কবিতা -"অনুভূতি "
স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে নতুন বছরের অনাবিল শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি। আজ আবারো আমার লেখা আর একটি কবিতা নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে, আজকের কবিতাটিও।
কবিতাটি অনুভূতির গভীরতা, জটিলতা এবং জীবনের ওপর এর প্রভাবকে ব্যাখ্যা করে। এখানে অনুভূতিকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, যা প্রতিকূলতা ও আনন্দের মুহূর্তগুলোতে মানুষকে অবিরত সাহচর্য দেয়।
অনুভূতি মানুষের জীবনের সেই অন্তর্নিহিত শক্তি, যা তার অভিজ্ঞতাগুলিকে সংজ্ঞায়িত করে। এটি কখনো গভীর বিষাদের রূপ নেয়, কখনো প্রশান্তির, আবার কখনো আনন্দের। কবি অনুভূতিকে একটি বিশ্বস্ত সাথী হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যে কখনো অভিযোগ করে না বা মানুষকে ছেড়ে চলে যায় না। বরং এটি মানুষের জীবনের প্রতিটি ধাপে পাশে থেকে তাকে শক্তি এবং সাহস জোগায়।
অনুভূতির সবচেয়ে বড় গুণ হলো, এটি মানবিক গুণাবলিকে জাগ্রত করে। মানুষের দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা, আনন্দ এবং প্রেম—সবকিছুর মাঝেই অনুভূতি কাজ করে। এটি মানুষকে কেবল অনুভব করার শক্তি দেয় না, বরং সে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জীবনের গভীরে প্রবেশ করার ক্ষমতা দেয়। এমনকি, যখন শব্দের অভাব ঘটে, অনুভূতি তখন মনের গভীরে জমে থাকা কথাগুলোকে কবিতা বা সৃষ্টির রূপ দেয়।
এই কবিতায় কবি অনুভূতিকে এক পবিত্র বন্ধুর মতো বর্ণনা করেছেন, যে দুঃখের মুহূর্তে মানুষকে সান্ত্বনা দেয় এবং একাকিত্বের মধ্যেও তাকে সঙ্গী করে। এটি কেবল আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং মানুষকে তার জীবনের মানে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। অনুভূতি দুঃখের মধ্যে মুক্তির গান শোনায় এবং সুখের মুহূর্তগুলোকে আরো গভীর করে তোলে।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, অনুভূতি কখনো কোনো শর্ত আরোপ করে না বা প্রতিদানের আশা রাখে না। এটি নীরবভাবে মানুষকে শক্তি দেয় এবং তার আত্মার গভীরে প্রোথিত থাকে। অনুভূতির কারণেই মানুষ তার দুঃখকেও আনন্দের মতো গ্রহণ করতে শিখে এবং জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে।
সারমর্মে, অনুভূতি মানুষের অস্তিত্বের এক অপরিহার্য উপাদান। এটি মানুষকে মানবিকতার শিক্ষা দেয়, তাকে শক্তি জোগায় এবং জীবনের প্রতিটি অভিজ্ঞতাকে অর্থপূর্ণ করে তোলে। কবিতাটি অনুভূতির এই অসীম ক্ষমতা এবং গুরুত্বকে তুলে ধরে, যা জীবনের পথে মানুষকে আলোকিত করে।
অনুভূতি—এক বিষন্ন অরণ্যের মতো,
যেখানে প্রতিটি গাছের পাতা
আমার বুকের গভীরে অদৃশ্য শব্দ তোলে।
কখনো সেই শব্দ কান্না হয়ে ঝরে,
কখনো হাসির ঝলকে ছড়িয়ে পড়ে।
আমার পক্ষে অনুভূতি মানে
জীবনের সমস্ত অম্লমধুর স্বাদ।
কখনো নিঃশব্দ চিৎকার,
আবার কখনো অশ্রুর স্রোতে
জমে থাকা ব্যথার উচ্ছ্বাস।
অনুভূতি আমার পক্ষে
এক পবিত্র সঙ্গী,
যে কোনো অভিযোগ করে না,
কোনো হিসেব রাখে না।
সে শুধু পাশে থাকে,
আমার একাকিত্বে,
আমার প্রার্থনায়।
অনুভূতি আমাকে শিখিয়েছে
মানুষ হওয়ার রহস্য।
শিখিয়েছে,
দুঃখ-কষ্টের মাঝেও কীভাবে
মুক্তির গান গাইতে হয়।
আমি অনুভূতির কাছে ঋণী,
কারণ সে আমাকে কখনো
একাকী হতে দেয়নি।
আমি যখন হারিয়েছি শব্দ,
অনুভূতি তখন
আমার পক্ষে কাব্যের বুকে
কবিতা হয়ে উঠেছে।
১০ জানুয়ারি ২০২৫
সময় রাত ১১:৩০
কবিতা কুটির -নীলফামারী।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার কবিতা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন। সত্যি আপনার কবিতা যত পরিচিত ততই ভালো লাগে। কবিতার ভাষাগুলো অসাধারণ ছিল।
সত্যিই অনেক সুন্দর কবিতা লিখেছেন। যেন বিরহের মাঝে শান্তনা। মন খারাপের সময়ে ভালোলাগার অন্যরকম অনুভূতি। অনেক সৌন্দর্য ও ভালোলাগার মানে খুঁজে পেলাম আপনার কবিতার মাঝে। আমি মনে করি মন ভালো রাখার অন্যতম মাধ্যম এই জাতীয় কবিতাগুলো। অনুভূতি আছে বলেই স্বপ্নরা বেঁচে থাকে।
আপু আপনার লেখা অনুভূতি শিরোনামের কবিতাটি পড়ে সত্যিই আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। বিশেষ করে কবিতার ভাষাগুলো আমার কাছে অসাধারণ ভালো লেগেছে। একই সাথে কবিতাটির মধ্যে মানব জীবনের এক অনন্য অনুভূতি দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। অসাধারণ সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনুভূতি ঠিক কি কি মানুষের জীবনে প্রদান করে তা তোমার কবিতাটার মধ্য দিয়ে পরিষ্কার উঠে এলো। সব মিলিয়ে দারুন সুন্দর একটি কবিতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছ দেখে ভালো লাগলো। তোমার লেখা কবিতা গুলির বেশিরভাগ অংশই পড়ে ফেলার চেষ্টা করি। একমাত্র যেগুলো চোখের সামনে আসে না এগুলো হয়তো মিস করে যাই।
মানুষের আত্মার এক সরল অভিব্যক্তি প্রকাশ পাই এই অনূভুতির মাধ্যমে। কোন মানুষই এই অনূভুতিহীন না। তবে কবিতার মাঝেই হয়তো অনূভুতি টাকে পুরোপুরি ফুটিয়ে তোলা যায়। কবিতা টা অসাধারণ লিখেছেন আপু। দারুণ লাগল পড়ে। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
আপু আপনার কবিতা মানে ভিন্ন কিছু। আপু আপনি সুন্দর অনুভূতি দিয়ে অসাধারণ কবিতা লিখেছেন।অনুভূতি কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে অনুভূতি দিয়ে মানুষ সুখ-দুঃখ সব কিছু উপলব্ধি করতে পারে। সুন্দর মনের সুন্দর ভাষা দিয়ে কবিতাটি লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।