এসো নিজে করিঃ কাগজ দিয়ে পরিবেশ বান্ধব কালারফুল রিক্সা তৈরি।

in আমার বাংলা ব্লগ12 days ago

শুভেচ্ছা সবাইকে।

কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।প্রত্যাশা করি সবাই সবসময় ভালো থাকেন,নিরাপদে থাকেন। আজ ২৪শে ফাল্গুন, বসন্তকাল ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৯ই মার্চ ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। আজ একটি ডাই পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

d52.jpg

d44.jpg

বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে আজ নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম। আজ এসো নিজে সপ্তাহের জন্য তৈরি করলাম একটি কাগজের পরিবাশ বান্ধব কালারফুল রিক্সা।নতুন ধরনের কাজের প্রতি সব সময় আমার আগ্রহ। সেই আগ্রহ থেকেই আজ বানিয়ে নিলাম রিক্সাটি। যদিও বানাতে প্রায় চার ঘন্টা সময় লেগেছে। এর কারন আমি চাচ্ছিলাম রিক্সাটি যেনো চলে তাই সময় লেগেছে। রিক্সাটি হাতে টেনে চালান যায়। চাকাগুলো বেশ সুন্দর ঘুরে।এ দেখে আমি বেশ খুশি। আর ছোট বাচ্চারা পেলেতো আরও খুশি হবে। তাই এই রিক্সাটি আমি আমার নাতিকে দিয়ে দিবো। সে এটা পেয়ে বেশ খুশি হবে। আমি রিক্সাটি বানাতে উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করেছি পেপার,বিস্কিটের প্যাকেট ও রঙ্গিন কাগজ সহ আরো কিছু উপকরণ। চলুন দেখে নেয়া যাক রিক্সা তৈরির পদ্ধতি যা সবিস্তারে নিম্নে প্রদত্ত হলো।

উপকরণ

d1.jpg

১।পুরাতন পেপার
২।লাল ও হলুদ রং এর কাগজ
৩।গ্লু
৪।কাঁচি
৫।বয়ামের ঢাকনা
৬।চিকন কাঠি
৭।কালো পোস্টার রং
৮।তুলি
৯।বিস্কিটের প্যাকেট

পরিবেশ বান্ধব কালারফুল রিক্সা তৈরির ধাপ সমূহ

ধাপ-১

d9.jpg

প্রথম পেপার চিকন করে কেটে নিয়েছি।

ধাপ-২

d43.jpg

পেপার টুকরা কাঠির সাহায্যে চিকন করে প্যাচিয়ে নিয়েছি। এভাবে বেশ কয়েকটা বানিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-৩

d11.jpg

d12.jpg

প্যাচানো পেপারে কাঠি প্যাচিয়ে ছোট চাকার মতো বানিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-৪

d14.jpg

এবার পেপারের কাঠি বয়ামের ঢকনার সাথে প্যাচিয়ে নিয়ে বড় চাকা বানিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-৫

d15.jpg

d23.jpg

বানানো পেপারের কাঠি ছোট ছোট টুকরো করে নিয়েছি। ছোট টুকরোগুলো আগে বানানো ছোট চাকার চারপাশে গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়ে চাকার ভিতরের অংশটি বানিয়ে নিয়েছি। এবার এই অংশটি বানানো বড় চাকার মাঝখানে বসিয়ে ছোট কাঠিগুলো বড় চাকার সাথে গাম দিয়ে লাগিয়ে রিক্সার চাকা বানিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-৬

d24.jpg

এবার বানানো চাকাটি কালো পোস্টার রং দিয়ে রং করে নিয়েছি।একইভাবে তিনটি চাকা এবং একটি প্যাডেলের চাকা বানিয়ে কালো রং করে নিয়েছি।

ধাপ-৭

d6.jpg

d7.jpg

d8.jpg

d16.jpg

এবার রিক্সার বসার অংশটি বানানোর জন্য বিস্কিটের প্যাকেট ছবির মতো এঁকে নিয়েছি। এবং কাঁচি দিয়ে দাগ বরাবর কেটে নিয়েছি। এবং দু'পাশের হলুদ রং এর কাগজ গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়ে রিক্সার পিছনের অংশ বানিয়ে নিয়েছি।

d5.jpg

ধাপ-৮

এবার রিক্সার সিট ও পিছনের অংশ বানানোর জন্য বিস্কিটের প্যাকেট থেকে ৯ সেঃমিঃX৭সেঃমিঃ ও ৯সেঃমিঃX৬সেঃমিঃ সাইজের দু'টুকরো কাগজ কেটে নিয়েছি। সিটের কাগজের টুকরোটি লাল রং এর কাগজ লাগিয়ে নিয়েছি। এবং পিছনের অংশের কাগজের টুকরটি হলুদ রং এর কাগজ গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-৯

d19.jpg

এবার পিছনের অংশের সিট ও পিছনের কাগজটি গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-১০

d21.jpg

d22.jpg

এবার রিক্সার সিটের অংশটি সামনের অংশের সাথে যুক্ত করার জন্য হলুদ রং কাঠি দু'ভাঁজ করে নিয়েছি। এবং তা সিটের নিচের অংশের সাথে গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি। ছবির মতো করে।

