অনু গল্প-তারে বেসেছি ভালো||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি একটি অনু গল্প লিখব। আর সেই অনু গল্পটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। অনু গল্প লিখতে খুবই ভালো লাগে। আর অনু গল্প লিখে সবার মাঝে উপস্থাপন করতে ভালো লাগে। তো বন্ধুরা চলুন আমার আজকের অনু গল্পটি পড়ে নেয়া যাক।
অনু গল্প-তারে বেসেছি ভালো:
.jpg)
source
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা প্রভাকে সজীব যেদিন প্রথমবার দেখেছিল সেদিন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিল। স্নিগ্ধ তার মুখের হাসি। আর বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেজা চুল শুখাচ্ছিল প্রভা। প্রভার মুখে যখন রোদের ছোঁয়া লেগেছে তখন তার সুন্দর মুখখানা যেন আরও বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। সজীব দূর থেকে সেই দৃশ্যগুলো দেখছিল। সজীব এবং প্রভার বাসা একদম সামনাসামনি ছিল। মাত্র কয়েক মাস আগে প্রভা ও তার ফ্যামিলি নতুন বাসায় উঠেছে। তাই সজীব মাঝে মাঝেই দূর থেকে প্রভাকে দেখতো। প্রভা বিষয়টি সেভাবে কখনো খেয়াল করেনি। কিন্তু সজীব সবসময় প্রভার বেলকনির দিকে তাকিয়ে থাকতো। সে সব সময় অপেক্ষা করতো কখন প্রভা বেলকনিতে আসে।
সজীব ধীরে ধীরে প্রভাকে অনেক ভালোবাসতে শুরু করেছিল। প্রথম দেখাতেই থাকে ভালোবেসে ছিল। তাকে কিছুতেই চোখের আড়াল করতে পারছিল না। এক পলকের একটু দেখাই যেন তার হৃদয়ে ঝড় তুলেছিল। প্রভাতে এক পলক দেখার জন্য সজীব ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতো। বারবার বেলকনির দিকে তাকাতো। কিন্তু কখনো প্রভার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারেনি। এমনকি প্রথমে প্রভার নামটিও জানতো না সজীব। শুধু মেয়েটিকে দূর থেকে দেখেই ভালোবেসে ছিল সে।এভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। সজীব সবসময়ই মেয়েটির সাথে কথা বলার জন্য ছটফট করতো। কিন্তু কথা বলার কোন মাধ্যম খুঁজে পাচ্ছি না। সবসময় খেয়াল রাখত কখন প্রভা বাহিরে যায়।
কিন্তু সজীব কখনোই প্রভাকে সেভাবে বাহিরে বের হতে দেখত না। প্রভা হয়তো সেভাবে বাইরে বের হতো না। হঠাৎ একদিন সজীব প্রভাকে বাহিরে বের হতে দেখলো। কিন্তু তার সাথে তার মা-বাবা ছিল। আড়াল থেকে সেটা দেখেই চলে এসেছিল সজীব। সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারেনি।এরপর সজীব মাঝে মাঝেই খেয়াল করতো প্রভা তার বাবা-মায়ের সাথে বাহিরে যেত। কিন্তু প্রভাকে কেন জানি ভীষণ বিষন্ন মনে হতো। সেই আগের মত হাসিমুখ আর দেখা যেত না। মেয়েটার মায়াবী মুখের মাঝে কেন জানি বিষন্নতার ছাপ পড়েছিল। সজীব বুঝতে পারছিল না তার কি হয়েছে। সজীব দূর থেকেই প্রভার সাথে কথা বলার জন্য ছটফট করতো। কিন্তু কখনো কাছে গিয়ে কথা বলার সাহস করতে পারেনি।
হঠাৎ একদিন সজীব সকালবেলায় খেয়াল করলো বাসার সামনে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে আছে। প্রভার বাবা-মা দ্রুত এম্বুরেন্সে উঠছে। সজীব বুঝতে পারছিল না কার কি হয়েছে। এরপর সজীব জানতে পারে আসলে প্রভা ক্যান্সারে আক্রান্ত আর লাস্ট স্টেজ চলছে। হঠাৎ করে প্রভা অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই তাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সজীব এই কথাটি শুনে যেন একদম নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। কি বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছিল না। এরপর চলে গিয়েছিল হসপিটালে। সেখানে গিয়ে যেটা দেখেছে সেটা দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। প্রভা আর এই পৃথিবীতে নেই। সজীব তার ভালোবাসার মানুষটিকে চিরতরে হারিয়ে ফেলেছে। তার ভেতরে জমা ভালোবাসার কথাগুলো আর বলা হয়নি। সজীব আজো প্রভাকে ভালোবাসে। কারণ প্রভা যে তার প্রথম প্রেম।
আমার লেখা অনু গল্প সকলের কাছে কেমন লেগেছে মন্তব্য করে জানাতে ভুলবেন না বন্ধুরা।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। বাংলা আমার মাতৃভাষা। তাই আমি বাংলায় লেখালেখি করতে ভালোবাসি। ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং এবং ক্রাফটিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। অবসর সময়ে গান শুনতেও অনেক ভালোবাসি। এছাড়া বাগান করতে আমার অনেক ভালো লাগে। মাঝে মাঝে রান্না করতেও অনেক ভালো লাগে। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক সুন্দর লেগেছে আমার কাছে আপনার লেখা আজকের গল্প। বুঝতেই পারিনি প্রভার সাথে এরকম কিছু হবে শেষ পর্যন্ত। প্রভা পৃথিবীতে নেই, আর সজীবও বলতে পারেনি নিজের ভালোবাসার কথা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সে প্রভাকে অনেক ভালোবাসে। কারণ তার ভালোবাসা হয়েছিল মন থেকে। ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে গেলে সত্যি কষ্ট লাগে।
আমার লেখা গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। শেষপর্যন্ত ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে ফেলেছিল সজীব।
প্রভার জীবনের এই করুন পরিণতির কথা শুনে খুবই খারাপ লাগছে। এভাবে অপ্রকাশিত ভালবাসাগুলো হঠাৎ করেই হারিয়ে যায়। আর সারা জীবন ভালোবাসা হৃদয়ের মাঝে থেকে যায়।