অতি চালাকের গলায় দড়ি😊

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

হ্যালো,

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই।আশা করছি ভালো আছেন আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো উপজেলার ভোট নিয়ে চালাকি করে নিজের ভোট নিজেই নষ্ট করার গল্প। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।

IMG20240529093936.jpg

IMG20240529125331.jpg

আগামীকাল ছিলো ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।বেশ অনেক দিন থেকেই খুব জমজমাট ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সব প্রার্থীরা ও তাদের সামর্থীত লোকজনেরা।
বাড়ি বাড়ি আসেনি বল্লেই চলে প্রচারণা চালিয়েছেন মাইকিং এর মাধ্যমে।
আমার তেমন এই ভোট নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই বল্লেই চলে।শুধু আমার নয় গ্রামের কারো প্রতি ভোট নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা নেই বল্লেই চলে।
মুখে মুখে ভোটের কোন গল্প নেই যা ইউনিয়ন নির্বাচনে ব্যাপকহারে লক্ষ করা যায়।
তবে বাচ্চাদের আনন্দের শেষ নেই ভোট নিয়ে তার একমাত্র কারণ যখনি ভ্যানে মাইকিং করা শুরু করে তখনি তাদের চোখে মুখে আনন্দ ফুটে ওঠে এবং ভো দৌড় দিয়ে মার্কা নিতে ভ্যানের কাছে চলে যায়।আমার মেয়েও যায় এবং মার্কা গুলো গুছিয়ে রেখে দেয় এবং তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা থাকে কে কতো গুলো মার্কা সংগ্রহ করতে পারে।যে দল বাচ্চাদের বেশি মার্কা দেয় বাচ্চারা তাদের মা,বাবাকে সেই দলকে ভোট দিতে বলে হাহাহা।
আমার কোন দল ছিলো না কে কোন মার্কার প্রার্থী তা জানতামও না।সেদিন গেটে দাড়িয়ে ছিলাম আর হঠাৎ বিশ থেকে তিরিশ টি মোটরসাইকেল একযোগে বাড়ির সামনে চলে এসেছে এবং সেখানে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহ্ মোহাম্মদ ফজলুর হক(রানা)ওনি এবং সাথে আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসে নমস্কার দিলেন এবং ওনাদর সাঙ্গ পাঙ্গর ছেলেরা হাতে একটা মার্কা ধরিয়ে দিলেন। মনটা বেশ নরম হয়ে গেলে ভাবলাম এনি যেহেতু প্রথম ভোট চেয়েছে তাহলে ভোটটা এনাকেই দেব।
এরপর গতকাল ভোটের সকাল বাইরে গমগমে কথা বার্তা মহিলাদের। এটা নতুন নয় আমার বাড়ির সামনে মাঝে মাঝেই মেয়ে মহিলারা খোস গল্পে মেতে ওঠে।যদিও তাদের গল্পে কখনো যোগ দেয়া হয় না আমার। আমি মাঝে মাঝে জানালার গ্লাস দিয়ে তাদের গল্প উপভোগ করি।ভেবেছিলাম সেরকম কিছু। কিন্তুু গত তিনদিন থেকে বিদুৎ না থাকায় মাঝে মাঝে গেটে বের হচ্ছিলাম। গতকালকেও গেটে বসলাম একটু। সামনের বাড়ির এক ভাবি হাতে করে এক টুকরা কাগজ নিয়ে হাজির। বল্লেন ও আরাধ্যার মা আমাদেরকে নাক ফুল দিয়ে গেলো।প্রথমে বুঝতে না পেরে অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম নাকফুল মানে।বল্লেন সকালে এক প্রার্থী এসে নাক ফুল গিপ্ট করে গেছে ওনার মার্কা বক। ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। আমার সামনে কাগজের টুকরো টা ধরলেন এবং আমি নাকফুলটি হাতে তুলে নিলাম। দেখলাম বেশ জ্বল জ্বল করছে নাকফুলটি।খালি চোখে তো সোনা চেনা সম্ভব নয় বর্তমানে।সোনার আদলে কতো কি এখন। বল্লাম বেশ ভালো হয়েছে রেখে দেন।কয়েক টি ফটোগ্রাফি করে নিলাম নাক ফুলটির।

