পুকুরে মাছ ধরা দেখার অনুভূতি❤️

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো

আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।

আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।

আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো পুকুরে মাছ ধরা দেখার অনুভূতি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।

PhotoCollage_1736598023957.jpg

তো চলুন দেখা যাক।

আমার মেয়ে পরিক্ষার আগে থেকে মামার বাড়িতে পরিক্ষার পর আসবে বলে বায়না ধরে।যেহেতু আমাদের বাড়িতে সবাই মানে আমার ননদ ও জা এসেছিলো তাই আর আসা হয়নি কিন্তুু আমার ননদ চলে যাওয়ার পর আর তাতে আটকানো যায়নি সে ওর মামির সাথে চলে এসেছে। আমার ভাইয়ের বউও আমাদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলো এবং যখন সে বাড়িতে এসেছে তখন আমার মেয়েও সাথে এসেছে।

বেশ কয়েকদিন হলো এসেছে আমার জাও চলে গেছে রংপুরে। আমি গতকাল মেয়েকে নেয়ার জন্য বাড়িতে এসেছি বাড়ি বলতে বাবার বাড়িতে এসেছি।আমি যে এসেছি তা মেয়েকে বলিনি না বলেই ভ্যান নিয়ে চলে এসেছি। আমার শ্বশুর বাড়িও বাবার বাড়ি একই ইউনিয়নে তাই আসতে বেশি সময় লাগে না।দশ মিনিট বাইকে ও অটোভ্যানে ১৫ মিনিটের মতো লাগে। এতো সময়ও লাগতো না কিছু কাচা রাস্তা আছে জন্য সময়টা একটু বেশি লাগে।
যাইহোক আমি মেয়েকে না বলেই হঠাৎ চলে এসেছি এবং মেয়ে লুকোচুরি খেলছিলো গ্রামের বাচ্চাদের সাথে। কেউ একজন বলেছে যে তোমার মা এসেছে আর সেই খবরে সে খেলা বাদ দিয়ে দৌড়ে এসেছে এবং ভ্যানেই কোলে উঠেছে। আমি মেয়েকে বল্লাম এখনি যাবো চলো সে বল্লো না আজ যাবো না এবং আমার কাপড়ের ব্যাগ দেখে চিৎকার করে বল্লো মা থাকবে ব্যাগ এনেছে। একথা শুনে বাড়ির সবাই হাসাহাসি শুরু করে দিয়েছে।

রাতে খেয়ে যথা সময়ে ঘুমাতে গেছি ঘুম বলতে বিছানায় শোয়া ঘুম তো অনেক দেরিতে হয়। রাত একটা অবদি ফেসবুকে ছিলাম ঘরে তেমন নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না তবে জানালা খুল্লে বেশ ভালোই নেটওয়ার্ক থাকে।ফোন রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম কিন্তুু ঘুম কিছুতেই আসছিলো না।রাত তিনটার পরে ঘুমালাম।

গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন এর মাঝে হঠাৎ কানে পড়লো বম্মা বম্মা বিশাল বড়ো একটি বোয়ালমাছ ধরা পড়েছে। বুঝতে পেলাম মাঝি এসেছে। ঘুমঘুম চোখে লাফিয়ে উঠলাম মাছ ধরা দেখার জন্য। অনেক দিন থেকে মাঝির মাছ ধরা দেখি না।মাঝ ধরা দেখতে গেলাম এবং দেখতে পেলাম বেশ বড়ো বোয়াল টি মৃগেল,পুঁটি টিমাছ ও বোয়াল মাছ। বোয়ালটি কিন্তুু বেশ বড়ো সাইজের।

IMG-20250111-WA0025.jpg

মাঝিরা ঠান্ডায় ঠকঠক করে কাঁপছে।ছোট ছোট ছেলেও আছে মাঝির তালিকায়।মাথায় টুপি পড়ে পুকুরের জলে সাঁতরানো দেখে হাসি পেলো।কষ্ট লাগছিলো জীবনও জীবিকার তাগিদে কতোই না কষ্ট করতে হচ্ছে। বেশ দেরি করেও মাছ ধরতে পারতো কিন্তুু খুব সকাল বেলা একটা মাছের বাজার হয় এবং সেখানে মাছ নিয়ে গেলে অনেক দাম পাওয়া যায়।

