শিশুদের হাতে স্মার্টফোনের থেকে বই থাকা সবথেকে বেশি জরুরী

in আমার বাংলা ব্লগ6 days ago

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।বেশ কিছুদিন ধরে একটা জিনিস এখনকার বাচ্চাদের মধ্যে খেয়াল করি। যেটা হল ফোন ছাড়া তারা এক মুহূর্ত খেতে চায় না, ঘুমাতে চায় না ।সবকিছুর মধ্যে যেন তাদের ফোন জড়িয়ে থাকে। সত্যিই কি বাচ্চাদের হাতে ফোন দেওয়া উচিত ?

আমার মনে হয় যে বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন না দিয়ে যদি আমরা বই তুলে দিতে পারি। অর্থাৎ বাচ্চাদের বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য যদি আমরা তাদের মতন করেই খেলার ছলে বই তুলে দিতে পারি। তাহলে বুদ্ধির অনেকটাই বিকাশ ঘটে এবং তারই কিছু আলোচনা আজ আমি আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

WhatsApp Image 2024-09-24 at 02.11.27.jpeg

Image taken from Open AI


শিশু বয়সে বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম, বিশেষ করে ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের পরিবর্তে। এখানে কিছু কারণ উল্লেখ তুলে ধরলাম:

১. মস্তিষ্কের বিকাশ:

বই পড়া শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বই পড়ার সময় শিশুদের চিন্তাশক্তি, কল্পনাশক্তি, এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফোন বা ট্যাবলেটের অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

২. ভাষা দক্ষতা উন্নয়ন:

বই পড়ার মাধ্যমে শিশুরা নতুন শব্দ শিখতে পারে, যা তাদের ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি তাদের বাক্যগঠন, পড়া, এবং লেখা শেখার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। ফোনে সাধারণত এসব দক্ষতা গড়ে ওঠে না।

৩. মনোযোগ এবং ধৈর্য বৃদ্ধি:

বই পড়ার সময় শিশুরা মনোযোগ ধরে রাখতে শেখে এবং ধৈর্য্য বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, ফোন বা ট্যাবলেট ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত বিনোদনের অভ্যাস গড়ে ওঠে, যা তাদের মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করে।

৪. সৃজনশীলতা এবং কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি:

বই পড়ার সময় শিশুরা তাদের কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে গল্পের চরিত্র ও দৃশ্য কল্পনা করতে পারে। এটি তাদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে। ফোন বা ট্যাবলেট ব্যবহারে চিত্র এবং ভিডিও সরাসরি উপস্থাপিত হয়, যা কল্পনাশক্তির বিকাশে বাধা দেয়।

৫. স্বাস্থ্যগত প্রভাব:

অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের ফলে শিশুরা চোখের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা, এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা যেমন ওজন বৃদ্ধি, অস্থিরতা, এবং স্থবিরতা (sedentary lifestyle) এর শিকার হতে পারে। বই পড়া এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি দেয়।

৬. মানসিক বিকাশ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ:

বই পড়ার মাধ্যমে শিশুরা বিভিন্ন চরিত্রের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে পারে এবং নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে। এটি তাদের মানসিক বিকাশে সহায়ক হয়। অন্যদিকে, ফোন বা ট্যাবলেটের অতিরিক্ত ব্যবহারে আবেগগত সমস্যা, যেমন রাগ, উদ্বেগ, এবং হতাশা বাড়তে পারে।

৭. সামাজিক দক্ষতা:

বই পড়ার মাধ্যমে শিশুরা বিভিন্ন সামাজিক এবং নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়, যা তাদের আচরণ এবং মূল্যবোধ গঠনে সহায়ক হয়। ফোনে এই ধরনের শিক্ষার সুযোগ কম।

শিশুদের জন্য বই পড়া শুধু শিক্ষা বা বিনোদন নয়, এটি তাদের ব্যক্তিত্ব গঠনে, মানসিক ও সামাজিক বিকাশে অত্যন্ত জরুরি একটি অভ্যাস।


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


Posted using SteemPro Mobile

1000158488.jpg

PUSS COIN:BUY/SELL

Sort:  
 5 days ago 

শিশুদের নিয়ে অনেক সুন্দর একটা পোস্ট লিখেছেন দিদি।আসলে দিদি বর্তমানের বাচ্চারা বেশির ভাগ সময় ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু এভাবে যদি খেলার ছলে বই পড়ানো যায় তাহলে অনেক ভালো হবে।এটা বাচ্চাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ধন্যবাদ দিদি অনেক সুন্দর লিখেছেন।

 5 days ago 

বর্তমান সময়ে শিশুরা মোবাইল ফোনের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই শিশুদেরকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। বই মস্তিষ্কের বিকাশ থেকে শুরু করে সৃজনশীলতা এবং কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। দিদি এত সুন্দর পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 5 days ago 

এটা বর্তমানে মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অসংখ্য বাচ্চা আছে যারা ফোন না দেখে খেতে চাই না। এবং আমাদের সমাজের অভিভাবক গুলো বাচ্চাদের বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় না। বাচ্চাদের উপহার হিসেবে বইও এখন দেয় না। তারা এটার ভালো দিক সম্পর্কে ভুলতে বসেছে। চমৎকার লিখেছেন আপু।

 5 days ago 

খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল পোস্ট শেয়ার করেছেন দিদি। শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য যে কাজগুলো করা উচিত সেই কাজগুলো এখন আর দেখাই যায় না। মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর এজন্য তাদের মানসিক বিকাশ খুবই ধীরে হয়। আমাদের সময় যেমন ছিল বর্তমানে তার থেকে আলাদা চিত্র দেখা যায়।

 5 days ago 

অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দিদি। স্মার্ট ফোন বর্তমানে বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বই আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশ, মনোযোগ, ধৈর্য, ভাষার উন্নয়ন সৃজনশীলতা মানসিক বিকাশ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শিশুদের বইয়ের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।যাতে তারা বই পড়তে অনেক আনন্দ অনুভব করে। অনেক ধন্যবাদ দিদি দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 5 days ago 

বইয়ের কোন বিকল্প নেই৷ আমি দেখেছি যারা ছোট থেকে নানান ধরণের বই পড়ে তাদের মানসিকতা ও মানসিক বিকাশ অন্য রকমের হয়। বলা যায় আদর্শবান হয়৷ মোবাইল বা টিভি বাচ্চাদের জন্য কোনই উপকার আনে না৷ মজার বিষয় আমার মেয়ে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত আমার বাড়িতে টিভি ছিল না৷ 🤣

এখন মোবাইল অ্যাডিক্টেড বাচ্চাদের অধৈর্য্য হওয়া থেকে গ্রোথ কমে যাওয়া এমনকি দৃষ্টির সমস্যা সবই দেখা দেয়৷ খুব প্রয়োজনীয় পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি।

 5 days ago 

এখন তো ফোন ছাড়া হাতে গোনা কয়েকটা বাচ্চা দেখা যায় ।

 5 days ago 

ছোটদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়াটা একেবারেই উচিত নয়। এতে করে তাদের সবদিক দিয়েই ক্ষতি হয়। কারণ তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে না,তাছাড়া পড়াশোনার প্রতি অনীহা চলে আসে। তাই বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দিতে হবে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো বৌদি। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 days ago 

দিদি ভাই আপনার লেখার কথাগুলো বেশ যুক্তিযুক্ত, তবে দিনশেষে বাবুর সঙ্গে কোনোভাবেই পেরে উঠি না , যদিও আগের থেকে ওর মোবাইল আসক্তি কিছুটা কমেছে, তবে পুরোপুরি কমেনি।

ভালো লাগলো পুরো লেখাটি, বলতে গেলে সময় উপযোগী বার্তা।