"অরেঞ্জ গার্ডেনে সুন্দর কিছু মুহূর্ত ও ফটোগ্রাফি"
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে কুয়াশায় চাদরে ঢাকা মিষ্টি একটা সকালের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি। দার্জিলিংয়ে আমাদের দ্বিতীয় দিন আমরা লামাঠা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টার পথ হলো অরেঞ্জ গার্ডেন। আমরা আগের থেকেই ঠিক করেছিলাম অরেঞ্জ গার্ডেন যাবো। নিজের হাতে লেবু ছিঁড়বো। সত্যি বলতে আমি আগে কখনো অরেঞ্জ গাছ দেখিনি তাই দেখার আকর্ষণ ছিলো। তাই আমরা প্রথমে গিয়েছিলাম লামাঠা অনেক সুন্দর একটি জায়গা এখানে প্রচুর পরিমাণে সারি সারি পাইন গাছ রয়েছে। আমি ওখানে গিয়ে খুব একটা ছবি করিনি। শুধু মাত্র পরিবেশটা উপভোগ করছিলাম। লামাঠা থেকে আমরা গেলাম অরেঞ্জ গার্ডেন। পাহাড়ের পাশ দিয়ে আঁকা বাঁকা ছোট রাস্তা দিয়ে চলেছি আমাদের সেই গন্তব্যে। আমরা যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি তার এক পাশে উচুঁ খাড়া পাহাড় আর অন্য দিকে খাদ। দেখলে ভয় লাগে। পাহাড়ে চড়তে চড়তে ওই কয়টা দিন আমার এমন হয়েছিলো চোখ বন্ধ করলেই শুধু চোখের সামনে শুধু উচুঁ উচুঁ খাড়া পাহাড় ভেসে উঠতো।
অবশেষে আমরা পৌঁছায় গেলাম অরেঞ্জ গার্ডেন। ভিতরে ঢুকতে গেলে টিকিট কাটতে হয়। একজন গিয়ে সবার জন্য টিকিট কেটে আনলো। একজন পাহারাদার এসে বলে গাছ থেকে কেউ লেবু ছিঁড়বেন না। আপনারা গাছের নিচ থেকে কুঁড়াতে পারেন যত খুশি। তখন আমরা প্রস্তাব দিলাম কিছু লেবু বিক্রি করবেন যা দাম চান। কিন্তু তারা কোন ভাবে রাজি হলো না বিক্রি করতে। শুধু বললো এই লেবু এখনো পাঁকে নি কাচা আছে। আপনারা খেতে পারবেন না। লেবু কাচা থাকলে প্রচুর টক লাগে তাই এখন বিক্রি করবো না। আপনারা ১০ - ১৫ দিন পর আসুন তখন লেবু পেকে যাবে আর বিক্রি ও করবো। আমরা বললাম কাঁচা থাকলে অল্প কিছু বিক্রি করেন। কিন্তু তারা শুনতেই চাইলো না। শুধু এক কথা এখন আমরা লেবু বিক্রি করতে পারবো না। কি আর করা আমরা একটু নিরাশ হয়ে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে ঢুকতেই দেখি আমাদের মতো অনেকে এসেছে। অনেক জায়গায় নিয়ে এই অরেঞ্জ বাগান। আমি লুকিয়ে গাছ থেকে একটা লেবু ছিঁড়বো কিন্তু আমি যতবার ছিঁড়তে গিয়েছি ততবার আমার প্রিয় মানুষটি বাঁধা দিয়েছে। বলে গাছ থেকে ছিঁড়তে নিষেধ করছে তুমি গাছ থেকে ছিঁড়বে না নিচ থেকে কুড়িয়ে নেও।
আর আমি ছিঁড়তে পারিনি। আমি বললাম কেউ বুঝতে পারবে না একটা মাত্র। কিন্তু ওই যে বলে বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে হয়। ওরা আমাদের উপর বিশ্বাস করে ভিতরে আসতে দিয়েছে। তার অবমাননা করতে হয় না। জীবনে সৎ ভাবে চলতে হয়। আর সঠিক পথে চলো এতে লোকে যত খারাপ কথা বলুক তুমি তোমার পথ থেকে পিছপা হবে না। আমি বললাম রেগে গিয়ে এবার তোমার নীতি কথা বন্ধ করো। এখন সেই ভালোর দিন নেই। তখন বলে এই জন্য তো আমাদের বাঙালি দের এই অবস্থা। আমি আর কিছু বলে চুপ করে রইলাম। আপনারাই বলুন সব সময় কি নীতি কথা ভালো লাগে? চেয়ে ছিলাম চুরি করে খেতে শুনেছি চুরি করা খাবার নাকি মিষ্টি লাগে। কিন্তু তা আর পারলাম কোথায়।
আমাদের ড্রাইভার গাছের নিচ থেকে প্রচুর লেবু কুড়িয়ে নিয়ে আসলো। গাছ থেকে ছিঁড়তে না পারি কিন্তু নিচ থেকে কুঁড়াতে পারলাম এটাও কি কম আনন্দের।
লামাঠায় সারি সারি পাইন গাছ গুলো মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়ে আছে। লাঠা গুড়ির কিছু প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ। লাঠা গুড়ি বেশ ঠান্ডা ছিলো। মাঝে মাঝে হিমেল হাওয়া এসে ঠান্ডা দিয়ে যাচ্ছিলো।সত্যি দারুন এক পরিবেশ ছিলো।
অরেঞ্জ গার্ডেনে প্রবেশের সুন্দর একটা গেট। গেটের চারপাশে সুন্দর সুন্দর ফুল গাছ ও কিছু গাছগাছালি ছিলো। এগুলো দেখতে দেখতে আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম।
