SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 25]

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 740.762 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ২৪


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


কিন্তু উপায় তো নেই কোনো আর । তাই সব ভয় ভীতি ঝেড়ে ফেলে মনকে কঠিন করলেন কমলাদেবী । স্বামীর প্রাণ তাঁকে যে করেই হোক রক্ষা করতে হবে । তাঁর অনাগত সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁকে যত কষ্টের কাজই হোক করতে হবে ।

কমলা রাজি হতেই চন্ড মনে মনে দারুন খুশি হয়ে বললো, "আমি রাজবাড়ীর খিড়কির দ্বারে রাত্রি দ্বিপ্রহরে আপনার জন্য অপেক্ষা করবো রানীমা । খিড়কি দুয়ারে শুধু হারু বাগদী ছাড়া আর কোনো লেঠেল থাকে না । ওকে আজ রাতের মতো ওখান থেকে সরিয়ে দিতে হবে আপনাকে ।"

শুনে কমলা একটুক্ষণ ভেবে তারপরে বললেন, "হারুকে আমি ওর বাবুর কাছে পাঠিয়ে দেব একটু পরেই । বলবো, তুই বাবুর কাছে আজকে সারা রাত থাকবি আর তাঁর দেখভাল করবি । হোক তাঁর শ্বশুরবাড়ি তারপরেও নিজেদের বাড়ির লেঠেলদের মধ্যে কাউকে না কাউকে তো থাকা উচিত বাবুর সাথে । সে যাই হোক বাবা, আপনি চিন্তা করবে না । হারুকে আমি আজ রাতের জন্য খিড়কী দোর থেকে সরিয়ে দেবো ।"

এ কথা শুনে পরম নিশ্চিন্তে চন্ড একটা সংস্কৃত মন্ত্র আওড়াতে আওড়াতে ভারী খুশি হয়ে কমলাদেবীকে আশীর্বাদ করে প্রস্থান করলো -

"দেবী প্রপন্নার্তিহরে প্রসীদ, প্রসীদ মাতর্জগতোহখিলস্য।
প্রসীদ বিশ্বেশ্বরি পাহি বিশ্বং, ত্বমীশ্বরী দেবি চরাচরস্য।।

ত্বং বৈষ্ণবীশক্তিরনন্তবীর্যা, বিশ্বস্য বীজং পরমাহসি মায়া।
সম্মোহিতং দেবি সমস্তমেতত্ত্বং বৈ প্রসন্না ভুবি মুক্তিহেতু:।।"

এদিকে এই কান্ড চলছে আর ওদিকে ভূপতিবাবু পরম পরিতোষ সহকারে পুজো দেখছেন । পুজোর আয়োজন এখন প্রায় শেষ । আর কয়েক দন্ড পরেই পুজো শুরু হবে । ছাগবলির জন্য দেবীর প্রকান্ড খাঁড়া খানা বের করে সেটাকে গঙ্গা জল দিয়ে ধুয়ে শান দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে । এরপরে তেল-সিঁদুরের প্রলেপ মাখিয়ে বলিকার্য্যের জন্য প্রস্তুত করে রাখতে হবে ।

প্রকান্ড হাঁড়িকাঠের সর্বত্র সিঁদুর লেপে দেওয়া হলো । এই হাঁড়িকাঠে একটু পরেই বলি শুরু হবে । একের পর এক পাঁঠার মুন্ডচ্ছেদ করা হবে প্রকান্ড খাঁড়া খানা দিয়ে । মোট ১০৮ টা পাঁঠাবলি হবে আজ ।

করালীবাবু ও ভূপতিবাবু গাঁয়ের আরো কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষের সাথে মিলে পুজোর ভোগ রান্নার জায়গা তদারক করতে বেরোলেন । নিরামিষ ও আমিষ দু'প্রকারই হচ্ছে । আমিষের মধ্যে প্রধানতঃ মাছের মুড়ো দিয়ে মুড়িঘন্ট, মাছের তরকারি আর পাঁঠার মাংস হবে । পাঁঠা তো এখনো বলি হয়নি, তাই মাছটাই আগে রান্না চাপানো হয়েছে । পুরো একটা গ্রামের মানুষ খাবে । বিশাল আয়োজন চলছে তাই রান্নার জায়গায় ।

ঘুরে ঘুরে সব ব্যবস্থা দেখছেন ভূপতিবাবু । বেশ রাত হয়েছে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুজো শুরু হয়ে যাবে । এমন সময় দেখতে পেলেন তাঁর লেঠেল হারু বাগদী এসে হাজির হয়েছে । হারুকে প্রথম দেখাতেই ভূপতিবাবুর বুকের মধ্যে ছ্যাঁৎ করে উঠলো । কমলার কিছু হয়নি তো ? হারু এসে প্রণাম করে দাঁড়াতেই শশব্যস্তে তিনি তাই কমলার কথাই সর্বাগ্রে জিজ্ঞেস করলেন । ভূপতিবাবুর আশংকা মিথ্যে প্রতিপন্ন করে দিয়ে হাসিমুখে হারু জানালো যে গিন্নি মা ভালোই আছেন, আর তিনিই তাকে পাঠিয়েছেন বাবুর দেখভালের জন্য ।

বিশাল একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন ভূপতিবাবু । যাক, এখন পুজোটা ভালোভাবে মিটে গেলে কালই তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন । এই সময়টাতে কমলার কাছে তাঁকে সার্বক্ষণিক থাকতে হবে ।

[চলবে]

Sort:  
 2 years ago (edited)

তার মানে চন্ডা পুরো রাস্তা ক্লিয়ার করে ফেলেছে রাণীমা কে সবার আড়ালে বের করে ফেলার জন্যে।এরপর তো ভয়ানক কিছুর ই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।দেখা যাক কি হয়!

 2 years ago 

সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক হচ্ছে। মনে হচ্ছে কমলার দেবীর কপালে শনি ক্রমান্বয়ে এগিয়ে আসছে। ভয়ানক ঘটনা ঘটতে চলেছে মনে হচ্ছে। পরবর্তি পর্বে আরো কিছুটা জানা যাবে।

 2 years ago 

কাপালিকের শিষ্য চন্ড তো একেবারে মারাত্মক প্ল্যান করেছে। কমলাদেবীর বাঁচার কোনো আশা দেখছি না। ভূপতিবাবু বাসায় ফিরে দেখবে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

এদিকে কমলাদেবীর সর্বনাশ অপেক্ষা করছে, এমনটাই তো মনে হচ্ছে। হুট করে গল্পটা শেষ হয়ে গেল, অপেক্ষায় থাকলাম ভাই, আগামীকালের পর্বের জন্য।

 2 years ago 

যেমন ঝরা আসার আগে সবকিছু শান্ত হয়ে যায়, ঠিক তেমনি আভাস পাচ্ছি। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়...!

 2 years ago 

চন্ড খুব প্লান করে কাজ করে ফেলেছে মনে হচ্ছে। বুদ্ধি করে হারুকেও সরিয়ে দিলো। কমলাদেবী বুঝতেও পারলো না চন্ডর প্লান। কমলাদেবীকে এখন কে বাঁচবে?