জ , ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৭-০২-২০২৫ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
একদম সঠিক বলেছেন বর্তমানে ক্লে দিয়ে শোপিস, ওয়ালমেট সহ আরো অনেক জিনিস তৈরি করা যায়। একেবারে নিজের মনের মতো ডিজাইন দিয়ে। যেমন আপনার আজকের তৈরি করা ডাই টি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। বিভিন্ন কালারের ক্লে দিয়ে গাছ ,পাতা এবং দৃষ্টিনন্দন ফুলের ডিজাইন বানিয়েছেন। আপনার ক্রিয়েটিভিটির প্রশংসা না করে আর পারলাম না।
জ্বী ভাইয়া, ক্লে দিয়ে অনেক ধরনের ওয়ালম্যাট তৈরি করা যায়। আপনার প্রশংসা পেয়ে আমি খুবই খুশি হলাম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
বর্তমানে ক্লে দিয়ে তৈরি করা জিনিসের ব্যাপক চাহিদা। প্রত্যেকেই এই জিনিসগুলো খুব পছন্দ করে। ক্লে দিয়ে তৈরি করা প্রতিটি জিনিস দেখতে যেমন সুন্দর হয় তেমনি তৈরি করতেও অনেক মজা লাগে। আজ আপনি ক্লে দিয়ে খুব সুন্দর ওয়ালমেট তৈরি করেছেন। এ ধরনের ওয়ালমেট ঘরে সাজিয়ে রাখলে দেখতে কিন্তু চমৎকার লাগবে। ওয়ালমেট তৈরি করার প্রসেস টি শেয়ার করে নিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো।
একদমই ঠিক কথা বলেছেন বর্তমানে ক্লের চাহিদাটা একটু বেশি। কেননা সবাই এই ক্লে দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে। ঘরে সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করে। এমন কোন ঘর নেই যে ঘরে ক্লে নেয়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার ওয়ালমেট তৈরি করাটা অনেক সুন্দর হয়েছে। আমি কিন্তু অনেক অনেক খুশি হয়েছি এত সুন্দর ভাবে আপনার ওয়ালমেট তৈরি করতে দেখে। আমি প্রায় খেয়াল করে দেখি এই উপাদান দিয়ে সবাই কম বেশি সুন্দর সুন্দর ওয়ালমেট তৈরি করে দেখাতে সক্ষম হচ্ছেন। আমিও সংরক্ষণ করেছি। খুব শীঘ্রই তৈরি করে দেখাতে সম্ভব হবে।
শুনে অনেক খুশি হলাম। যে আপনি ওয়ালমেট তৈরি করার জন্য ক্লপ সংরক্ষণ করেছেন। আপনার ওয়ালমেট তৈরীর ব্লগ দেখার আগ্রহ রইল। আমাদের মাঝে খুব দ্রুত শেয়ার করবেন আশা করি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ওয়াও আপনি তো ক্লে দিয়ে খুব চমৎকার ওয়ালমেট তৈরি করেছেন। আসলে ক্লে নরম এ কারণে যে কোন কিছু বানালে দেখতে বেশ ভালো লাগে। তবে ক্লে দিয়ে গাছের ডালে বিভিন্ন কালারের ফুল ও পাতা দেওয়ার কারণে ওয়ালমেট দেখতে বেশ চমৎকার লাগলো। ধৈর্য ধরে ক্লে দিয়ে সুন্দর একটি ওয়ালমেট তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
জ্বী ভাইয়া ক্লে একটু নরম। তবে বাতাস লাগলে শক্ত হয়ে যায়। আর এই কাজগুলো করতে অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ক্লে দিয়ে যে কোন জিনিস তৈরি করলে আসলেই অনেক ভালো লাগে দেখতে ।অনেক সুন্দর ভাবে ওয়ালমেট তৈরি করেছেন সেটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। ধন্যবাদ শুভকামনা রইল।
জি আপু ক্লাবে যে কোন জিনিস তৈরি করলে খুবই ভালো লাগে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল। স্বাগতম আপু।
বাহ বেশ সুন্দর। চমৎকার লাগছে ওয়ালমেট টা। ক্লে দিয়ে ওয়ালমেট টা বেশ দারুণ তৈরি করেছেন ভাই। খুবই সুন্দর লাগছে আপনার তৈরি ওয়ালমেট টা। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
জ্বী ভাইয়া ওয়ালমেট দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লেগে । তাই ওয়ালম্যাট তৈরি করে আপনাদের মাঝে ধাপে ধাপে শেয়ার করে নিলাম। আপনাদের কাছেও ভালো লেগেছে। যেনে আমারও খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।