ধাপ-১১

d35.jpg

d36.jpg

d37.jpg

রিক্সার ছাওনি বানানোর জন্য লাল রং এর কাগজ কিছুটা ওভাল শেপের কেটে নিয়েছি। কাগজের দু'পাশের হলুদ রং এর কাগজের কাঠি গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি যেমনটা রিক্সায় থাকে। এবং বানানো ছাওনী রিক্সার পিছনের অংশের সাথে গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-১২

d25.jpg

d26.jpg

d27.jpg

এবার পিছনের দু'টো চাকা যুক্ত করার জন্য লাল রং এর এক টুকরো কাগজ প্যাচিয়ে নিয়েছি ভিতরে ফাঁকা করে যাতে ,বানানো হলুদ রং এর কাগজের লাঠি ঢুকানো যায়। ফাঁকা করার কারনে চাকা দু'টো ঘুরতে পারবে। এবার লালা রং কাগজের ফাঁকে হলুদ রং কাগজের কাঠি ঢুকিয়ে দিয়েছি। এবং দু'পাশে দু'টো চাকা গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-১৩

d28.jpg

এবার সামনের চাকার মধ্যে লাল রং এর কাগজের কাঠি ঢুকিয়ে নিয়েছি। এবং কাঠির দু'প্রান্ত গাম দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছি। ছবিতে যেভাবে দেখানো হয়েছে।

ধাপ-১৪

d29.jpg

d30.jpg

d31.jpg

d32.jpg

রিক্সার হ্যান্ডেল বানানোর জন্য এক টুকরো লাল রং এর কাগজের কাঠি মাঝে কিছুটা অংশ কেটে নিয়েছি। এবার লাল রং এর আরেকটি কাগজের কাঠি কাটার মধ্যে ঢুকিয়ে গাম দিয়ে দু'প্রান্ত লাগিয়ে দিয়ে হ্যান্ডেল বানিয়ে নিয়েছি দু'প্রান্ত বাঁকা করে। এবং চাকার সাথে গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি। ব্যস তৈরি হয়ে গেলো রিক্সার সামনের অংশ।

ধাপ-১৫

d38.jpg

এবার লাল ও হলুদ রং তিনটি কাগজের কাঠি প্যাডেলের চাকার সাথে গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-১৬

d33.jpg

d34.jpg

বিস্কিটের প্যাকেট কেটে রিক্সার সিট বানিয়ে নিয়েছি। এবং তাতে লাল রং এর কাগজ গাম দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছি।

ধাপ-১৭

d40.jpg

d42.jpg

d53.jpg

d41.jpg

এবার সামনের অংশের সাথে পিছনের অংশ গাম দিয়ে লাগিয়ে নিয়েছি। রিক্সার প্যাডেলে বানানোর জন্য লাল রং কাগজের কাঠি প্যাডের মতো বাঁকা করে প্যাডেলের চাঁকার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছি। এবং বানানো সিট গাম দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছি সিটের জায়গা। আর এভাবেই বানিয়ে নিলাম সুন্দর একটি পরিবেশ বান্ধব কালারফুল রিক্সা।

উপস্থাপন

d52.jpg

d51.jpg

d45.jpg

d48.jpg

আশাকরি আমার আজকে্র বানানো কাগজের তৈরি পরিবেশ বান্ধব কালারফুল রিক্সাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আজ এই পর্যন্তই। আবার দেখা হবে নতুন কোন পোষ্ট নিয়ে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন।শুভ রাত্রি।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টডাই
পোস্ট তৈরি@selina 75
মোবাইলSamsung A-10
তারিখ৯ই মার্চ, ২০২৫ইং
লোকেশনঢাকা।

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

image.png

image.png

image.png

Sort:  
 12 days ago 

কাগজ দিয়ে পরিবেশ বান্ধব কালারফুল রিক্সা তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা কালারফুল রিক্সাটি দেখতে সত্যি অসাধারণ লাগছে। আপনি অনেক সুন্দর করে কালারফুল রিক্সা তৈরি করেছেন।এ ধরনের জিনিস গুলো তৈরি করা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আপনি অনেক সময় দিয়ে ধৈর্য ধরে তৈরি করেছেন। সর্বোপরি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 9 days ago 