IMG_20250111_181117.jpg

আমাদের পুকুর থেকে মাছ ধরে সেই বাজারে নিয়ে গিয়ে বেঁচবে তারা।কিছু মাঝ এক মাঝি ছেলেকে দিয়ে পাঠিয়ে দিলো এবং পুকুরে আবারও জাল নামিয়ে দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করলো কারণ বাজারের মতোই অনেকে এসেছে পুকুর ঘাটে মাছ কিনতে তাদের কে মাছ দেয়ার জন্যই মূলত আবারও মাছ ধরলো এবং সবাইকে তাদের চাহিদা মতে মাছ দিয়ে দিলো।

PhotoCollage_1736597297466.jpg
এরপর বাড়ির খাওয়ার জন্য একটি কাতলা মাছ,লাল কার্ফু, বোয়ালও গুড়া মাছ নিয়েছে। গুড়া মাছের মধ্যে বেশি গুলোই কুচোচিংড়ি মাছ।আমার বাবার বাড়ির গ্রামে কাজের লোক একদমই পাওয়া যায় না তাই মাছ বাড়ির লোকেদের কাটতে হয়। বড়ো মাছ মাঝে মাঝে মাঝি কেটে দিয়ে যায় কিন্তুু ছোট মাছ নিজেদের কাটতে হয়।ছোট মাছ কাটতে বসেছে আমিও সাথে বসেছি গুড়া মাছ কাটতে।গুড়া মাছে প্রচুর পরিমানে গাছের পাতা ছিলো। অন্যনদিন নাকি মাঝিরাই বিশেষ কায়দায় পাতা গুলো আলাদা করে দেয় কিন্তুু আজকে পাতাসহ দিয়েছে পাঠিয়ে।অনেক গুলো চিংড়ি মাছ, ডারকাও পুঁটিমাছ ও মোয়া পাওয়া গেছে পাতার ভীতর থেকে।

IMG-20250111-WA0022.jpg

IMG-20250111-WA0024.jpg

বেশ ভালোই লাগলো সকালবেলা মাছ ধরতে দেখে।শীতে মাঝিদের জলে নেমে মাছ ধরতে বেশ কষ্ট হয়।আগে কতো মাছ ধরা দেখতাম। এখন তেমন একটা দেখা হয় না যখন আসি বাবার বাড়িতে তখন যদি মাঝি আসে তাহলে মাছ ধরা দেখা হয়।আজকের মাঝ ধরার দেখার অনুভূতি দারুন ছিলো।বেশ ভালো লেগেছে।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে।
সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20250107_231917.png

IMG_20250107_231839.png

Sort:  
 2 months ago 

PhotoCollage_1736608207055.jpg

 2 months ago 

আপু আপনার পুকুরে মাছ ধরার অনুভূতি পোস্টটি দেখে আমারও অনেক ইচ্ছে হচ্ছে পুকুরে জাল ফেলে তাজা তাজা মাছ ধরা দেখতে। আপনাদের পুকুরে তো দেখছি অনেক ভালো ভালো মাছ হয়েছিল। আর পুকুরের এই তাজা মাছগুলো খেতে অনেক স্বাদ লাগে। বিশেষ করে তাজা গুড়া মাছগুলো খেতে খুব ইচ্ছে করছে।

 2 months ago 

ঠিক বলেছেন তাজা মাছ দেখতে খুবই ভালো লাগে।

 2 months ago 

পুকুর থেকে মাছ ধরতে দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। আমিও মাঝেমধ্যে পুকুরে উপস্থিত হতাম এবং মাছ ধরা দেখতাম। এখনো আমার কাছে বেশ অনেক ফটো রয়েছে কিন্তু শেয়ার করা হয়ে ওঠেনা। আপনার এই সুন্দর মাছ ধরতে দেখা দেখে ভালো লাগলো আমার। অনেক সুন্দর সুন্দর মাছ উঠেছে।

 2 months ago 

আপনারও পুকুরের মাছ ধরা দেখতে অনেক ভালো লাগে জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

বেশ অনেক কিছু জানলাম আপনার পোস্ট পড়ে। আপনার শ্বশুর বাড়ি আর বাবার বাড়ি একই ইউনিয়নে। আপনারা বাইরে থাকেন। যাহোক গ্রামে এসে শীতের মাছ ধরা দেখতে পেরেছেন। তবে শীতের সময় মাছধরা তো বেশ কঠিন কাজ। তবুও বেশ অনেক মাছ ধরেছে দেখলাম। বেশ অনেক রকমের মাছ ধরা দেখতে পেরেছি এখানে। ভালো লাগলো এমন সুন্দর একটি পোস্ট দেখে।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

