আমাদের ঈদের আনন্দ
বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি।
ঈদ মোবারক।ঈদ মানেই হাজার ব্যস্ততা, আর এই ব্যস্ততার মধ্য দিয়েও আমাদের অতি আনন্দের সাথে কেটে গেল ঈদের দিনটি।অনেক কনফিউজড ছিলাম রবিবারে ঈদ হবে কি না? আর রবিবারে ঈদ হলেই ভালো কারণ রবিবার স্কুল বন্ধ থাকে। আমাদের এখানে ঈদের দিন স্কুল বন্ধ থাকে না, কারণ এখানে স্কুলগুলোতে খ্রিস্টান স্টুডেন্টরাই বেশি থাকে। মুসলিম স্টুডেন্ট নেই বললেই চলে। তাই ঈদে স্কুল ছুটি দেওয়া হয় না।কিন্তু লন্ডনের স্কুলগুলোতে ঈদের জন্য একদিন ছুটি থাকে।তাই সোমবারে ঈদ হলে একদিন স্কুল মিস হতো। ঈদের দিন তো আর স্কুলে পাঠানো যায় না। ঈদের আগের দিনে সকল প্রকার রান্নাবান্না শেষ করে রাখি। ঈদের দিন আমরা কোন রান্না বান্না রাখি না।শুধুমাত্র একটু পোলাও আর সেমাই করে থাকি, আর আগে থেকে যে পিঠা গুলি বানানো থাকে সেগুলো সকালবেলায় উঠে ভেজে নিই।ব্যাস ঈদের দিন আর কোন কাজ থাকে না।বাংলাদেশে দেখেছি মা বোনেরা সারাদিন রান্না করতে করতে একটুও রেস্ট নেওয়ার টাইম পায়না।পুরো দিনটিই চলে যায় রান্নাবান্না ও কাজের মধ্য দিয়ে।এ দেশে প্রায় সকলেই এভাবে ঈদের আগের দিন সব রান্না শেষ করে ফেলে। আর পরের দিন শুধু ঘোরাফেরা আর ইনজয় করা।
ঈদের আগের দিন টিভিতে ঘোষণার অপেক্ষায় ছিলাম কবে ঈদ হবে। ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথেই শুরু করে দিলাম রান্নাবান্না। মাগরিবের আগেই শেষ করে ফেলি হাফ রান্না, আর বাকি হাফ শেষ করি ইফতার করার পর।প্রায় ৬-৭ রকমের আইটেম করেছিলাম, সাথে হেল্প করেছে আমার হাজব্যান্ড। রোস্ট, গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ ভুনা, ইলিশ মাছ, বাঘা আইর মাছ, শীপের মাংশও করেছিলাম কারণ বড় মেয়ে গরুর মাংস খায়না।এ কারণে গরুর মাংস খুব কম আনা হয় বাসায়। সবসময় আমাদের শীপের মাংসই চলে।যাইহোক সকল রান্নাবান্না শেষ করে শুরু হলো মেহেদি দেওয়ার পালা।মেয়েদের হাতে মেহেদি দেওয়ার পর আমি নিজেও একটু মেহেদি লাগিয়ে নিলাম।ঐদিন এত ব্যস্ত ছিলাম যে পোস্ট করতে পারিনি। ঘুমোতে ঘুমোতে রাত প্রায় একটা বেজে যায়।
গাড়িতে বসে বসে আমার ছোট মেয়ে নানান ধরনের ডিজাইন করে সেলফি তুলছিল আমাদের।
ঈদের দিন সকালে উঠে নাস্তা করার পর দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষে আমরা সকলে মিলে বের হয়ে যাই লন্ডন বড় ভাসুরের বাসার উদ্দেশ্যে।ঐদিন আমার ছোট ভাসুরের পরিবার ও আমাদের সাথে ছিল দুপুরের লান্সে।সকলে মিলে খাওয়া-দাওয়ার পরপরই উঠে যাই প্রাইভেট কারে।যেহেতু হাজব্যান্ড এখনো পুরো ফিট নয় লং ড্রাইভের জন্য তাই ভাসুরের গাড়ি আর ভাবির গাড়ি দুটিই লেগে ছিল।ভাসুর আর ভাবি দুজনেই ড্রাইভ করে লন্ডনে নিয়ে যায় আমাদের সবাইকে।