ছোটবেলায় স্কুলে থাকাকালীন বার্ষিক পরীক্ষার অনুভূতি

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago
আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি।

IMG_4881.jpeg

নভেম্বর মাসের শেষের দিক চলছে।আর এ সময় বাংলাদেশে সকল প্রাইমারি স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা প্রায় শেষের দিকে।এখন বাংলাদেশে ফোন দিলেই দেখা যায় সকলেই তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে খুবই ব্যস্ত রয়েছে। কারণ বাচ্চাদের পরীক্ষা চলছে।আর এই পরীক্ষার বিষয়টি দেখেই আমার এই পোস্ট করার আইডিয়াটি মাথায় আসে।ছোটবেলায় আমারও সেই পরীক্ষা দেওয়ার স্মৃতিগুলো ভেসে ওঠে।যখন প্রাইমারিতে ছিলাম তখন তো বাবা-মা খুবই ব্যস্ত থাকতেন আমাদের পরীক্ষা নিয়ে।পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই তারা উঠে পড়ে লাগতো।আর বিশেষ করে পরীক্ষার আগের দিন তো কোন কথাই নেই।বিশেষ করে আমার আব্বু পরীক্ষার আগের দিন খুব বেশি কষ্ট করতেন আমাদের জন্য।এমনকি প্রাইমারি থেকে হাই স্কুলে উঠলেও, এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন আমাদের ভাই বোনদের জন্য।পরীক্ষার আগের দিনে বাবা তো তার খাওয়া দাওয়া ভুলে যেতেন।কোনটা পড়েছি, কোনটা বাকি আছে, আরও কি পড়তে হবে এটা নিয়ে অস্থির থাকতেন।

শুধু বার্ষিক পরীক্ষাই নয়, প্রতিটি পরীক্ষাই আমরা বাংলাদেশে খুবই সিরিয়াস ভাবে নিতাম।তবে বেশি এক্সাইটেড থাকতাম বার্ষিক পরীক্ষাগুলোতে।পরীক্ষার আগের রাতে তো রিভিশন দিতে দিতে অস্থির হয়ে যেতাম।রাতে ঘুমানোর আগে পুরো বইটা একবার রিভিশন দিয়ে নিতাম। কিন্তু রাত বারোটার পরে আর জাগতাম না, কারণ ভোরে আবার উঠতে হবে। ভরে উঠে আবার একটি রিভিশন দিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে হবে।যতই পড়া থাক, যতই রিভিশন দেওয়া থাক, ভোরে একবার সেগুলোতে চোখ না বুলালে মনে শান্তি পেতাম না।এরপর একটি একটি করে পরীক্ষা শেষ হতো আর মনের মধ্যে উৎফুল্লতা ততই বাড়তে থাকতো। কারণ পরীক্ষা শেষ হলেই স্বাধীন, আর পড়ালেখা করতে হবে না বেশ কিছুদিনের জন্য।কারণ বার্ষিক পরীক্ষার পর অনেকদিন স্কুল বন্ধ থাকে। তখন, কি যে আনন্দে হতো তা বলে বোঝাতে পারবো না।পরীক্ষা শেষ হলে ঈদের চেয়েও আনন্দ লাগতো সেদিন।প্রাণ ভরে টেলিভিশন দেখতে পারবো। তখন আর কোন বাঁধা থাকবে না।ছোটবেলায় পরীক্ষা দেওয়ার সেই দিনগুলো অনেক মনে পড়ে।এখনো প্রায় ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখি পরীক্ষার জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি।