৪ ঘন্টা লেগেছে রিক্সাটি বানাতে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 12 days ago 

Daily task

dt1.png

dt2.png

 12 days ago 

আপনার এত সুন্দর আইডিয়া দেখে আমি তো জাস্ট মুগ্ধ হলাম। খুবই সুন্দর করে আপনি রঙিন কাগজ ব্যবহার করে এই রিক্সাটা তৈরি করে নিয়েছেন। দেখেই বুঝতে পারছি রিক্সাটা তৈরি করতে অনেক সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন হয়েছে। এটি ঘরের মধ্যে সাজিয়ে রাখলে দেখতে খুব সুন্দর লাগবে। শোপিস হিসেবে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে রাখতে পারবেন।

 9 days ago 

প্রায় ৪ ঘন্টা সময় লেগেছে রিক্সাটি বানাতে। আর দেখতে বেশ সুন্দর লাগছিলো বানানোর পর। আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু।

 12 days ago 

অসম্ভব ভালো লাগলো দেখে আপনার হাতের কাজ। অনেক নিখুঁতভাবে এবং দক্ষতার সাথে এই ধরনের ডাই প্রজেক্ট গুলো তৈরি করা লাগে। সুন্দর সুন্দর ডাই তৈরি করলে নিজের ভেতরে থাকা সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটে থাকে অনেক সুন্দর ভাবে। আমি তো অনেক বেশি ভালোবাসি এই ধরনের ডাইগুলো তৈরি করতে। রিক্সা টি অনেক বেশি ভালো লেগেছে দেখে।

 9 days ago 

আমিও পছন্দ করি বিভিন্ন ধরনের ডাই তৈরি করতে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Loading...

Manual Curation of "Seven Network Project".

artonsteemit1b.jpeg.jpg
#artonsteemit
ᴀʀᴛ & ᴀʀᴛɪꜱᴛꜱ
 12 days ago 

রিকশা দেখে তো মুগ্ধ হয়ে গেছি আপু। আপনি অনেক সুন্দর একটি ডাই প্রজেক্ট তৈরি করলে রঙ্গিন কাগজ ব্যবহার করে। রিকশা টি আসলেই খুব দেখতে সুন্দর হয়েছে আপু। আর রিকশাতে বসলে রোদ অনেক বেশি আরাম পাওয়া যাবে। ধন্যবাদ আপু প্রতিটি ধাপ সুন্দরভাবে‌ উপস্থাপন করার জন্য।

 9 days ago 

জি আপু রোদের বেশ আরাম পাবে রিক্সাটিতে বসলে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

 12 days ago 

শুধুমাত্র সাধারণ কিছু কাগজ কেটে ডিজাইন করে কত সুন্দর একটি রিকশা বানিয়ে ফেলেছেন আপু। আপনার এই হাতের কাজটি দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। রিক্সার চাকা থেকে শুরু করে হ্যান্ডেল এবং সিট, প্রত্যেকটি অংশ ভীষণ দক্ষতার সঙ্গে তৈরি করেছেন। রিকশার একেবারে নিখুঁত ডিজাইন তৈরি হয়েছে আপনার হাত দিয়ে। আবার একবার প্রশংসা করলাম এত সুন্দর শিল্পের জন্য।

 9 days ago 

আমি চাচ্ছিলাম রিক্সাটি যেন দেখতে পারফেক্ট মনে হয় ।তাই ৪ ঘন্টা সময় নিয়ে বানিয়েছি। আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

 12 days ago 

আপু, রিকশাটি দেখে সত্যিই মুগ্ধ হলাম! আপনি যে রঙিন কাগজ ব্যবহার করে এত সুন্দর একটি ডাই প্রজেক্ট তৈরি করেছেন, তা অসাধারণ। রিকশার ডিটেইলস এবং তার চমৎকার ডিজাইন সত্যিই চোখে পড়ে। রিকশাতে বসলে রোদে অনেক আরাম পাওয়া যাবে, এমনটাই মনে হচ্ছে। প্রতিটি ধাপ আপনি যেভাবে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে কাজটির প্রতি আপনার ভালোবাসা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। ধন্যবাদ, এমন একটি অসাধারণ কাজ শেয়ার করার জন্য!

 9 days ago 

রিক্সাতি যাতে দেখতে বাস্তবের মতো হয় তাই চেস্টা করেছি। তাই সময়ও লেগেছে বেশি। ধন্যবাদ আপু।