রোকনীগঞ্জ মাজার শরীফে বার্ষিকক্রীড়া অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুভূতি ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

🥰...এবং হিন্দু ভাই বোনদের কে আদাব.💗🙏।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য, এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে ।আজকে আমি আপনাদের সাথে রোকনীগঞ্জ মাজার শরীফে বার্ষিকক্রীড়া অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

রোকনীগঞ্জ মাজার শরীফের বার্ষিক প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সমাবেশ। প্রতি বছর এই মাজারে ওরস বা উরস অনুষ্ঠিত হয়, যা হযরত শাহ পরান (রহঃ) এবং অন্যান্য সুফি সাধকদের স্মরণে আয়োজিত হয়।বাংলাদেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ মাজার গুলোর মধ্যে রোকনীগঞ্জ মাজার একটি বিশেষ স্থান দখল করেছে। এটি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ এলাকার পাশে অবস্থিত। প্রতি বছর এই মাজারে একটি বিশাল বাৎসরিক প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসেন।এই মাজার শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি আমার শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

ছোটবেলা থেকেই আমি প্রায় প্রতি বছর এই মাজারে যেতাম, কারণ এখানেই আমার আম্মুর নানা বাড়ি। ছেলেবেলার অনেক সুন্দর মুহূর্ত এখানে কেটেছে। গ্রামের নিরিবিলি পরিবেশ, খোলা আকাশ, অনেক বড় মেলার আয়োজন,সবকিছুই আমাকে সব সময় টানত। প্রতি বছর এই মাজারে বড় আকারে ওরস ও ধর্মীয় প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। তখন আশপাশের গ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন এখানে আসেন।

করোনা মহামারির কারণে গত কয়েক বছর ধরে এই প্রোগ্রাম বন্ধ ছিল। কিন্তু দীর্ঘ বিরতির পর, এবার আবারও প্রোগ্রামটি আয়োজন করা হয়েছিল, যদিও অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা ছোট আকারে। তবুও মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আমি প্রায় প্রতি বছরই এই প্রোগ্রামে যাই, কারণ আমার আম্মুর নানার বাসায় পাশেই। ছোট বেলা থেকে আমি এই মাজারের সাথে পরিচিত। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।আসলে এই জায়গার প্রোগ্রাম টি অনেক বড় আকারের হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গিয়েছিলাম আমি। এবারের আয়োজন টি খুব একটা বড় হয়নি।

তখন আমি, আমার ছোট ভাই এবং আম্মু সবাই মিলে নানা বাড়িতে চলে গেলাম। সেখানে পৌঁছানোর কিছু পরই মাগরিবের কিছু আগে আমরা বাইরে বের হলাম। যখন গিয়ে দেখলাম, চারপাশে মানুষের ভীড় জমে গেছে। আমরা একটু সময় ধরে ঘুরে ঘুরে অনেক মানুষ দেখে কিছু খাবার কেনাকাটা করলাম। তারপর বাসায় ফিরে আসলাম। মামা আন্টিরা বলল, “আজ রাতে বাসায় বসে সবাই মিলে ওয়াজ শুনবো, আর কাল সকালে আমরা সবাই মেলায় ঘুরতে যাব।”

মেলার ঘুরে বেড়ানো যেন এক স্বপ্নের মতো, যেখানে না থামার মতো অনুভূতি থাকে। মাঝেমধ্যে একটা স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে মানুষজনের হাসি-মজার গল্প শোনা যায়, ছোটদের চিৎকার শুনে ভালো লাগে, আবার তাদের আনন্দের চোখেও যেন অনেক কিছু গোপন থাকে। এসবই মেলার মূল আর্কষণ, যেখানে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা হয় সময়ের গভীরে।

পরের দিন সকালে মামা আন্টিরা আমাদের নিয়ে মেলাতে গেলেন। পুরো মাজার শরীফ ঘুরে ঘুরে দেখলাম এবং অনেক মানুষকেও দেখলাম যারা সেখানে এসেছিল। এরপর মেলার মধ্যে ঢুকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা শুরু করলাম। সবাই যার যার পছন্দ অনুযায়ী জিনিসগুলো কিনল। তারপর ফুসকা, আচার আর অনেক মজার খাবার খেতে খেতে বেশ কিছুক্ষণ মেলা ঘুরে ঘুরে দেখলাম। শেষে একসাথে বাসায় ফিরে এলাম।

এই মাজারের প্রতি আমার ভালোবাসা কেবল ধর্মীয় নয়, এটি একটি স্মৃতির জায়গাও। প্রতিটি মুহূর্তই আমাকে মনে করিয়ে দেয় ছোটবেলার সেই সাদামাটা আনন্দময় দিনগুলো। আশাকরি, ভবিষ্যতেও রোকনীগঞ্জ মাজারের এই ঐতিহ্য রক্ষা হবে এবং আমি প্রতিবারের মতো আবারও এখানে ফিরে আসব, শৈশবের স্মৃতির পাতা উল্টাতে উল্টাতে।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমাদের বাসার পাশেই বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি। পাশাপাশি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাজিল প্রথম বর্ষে পড়ালেখা যুক্ত রয়েছি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি । আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার সাহাপুর গ্রামে অবস্থিত । আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।