জীবন
কিছুদিন থেকে সময় ব্যপক খারাপ যাচ্ছে। যেদিকেই যাচ্ছি খালি হতাশ হচ্ছি। তাই মনের অবস্থা বিশেষ সুবিধার না। বলা যায় বেশ ডিপ্রেশনেই আছি। যাই হোক কয়েকদিন থেকে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে,প্রচুর কুয়াশা। আজ তো কয়েকহাত দুরের জিনিস ও দেখা যাচ্ছে না।
এর মাঝেই সেই ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠলাম।কারন ৭টা থেকে টিউশন। রাস্তায় বের হয়ে দেখলাম চারদিকে কুয়াশায় ঢাকা।মানুষ জাগা তো দুরের কথা একটা কুকুর ও দেখা যাচ্ছে না। খালি অভাগা আমি আর তস্য অভাগা আমার স্টুডেন্ট এর ওঠা লাগছে। মনে মনে নিজের কপাল কে গালি দিচ্ছিলাম।
যাই হোক আমার টিউশন যাওয়ার পথে একটি পুকুর আছে,পুকুর পাড়ে পৌছে দেখলাম তিনজন লোক মাছ ধরছে। এই ঠান্ডার ভেতর তার থেকেও ঠান্ডা জলের ভেতর নেমে মাছ ধরা। বিষয়টা দেখে নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য কষ্ট কিছুটা কমল।
আসলে আমরা সবাই খুবই হ্রস্ব দৃষ্টিতে ভুগি।আমাদের এই হ্রস্ব দৃষ্টি কিন্তু চোখের না,মনের। আমরা প্রত্যেকটি মুহুর্ত নিজেকে নিয়ে ভাবি,নিজের সমস্যা নিয়ে আমাদের মন ভরা থাকে। এই সমস্যা গুলো অনেকটা কুয়াশার মত,এই কুয়াশা আমাদের মনের দৃষ্টকে বাধা দেয়।
ফলে আমরা দেখতে পারিনা অন্যের সমস্যা,অন্যের কষ্ট,অন্যের দু:খ। আজ সকালে উনাদের দেখার পর থেকেই আমার মনের সেই কুয়াশা কিছুটা হালকা হতে শুরু করেছে। আমি তো ঠান্ডার মাঝে দুই-তিনপ্রস্থ গরম জামাকাপড় পড়ে যাচ্ছি পড়াতে।তারপরেও আবার ঠান্ডা লেগে যাবার ভয়। কিন্তু এই যে মানুষগুলো এরা ঠান্ডার ভেতর জলের ভেতর নেমে কাজ করে যাচ্ছে নির্বিকারে।
আমি খারাপ আছি,কিন্তু আমার থেকেও তো ওদের অবস্থা আরো বাজে। আমি যতটুকু সুযোগ সুবিধা ভোগ করছি তাদের কাছে সেটুকুও নেই। আমি যতটুকু কষ্ট ভোগ করছি,তারা তার থেকেও অনেক বেশি ভোগ করছে। যখন আমরা নিজের সমস্যা থেকে চোখটা সরিয়ে অন্যের দিকে তাকাবো তখন নিজের কষ্টগুলো ছোটই মনে হবে।
একটা প্রবাদ শুনেছিলাম, চোখের সামনের মুষ্ঠি হিমালয় কে ঢেকে দেয়। তেমনি আমাদের নিজেদের ছোট ছোট কষ্ট গুলোর দিকে আমরা এত মনোযোগ দিয়ে ফেলি যে আমরা সমাজের মানুষের দু:খ কষ্ট ভুলে যাই।নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত সবাই,তাই সমাজের মায়া দয়া, মানবিকতা কমে যাচ্ছে।আমাদের সবার উচিৎ অন্যকে নিয়েও ভাবা।তাইলেই সমাজ সুন্দর হয়ে উঠবে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
টুইটার লিংক