IMG20240529093937.jpg

সে বল্লেন সব বাড়ির মহিলাদের কে দিয়ে গেছে। মূলতো পরে দেখলাম কোন শিক্ষিত পরিবার বা শিক্ষত মহিলাদের বাড়িতে এই নাকফুল নিয়ে যায়নি।মূর্খ গরিবও অসহায় মানুষের বাড়িতে গিয়ে দিয়েছেন।মূলত ওনার টার্গেট ছিলো গ্রামের সহজ সরল মহিলাদের কে নাক ফুল দিয়ে ভোট নেয়া।সোনা থাক না থাক সহজসরল মহিলারা তো সোনা নাম শুনে খুশি হবেন এবং ভোটটা ওনাকেই দেবেন। মগজধোলাই বলা চলে এক প্রকার। মগজ ধোলাই করতে ও পেরেছেন কারণ কতোজন নাকফুল নিয়েছে তারা সবাই একবাক্যে ওনাকে ভোট দিতে রাজি।
এ কথা জানতে পেরেছেন অন্যদলের লোকজনন এবং তারা এসে মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন যে এই নাকফুলে একদমই সোনা নেই। আপনারা চাইলে পরিক্ষা করে দেখতে পারেন। এই কথায় কোন এক মহিলার মেয়ে স্বর্ণকারের দোকানে গেলেন এবং পরিক্ষা করে দেখলেন একদম সোনা নেই 😁 আর এরপর পূরা গ্রাম রটে গেলো সোনা নেই।এবার অতি চালাকের গলায় দড়ি পড়ে গেলো ওই প্রার্থীর।যে দুটো ভোট পেতেন ওনার নকল নাক ফুল দেয়ার কারনে তাও আর কেউ দিলেন না🫢 উল্টে গালিগালাজ করা শুরু করলেন সবাই হাহাহা।একেই বলে অতি চালাকের গলায় দড়ি।যতোবার এই কথা কথা আমার মনে হয় ততবার হাসি পায়।চালাকি করে ভোট আদায় করতে গিয়ে সর্বনাশ হয়ে গেলো।
এরপর আমার পরিবারের সবাই মিলে ভোট কেন্দ্রে গেলাম এবং ভোটকেন্দ্রে কোন ভীর লক্ষ্য করলাম না।সরাসরি গিয়ে ভোট দিলাম আমার পছন্দের প্রার্থী মোটরসাইকেল কে। আর বাকি তিনটি দিলাম আমার কাকা শ্বশুর ও এক দেবেরে কথায়।
বিকেল থেকে রমরমা পরিবেশ যে মোটরসাইকেল, তালা ও কলস হবেই নির্বাচিত। বেশ খুশি হলাম যে আমার সব গুলো ভোটেই সঠিক হবে।ওমা একি শুনলাম বেসরকারি ভাবে মোটরসাইকেল ৬২৭ভোটে ঠকে গেলেন এবং আনারস যার কোন নামেই ছিলো না সে জিতে গেলেন। এ যেন বাড়াভাতে ছাই দেয়ার মতো অবস্থা হয়ে গেলো।
কি আর করার আপসোস করতে করতে ঘুমিয়ে গেছি কখন তা বলতে পারছি না।
এই ছিলে আমার আজকের ভোট নিয়ে অতিচালাকের গলায় দড়ি নাম পোস্ট। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20240526_180422.jpg

Sort:  
 last year 

অতি চালাকের ভবিষ্যৎ কখনোই ভালো হয় না। যে যত বেশি চালাক তার তত বেশি ক্ষতি।যার মধ্যে সততা নেই সে আবার কিসের জনপ্রতিনিধি হবে!এগুলো বাদ দিয়ে সে যদি মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করত এবং সবার কাছে দোয়া এবং ভোট চাইতো তাহলে অবশ্যই সে অনেক বেশি ভোট পেতো এবং হয়তোবা জয়ীও হতে পারতো।সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

ভোট পাওয়ার জন্য নাকফুল দেওয়ার আইডিয়াটা কিন্তু জটিল ছিল। তবে শেষে তো ধরা খেয়ে গেল। আসলে যদি ওই মেয়েটি স্বর্ণকারের কাছে না যেত তাহলে তো কেউ বিশ্বাস করত না। সবাই ভাবতো হয়তো সোনার নাকফুল দিয়েছে। সত্যি আপু অতি চালাকি করতে গেলে বিপদ সব সময় বেশি হয়। তবুও যতটুকু ভোট পেতো এখন তো ভোট একেবারেই কম পাবে।

 last year 

হাহাহাহা আপু এজন্যই তো কথায় আছে অতিচালাকের গলায় দড়ি।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