বাচ্চারা তার নানু বাড়ি গেলে একদমই আসতে চায় না। তারমধ্যে আবার আপনার মেয়ের পরীক্ষা শেষ। সে এখন নানু বাড়িতে ছুটি কাটাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনি না জানিয়ে যাওয়াতে আপনার মেয়ে খুব আনন্দ পেয়েছে এটা কিন্তু মজার বিষয়। গ্ৰামে এমনেতেও নেটের সমস্যা হয়। আপনার মতো আমারও ঘুমাতে অনেক রাত হয়। যাই হোক জীবিকার তাগিদে কত মানুষ কত কষ্টই না করে। নয়তো এই শীতে ঠান্ডা পানিতে এত সকাল বেলা এভাবে কেউ মাছ ধরতে নামে। তারা চিন্তা করে নিজের কষ্ট হলেও পরিবারের সবার মুখে দিনশেষে খাবার দিতে পারলেই খুশি। সকাল সকাল পুকুর থেকে মাছ ধরা দেখতে খুব ভালো লাগে। বোয়াল মাছটা বেশ বড়সড় বুঝাই যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমার পুরা পোস্ট টি ধৈর্য সহকারে পড়ে সুন্দর মন্তব্য করেছেন জন্য।

 2 months ago 

ছোট বেলার অনেক মাছ ধরার অনেক স্মৃতি এখন পর্যন্ত মনের মধ্যে গাঁথা রয়েছে। আসলে শীতকালে পুকুরের পানি অনেক টা কমিয়ে যায়, তাই শীতকালে বেশিরভাগ মানুষ পুকুর সেচ দিয়ে মাছ। আপনার মাছ ধরা অনুভূতি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে মাছ ধরার থেকে মাছ ধরা দেখতে একটু বেশি ভালো লাগে।

 2 months ago 

একদমই ঠিক বলেছেন মাছ ধরার থেকে মাছ ধরা দেখতে বেশি ভালো লাগে।

 2 months ago 

আজকে সকালে আপনার সাথে যখন জেনারেল চ্যাটে কথা বলছিলাম তখন আপনি বলেছিলেন যে আমি বসে বসে মাছ ধরা দেখতেছি। কিন্তু একটু আগে সেটা আপনি পোস্ট করেছেন আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগলো। আসলে পুকুরে মাছ ধরার থেকে দেখতে বেশি ভালো লাগে আমার।সব মিলিয়ে আপনার মাছ ধরার অনুভূতি দারুন ছিল।

 2 months ago 

হ্যাঁ জেনারেল চ্যাটে আপনার সাথে কথা হয়েছে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করেছেন জন্য।

 2 months ago 

পরীক্ষা শেষে নানু বাড়ি ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা।আপনার মেয়ের সেজন্য সে নানু বাড়ি ঘুরতে এসেছে। বাইরে থেকে গ্রামে ঘুরতে আসলে অনেক ভালো লাগে। গ্রামের অনেক দৃশ্য আছে যেগুলো আমাদের বরাবর মধ্য করে। এর মধ্যে একটি হল মাছ ধরা। মাছ ধরা দেখতে আসলেই অনেক ভালো লাগে। যদিও সকাল সকাল এরকম মাছ ধরা অনেক কষ্টের কাজ। শীতে পানি এত ঠান্ডা থাকে যে গোসল করতে ভয় করে মাছ ধরা তো আরো অনেক কষ্টের ব্যাপার। যাইহোক বেশ কিছু মাছ ধরেছে দেখছি। এরকম মা ছাড়া দেখতে আমি অনেক পছন্দ করি।

 2 months ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করেছেন জন্য।

 2 months ago 

এরকম মাছ ধরার মুহূর্ত সামনাসামনি দেখার অনুভূতিটাই আলাদা। অনেকদিন হলো এরকম দৃশ্য দেখা হয় না। আপনি অনেক উপভোগ করেছেন নিশ্চয়ই সময় গুলো। মাছের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ছোট বড় অনেক মাছ ধরা পড়েছে। মুহূর্তগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো আপু।

 2 months ago 

ঠিক বলেছেন সামনাসামনি মাছ ধরা দেখার মজাই আলাদা।

 2 months ago 

ছোট বাচ্চারা নানু বাড়ি আসলে তো আর যেতে চাই না। আপনার মেয়ে আপনাকে দেখে ভীষণ খুশি হয়েছিল। বাসায় চলে গেল তো আর খেলার সুযোগ তেমনভাবে পাবে না এজন্য গ্রামেই ওদের ভালো লাগে। যাক, পুকুরের তাজা খাওয়ার মজাই অন্যরকম। আর শীতের দিনে মাঝিরা পানিতে নেমে মাছ ধরছে এটাও কষ্টের আসলে।

 2 months ago 

ঠিক বলেছেন তাজা মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা।