জেনারেল রাইটিং || খারাপ কর্ম ও মিথ্যা বলা
হাই বন্ধুরা!
হাই
বন্ধুরা!আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি খারাপ কর্ম আর মিথ্যা বলার নিয়ে আলোচনা করব। মানুষের খারাপ কর্মে এবং মিথ্যা বলার মধ্য দিয়ে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এটাই থাকবে আলোচনার বিষয়।আলোচনার বিষয়: খারাপ কর্ম ও মিথ্যা বলা |
---|
মিথ্যা কথা বলা কিছু কিছু মানুষের কাছে খুব ইজি। যেকোনো মুহূর্তে নিজের পাপ ঢাকতে মিথ্যা বলে ফেলে। কিছু মানুষ রয়েছে সাজিয়ে গুছিয়ে খুব সুন্দর মিথ্যা বলতে পারে। মাঝেমধ্যে এমন কিছু খারাপ কাজ করে বসে যেটা অন্য কেউ যেন বুঝতে না পারে,তাই সুন্দরভাবে সাজিয়ে মিথ্যা বলে। পক্ষান্তরে দেখা যায় কিছু কিছু মিথ্যা বলার পূর্বে অন্য মানুষ বুঝে ফেলে তার কৃতকর্ম এবং মিথ্যা বলার ধরন।। কিন্তু যিনি মিথ্যা বলেন তিনি মনে করেন যে আমি মিথ্যা বলে জয়ী হয়ে গেলাম। কেউ আমার মিথ্যা বলাটা বুঝতে পারল না। আর এমন মিথ্যা বলতে গিয়ে অনেক মহিলা স্বামী হারিয়েছে। অনেক পুরুষ তার শখের নারীকে হারিয়েছে। অনেক আত্মীয়-স্বজন তার সুসম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছেন। মিথ্যা এমন একটা জঘন্যতম পাপ যার কবলে পড়ে শত শত মানুষ ধ্বংস হয়ে গেছে। তাইতো আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কঠোরভাবে বলে গেছিলেন মিথ্যা থেকে বিরত থাকতে। কিন্তু আমরা কি সে মিথ্যা কথা থেকে বিরত থাকতে পারি। আমরা খেয়াল করে দেখি কিছু মানুষের স্বভাবটা এমন হয়ে গেছে যে, কথায় কথায় মিথ্যা বলা। ডাট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মিথ্যা বলে ফেলে। অপ্রাসঙ্গিক কিছু কথা রয়েছে যেগুলো না বললে কোন যায় আসে না তার পরেও অনেকে নিজেকে বড় করার জন্য বাড়তি কথা বলে মিথ্যা বলে বসে।
আমি যদি মনে করি কোন একটা কাজ করলে ক্ষতি হবে এবং সেই ক্ষতির কারণটা ঢাকতে মিথ্যা বলতে হবে তাহলে কেন সে খারাপ কাজে লিপ্ত হবে। এখানে আমার দুইটা পাপ হয়েছে, এক খারাপ কাজ করা আর একটা মিথ্যা বলা। আর খারাপ কাজের মাসুল কতটা কঠিন হতে পারে সেটা হয়তো আমার জানা হয়নি। কিছু কিছু খারাপ কাজের মাসুল কিন্তু কঠিন হয়ে যায়।
আমি এমনও বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছি যে কিছু মানুষের মিথ্যা কথা কিছু মানুষের জন্য বিপর্যয় বয়ে এনেছে যা, স্বচক্ষে দেখে শুনে থমকে গেছি কোন কিছু বলার ছিল না। কারণ উভয়পক্ষ আমার নিজের লোক। যিনি মিথ্যা বলছেন তাকে ধরিয়ে দিতে গেলে আমার মান-সম্মান যাবে। যার কাছে মিথ্যা বলে ভালো হচ্ছে তিনিও আমার আপনজন, তার কাছে সত্যটা আমি প্রকাশ করে দিলে এতেও আমার মান-সম্মানের ক্ষতি হবে। এক কথায় যাকে বলে উভয় সংকট। আমি আমার জীবনে নিজের সত্যকে বজায় রাখতে গিয়ে উভয় সংকটের সম্মুখীন হয়েছি অনেকবার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিথ্যা প্রকাশ করে দিতে হয় আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুখ বন্ধ রাখতে হয়।
আমি এমন একজনকে দেখেছি, যার মিথ্যা কথা বন্ধ রাখতে ব্যর্থ হয়েছি। আর সে মিথ্যা কথা এমন একটা পর্যায়ের সৃষ্টি করেছে যেটা মানুষের সুন্দর ভালোবাসার বন্ধন কে বিচ্ছেদ করে দিয়েছে। এখন আপনি আপনার বিবেককে কাজে লাগান। আপনি আপনার প্রিয়জনদের মাঝে মিথ্যা বলে কি নিজের খারাপ কর্মটাকে ঢেকে রাখবেন, নাকি খারাপ কর্ম থেকে বিরত থাকবেন। আপনি হয়তো মিথ্যা বলে আপনার খারাপ কর্মটাকে আগলিয়ে রাখতে পারবেন কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে কখনোই পারবেন না। আপনার খারাপ কর্ম টাও যেমন ক্ষতিকারক আপনার মিথ্যা বলাটা ঠিক তেমনি ক্ষতিকারক। দুইটাই ক্ষতির বড় কারণ। আপনি আপনার চলার পথে এমন মিথ্যা কথা বলেন না, যেটা আপনার প্রিয়জনের কাছে সন্ধ্যের কারণ হয়ে যাবেন। অনেকে দেখা যায় বউ হয়ে স্বামীর কাছে শাশুড়ির নামে বদনাম করে অথবা ননদের নামে বদনাম করে। এখানে স্বামী তার মা বোনদের প্রতি খারাপ মনোভাব নিতে পারে না। কারণ সে তার মা-বোনকে আগে থেকে চিনে জানে। নতুন বউ যদি এসে বদনাম করে এতে কোন লাভ নেই। কারণ নতুন বউয়ের চেয়ে স্বামী অনেক বেশি জানে এবং চিনি। আপনি আপনার কর্মস্থলে বা চাকরিতে যোগদান করে কোন মানুষের নামে খারাপ নালিশ করতে যাবেন না। যার কাছে নালিশ করবেন বোঝার চেষ্টা করবেন তিনি আপনাকে বেশি জানে নাকি যার নামে আপনি দুর্নাম করেছেন তাকে বেশি চিনে জানে। এটা সুন্দর একটা উদাহরণ দিলাম মাত্র। কারণ আপনার ভুলে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যেটা আপনার সুন্দর সাজানো গোছানো সংসারটাকে ধ্বংস করে দিবে অথবা কর্মস্থলটা ধ্বংস করে দিবে।
আমি দেখেছি একজন মিথ্যা বলার জন্য তার প্রিয়জনকে হারিয়েছে। আমি এটাও দেখেছি একজন মিথ্যা বলার জন্য সন্দেহের কারণ হয়েছে প্রিয়জনের কাছে। আমি এটাও দেখেছি পাপ যদি হয় ছোট ছিল সে বড় সন্দেহের কারণ হয়েছে পাপী না হয়ে, শুধু ছিল তার বোকামি ভুল আর মিথ্যে কথার কারণ। একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, যারা সংসার জীবনে পদার্পণ করে তারা কিন্তু নিজের কাজ কর্মের হিসাব রাখে না। যারা হিসেব রাখে না তারা সব জায়গাতে নিজেকে মানিয়ে নিতে জানে এবং সুন্দরভাবে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে চলতে জানে। আজ যারা দু-একটা কাজে অংশ নিয়ে বেশি বেশি নাম নিতে চাই তারা কখনো গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নয়। দু একটা কাজ করে দশটা নাম নিবে বাদবাকি গুলো থাকবে মিথ্যার আশ্রয়ের। আর এ মিথ্যায় আশ্রয় নিয়ে মানুষ বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না তার কর্মস্থলে অথবা সাংসারিক জীবনে। মিথ্যার কবলে পড়ে হারাতে হয় নিজের কর্মস্থল অথবা সুন্দর সংসার। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবন চলার পথে যে কোন স্থানে যেকোনো ভাবে ই থাকে না কেন সেখানে অবশ্যই কর্মটা সঠিক পথে হতে হবে এবং সত্য কথার মধ্য দিয়ে চলতে হবে। কারন আমার আপনার মিথ্যা কথা খারাপ কর্ম অন্যের জন্য ক্ষতির বড় কারণ হয়ে যেতে পারে। আর একটা বিষয় সবসময় মাথায় রাখতে হবে। ভুল করে প্রিয়জনের কাছে মিথ্যা বলা যাবে না যাবে না যাবে না। কারণ সামান্য মিথ্যা আপনার বড় ক্ষতির কারণ হবেই একদিন। তাই আমাদের সব সময় মিথ্যা বলা, সন্দেহের কারণ হওয়া এবং খারাপ কর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে অবশ্যই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের বুঝার শক্তি দান করুক।
বিষয় | খারাপ কর্ম ও মিথ্যা বলা |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
0.00 SBD,
1.31 STEEM,
1.31 SP
15-03-25
আপনার পোস্টটি সত্যিই শিক্ষণীয়। মিথ্যা বলার পরিণতি শুধুমাত্র আমাদের আত্মবিশ্বাসকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং অন্যদের সাথে সম্পর্ককেও দুর্বল করে দেয়। আপনি খুব সুন্দরভাবে মিথ্যার ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেছেন। সততা ও সত্যের পথই একমাত্র সেই পথ, যা আমাদের শান্তি ও সঠিক পথে নিয়ে যায়। ধন্যবাদ এমন গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাভাবনা শেয়ার করার জন্য।
অনেক ভালো লাগলো আপনি সুন্দর বুঝেছেন দেখে
খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আসলে মিথ্যা কখনো আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না৷ এই মিথ্যার কারণে আমাদের অনেক ভালো সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়৷ এই মিথ্যার কারণেই আমাদের আত্মবিশ্বাস ধ্বংস হয়ে যায়৷ আমরা যখন কারো সাথে কোন ধরনের মিথ্যা প্রতিজ্ঞা অথবা মিথ্যা কথা বলি তখন আমাদের মনের মধ্যে একটা সন্দেহবোধ কাজ করতে থাকে৷ কারণ কোন একটা সময় সে সত্য বের হয়ে আসলে সেখানে আমরা অনেকটাই ছোট হয়ে যাব৷ যদি সবার মনের মধ্যে এরকম চিন্তা আসতো তাহলে কখনোই মানুষ মিথ্যার আশ্রয় নিত না৷ সব সময় সত্যের পথে চলত, সে ক্ষেত্রে যা কিছুই হয়ে যাক না কেন৷ অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আজকের সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷
হ্যাঁ তাইতো আমাদের মিথ্যে বলা থেকে দূরে থাকতে হবে।