ভোট এলেই মানুষ বিভিন্ন রকমের কায়দা করে। বিশেষ করে মহিলাদেরকে ঠকিয়ে তারা ভোট আদায় করতে চেয়েছিল। তাই এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। অবশেষে সত্য সামনে এসেছে জেনে ভালো লাগলো আপু। আশা করছি আপনারা পোস্ট পড়ে সবাই সচেতন হবে।

 last year 

একদমই ঠিক বলেছেন ভাইয়া মহিলাদের ঠকিয়ে ভোট আদায় করার কৌশল করেছিলো।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আমার লাইফে ভোট কেনার অনেক রকম উপায় দেখেছি। কিন্তু নাকফুল দিয়ে ভোট কেনার ব‍্যাপার টা বেশ দারুণ এবং ইউনিক ছিল। ভদ্রলোক বের করেছিলেন উপায় টা। কিন্তু বিরোধী দলের লোক সব ভেস্তে দিল হা হা। এ যেন হীতে বিপরীত হয়ে গেলে। ভোট নিয়ে এখন সব অঞ্চলের মানুষের মধ্যেই উওেজনা কাজ করে না বললেই চলে আপু।

 last year 

ভোট এলেই কত রকমের বুদ্ধি করে সবাই।এই সময় জনগণকে কত কিছু দিয়ে আকৃষ্ট করে ভোট দেওয়ার জন্য।মহিলাদের নাকফুল দিয়ে ভোট কেনার ব্যাপারটা কিন্তু অনেক দারুন ছিল। আসলে কথাটি আপনি ঠিকই বলেছেন অতি চালাকে গলায় দড়ি।সত্যের জয় সব সময় আর একটি মিথ্যা দিয়ে হাজারো মিথ্যা বলতে হয়।সত্যটা সবার সামনে এসেছে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

খুবি সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন আপু। পোস্টের ভেতরের কথাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু বুদ্ধিমান ভালো কিন্তু চালাকি ভালো না হিহিহি। আর অতি চালাকের গলায় দরি। ঠিক কথাই বলেছেন আপনি। এই যে অতি চালাকি করে গরিব মানুষকে লোভের ফাঁদ পেতে ভোট কিনে জিততে চেয়েছিল। সত্য কখনও চাপা থাকে না। সত্যের উন্মোচন এক সময় না এক সময় বেরিয়ে আসবেই।

 last year 

একদমই ঠিক বলেছেন আপু চালাক ভালো তবে বেশি অতিচালাক ভালো নয়। লোকটি যদিও বেশ কিছু ভোট পেতো তবে গরবি মানুষের মন ভেঙ্গে দিলো এক কথায় মন নিয়ে ইতোমধ্যে খেলা করতেছে। সবাই ভোট দেয় নি জেনে ভালো লাগলো। পোস্ট টি সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 last year 

একদমই ঠিক বলেছেন ভাইয়া কিছু ভোট পেতো সে গুলোও নষ্ট করে ফেলেছে মন ভেঙ্গে দিয়ে।

 last year 

ঐ ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মহিলা তো আর জানতো না যে,মহিলারা এত তারাতারি দোকানে গিয়ে সেটা চেক করে নিবে। ভেবেছে ভোটের পরে চেক করবে। যায়হোক বেশি চালাকি করলে এমনই হয়। ধন্যবাদ অভিজ্ঞতা তুলে ধরার জন্য।

 last year 

নাক ফুল দিয়ে ভোট আদায় করার সিস্টেমটা আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো দিদি। হা হা হা... আসলে তারা চেয়েছিল বোকা এবং মূর্খ গরীব মানুষদের ঠকাবে। কিন্তু পরবর্তীতে তারাই ফাঁদে পড়ে গেল ভুল জিনিস দিয়ে। তবে কষ্ট লাগলো এটা জেনে যে, আপনি যে প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন সে জিততে পারল না। তার পরিবর্তে যার জেতার কথা ছিল না অর্থাৎ আনারস মার্কা, সেই জিতে গেল।

 last year 

বেশি চালাকি করলে এমনই হয়। ভেবেছিলো নাক ফুল দিয়ে সবার ভোট নিয়ে যাবে। এখন অতি চালাকের গলায় দড়ি হলো। ভোট তো দিলো না,বরং আরো গালি খেলো। ধন্যবাদ।