বৃষ্টি ভেজা বিকেল বেলায় আমাদের ছাদের মরিচ গাছের বেশ কয়েকটি এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে বৃষ্টিভেজা বিকেল বেলায় আমাদের ছাদের মরিচ গাছের বেশ কয়েকটি এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের যে সম্পর্ক, তা কখনোই কেবল চোখে দেখা যায় না।তা হৃদয়ে অনুভব করতে হয়। দিনের পর দিন যখন প্রচণ্ড রোদে চারপাশ শুকিয়ে ওঠে, গাছপালা যেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তখন এক পশলা বৃষ্টি শুধু প্রকৃতিরই নয়, আমাদের মনেরও পুনর্জন্ম ঘটায়। সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে রোদের দাপট ছিল অসহ্য। ঘরের চার দেয়াল যেন তাপে পুড়ে যাচ্ছিল, বাইরে বেরোলেই যেন আগুনের ঝাঁপটা। কিন্তু গত তিন-চার দিন ধরে হালকা হালকা বৃষ্টি এসে সেই ক্লান্তিকে একটু একটু করে ধুয়ে দিতে শুরু করেছে।বেলা তখন বিকেলের দিকে হেলে পড়েছে। দিনের চাপ কমে এসেছে বটে, কিন্তু আকাশের মন যেন তখনও পুরনো অভিমান ধরে রেখেছে। ঠিক এমন এক স্নিগ্ধ বিকেলে আমি ছাদে উঠেছিলাম, মন খারাপ কিংবা কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই, শুধু প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে।

ছাদে উঠেই যেন অন্য এক জগতে পা দিলাম। মাথার ওপর নরম সাদা মেঘের চাদর, সামান্য হিমেল হাওয়া আর ভিজে গাছের পাতায় জমে থাকা ছোট ছোট বৃষ্টির মুক্তো। আমার হাতে গড়া সবুজ মরিচ গাছগুলো বৃষ্টির জলে স্নান করে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। পাতাগুলোর গায়ে এখনও টলটলে পানির ফোঁটা, আর তার ফাঁকে লুকিয়ে থাকা ছোট ছোট, কুঁকড়ে থাকা কাঁচা মরিচগুলো যেন অল্প আলোতে ঝিলমিল করছিল। অনেকটা যেন নিজের সন্তানের মতো, প্রতিটি মরিচের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিল, কত যত্ন আর ভালোবাসায় এরা বড় হয়ে উঠছে।

আমার এক হাতে মেহেদি রাঙা আঙুলে কয়েকটা মরিচ তুলে নিলাম, অন্য হাতে মোবাইল ক্যামেরা। কোনো প্রস্তুতি ছিল না, তবু এই মুহূর্তগুলো ধরে রাখার লোভ সামলাতে পারিনি। এলোমেলোভাবে কিছু ছবি তুলে নিলাম। প্রতিটি ছবিতেই ছিল বৃষ্টির সতেজতা, পাতার সবুজ ঘ্রাণ, আর আমার মনের প্রশান্তির প্রতিফলন।ছবিগুলোতে কখনো দেখা যাচ্ছে, আঙুলে ধরা একটি কাঁচা মরিচ, কখনো ঝোপের ভেতর লুকানো দুঃসাহসী একটি ফল, আবার কখনো তিন-চারটি মরিচ একসাথে হাতে ধরে রাখা যেন একরাশ সাফল্যের হাসি। এই ছবি তোলার মুহূর্তগুলোতে আমি যেন একাকীত্বের গভীর থেকে মুক্তি পেলাম। সেদিন ছাদে শুধুই আমি ছিলাম না, ছিল প্রকৃতি, ছিল বৃষ্টি, আর ছিল একান্ত আমার গল্প।একটা, দুইটা, তিনটা করে তুলে নিতে নিতে আমি ভুলে যাই সময়ের হিসেব। হাতে রাখা মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে কিছু এলোমেলো ছবি তুলে ফেলি। ভাবিনি পোস্ট করবো বা কারো দেখাবো, শুধু মনে হলো।এই মুহূর্তটুকু ধরে রাখতে হবে। কারণ এমন অন্য রকম‌ বিকেল প্রতিদিন আসে না।

এই গরমে যখন সবাই ক্লান্ত, যখন জীবনের ছোট ছোট সুখ গুলোকে আমরা হেলাফেলায় ফেলে দেই।তখনই হঠাৎ একটা বৃষ্টি, একটা সবুজ পাতার নাচ, একটা টুপ করে পড়া জলকণা, আর একমুঠো কাঁচা মরিচ আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় প্রকৃতির প্রথম পাঠে।প্রকৃতি কখনো চিৎকার করে কিছু শেখায় না। সে ধীরে ধীরে, ভালোবেসে শেখায় ।ধৈর্য, শূন্যতা থেকে কিছু গড়ে তোলা, আর আনন্দের জন্য বড় কিছুর দরকার হয় না। একমুঠো তাজা মরিচ আর এক পশলা বিকেলই যথেষ্ট।আজ আমি শুধু মরিচ তুলি নাই, তুলেছি নিজেকে। নিজের ক্লান্ত আত্মাকে একটু শান্তির আশ্রয় দিয়েছি সবুজ পাতার ছায়ায়।

এই বিকেলটা ছিল খুব সাধারণ, অথচ খুব বিশেষ। কোনো আড়ম্বর ছিল না, কোনো পরিকল্পনা ছিল না।তবুও যেন একটুখানি শান্তির আকাশ খুঁজে পেলাম। জীবনের প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝখানে আমরা এমন কিছু মুহূর্ত মিস করে যাই।ৎযেগুলো আসলে আমাদের প্রকৃত অনুভবের জগতকে সমৃদ্ধ করে। ছাদে গাছ লাগানো, তা দেখে রাখা, আর এমন এক দিনে তাদের সঙ্গে কাটানো সময়।এ সবই হয়তো ছোট ছোট কাজ, কিন্তু সেই ছোট ছোট কাজগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ।আমার এই মরিচগাছের ছাদ, এই বৃষ্টিভেজা বিকেল, আর ক্যামেরাবন্দী কিছু এলোমেলো ছবি ,সব মিলিয়ে গড়ে উঠল এক নীরব অনূভুতি।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।