সারি সারি শুধু লেবু গাছ। আর কি সুন্দর থোকায় লেবু ধরেছে গাছে। দেখে ছিঁড়তে ইচ্ছা করে। আমার তো বেশ ভালো লেগেছিলো লেবু গাছ দেখে। আমার বাবু ও খুব আনন্দ করেছিলো লেবু দেখে।
আজ এই পর্যন্ত।কাল আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে আবার আসবো।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।ধন্যবাদ।
সবসময় ক্যামেরা দিয়ে পরিবেশ দেখলে তা মোটেও পরিপূর্ণভাবে উপভোগ্য হয়না।তাই,আমিও মনে করি আগে পরিবেশটাই উপভোগ করা জরুরি।
ওভাবে কমলার বাগান আমিও দেখিনি,জাস্ট এর ওর ছাদে দু একটা গাছ দেখেছি।
ফটোগ্রাফিগুলো দারুণ ছিল, শুভ কামনা জানাই বৌদি😊
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যদি অনুমতি থাকতো তাহলে কমলা গাছ তলায় বসে বসে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে পারতেন। আপনাকে কি বলবো বৌদি হয়তো আমি দেখলে আমি নিজেও ছিড়ে ফেলতাম। কিন্তু আপনার প্রিয় মানুষটি খুব ভালো সেজন্য কারোর বিশ্বাসের অবমাননা করেননি। আপনাকে বুঝিয়ে বলেছে যাতে আপনি না ছেড়েন। সত্যি দাদার ভালো মন মানসিকতা আবারো প্রকাশ পেল। যতই দেখছি আর শুনছি দাদার প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়েই চলেছে। বড় বড় লম্বা লম্বা কাজগুলো ছবি অসাধারণ লাগছে বৌদি।
দাদা একেবারে ঠিক বলেছে বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে হয়। তবে আপনার জায়গা আমি থাকলে সত্যি লেবু ছিড়তাম হি হি। এবং চুরি করা ফল সত্যি মিষ্টি লাগে এটা সত্যি। আপনার তোলা ছবিতে দেখে লেবুগুলো কাঁচা মনে হয়নি প্রায় পেঁকে গেছে। দারুণ ছিল আপনার ফটোগ্রাফি এবং অরেঞ্জ গার্ডেন ঘোরাঘুরি টা।।
অরেঞ্জ গার্ডেনে সুন্দর কিছু মুহূর্ত ও ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন বৌদি। অরেঞ্জ গার্ডেন দেখতে অনেক সুন্দর। আর কমলার গাছে কমলা দেখে তো ভীষণ ভালো লাগলো। মন চাচ্ছে এমন কমলা গাছের নিচে বসে বসে কমলা খাই। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
অরেঞ্জ গার্ডেনে সুন্দর কিছু মুহূর্ত ও ফটোগ্রাফি খুবই ভালো লেগেছে। অসাধারণ ফটোগ্রাফি করেছেন। প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি দেখে খুবই ভালো লাগলো। সত্যি বৌদি এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আহা!কত স্বাদের ওরেঞ্জ গার্ডেন আপনি এত কাছে গিয়েও একটা লেবু ছিড়তে পারলেন না আফসোস থেকে গেল।তবে দাদা বাধা দিছেন ঠিক করেছেন।কিন্তু কোন কারণে যদি আপনি একটা লেবু ছিড়তেন তাহলে দেখে ফেলতু।ওদের চোখ অনেক বিচক্ষণ আপনাকে যদি কয়েকটা কথা শোনাত তাহলে দাদার খারাপ লাগতো তখন পুরো আনন্দ মাটি হয়ে যেত।এটাও ঠিক এখন নীতি বাক্যের কোন দাম নেই হাহাহা!😍😍😍।অরেঞ্জ গার্ডেন টা দেখতে অসাধারণ ছিল চোখ জুড়িয়ে গেল।
হাহাহা,বৌদি আপনার ছোটবোন হিসেবে দাদার উপর এই রাগটা কিন্তু আমার ও আছে,যদিও দেখানোর সাহস নেই।🤪সবসময় শুধু ভালো পথে চলতে বলে,একটু খারাপ পথে চলতে যে মজা আছে এটা দাদা বুঝতেই চায় না।😉ঠিক বললাম না বৌদি?
এটা ঠিক বলেছেন দিদি, বুঝতেই চায় না সবসময় ভালো পথে চলা যায়। মাঝে মধ্যে একটু খারাপ হলে ক্ষতি কি।আর চুরি করা যে কি মজার তা বোঝে না।আমি রাগ দেখাতে গিয়ে ও পারি না দিদি। পরে ভাবী ঠিকই তো বলেছে।
এইরকম চমৎকার কমলা বাগানে এসে গাছ থেকে কমলা ছিঁড়তে না পারলে কষ্ট লাগারই কথা। দাদার পোস্টেও থেকে এই কমলা বাগানের কিছু ছবি দেখেছিলাম। আমিও আপনার মত কোনদিন কমলা বাগান দেখিনি। তবে এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যদি কখনো ওদিকটাতে ঘুরতে যায় তাহলে অবশ্যই এই কমলা বাগান থেকে ঘুরে আসবো। ধন্যবাদ বৌদি আপনাকে।
আপনার ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর হইছে। কমলালেবু দেখে আমার জিহবায় পানি চলে আসছে। প্রিয় মানুষের কথা ও বিশ্বাসের মর্যাদা দেয়ায় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।