লন্ডনে গিয়ে প্রথমেই চলে যাই খালা শাশুড়ির বাসায়। খালা শাশুড়ির বাসায় প্রতিবারই বিশাল আয়োজন থাকে। যত আত্মীয়-স্বজন আছে সবাই তার বাসায় একত্রিত হয়। দারুন এক মিলনমেলা হয় তার বাসায়।সেখান থেকে সবাই কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে চলে গেলাম বড় ভাসুরের বাসায়।বড় ভাসুরের বাসায়ও অনেক লোকজন, তার ছেলে মেয়ে, মেয়ের জামাই তিনজন, নাতি-পুতি বেশ ভালোই জমজমাট।এরপর সেখানে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে চলে আসি আমাদের গন্তব্যস্থলে। অবশ্য মেয়েদের স্কুল ছিল সোমবার তাই নয়টার সময় আমরা বের হয়ে যাই তাদের বাসা থেকে।
আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালোই ওয়েদার ছিল ঈদের দিন। তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রির মধ্যে ছিল।ঐদিন আর কোন শীতের পোশাক পরতে হয়নি।ঈদের ড্রেসের উপর শীতের পোশাক পড়লে তখন ততটা আনন্দ পাওয়া যায় না।যাইহোক বেশ ভালই কেটেছিল আমাদের ঈদের দিনটি।
আজ তাহলে এতটুকুই, আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
Photographer | @tangera |
---|---|
Device | I phone 15 Pro Max |
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
[

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ঈদের ঘোষণা শোনার সাথে সাথেই ঈদের দিনের রান্না ঈদের আগের দিন শেষ করে ফেললেন। মানে সবকিছু এগিয়ে রাখলেন। ঈদের দিন ফ্রেশ থাকলেন, আপনার আইডিয়াটা কিন্তু দারুণ। আপনার সব আত্মীয়-স্বজন সবাই লন্ডনেই থাকে। তাই আপনাদের আনন্দটাও বেশি।
রবিবার অর্থাৎ ছুটির দিনে ঈদ হওয়ায় খুব ভালো হয়েছে। এতে করে আপনারা সবাই খুব মজা করতে পেরেছেন। আসলে পরিবারের সবাই মিলে ঈদের দিন একটু ঘুরাঘুরি করলে এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করলে খুবই আনন্দ লাগে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন সবসময়।
লন্ডনে দেখছি আপনাদের অনেক আত্মীয়-স্বজনই রয়েছে। আর উৎসবের দিনগুলোতে সবার সাথে কাটাতে পারেন এটা কিন্তু আলাদা আনন্দের বিষয়। আপনি তো দেখছি অনেক রান্নাবান্না করেছেন। তবে ঈদের দিনের ছুটি নেই দেখে অবাক হলাম কারণ মোটামুটি সর্বত্রই ঈদের দিনটাতে ছুটি থাকে। অবশ্য খ্রিস্টান স্কুলগুলোতে একটু সমস্যা হয় আমাদের এদিকেও হয় ওটা। কিন্তু এলাকায় যেহেতু অনেক মুসলিম থাকে তাই ছুটির বাধ্য হয়ে দিতে। যাইহোক আপনি বেশ ভালোভাবে কাটিয়েছেন পড়ে ভালো লাগলো।
ঈদ আয়োজন খুবই জমজমাট ছিল জেনে ভালো লাগলো।সবাই মিলে আনন্দ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দিনটি কাটিয়েছেন পড়ে ভালো লেগেছে আপু।রান্না ও করেছিলেন ঈদের আগের দিন অনেক কিছু। তাই ঈদের দিন খুব এনজয় করতে পেরেছেন,ঘোরাঘুরি করতে পেরেছেন।আর আমরা তো রান্না করতে করতে ই সারাদিন কাটিয়ে দেই।সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।ঈদ মোবারক সবাইকে।