আসলে পরীক্ষার সময় আমরা যেমন অস্থির থাকতাম, তেমনি বাবা-মা ও খুব টেনশন করতেন আমাদেরকে নিয়ে।আর ছোট হলে তো কোন কথাই নেই।তখন বাচ্চাদের থেকে বাবা-মা বেশি অস্থির হয়ে পরে।মনে হয় যেন বাবা-মার পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে।স্পেশালি বাচ্চাদের জন্য মায়েরা বেশি কষ্ট করে পরীক্ষার সময়। তাই পরীক্ষা শেষ হলে মায়েরাও যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে।কিন্তু ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে রাত দিন পার্থক্য, বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুলের বাচ্চাদের জন্য।বাংলাদেশে যেমন বাচ্চাদের জন্য প্রতিটি ক্লাসে নির্দিষ্ট বই থাকে। কিন্তু এ দেশের প্রাইমারি ও হাই স্কুলে কোথাও নির্দিষ্ট কোন বই থাকে না তাদের ক্লাসের জন্য।শুধু তারা আগে থেকেই একটি ধারণা দিয়ে দেয় কোন কোন বিষয় পড়তে হবে? কি কি করতে হবে, মোটামুটি একটি ধারণা দেয়।স্কুলে তারা সবকিছু শিখিয়ে পড়িয়ে নেয়।এমনকি তাদের কবে পরীক্ষা শেষ হয়ে যায় তাও বুঝতে পারি না।শুধু আগে থেকে জানিয়ে রাখে কোন মাসে তাদের টেস্ট নেয়া হবে।ভাগ্যিস বাংলাদেশের মতো এখানে এমন সিস্টেম নেই। এমন সিস্টেম হলে আমার অবস্থা তাহলে শেষ হয়ে যেত।বাংলাদেশে যেমন বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য বাসায় টিচার রাখা হয়, কিন্তু এদেশে কোন টিচার রাখে না কেউ। সবকিছুই স্কুলে শিখিয়ে পড়িয়ে নেয়।যাইহোক অনেক কিছুই আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেললাম।আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে।

বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।পরবর্তীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।

ধন্যবাদ,

@tangera

Copyright image

1927F0BC-A81B-459C-A2F6-B603E4B2106C.png


👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :

VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


[witness_vote.png](https://steemitwallet.com/~witnesses

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 days ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে খানিকক্ষণের জন্য সেই ছোটবেলার স্মৃতিতে চলে গিয়েছিলাম। আমাক প্রাইমারি কিংবা হাইস্কুলে সাপোর্ট দেওয়ার মতো মা বাবা ইনস্ট্রাকশন দিতে পারেনি কারণ আমার বাবা-মা উচ্চ শিক্ষিত নয়। বার্ষিক পরীক্ষার সময় রাত দশটায় পুরো বই কভার করে ঘুমিয়ে যেতাম পুনরায় ফজর নামাজ পর থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত রিভিশন দিতাম পুনরায়। তারপর পরীক্ষা দিতে যেতাম। সব মিলিয়ে বার্ষিক পরীক্ষার সময় ব্যস্ত সময় ছিল একটা। এটাও ঠিক বলেছেন বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলে ঈদের চেয়েও বেশি আনন্দ লাগে। যাই হোক শৈশবের স্মৃতিচারণ নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 2 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু ছোটবেলার যতই আগে পড়তাম না কেন পরীক্ষার দিন সকালবেলা না পড়লে কিছুই মনে থাকতো না। তাছাড়া ঠিকই বলেছেন আব্বু আমাদের পড়ালেখার পেছনে অনেক কষ্ট করেছেন। পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল। এখন বাচ্চাদের পিছনে আমাদের সেভাবে লেগে থাকতে হচ্ছে। যাই হোক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।

 yesterday 

পরীক্ষার আগে বাচ্চাদের থেকে বাবা মা বেশি টেনশনে থাকে বেশি অস্থির থাকে কথাটা একেবারেই ঠিক। প্রাইমারিতে তো পরীক্ষা হতো ডিসেম্বরের শুরুতে। সত্যি বলতে ছোটবেলা পরীক্ষার টেনশনেই এই নভেম্বর মাসে ঘুম হতোনা হা হা।

 yesterday 

ভরে উঠে আবার একটি রিভিশন দিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে হবে।যতই পড়া থাক, যতই রিভিশন দেওয়া থাক, ভোরে একবার সেগুলোতে চোখ না বুলালে মনে শান্তি পেতাম না।

আপু আমিও ঠিক এমনটাই করতাম। ভোরে ঘুম থেকে উঠে একবার রিভিশন দিলে,পরীক্ষার খাতায় লিখতে বেশ সুবিধা হতো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে বেশ কিছুক্ষণ ছোটবেলার স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। বার্ষিক পরীক্ষার পর ভীষণ মজা করতাম। তখন সত্যিই নিজেকে একেবারে স্বাধীন মনে হতো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।